তারকাদের দলবদল: কে কোথায়

গত মৌসুমের পাট চুকেছে আগেই, আসছে মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। ইউরোপজুড়ে এখন তাই চলছে খেলোয়াড়দের ক্লাব বদল, চলছে হরেক রকমের নাটক। কে কোথায় যাবেন, কে যেতে চাচ্ছেন কিন্তু পারছেন না, আবার কে যেতে না চাইলেও ক্লাব তাকে বেচে দিতেই পারে, এসব মিলিয়েই দলবদলের ভরা মৌসুম চলছে ইউরোপিয়ান ট্রান্সফার মার্কেটে। 

তবে এবার দলবদলের বাজারটা অন্যান্য যেকোনোবারের চেয়ে বেশি জমজমাট, প্রায় সব বড় ক্লাবই নিজেদের দলের উন্নতির জন্য দলে ভিড়িয়েছে দারুণ সব খেলোয়াড়দের। তবে কারও ক্ষেত্রে দাম যেমন পড়েছে বেশি, তেমনই অনেককে অনেক ক্লাব পেয়ে গেছে বেশ সস্তায়। তবে চলুন, দেখে নেয়া যাক, আগামী মৌসুমে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে এমন দলবদলগুলো।

আঁতোয়ান গ্রিজমান 

১২০ মিলিয়নের বিনিময়ে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছেন গ্রিজমান; Image Source: China Daily

বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি তারকাকে দলে নেওয়ার চেষ্টা বার্সেলোনা করে আসছিলো দীর্ঘদিন ধরেই। গত মৌসুমেও আসি আসি করে ন্যু ক্যাম্পে আসেননি গ্রিজমান। অধিকাংশই ধরে নিয়েছিলেন ব্লগরানা জার্সি গায়ে দেখা যাবে না তাকে। তবে গত মৌসুমে লুইস সুয়ারেজের ব্যর্থতা এবং ওসমান দেম্বেলের ক্রমাগত ইনজুরির চাপে বার্সেলোনা বোর্ড বাধ্য হয় আবার চেষ্টা করার জন্য, এবং এবার প্রস্তাবে সায় দেন এই ফরাসি তারকা। জুলাইয়ের আগপর্যন্ত গ্রিজমানের রিলিজ ক্লজ ২০০ মিলিয়ন থাকলেও পহেলা জুলাইয়ে তা নেমে আসে ১২০ মিলিয়নে, এবং বার্সেলোনা এই সুযোগ নিতে ভুল করেনি। রিলিজ ক্লজ মিটিয়ে দিয়ে তাকে নিয়ে আসে বার্সেলোনায়। তাকে দেওয়া হয় ১৭ নম্বর জার্সি। তবে, নাটকের শেষ এখানেই নয়।  

গ্রিজমানের সদ্য সাবেক ক্লাব অ্যাটলেটিকো দাবি করেছে, তাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে যে, গ্রিজমানের সাথে বার্সার ব্যক্তিগত চুক্তি হয় জুলাইয়ের আগেই, যখন তার রিলিজ ক্লজ ছিল ২০০ মিলিয়ন ইউরো। সুতরাং, গ্রিজমানকে যথাযথভাবে নিজেদের করে নিতে বার্সেলোনাকে পরিশোধ করতে হবে আরও ৮০ মিলিয়ন ইউরো। তবে বার্সেলোনা ব্যাপারটি মানতে নারাজ। তাদের মতে, তারা সঠিক ফি দিয়েই এই বিশ্বকাপজয়ীকে দলে ভিড়িয়েছে।

তবে অ্যাটলেটিকো নাছোড়বান্দা, তারা লা লিগা কর্তৃপক্ষ এবং স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের কাছে আপিল করেছে যে, বার্সেলোনা যদি আরও ৮০ মিলিয়ন ইউরো না দেয়, তাহলে যেন গ্রিজমানকে বার্সেলোনার হয়ে লা লিগায় খেলতে না দেওয়া হয়। এখন দেখা যাক, কোথাকার জল কতদূর গড়ায়। গ্রিজমানের জন্য আরও ৮০ মিলিয়ন দেয়া লাগলে আসলেই বার্সেলোনা দেবে কি না, সেটি একটি বড় প্রশ্ন। এদিকে গ্রিজমান বার্সেলোনার হয়ে কয়েকটি প্রীতি ম্যাচে খেলেও ফেলেছেন, দলের সতীর্থদের সাথে দেখা যাচ্ছে তার দারুণ রসায়ন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ তাই এখন বার্সেলোনা ভক্তদের কাছে একটি যন্ত্রণার নাম; শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও!

এডেন হ্যাজার্ড 

অবশেষে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন এডেন হ্যাজার্ড; Image Source: Le Soir 

প্রতিবার দলবদলের মৌসুমে আর কোনো গুজব শোনা যাক আর না যাক, একটি গুজব শোনা যায়ই, এডেন হ্যাজার্ড রিয়াল মাদ্রিদে আসছেন। হ্যাজার্ডও মিডিয়ায় বেশ উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে গুজবের পালে হাওয়া লাগিয়েছেন গত কয়েক বছরে। এছাড়া তার যে আজন্ম লালিত স্বপ্ন রিয়াল মাদ্রিদে খেলা, সে কথা কে না জানে! গত কয়েক মৌসুমে হচ্ছে হচ্ছে করে না হলেও এবার তাই চুক্তি হয়েই গেলো, রিয়ালের যে উপায় ছিল না!

রোনালদো যাওয়ার পর প্রথম মৌসুম কেটেছে কোনো ট্রফি ছাড়াই। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাই দলে পরিবর্তন আনতেই হতো। সেজন্যই হ্যাজার্ডকে ১০০ মিলিয়নে দলে ভেড়ানো, অ্যাড-অন মিলিয়ে যা গিয়ে দাঁড়ায় ১৩০ মিলিয়নে। বলতে গেলে সস্তায়ই বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কে পেয়েছে মাদ্রিদ। অবশ্য চেলসির বিক্রি না করে উপায় ছিল না। হ্যাজার্ডের চুক্তির মেয়াদ ছিল আর বছরখানেক। তার মানে, এখন বিক্রি না করলে বছরখানেক পর তাদের সেরা তারকাকে তাদের যেতে দিতে হত বিনামূল্যে! রিয়াল সুযোগ হাতছাড়া করেনি। এবার দেখবার পালা, নিজের ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পর সেই সুযোগ কীভাবে কাজে লাগান এই বেলজিয়ান তারকা।

লুকা ইয়োভিচ 

রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন লুকা ইয়োভিচও; Image Source: The National

গত কয়েক মৌসুম ধরেই মাদ্রিদিস্তাদের হতাশার আরেক নাম করিম বেনজেমা। অভিজ্ঞ এই স্ট্রাইকার সহজ সুযোগ যেমন নষ্ট করতেন, তেমনি বড় ম্যাচগুলোয় দর্শক-সমর্থকদের হতাশ করতেন। আর তাই ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ও জিনেদিন জিদানকে তার বিকল্পের কথা ভাবতে হয়, কারণ বয়সও তো হচ্ছে এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকারের। আর তাই আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ৬০ মিলিয়নের বিনিময়ে সার্বিয়ার ২১ বছর বয়সী স্ট্রাইকার লুকা ইয়োভিচকে দলে ভেড়ায় মাদ্রিদের সাদা দল। আগের মৌসুমে দুর্দান্ত খেলা ইয়োভিচের সাথে বার্সেলোনার গুঞ্জন থাকলেও শেষ হাসি হাসে কাতালানদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরাই, দলে নেয় ইয়োভিচকে।

গত মৌসুমে ইয়োভিচ সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচে করেন ২৭ গোল ও ৭ অ্যাসিস্ট। বুন্দেসলিগায় ৩২ ম্যাচে ১৭ গোল ও ৬ অ্যাসিস্টের পাশাপাশি ইউরোপা লিগে করেন ১০ গোল ও ১ অ্যাসিস্ট। তার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে তার দল ফ্রাঙ্কফুর্ট পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে, তবে সেখানে পেনাল্টিতে তাদের বিদায় নিতে হয় পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া চেলসির কাছে হেরে। সার্বিয়ার হয়ে এখন পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচ খেলেছেন ইয়োভিচ, সেখানে করেছেন দু’টি গোল।

জোয়াও ফেলিক্স 

ফেলিক্স এখন বিশ্বের চতুর্থ দামি খেলোয়াড়; Image Source: beIN Sports

তাকে বলা হয়ে থাকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর উত্তরসূরি। সেটি হতে পারবেন কি না, তার জবাব দেবে সময়। কিন্তু তাকে যে দাম দিয়ে কিনেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, তাতে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছে অনেকেরই। ১৯ বছর বয়সী এই পর্তুগিজ উইঙ্গারকে বেনফিকা থেকে মাদ্রিদের লাল দল কিনেছে ১২৬ মিলিয়নের বিনিময়ে, অর্থাৎ ফেলিক্স এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়দের তালিকায় আছেন চতুর্থ স্থানে। অনেক সময়ই এ ধরনের প্রাইস ট্যাগের ভার সহ্য করতে পারেন না অনেক তরুণ খেলোয়াড়, তবে প্রি-সিজনে এখন পর্যন্ত দারুণ ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। জুয়া খেলতে পারদর্শী অ্যাটলেটিকো’র আগের জুয়ার নাম ছিল সার্জিও আগুয়েরো। তাকে নিয়ে কি বেশি কিছু বলার দরকার আছে? 

পর্তুগীজ লিগে ২৬ ম্যাচে ১৫ গোল ও ৯ অ্যাসিস্ট, ইউরোপায় ৬ ম্যাচে তিন গোল ও এক অ্যাসিস্ট – সব মিলিয়ে গত মৌসুমে ৪৩ ম্যাচে ২০ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট করেন পর্তুগালের এই বিস্ময়বালক। দারুণ পারফরম্যান্সের ফল হিসেবে ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলেও, যদিও ম্যাচ খেলেছেন মাত্র একটি। ফেলিক্স দামের ভারে ভেঙে পড়েন, নাকি নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়, সেটিই এখন দেখবার বিষয়।

ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং 

ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এখন বার্সেলোনার; Image Source: Tribuna.com

গত মৌসুমের আয়াক্স দল যেন তারার হাট, তাদের দুর্দান্ত প্লেয়িং স্টাইল আর অদম্য মানসিকতা মন জয় করেছে সবার। আর সেই দলের মাঝমাঠের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, যিনি কি না তাদের সেই দুর্দান্ত মাঝমাঠের কলকাঠি নেড়েছিলেন। যদিও গ্রীষ্মেই ফ্রেঙ্কি বার্সেলোনায় যোগ দেন, বার্সেলোনা তার সাথে চুক্তি সম্পন্ন করে রেখেছিল বেশ কয়েক মাস আগেই। ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজির সাথে দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করে ফ্রেঙ্কি’র সই আদায় করে নেয় বার্সা। এজন্য তাদের গুণতে হয় ৭৫ মিলিয়ন ইউরো। শুধু আয়াক্স নয়, ডাচ দলের হয়েও দুর্দান্ত খেলেছেন এই মিডফিল্ডার। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার পর যে ক’টি গা-গরমের ম্যাচ খেলেছেন, কোনোটি দেখেই মনে হয়নি, সবেমাত্র এই দলে যোগ দিয়েছেন তিনি। সহজাতভাবেই ফ্রেঙ্কির খেলার ধরন বার্সেলোনার প্লেয়িং স্টাইলের সাথে মিলে যায়, আর তাতেই এতটা স্বাচ্ছন্দ্যে মানিয়ে নিয়েছেন এই ডাচ তরুণ। 

ডাচ লিগে গত মৌসুমে সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছেন ৩১টি, সেখানে তার পাসিং অ্যাকুরেসি ৯১%, ম্যাচপ্রতি কী পাস দিয়েছেন ১.৫টি করে। প্রতি ম্যাচে গড়ে ইন্টারসেপশন করেছেন ১.৪টি, ম্যাচপ্রতি ড্রিবল সম্পন্ন করেছেন ২টি করে, ৭৭ শতাংশ সাফল্যের হারে। সবচেয়ে অবিশ্বাস্য যেটি, ৩১ ম্যাচে লাল কার্ড দূরে থাক, হলুদ কার্ডও দেখেননি একবারও! চ্যাম্পিয়নস লিগে ম্যাচপ্রতি পাসিং অ্যাকুরেসি ৮৯%, ইন্টারসেপশন ১.৭টি করে। ম্যাচপ্রতি ১.৩টি ড্রিবল ৭৭% সাফল্যের সাথে, হলুদ কার্ড পেয়েছেন দু’টি। মিডফিল্ডের তিনটি পজিশনেই খেলতে সক্ষম এই সব্যসাচী মিডফিল্ডার এখন বার্সেলোনা দলের প্রথম একাদশে নিজের জায়গা পাকা করতে পারেন কি না, সেটিই দেখার বিষয়।

ম্যাথায়াস ডি লিট

অনেক নাটকের পর ডি লিট যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে; Image Source: Stadium Astro

আয়াক্সের দুর্দান্ত দলটির অধিনায়ক এই ১৯ বছরের তরুণকে নিয়েই বোধহয় এবারের দলবদল মৌসুমে চলেছে সবচেয়ে বেশি জল্পনা-কল্পনা। একবার বার্সেলোনা, তো আরেকবার পিএসজি, তো একবার ম্যানসিটি, নাম উঠেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরও। তবে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৮৫.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ডি লিট যোগ দিয়েছেন জুভেন্টাসে, গোল করে যাদের বিদায় করেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। দারুণ প্রাণশক্তি, দুর্দান্ত ডিফেন্ডিং আর অদম্য স্পৃহা – এই তিনটিই ডি লিটের পরিচয় বহন করে, এগুলো দেখিয়েই ডি লিট বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন। জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম গোলটা আত্মঘাতী হলেও সেখানে যে ডি লিট থামবেন না, সেটা আলাদা করে বলবার প্রয়োজন নেই। 

গত মৌসুমে ডাচ লিগে তার পাসিং অ্যাকুরেসি ৯০%, ক্লিনশিট সব মিলিয়ে ১৫টি। ম্যাচপ্রতি ইন্টারসেপশন ১.১টি, প্রতি ম্যাচে ট্যাকেল জিতেছেন ০.৫টি করে, প্রতি ম্যাচে ক্লিয়ারেন্স করেছেন ৪টি করে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ১১ ম্যাচে তার পাসিং অ্যাকুরেসি ৮৫%, প্রতি ম্যাচে ইন্টারসেপশন ১.৪টি। প্রতি ম্যাচে ট্যাকল জিতেছেন ১.১টি এবং ক্লিয়ারেন্স করেছেন ৪.২টি করে। পরিসংখ্যান তো তার পক্ষে কথা বলেই, যারা তার খেলা দেখেছেন তারা নির্দ্বিধায় বলবেন, জুভেন্টাসের জহুরি চোখ হীরে চিনতে ভুল করেনি।

অ্যারন রামসি

ফ্রি ট্রান্সফারে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন রামসি; Image Source: Juvefc.com

রায়ান শক্রসের সেই ট্যাকেলের কথা কি অ্যারন রামসির এখনও প্রতিদিন মনে পড়ে? বোধহয় না, রামসি যে সেই ট্যাকেল থেকে চলে এসেছেন বহু, বহুদূরে!

বেশ কয়েক মৌসুম ধরেই ছিলেন আর্সেনালের সেরা খেলোয়াড়, কিন্তু তাতেও আর্সেনাল বোর্ড তাকে তার চাওয়া অনুযায়ী বেতন দিতে রাজি ছিল না। আর তাতেই রামসি বেঁকে বসেন, চুক্তি সই করতে রাজি হন না। কন্ট্রাক্টের শেষ ছয় মাসে প্রবেশ করার কিছুদিন পরই জুভেন্টাসের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করেন, যে চুক্তি তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতন পাওয়া মিডফিল্ডারদের একজন বানিয়েছে। আর্সেনাল হয়তো এখন বুঝবে না তারা কী হারিয়েছে, তবে এরকম একজন বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডারের অভাব রামসির প্রতিটি ইনজুরির সময় টের পেয়েছে গানার্সরা, এবার পাবে পুরো মৌসুমজুড়েই। আর জুভেন্টাস? জুভেন্টাসের যে পৌষ মাস, সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর্দান্ত এই ওয়েলশ মিডফিল্ডারকে তারা পেয়ে গিয়েছে বিনামূল্যে, লটারি জেতার মতোই ব্যাপারটা!

গত মৌসুমে রামসি সব মিলিয়ে গোল করেছিলেন ছয় গোল আর সাত অ্যাসিস্ট, কিন্তু তার অসাধারণত্ব ছিল আর্সেনালের ভঙ্গুর মিডফিল্ডকে সচল রাখায়। সে দায়িত্ব এবার কে নেবেন, সে প্রশ্নটা গানার্সদের মাথায় ঘোরপাক খাবারই কথা, নাকি?  

হ্যারি ম্যাগুইরে 

বিশ্বের সবচেয়ে দামি ডিফেন্ডার হিসেবে ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন ম্যাগুইরে; Image Source : Mirror

বিশ্বের সবচেয়ে দামী ডিফেন্ডার। জ্বি হ্যাঁ, হ্যারি ম্যাগুইরে এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ডিফেন্ডার। ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে লেস্টার সিটি থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন এই ইংলিশ সেন্টারব্যাক, সাথে কেড়ে নিয়েছেন ভার্জিল ভ্যান ডাইকের বিশ্বের সবচেয়ে দামি ডিফেন্ডারের তকমাটিও। গত কয়েক মৌসুম ধরেই ম্যানচেস্টারের লাল দলের রক্ষণভাগের অবস্থা তেমন সুবিধার না, আর সেটি ঠিক করতে এবার উঠেপড়ে লেগেছিল তাদের ম্যানেজমেন্ট। অনেকদিন ধরেই ম্যাগুইরেকে কেনার চেষ্টা করছিলো ইউনাইটেড, অবশেষে সফল হলো তারা। 

গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ৩১ ম্যাচ খেলেছেন এই ইংলিশ ডিফেন্ডার, ম্যাচপ্রতি ইন্টারসেপশন ১.২টি, ক্লিয়ারেন্স ৪.৯টি। ইউনাইটেডে রিও ফার্ডিনান্ডের রেখে যাওয়া পাঁচ নম্বর জার্সি পরবেন ম্যাগুইরে। সেই লেগ্যাসি ধরে রাখতে পারবেন কি না, দেখার বিষয় এটাই। 

নিকোলাস পেপে

ট্রান্সফার রেকর্ড গড়ে পেপেকে দলে ভিড়িয়েছে আর্সেনাল; Image Source: Sky Sports

লিলে থেকে ৮০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আর্সেনালে যোগ দিয়েছেন নিকোলাস পেপে, তবে দাম দেখে আকাশ থেকে পড়েছেন অনেকেই, আর্সেনাল এত টাকা দিয়ে খেলোয়াড় কিনল?

শান্ত হয়ে বসুন, টাকাটা আর্সেনাল দেবে ইনস্টলমেন্টে। তবে আর্সেনাল যে তাদের এমনিতেই ধারালো আক্রমণভাগে আরও একটি মারাত্মক অস্ত্র যোগ করল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রাইট উইঙ্গার পেপের গতি দারুণ, তার সাথে আছে গোল করার সহজাত প্রবণতা। গত মৌসুমে লিলের হয়ে পেপে ৩৮ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ২২টি, করিয়েছেন ১১টি। অর্থাৎ, ৩৮ ম্যাচে ৩৩ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি! তার এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই লিলে লিগ শেষ করেছে দ্বিতীয় পজিশনে। আর্সেনাল ফ্যানরাও এরকম পারফরম্যান্সের আশায়ই রয়েছেন। আইভরিয়ান এই স্ট্রাইকার তার স্বদেশী দিদিয়ের দ্রগবার মতোই প্রিমিয়ার লিগ মাতাতে পারেন কি না, সেটির জন্যই এখন অপেক্ষা। 

ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ

‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ এখন চেলসির; Image Source: The Telegraph

ভক্তরা তাকে আদর করে ডাকে ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা’ নামে। ২০ বছর বয়সী এই মার্কিন উইঙ্গার প্রায় বছর তিনেক ধরেই বুন্দেসলিগায় দারুণ খেলে যাচ্ছেন, এজন্যই ৬৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তাকে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে কিনে নেয় চেলসি। তবে তখনই ছয় মাসের লোনে আবার বরুশিয়াতেই পাঠানোয় পুলিসিচ চেলসি দলে যোগ দিলেন গ্রীষ্মেই। 

গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় করেছেন চার গোল ও চার অ্যাসিস্ট, চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করেন একটি। চেলসিতে পুলিসিচের জন্য সময়টা হবে বেশ চ্যালেঞ্জিং, কারণ মাত্র ক’দিন আগেই স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ ছেড়েছেন চেলসির সেরা খেলোয়াড় এডেন হ্যাজার্ড। তার জায়গা পূরণের দায়িত্বটা দিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের এই তরুণ তারকাকেই, এত দাম দিয়ে তাকে কেনার পেছনে একমাত্র যুক্তি এটিই। এখন সময়ই বলে দেবে, পুলিসিচ পারবেন কি না!

ট্যাঙ্গুই এনডম্বেলে 

অলিম্পিক লিও থেকে স্পার্সে যোগ দিয়েছেন এনডম্বেলে; Image Source: Tottenham Hotspur

গত মৌসুমে একজন খেলোয়াড়ও দলে টানেনি টটেনহ্যাম হটস্পার। তবে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে রানার্সআপ আর নতুন স্টেডিয়ামের কাজ শেষ হওয়ায় এবার টটেনহ্যামের ইচ্ছা ছিল দলে বেশ কিছু নতুন মুখ আনা, বিশেষ করে একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। কারণ সেখানেই যে বারবার ঝামেলায় পড়ছিল স্পার্সরা! আর এজন্যই ক্লাব রেকর্ড ৬২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তারা লিওঁ থেকে কিনে নেয় ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার ট্যাঙ্গুই এনডম্বেলেকে। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এনডম্বেলে গত পুরো সিজনজুড়েই ছিলেন অসাধারণ ফর্মে, সাথে ছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির রাডারে। দারুণ পাসিং, বল হোল্ড করার ক্ষমতা এবং অসাধারণ স্ট্যামিনা এনডম্বেলেকে স্পার্সের স্টাইলের সাথে মানিয়ে নিতে খুব কষ্ট করতে হবে না। স্পার্স ফ্যানদের জন্য সুখবর এই যে, বহুদিন পর পুরো মাঝমাঠ সামলানোর কাজ একা ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের করতে হবে না! 

অ্যারন ওয়ান-বিসাকা

ক্রিস্টাল প্যালেস থেকে ইউনাইটেডে যোগ দিয়েছেন অ্যারন ওয়ান-বিসাকা; Image Source: Manchester United

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্সের সমস্যার কথা বলা হয়েছে আগেই। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফুলব্যাকরা আক্রমণ করার ক্ষেত্রেও পারদর্শী ছিলেন, সেটা বলা যাবে না। আর এজন্যই একই সাথে আক্রমণে ধার এবং রক্ষণ শক্তিশালী করার জন্য ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ক্রিস্টাল প্যালেস থেকে অ্যারন ওয়ান-বিসাকাকে দলে ভেড়ায় ম্যানচেস্টারের লাল দল। 

গত মৌসুমেই মূলত ওয়ান-বিসাকার উত্থান, ক্রিস্টাল প্যালেসের হয়ে মাঠের ডান পাশ দিয়ে ত্রাস ছড়িয়েছিলেন তিনি। দারুণ গতি, নিখুঁত ট্যাকলিং আর দারুণ ক্রসিং – এই তিনটি মিলিয়ে ওয়ান-বিসাকা হতে পারে রাইটব্যাক পজিশনে আপনার আদর্শ খেলোয়াড়। আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া কিংবা অ্যাশলি ইয়াং, কেউই এই পজিশন থেকে দলকে ভালো সার্ভিস দিতে পারেননি। রেড ডেভিলরা আশা করবে, ওয়ান-বিসাকা পারবেন।  

লুকাস হার্নান্দেজ

৮০ মিলিয়নের বিনিময়ে লুকাস এখন বায়ার্নের; Image Source: FC Bayern

বায়ার্নের ডিফেন্সে সমস্যা বেশ ক’দিন ধরেই। হ্যামেলস-বোয়াটেং বুড়িয়ে যাচ্ছেন, শ্যুলের ফর্মও সুবিধার না। এজন্যই বায়ার্নের প্রয়োজন ছিল আরেকজন সেন্টারব্যাক, আর তাই তারা লুকাস হার্নান্দেজের বাই-আউট ক্লজের পুরো ৮০ মিলিয়ন ইউরো মিটিয়ে দিয়ে তাকে নিয়ে আসে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে। ২৩ বছর বয়সী এই বিশ্বকাপজয়ী যদিও বিশ্বকাপে ফ্রান্সের হয়ে খেলেছিলেন লেফটব্যাক পজিশনে, তবে অ্যাটলেটিকো ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়টা তিনি পার করেছেন সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলেই। তবে তার লেফটব্যাক হিসেবে খেলতে পারার ক্ষমতা বায়ার্নকে সুযোগ দেয় ডেভিড আলাবাকে বিশ্রাম করানোর। 

গত মৌসুমে লম্বা সময় ইনজুরিতে থাকায় ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৪টি, সেখানে ম্যাচপ্রতি ইন্টারসেপশন ১টি, ম্যাচপ্রতি ট্যাকেল ১.৮টি ও ম্যাচপ্রতি ক্লিয়ারেন্স ৩.৪টি। 

ফারল্যান্ড মেন্ডি

লেফটব্যাক ফারল্যান্ড মেন্ডি যোগ দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদে; Image Source: Goal 

লেফটব্যাকে মার্সেলো গত মৌসুমে ঠিক মার্সেলো ছিলেন না, ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। সার্জিও রেগুইলন বেশ ভালো খেললেও তাকে জিনেদিন জিদানের তেমন পছন্দ হয়নি, রিয়াল মাদ্রিদের তাই দরকার ছিল নতুন লেফটব্যাকের। আর এজন্যই অলিম্পিক লিওঁ থেকে ৪৮ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তারা দলে ভেড়ায় ফারল্যান্ড মেন্ডিকে। মেন্ডিকে বার্সেলোনা বেশ কিছুদিন স্কাউট করলেও তার দামের কারণে পিছিয়ে যায় তারা, আর এই সুযোগে রিয়াল সাইন করায় বিশ্বের অন্যতম সেরা এই লেফটব্যাককে। 

গত মৌসুমে লিওঁ’র হয়ে লিগে ম্যাচপ্রতি কী পাস দিয়েছেন ১.৩টি, তার লং বল অ্যাকুরেসি ৭০%। ম্যাচপ্রতি ইন্টারসেপশন ১.২টি, ম্যাচপ্রতি ক্লিয়ারেন্স করেছেন ১.৩টি। সাথে যোগ করুন দুর্দান্ত গতি আর আক্রমণ করার ক্ষুধা; রিয়াল মাদ্রিদ যে দারুণ একজন লেফটব্যাক পেয়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। 

কিয়েরন ট্রিপিয়ার 

ট্রিপিয়ারের গন্তব্য অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ; Image Source: The National

ইংলিশ প্লেয়াররা সাধারণত ইংল্যান্ডে থাকতেই পছন্দ করেন। তবে কিয়েরন ট্রিপিয়ার একটুখানি ব্যতিক্রম। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের রাইটব্যাকে প্রথম পছন্দ ট্রিপিয়ার যে টটেনহ্যাম ছেড়ে যোগ দিয়েছেন স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে!

উয়েফা নেশনস লিগ শেষ হওয়ার পর থেকেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল, ক্লাব ছাড়ছেন ট্রিপিয়ার। আর সেই সুযোগেই মাত্র ২২ মিলিয়নের বিনিময়ে তাকে দলে ভেড়ায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। 

ট্রিপিয়ারকে বলা হয় এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে পারফেক্ট সেটপিস টেকারদের একজন। কর্নার কিংবা ইনডিরেক্ট ফ্রি-কিক – দু’টির ডেলিভারির ক্ষেত্রেই তার ধারাবাহিকতার জুড়ি মেলা ভার। ডিরেক্ট ফ্রি-কিকেও দারুণ এই ফুলব্যাক মাঠের ডান পাশ থেকে করে যান একের পর এক নিখুঁত ক্রস। মাত্র ২২ মিলিয়ন দিয়ে অ্যাটলেটিকো যে দলবদলের বাজারে বিরাট দাও মেরেছে, সেটি কি আর আলাদা করে বলতে হবে? 

রদ্রি 

সিটিতে যোগ দিয়ে ইতঃমধ্যেই শিরোপা জিতে ফেলেছেন রদ্রি; Image Source: Sky Sports

ম্যানচেস্টার সিটি’র এই দলটিকে বলা হয় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে পরিপূর্ণ দল। সব পজিশনের ব্যাকআপ খেলোয়াড়েরা অনেক প্রথম সারির ক্লাবে স্টার্ট করবেন, এমন একটা অবস্থা। তবে তাদের এই দলেও খামতি ছিল, সেটি ছিল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার পজিশনে। ফার্নান্দিনহোর বয়স যেমন হয়েছে, তেমনই প্রায়ই বড় ম্যাচে জঘন্য খেলেন তিনি, যা দলকে ডোবায়। আর এজন্যই ম্যানচেস্টার সিটি নতুন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার খুঁজছিল। ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে না পেয়ে তারা তাই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের রদ্রি’র ৭০ মিলিয়ন রিলিজ ক্লজ মিটিয়ে দিয়ে তাকে ইতিহাদে নিয়ে আসে। 

একজন বল-প্লেয়িং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারেরে সব বৈশিষ্ট্যই রদ্রির মধ্যে বর্তমান। দারুণ পাসিং অ্যাকুরেসির সাথে দুর্দান্ত বল হোল্ড করার ক্ষমতা, সাথে যোগ করুন গেম রিডিংয়ের সহজাত বৈশিষ্ট্য। পেপ গার্দিওলার সিটি দলে যেসব ছিঁদ্র ছিলো, সেসবও তিনি বন্ধ করে ফেলছেন। প্রিমিয়ার লিগের দলগুলোর জন্য অশনি সংকেত তো বটেই, তাই না? 

জোয়াও ক্যান্সেলো

জোয়াও ক্যান্সেলোর নতুন ঠিকানা ম্যানচেস্টার সিটি; Image Source : Manchester Evening News

সিটির রাইটব্যাক পজিশনে কাইল ওয়াকারের ব্যাকআপ হিসেবে ছিলেন দানিলো, কিন্তু পেপ গার্দিওলা যে নিখুঁত দল তৈরির মিশনে নেমেছেন, সেটায় দানিলোর চেয়ে প্রয়োজন আরও ভালো কাউকে। সাথে ভিনসেন্ট কোম্পানির বিদায়ের পর কাইল ওয়াকারকে খেলা লাগতে পারে সেন্টারব্যাক পজিশনে, নিয়মিত রাইটব্যাকে খেলার জন্য তাই সিটির দরকার ছিল দারুণ এক রাইটব্যাকের। দানিলোর সাথে ২৮ মিলিয়ন দিয়ে সিটি তাই জুভেন্টাস থেকে নিয়ে এসেছে জোয়াও ক্যান্সেলোকে, যাকে ধরা হয় বিশ্বের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক রাইটব্যাকদের একজন হিসেবে। 

রক্ষণে ক্যান্সেলো দুর্দান্ত নন, তবে আক্রমণে তার জুড়ি মেলা ভার। এক্সপ্রেস গতি, দারুণ ক্রসিং ও ফাইনাল থার্ডে দারুণ ডিসিশন মেকিং – সিটির ফ্রি ফ্লোয়িং ফুটবলের সাথে মিলিয়ে নিতে জোয়াও ক্যান্সেলোর কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা নয়। সহজ কথায়, ভালো একজন রাইটব্যাকই পেয়েছে ম্যানসিটি। তাদের দলের গভীরতা দেখে প্রিমিয়ার লিগের সব দলেরই তাই ভয় পাওয়া উচিত! 

এডার মিলিতাও

২১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক মিলিতাও পোর্তো থেকে যোগ দিয়েছেন রিয়ালে; Image Source: Arizona Daily Star

ডিফেন্সে রিয়াল মাদ্রিদের সমস্যা আজকের নয়। তবে আক্রমণে একজন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকায় সেই খামতিগুলো টের পাওয়া যেত না। কিন্তু গত মৌসুমে রোনালদো নেই, গোল শোধ করবার মতো কেউ ছিল না, আর চোখের সামনে প্রকট হয়ে ফুটেছে ডিফেন্সের সমস্যাগুলো। রামোস দুর্দান্ত ডিফেন্ডার, তবে তার আক্রমণে বারবার উঠবার মানসিকতা দলকে বারবার ঠেলে দেয় খাদের কিনারায়, সাথে যোগ করুন রাফায়েল ভারানের অফ ফর্ম। এসব মিলিয়েই রিয়ালের দরকার ছিল নতুন একজন সেন্টারব্যাক, তাই তারা ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে পোর্তো থেকে ২১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান সেন্টারব্যাক এডার মিলিতাওকে দলে ভেড়ায়। 

রাইটব্যাক পজিশনেও খেলতে পারা মিলিতাও এর সবচেয়ে বড় শক্তি তার ধারাবাহিকতা, সাথে এরিয়াল ডুয়েলে দুর্দান্ত এই ডিফেন্ডার রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্সের সমস্যাগুলো সমাধান করবেন, মাদ্রিদিস্তারা এই আশাই করছেন বৈকি!

নাবিল ফেকির

অলিম্পিক লিওঁ থেকে রিয়াল বেটিসে যোগ দিয়েছেন নাবিল ফেকির; Image Source: Hindustan Times

নাবিল ফেকিরের ‘কপাল খারাপ’ই বলতে হবে। কোথায় খেলার কথা লিভারপুলে, আর এখন কি না যোগ দিচ্ছেন রিয়াল বেটিসে।

গত গ্রীষ্মে লিভারপুলের সাথে সবকিছু পাকা হয়ে যাওয়ার পর শেষ মুহূর্তে তার পুরনো হাঁটুর সমস্যার জন্য তাকে দলে ভেড়ায়নি লিভারপুল। আর এই মৌসুমের পর চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে বিধায় তাকে বিক্রি করে দেয় অলিম্পিক লিওঁ, বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডারকে রিয়াল বেটিস দলে ভেড়ায় মাত্র ১৯.৭৫ মিলিয়নের বিনিময়ে। 

দারুণ ভিশন ও ড্রিবলিং, সাথে অ্যাটাকিং মিডফিল্ড থেকে গোল করার ক্ষমতা – সব মিলিয়ে নাবিল ফেকির আপনার দলের আক্রমণের মূল কারিগর হতে পারেন। জিওভান্নি লো সেলসোর জায়গায় খেলার জন্যই ফেকিরকে দলে ভিড়িয়েছে বেটিস, সেটি বোঝাই যাচ্ছে।

জুলিয়ান ব্র্যান্ট 

ব্র্যান্ট যোগ দিয়েছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে; Image Source: Bundesliga

জার্মানির জঘন্য ২০১৮ বিশ্বকাপে আশার আলো হয়ে ছিলেন জুলিয়ান ব্র্যান্ট। যতটুকু সময় খেলেছেন, প্রতিপক্ষ রক্ষণকে তটস্থ রেখেছিলেন এই উইঙ্গার। আর তাই ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের বিদায়ের পর তার জায়গায় খেলবার জন্য ২৩ বছর বয়সী এই জার্মান উইঙ্গারকে ২২.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভেড়ায় বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।

গতির সাথে ড্রিবলিং, সাথে লং রেঞ্জ শুটিং, আর নিখুঁত লং বল – লুসিয়ান ফাব্রে’র কাউন্টার অ্যাটাকিং স্টাইলের সাথে মানিয়ে নিতে খুব একটা সমস্যা হবে না ব্র্যান্টের। তবে জায়গা নিয়ে লড়াই করতে হবে অবশ্যই, সেটির ফলাফল ভালো হবে বলেই আশা করবে বরুশিয়ার ইয়েলো ওয়াল। 

থর্গান হ্যাজার্ড 

থর্গান হ্যাজার্ডের ঠিকানাও তার ভাইয়ের মতো বদলেছে এই গ্রীষ্মে; Image Source: India Ahead

পুলিসিছচে বিদায়ের পর বরুশিয়া কিনেছে এডেন হ্যাজার্ডের ছোট ভাই থর্গান হ্যাজার্ডকে। লেফট উইঙ্গার এই বেলজিয়ানকে বরুশিয়া মনশেনলাডবাখ থেকে কিনতে বরুশিয়ার খরচ হয়েছে ২৫.৫ মিলিয়ন ইউরো। 

গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় ৩৩ ম্যাচে ১০ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট করেছিলেন এই বেলজিয়ান, জার্মান কাপে করেছিলেন ৩ গোল ও এক অ্যাসিস্ট। মনশেনগ্লাডবাখের হয়ে ১৮২ ম্যাচে তিনি গোল করেছেন ৪৬টি, করিয়েছেন ৪৪টি। পুলিসিচের বিক্রি থেকে পাওয়া টাকা খরচের ক্ষেত্রে বরুশিয়া যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে, তা এক কথায় অসাধারণ। 

বেঞ্জামিন পাভার্ড 

বিশ্বকাপজয়ী পাভার্ডও যোগ দিয়েছেন বায়ার্নে; Image Source: Bavarian Football Works

বিশ্বকাপজয়ী এই ফ্রেঞ্চ রাইটব্যাককে বায়ার্ন মিউনিখ কিনেছে স্টুটগার্ট থেকে, ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। গত দুই মৌসুমে বায়ার্নের রাইট ব্যাক পজিশন সামলাচ্ছেন জশুয়া কিমিচ, যিনি আদতে একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। কিমিচের মিডফিল্ডার হিসেবে সামর্থ্যের সম্পূর্ণ ব্যবহারের জন্যই বায়ার্নের পাভার্ডকে কেনা, যেন রাইটব্যাক পজিশনটা সামলান এই ২৩ বছর বয়সী ফ্রেঞ্চ। 

পাভার্ডের অন্যতম সুবিধা হলো, তার রাইটব্যাকের পাশাপাশি সেন্টার ব্যাকে খেলবার ক্ষমতা, অর্থাৎ এটি বায়ার্নকে তাদের পজিশনগুলোয় অনেক বেশি অপশন দেবে। গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় পাভার্ড ম্যাচপ্রতি ইন্টারসেপশন করেছেন ১.৭টি, ম্যাচপ্রতি ক্লিয়ারেন্স করেছেন ৬.৪টি করে। বিশ্বকাপে যেমন দুর্দান্ত ছিলেন, বায়ার্ন চাইবে তাদের হয়েও তেমনই দুর্দান্ত থাকুন পাভার্ড। 

রদ্রিগো 

১৮ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান বিস্ময়বালক রদ্রিগো এখন রিয়াল মাদ্রিদের; Image Source: Goal

১৮ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ‘বিস্ময়বালক’কে রিয়াল মাদ্রিদ সান্তোস থেকে কিনেছে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। লেফট উইঙ্গার এই কিশোরকে মনে করা হয় ব্রাজিলের ভবিষ্যৎ, ভিনিসিয়াস জুনিয়রের পর আরেকজন ‘বিস্ময়বালক’কে দলে ভেড়াল রিয়াল মাদ্রিদ। 

ইতঃমধ্যেই প্রি-সিজনে তার প্রতিভার ঝলক দেখিয়েছেন রদ্রিগো, কিন্তু সেটি দিয়েও খুব সম্ভবত এখনই মূল দলে খেলা হচ্ছে না তার। আপাতত ‘বি’ দলের হয়েই মাঠ মাতাতে হবে তার, সেখানে ভালো পারফরমেন্স দেখাতে পারলেই অদূর ভবিষ্যতে সুযোগ মিলবে মূল দলে। 

জুনিয়র ফিরপো 

জর্ডি আলবার ব্যাকআপ হিসেবে বার্সেলোনায় এসেছেন জুনিয়র ফিরপো; Image Source: FC Barcelona

লুকাস ডিনিয়েকে বিক্রি করার পর থেকেই লেফটব্যাক পজিশনে জর্ডি আলবার কোনো ব্যাকআপ ছিল না বার্সেলোনার। গত মৌসুমে হুয়ান মিরান্দাকে খেলানো হলেও তিনি যে মূল দলের জন্য প্রস্তুত নন, সেটি বোঝা গিয়েছিল। তাই বার্সেলোনা হন্যে হয়ে খুঁজছিল একজন লেফটব্যাক। ফারল্যান্ড মেন্ডির দাম বেশি হওয়ায় তাই রিয়াল বেটিস থেকে ১৮ মিলিয়নের বিনিময়ে স্প্যানিশ লেফটব্যাক জুনিয়র ফিরপোকে দলে ভেড়ায় বার্সেলোনা, তবে সাথে আরও ১২ মিলিয়ন অ্যাড-অন আছে। 

গত মৌসুমে ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনাকে ৪-৩ গোলে হারায় বেটিস, সেখানে দুর্দান্ত খেলেন ফিরপো। পুরো মৌসুমজুড়েই দুর্দান্ত থাকা এই লেফটব্যাকের মূল শক্তি তার গতি ও ড্রিবলিং। ২১ বছর বয়সী এই লেফটব্যাক শুধু আলবার ব্যাকআপ নন, বরং বার্সেলোনার লেফটব্যাক পজিশনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও। ফিরপো’র ঘন ঘন ইনজুরিতে পড়ার সমস্যা রয়েছে, তবে কিউলরা আশায় আছে, বার্সেলোনার বিশ্বসেরা মেডিকেল টিম সেটির খেয়াল রাখবে। 

সেবাস্তিয়ান হলার 

সেবাস্তিয়ান হলার যোগ দিয়েছেন ওয়েস্টহ্যামে; Image Source: Sports Illustrated

লুকা ইয়োভিচের সাথে মিলে গত মৌসুমে ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে ত্রাস ছড়িয়েছিলেন সেবাস্তিয়ান হলার, আর তাকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেড। গত কয়েক মৌসুম ধরেই দারুণ সব খেলোয়াড় দলে ভেড়াচ্ছে লন্ডনের ক্লাবটি, হলার তাতে সর্বশেষ সংযোজন। 

গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় ২৯ ম্যাচে হলার করেছিলেন ১৫ গোল ও ৯ অ্যাসিস্ট; সাথে ইউরোপা লিগের ১০ ম্যাচে করেছিলেন ৫ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট। গত মৌসুমের আগুনে ফর্ম এই ২৫ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ধরে রাখবেন, এমনটাই আশা থাকবে হ্যামারদের। 

মইস কিন

ইতালিয়ান ‘বিস্ময়বালক’ মইস কিন এখন এভারটনের; Image Source: Royal Blue Mersey 

১৯ বছর বয়সী ইতালিয়ান সেনসেশন মইস কিনকে জুভেন্টাস থেকে ২৭.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে এভারটন। গত মৌসুমে জুভেন্টাস ও ইতালির হয়ে অভিষেকেই গোল করে তাক লাগিয়ে দেন এই উইঙ্গার, এবং তাকে কোনো বাই-ব্যাক ক্লজ ছাড়াই বিক্রি করে দেওয়ায় অবাক হয়েছে অনেকেই। গতি আর ড্রিবলিংয়ের সাথে গোল করার ক্ষমতাই কিনকে আকর্ষণীয় করে তোলে। 

গত মৌসুমে ‘সিরি-আ’তে কিন গোল করেছেন ৬টি, করিয়েছেন একটি; প্রতি ৮৯ মিনিটে তিনি করেছেন একটি গোল। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তিনটি ম্যাচ, সেখানেও গোল করেছেন দু’টি। অর্থাৎ, সবকিছু মিলিয়ে মইস কিন একজন ভবিষ্যৎয়ের তারকা, এবং মার্সিসাইডের নীল দলের ভক্তরা আশা করবে, তাদের দলের হয়ে প্রস্ফুটিত হবেন তিনি।

আদ্রিয়েন র‍্যাবিও 

পিএসজির সাথে বচসার পর র‍্যাবিও এখন জুভেন্টাসের; Image Source: blackwhitereadallover.com

আদ্রিয়েন র‍্যাবিওকে নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। পিএসজির সাথে চুক্তি নবায়ন করবেন না জানানোর পর পিএসজি তাকে খেলাতে আপত্তি জানায়, তাকে পাঠিয়ে দেয় অনূর্ধ্ব-২৩ দলের সাথে ট্রেনিং করতে। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু তার চাওয়া উচ্চাভিলাষী বেতন ও শুরু থেকেই প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে রাজি ছিল না বার্সেলোনা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ফিরিয়ে দিয়ে শেষ পর্যন্ত জুভেন্টাসের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেন এই ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার, জুভেন্টাস রামসির পর আরেকজন মিডফিল্ডারকে পেয়ে যায় বিনামূল্যে। 

দারুণ বল হোল্ডিং আর পাসিং এবিলিটির জন্য অনেক আগে থেকেই র‍্যাবিওকে চিন্তা করা হয় ভবিষ্যৎয়ের তারকা হিসেবে। কিন্তু ক্লাবের সাথে গোলমালে গত কয়েক মাসে ক্যারিয়ারটা শিকেয় তুলেছেন তিনি। জুভেন্টাস-ভক্তরা আশা করবেন, এবার ফুটবলেই মনোযোগ দেবেন এই তরুণ মিডফিল্ডার।

রোমেলু লুকাকু 

৭০ মিলিয়নের বিনিময়ে সান সিরোতে পাড়ি জমিয়েছেন লুকাকু; Image Source : Manchester Evening News

বেলজিয়ান এই স্ট্রাইকার ছিলেন চেলসিতে, তবে সেখানে সুযোগ না মেলায় এভারটনে গিয়ে ফুল হয়ে ফুটেছিলেন। এভারটনে দুর্দান্ত খেলার পুরষ্কার পান তিনি, প্রায় ৮৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে তাকে দলে ভেড়ায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, তার গায়ে চড়িয়ে দেয় নয় নম্বর জার্সি। ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম মৌসুমটা ভালোই কেটেছিলো তার, কিন্তু দ্বিতীয় মৌসুমের পর আর তার মন টিকছিলো না এখানে। আর আগের মৌসুমে সব মিলিয়ে ৪৫ ম্যাচে মাত্র ১৫ গোল আর চার অ্যাসিস্ট করার পর ইউনাইটেড ম্যানেজমেন্টও যে তার প্রতি খুব খুশি ছিলো না, সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তাই প্রথমে পউলো ডিবালার বদলে তাকে জুভেন্টাসের কাছে বিক্রি করতে চাইলেও, ডিবালা তাতে রাজি হননি। ইন্টার মিলান অনেক আগে থেকেই লুকাকুকে দলে ভেড়াতে চাচ্ছিলো, আর জুভেন্টাস পিছিয়ে যাওয়ায় সুযোগ পেয়ে যায় তারা, ৭০ মিলিয়নের বিনিময়ে তাকে নিয়ে আসে সান সিরোতে। আপাতত ট্রান্সফার ফি টা ৭০ মিলিয়ন হলেও, বিভিন্ন অ্যাড-অন সহ তা গিয়ে দাড়াতে পারে ৮০ মিলিয়নে। 

গতি আর শারীরিক শক্তিই লুকাকুকে অদম্য বানায়, তবে তার দুর্বলতার জায়গা হলো তার ফার্স্ট টাচ, যেটি নিয়ে প্রতিনিয়তই মিম তৈরি হয় ফুটবল বিশ্বে। তবে লুকাকু তার প্রতিভা এভারটনে দেখিয়েছেন, মিলান ফ্যানরা চাইবেন, সেটা এবার তাদের হয়েই দেখান এই বেলজিয়ান।

জিওভানি লো সেলসো 

লো সেলসোর ঠিকানা এবার হোয়াইট হার্ট লেন; Image Source: Evening Standard

ট্রান্সফার ডেডলাইন ডে তে ধারে রিয়াল বেটিস থেকে আর্জেন্টাইন প্লেমেকার জিওভানি লো সেলসোকে দলে ভিড়িয়েছে টটেনহ্যাম। আপাতত ধার হলেও চুক্তিতে বলা আছে, মৌসুম শেষে লো সেলসোকে কিনতেই হবে স্পার্সের। আপাতত লোন ফি ১৬ মিলিয়ন হলেও, মৌসুম শেষে তাই বেটিস পাবে আরও ৫০ মিলিয়ন, অর্থাৎ মোট টড়ান্সফার ফি গিয়ে দাঁড়াবে ৬৬ মিলিয়ন ইউরোয়। 

গত মৌসুমে বেটিসের হয়ে দুর্দান্ত ছিলেন সেলসো, ৪৬ ম্যাচে করেছিলেন ১৬ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট। ন্যু ক্যাম্পে গিয়ে বার্সেলোনাকে হারিয়েছিলো বেটিস, আর সেই ম্যাচে পুরো বার্সেলোনা দলকে নাচিয়ে ছেড়েছিলেন এই আর্জেন্টাইন। এর আগের মৌসুমেই পিএসজিতে সুবিধা করতে না পেরে বেটিসে এসেছিলেন সেলসো, আর সেখানেই দারুণ খেলে এবার চলে এলেন হোয়াইট হার্ট লেনে, ইউরোপিয়ান রানার্স-আপ দলে যোগ দিতে। 

This article talks about the major transfers that happened before the start of the 2019-20 season. 

Feature Image : Sky Sports

Related Articles