Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রিকেট ইতিহাসে ভারতের যত ব্যাটিং বিপর্যয়

ক্রিকেট মানেই রেকর্ডের ছড়াছড়ি। তবে সর্বোচ্চ রান বা উইকেট সংগ্রহ করে যেমন রের্কড তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করার গৌরব অর্জন করা যায়, ঠিক তেমনই সর্বনিম্ন রান সংগ্রহ করেও রেকর্ড তালিকায় স্থান পাওয়া যায়। তবে সেটা গৌরবের নয়, ব্যর্থতার।

আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষ দশজনে কোহলি, রোহিত এবং ধাওয়ান তিনজনই জায়গা করে নিয়েছেন; Image Source: Sportskeeda

বর্তমান সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে সবচেয়ে সেরা ব্যাটিং লাইনআপের কথা চিন্তা করলে নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ভারতের কথাই মাথায় আসবে। বিশেষ করে ভারতের টপ অর্ডারের তিনজন ব্যাটসম্যানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অতুলনীয়। এমনকি আইসিসি ওয়ানডে ব্যাটিং র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষ দশজনের মধ্যে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং শিখর ধাওয়ান এই তিনজন ব্যাটসম্যানই জায়গা করে নিয়েছেন।

ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, এখানে যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যার প্রমাণ গত ম্যাচে ভারতের ৯২ রানে গুটিয়ে যাওয়া। ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বসেরা সব দলের শত রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ড অহরহ। তবে ভারত যেন সেই ব্যথা প্রায় ভুলেই যেতে বসেছিল। এর আগে সর্বশেষ তারা এমন বিপর্যয়ে পড়েছিলো ২০১০ সালে, সেটাও এই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেই।

চলতি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে কোনো পাত্তাই পায়নি স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ভারত। হয়তো এ কারণেই ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও এমএস ধোনিকে বিশ্রামে রাখা হয়। অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় রোহিত শর্মার উপর।

‘ব্ল্যাক ক্যাপস’দের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পথে; Image Source: Hindustan Time

হ্যামিল্টনে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকেই প্যাভিলিয়নে ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট, পরে তার সাথে যোগ হন গ্র্যান্ডহোম। এ দু’জনের বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ৪০ রানেই ৭টি উইকেট হারায় ভারত।

এরপর ৯ নম্বর উইকেট জুটিতে যুজবেন্দ্র চাহাল ও কুলদীপ যাদব ২৫ রান সংগ্রহ করেন। যুজবেন্দ্র চাহালের করা ১৮ রানই ছিল দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর। শেষ পর্যন্ত সবক’টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে যায় ভারত, যা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় স্কোরগুলোর মধ্যে সাত নম্বরে জায়গা পায়। ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ড ২১২ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভ করে। ওয়ানডেতে বল হাতে রাখার হিসেবে এটি ভারতের সর্বোচ্চ ব্যবধানে হারের নজির।

আবারও নিউ জিল্যান্ড…

২০১০ সালে শ্রীলঙ্কার ডাম্বুলায় ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও নিউ জিল্যান্ড। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রস টেইলর এবং স্কট স্টাইরিসের হাফ সেঞ্চুরির সুবাদে ২৮৮ রানের লড়াকু স্কোর দাঁড় করায় নিউ জিল্যান্ড।

২৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে দুই ব্যাটসম্যান দীনেশ কার্তিক এবং বীরেন্দর শেবাগ ৩৯ রান সংগ্রহ করেন। পরপর দুই বলে এই দুই ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর রবীন্দ্র জাদেজা ব্যতীত আর কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংকের রান স্পর্শ করতে পারেননি। নিয়মিত উইকেট পতনের ফলে মাত্র ৮৮ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস। এতে ২০০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় নিউজিল্যান্ড।

প্রোটিয়া অ্যাটাক 

২০০৬ সাল। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জ্যাক ক্যালিসের অনবদ্য সেঞ্চুরির সুবাদে ২৪৮ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

শচীনও ম্লান হয়ে গিয়েছিলেন সেদিন; Image Source: DNA india

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ভারত। এরপর এক প্রান্তে শচীন টেন্ডুলকার মাটি কামড়ে খেলতে থাকলেও অপর প্রান্তে কোনো ব্যাটসম্যানই তেমন সুবিধা করতে পারছিলেন না। ৬২ রানের মাথায় শচীন টেন্ডুলকার ৩৫ রান করে আউট হন। শচীন আউট হওয়ার পর শেষ ২৯ রানে ৭টি উইকেট হারায় ভারত। সব মিলিয়ে ২৯.১ ওভারে মাত্র ৯১ রানে ইনিংস শেষ হয় ভারতের, এবং ম্যাচটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৫৭ রানের বিশাল জয় পেয়েছিলো।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে…

ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ মানেই একটু বাড়তি উত্তেজনা। তবে ১৯৭৮ সালে হওয়া ম্যাচটিতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। পাকিস্তানের শিয়ালকোটে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। মাত্র ১৬ রানে প্রথম সারির ৪টি উইকেট হারায় তারা। এরপর মহিন্দর অমরনাথ এক প্রান্তে ব্যাট করতে থাকলেও অপর প্রান্তে কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। একমাত্র অমরনাথ ৩৪ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।

ফলে ৩৪.২ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান সংগ্রহ করে ভারত। ৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩৯ বল হাতে রেখে অনায়াসে ৮ উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভ করে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচে; Image Source: The Indian Express 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে… 

১৯৮৬ সালে ভারতের কানপুরে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কা ও ভারত। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪৬ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৫ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে অর্জুনা রানাতুঙ্গে এবং রবি রত্নায়েকের বোলিং তোপে দুমড়েমুচড়ে যায় ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ। কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত ও দিলীপ ভেঙসরকার ব্যতীত আর কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংকের রান স্পর্শ করতে পারেননি। ২৪.১ ওভার ব্যাট করে সবক’টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭৮ রান সংগ্রহ করে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা, যা তাদের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোরগুলোর মধ্যে শীর্ষ তিনে।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে… 

১৯৮১ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের নবম ম্যাচে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে গ্রেগ চ্যাপেলের বোলিং তোপে ৫০ রানেই ৫ উইকেট হারায় ভারত। সর্বশেষ ১৩ রানেই ৬টি উইকেটের পতন হলে সব মিলিয়ে ২৫.৫ ওভারে ৬৩ রানে অলআউট হয় ভারত। ভারতের পক্ষে গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ ২৩ ও রজার বিনি’র ১৬ রান ব্যতীত আর কোনো ব্যাটসম্যানই ক্রিজে দাঁড়াতে পারেননি। পরে ৬৪ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৭৪ বল হাতে রেখে মাত্র ১টি উইকেট হারিয়েই জয়লাভ করে অস্ট্রেলিয়া।

সর্বনিম্ন রানের লজ্জা… 

ক্রিকেট ইতিহাসে ভারত তাদের দলীয় সর্বনিম্ন স্কোরটির ‘রেকর্ড’ গড়ে ২০০০ সালে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত ‘শারজা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’ ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কা। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সনাৎ জয়সুরিয়ার ক্যারিয়ার সেরা ১৮৯ রানের উপর ভর করে ২৯৯ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা।

Image Source: Moneycontrol

৩০০ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি ভারতের ব্যাটসম্যানরা। চামিন্দা ভাসের বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ১৯ রানেই প্রথম সারির চারজন ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। পরে মুত্তিয়া মুরালিধরনের ঘূর্ণিতে শেষ ২৪ রানে ৬টি উইকেটের পতন হয়। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের ফলে একমাত্র রবিন সিং ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংকের রানে পৌঁছাতে পারেননি।

মাত্র ৫৪ রানে অলআউট হয়ে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোরটি গড়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। সেই ম্যাচটি ভারত ২৪৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই ভারতের সর্বোচ্চ ব্যবধানে পরাজয়ের রেকর্ড।

This is a Bangla article. It's about top 7 lowest innings total scores of India. Necessary references have been hyperlinked inside the article. 

Featured Image: AFP

Related Articles