এই মৌসুমে বেন স্টোকস দুই হাত ভরে সফলতা পেয়েছেন। যা ধরছেন তাতেই জাদুর মতো সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ইংল্যান্ডের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক হিসাবে অমর হয়ে গিয়েছেন ইতিমধ্যে। চলতি অ্যাশেজে দলকে অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের দৌড়ে রেখেছিলেন একাই। তবে শেষপর্যন্ত স্টিভ স্মিথের কাছে পিছিয়ে পড়েন তিনি। হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টে তার খেলা ইনিংসটি ইতিহাসের সেরা টেস্ট ইনিংসের কাতারে উপরের দিকেই থাকবে। লর্ডসে দুর্দান্ত শতক হাঁকানোর পর হেডিংলিতে তার অতিমানবীয় এই ইনিংসের পরে অনেকেই ভেবে নিয়েছিল ১৯৮১ সালের বোথামের অ্যাশেজ এবং ২০০৫ সালের অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের অ্যাশেজের পর এবারের অ্যাশেজ হতে যাচ্ছে বেন স্টোকসের নামে।
বিশ্বকাপ জয়ের ইংলিশ ক্রিকেট নতুন দিগন্ত রচনা হয়। চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ। বিশ্বকাপ হিরো বেন স্টোকসকে নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই। এজবাস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া যখন মাঠে নামে তখন পুরো গ্যালারি জুড়ে ছিল স্টোকস বন্দনা। দলবেঁধে সবাই স্টোকসের মুখোশ পরে মাঠে আসে। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী বার্মি আর্মি শুরু থেকেই "Arise Ben Stokes" এই স্লোগানে পরিবেশ মুখর করে রেখেছিল। তাদের মুখে আরও একটি নাম ছিল। স্টিভ স্মিথ। বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর এই প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল তিনি। ইংল্যান্ডের দর্শকরা তার কান্নার ছবিকে মুখোশ বানিয়ে তাকে 'বু' দিতে থাকে। এমন প্রতিকূল অবস্থার পরেও পুরো সিরিজ জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে অ্যাশেজকে নিজের নামে করে নেন তিনি।
স্টিভ স্মিথের ব্যাটিং গড় ছিল আকাশচুম্বী। ইনজুরির কারণে সিরিজের মোট তিন ইনিংস মিস করলেও সাত ইনিংসে করেছেন ৭৭৪ রান, যা অ্যাশেজের এক সিরিজে পঞ্চম সর্বাধিক সংগ্রহ। ১৯৩০ সালের অ্যাশেজে ডন ব্র্যাডম্যান ৯৭৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। রানের দিক দিয়ে ডনের চেয়ে ২০০ রান কম হলেও দলের মোট সংগ্রহে দুজনে সমান অবদান রেখেছেন। ১৯৩০ সালে ডন ব্র্যাডম্যান দলের ৩৫.৫ শতাংশ রান করেছিলেন। স্টিভ স্মিথ এই সিরিজে নিজের খেলা ম্যাচগুলোতে দলের মোট রানের ৩৫.৫ শতাংশ রান একাই করেছেন।
প্রথম টেস্ট: ম্যান অব দ্য ম্যাচ - স্টিভেন স্মিথ
এজবাস্টনে সিরিজের প্রথম টেস্টে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া ১৭ রান তুলতেই দুই ওপেনারের উইকেট হারায়। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফটের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন স্টিভ স্মিথ। তিনিও নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো সাদা পোশাকে মাঠে নামেন। ব্যানক্রফট এবং ওয়ার্নার ব্যর্থ হলেও দলকে একাই বিপদের মুখ থেকে রক্ষা করেছিলেন স্মিথ। ব্রড এবং ক্রিস ওকসের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১২২ রানে আট উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে পিটার সিডলের সাথে ৮৮ এবং নাথান লায়নের সাথে ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে ২৮৪ রানের পুঁজি এনে দেন স্মিথ। তার ব্যাট থেকে আসে ১৪৪ রান।
ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ৩৭৪ রান সংগ্রহ করে ৯০ রানের লিড নেয়। ৯০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আবারও শুরুতে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। স্কোরবোর্ডে ২৭ রান তুলতেই বিদায় নেন ব্যানক্রফট এবং ওয়ার্নার। তাদের বিদায়ের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দলের রানের চাকা সচল রাখেন স্মিথ। এবার সঙ্গী হিসাবে পেয়েছেন বেশ কয়েকজনকে। উসমান খাঁজা, ট্রাভিস হেড এবং ম্যাথু ওয়েড সবাই-ই রান পেয়েছেন।
প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রান করা স্মিথ দ্বিতীয় ইনিংসেও ১৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন। এছাড়া ওয়েড ১১০ রান এবং হেড ৫১ রান করেন। শেষদিকে প্যাটিনসন এবং কামিন্স দ্রুতগতিতে রান করলে সাত উইকেটে ৪৮৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। তখন জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন পড়ে ৩৯৮ রানের। ম্যাচ বাঁচানোর জন্য ব্যাট করতে হতো ম্যাচের শেষদিন। লায়ন এবং কামিন্স ইংল্যান্ডকে শেষদিনের দুই সেশনও ব্যাট করতে দেয়নি। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ইংল্যান্ড মাত্র ১৪৬ রানে সবক'টি উইকেট হারিয়ে ২৫১ রানে পরাজিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন জোড়া শতক হাঁকানো স্মিথ।
দ্বিতীয় টেস্ট: ম্যান অব দ্য ম্যাচ - বেন স্টোকস
লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে বৃষ্টির কারণে প্রায় দুদিন খেলা মাঠে না গড়ালেও ম্যাচটি বেশ উপভোগ্য ছিল। প্রথমে ব্যাট করা ইংল্যান্ডের ২৫৮ রান জবাবে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৫০ রান সংগ্রহ করে। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৯ রানে দুই উইকেট এবং ৭১ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। চাপের মুখ থেকে দলকে উদ্ধার করেন বেন স্টোকস। তিনি প্রথমে জশ বাটলার এবং পরে জনি বেয়ারস্টোর সাথে জুটি গড়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন। তিনি ১৬৫ বলে ১১টি চার এবং ৩টি ছয়ের মারে অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
তিনি যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন দলের সংগ্রহ ছিল তিন উইকেটে ৬৪ রান। এমন পরিস্থিতিতে দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে শুরুতে ধীরে-সুস্থে ব্যাট করেন তিনি। ব্যক্তিগত প্রথম ৫০ রান তুলতে ১০৬ বল মোকাবেলা করেছিলেন। দল যখন বিপদমুক্ত হয় তখন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে রানের গতি বাড়াতে থাকেন তিনি। শেষ ৬৫ রান করতে তিনি খেলেছিলেন ৫৯ বল। স্টোকসের দুর্দান্ত ইনিংসের উপর ভর করে ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেটে ২৫৮ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়াকে ২৬৭ রানের টার্গেট দেয়। জবাবে শুরুতে দ্রুত তিন উইকেট হারালেও মার্নাস ল্যাবুশেইনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ম্যাচ ড্র করতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া।
তৃতীয় টেস্ট ম্যান অব দ্য ম্যাচ - বেন স্টোকস
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে জোফরা আর্চারের বাউন্সারে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়া স্টিভ স্মিথ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে পারেননি। তিনি যখন নেটে নিজেকে চতুর্থ টেস্টের জন্য তৈরি করছেন, তখন হেডিংলিতে চলছিল বেন স্টোকসের একক শো। এই অ্যাশেজকে বেন স্টোকসের অ্যাশেজ বলা না হলেও তৃতীয় টেস্টকে স্টোকসের টেস্ট যে বলা হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
হেডিংলিতে ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ওয়ার্নারের ৬১ রান এবং ল্যাবুশেইনের ৭৪ রানের ইনিংস সত্ত্বেও ১৭৯ রানে সবক'টি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। জোফরা আর্চার ছয় উইকেটশিকার করেন। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে হ্যাজেলউড ও কামিন্সের বোলিং তোপের মুখে পড়ে মাত্র ৬৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় দফা ব্যাট করতে নেমে ল্যাবুশেইনের ৮০ রানের উপর ভর করে ২৪৬ রান সংগ্রহ করলে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন পড়ে ৩৫৯ রানের। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ডের জন্য যা ছিল পাহাড়সম টার্গেট।
প্রথম ইনিংসে ব্যর্থতার পর ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে ১৫ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে জো ডেনলি এবং রুট ১২৬ রান যোগ করে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। দলীয় ১৪১ রানে ৫০ রান করা ডেনলি দলের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসাবে সাজঘরে ফিরে গেলে ক্রিজে আসেন বেন স্টোকস। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে টানা দুই ঘন্টা বোলিং করে তিন উইকেট শিকারের পর সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন স্টোকস। তিনি ব্যাটিংয়ে আসার পর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংল্যান্ড। শেষ ব্যাটসম্যান হিসাবে লিচ যখন ক্রিজে আসেন তখনও জয়ের জন্য ৭৩ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। স্টোকস একাই দুর্দান্ত সব শট খেলে দলকে এক উইকেটের জয় এনে দেন। তিনি ২১৯ বলে ১১টি চার এবং আটটি ছয়ের মারে অপরাজিত ১৩৫ রানের ইনিংস খেলেন, যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে একটি হয়ে থাকবে। শেষ উইকেটে তার এবং লিচের ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লিচের অবদান ছিল ১ রানের!
চতুর্থ টেস্ট ম্যান অব দ্য ম্যাচ - স্টিভ স্মিথ
প্রথম টেস্টে জোড়া শতক হাঁকিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতার পর দ্বিতীয় টেস্টে ইনজুরিতে পড়ার পর তৃতীয় টেস্টে মাঠে নামতে পারেননি স্মিথ। আর দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নেন বেন স্টোকস। ওল্ড-ট্রাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট দিয়ে খেলায় ফেরেন স্মিথ। ফিরেই বাজিমাত করেন তিনি। অ্যাশেজ জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়া টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া অন্যান্য ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও শুরুতে দুই ওপেনারের উইকেট হারায়। এরপর দলের হাল ধরেন ল্যাবুশেইন এবং স্মিথ। ল্যাবুশেইন ৬৭ রান করে ফিরে গেলেও স্মিথ রানের গতি সচল রেখেছিলেন। ট্রাভিস হেড, ম্যাথু ওয়েড, টিম পেইন এবং প্যাট কামিন্স সবার সাথে জুটি বেঁধে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পাশাপাশি নিজের দু'শো পূর্ণ করেন। ৫১৩ মিনিট ব্যাট করে ৩১৯ বলে ২৪টি চার এবং ২টি ছয়ের মারে ২১১ রান করার পর দ্রুত রান তুলতে গিয়ে রুটের শিকারে পরিণত হন।
স্মিথের দ্বি-শতকের পর স্টার্কের ঝোড়ো অর্ধশতকের উপর ভর করে আট উইকেটে ৪৯৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ইংল্যান্ড ৩০১ রান করে কোনোমতে ফলো-অন এড়ায়। প্রথম ইনিংসে ১৯৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে স্মিথের ৮২ রানের উপর ভর করে ছয় উইকেটে ১৮৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। এতে করে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮৩ রানের। সময় ছিল চতুর্থ দিনের শেষ আধঘণ্টা এবং শেষদিন পুরোটা। চতুর্থ দিনের শেষ আধঘন্টায় দুই উইকেট হারানো ইংল্যান্ড শেষদিনে ম্যাচ বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়। দুই তারকা ব্যাটসম্যান জো রুট এবং বেন স্টোকস বেশিক্ষণ ব্যাট করতে না পারলেও জস বাটলার, ক্রেইজ ওভারটন এবং জ্যাক লিচের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ের ড্রয়ের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচের শেষ ঘন্টায় এসে ইংল্যান্ডকে ১৯৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে ১৮৫ রানের জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
সিরিজ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্টে অকল্পনীয় নৈপুণ্য প্রদর্শন করা বেন স্টোকসের নামে ২০১৯ সালের অ্যাশেজ না হলেও পুরো মৌসুমটা ঠিকই তার নামে বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপের ফাইনালে অসাধারণ ইনিংসের পর হেডিংলিতে ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। স্মিথেরও এই অ্যাশেজ দিয়ে পুনর্জন্ম হয়েছে। ১৬ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে মানিয়ে নিতে মোটেও সময় নেননি। চাপের মুখে থেকে দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে প্রায় দুই দশক পর ইংল্যান্ড থেকে অ্যাশেজ ঘরে নিয়ে ফিরতে সাহায্যে করেন। তাই তো স্টোকসের এমন অসাধারণ পারফরমেন্সের পরেও এটি স্মিথের অ্যাশেজ নামে ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।
This article is in Bangla language. It is about the Stokes' summer and Smith's Ashes. For references please check the hyperlinks inside the article.
Featured Image: Getty Images