Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

একটি মৃত্যু ও একজন শিল্পীর ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠা

স্যামুয়েল মোর্স জন্মগ্রহণ করেন ১৭৯১ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে। শৈশব থেকেই তিনি ছবি আঁকতে ভালোবাসতেন। স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে নামজাদা চিত্রশিল্পী হবেন, তাই পড়াশোনার বিষয় হিসেবেও বেছে নিয়েছিলেন ফাইন আর্টসকে। স্বনামধন্য ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষে এ নিয়ে আরো পড়াশোনা করতে পাড়ি জমান লন্ডনের রয়্যাল আর্টস সোসাইটিতে। সেখানে ‘ডায়িং হারকিউলিস’ শিরোনামে একটি চিত্র এঁকে কিছুটা যশ-খ্যাতিও লাভ করেছিলেন।

পড়াশোনা শেষে ১৮১৫ সালের দিকে তিনি ফিরে আসেন আমেরিকায়। মোর্স মূলত ঐতিহাসিক চিত্র ও ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং আঁকতেন। কিন্তু এসব শিল্পের কদর তখন তেমন একটা ছিল না আমেরিকায়। টাকা-পয়সা তেমন আসতো না এ থেকে। তিনি তাই অর্থ-কড়ি আয়ের জন্য ল্যান্ডস্কেপ ছেড়ে মানুষের পোর্ট্রেট আঁকতে শুরু করেন। অভিজাত ব্যক্তিদের পোর্ট্রেট এঁকে টাকা-পয়সা বেশ ভালোই আসছিলো তার। প্রতিটি পোর্ট্রেটের জন্য প্রায় ১৬ থেকে ২০ ডলার নিতেন, যা সেসময়ে বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ।

ডায়িং হারকিউলিস; Source: pinterest.com

ভালোই চলছিলো সবকিছু। স্যামুয়েল মোর্সের সম্পদশালী হবার স্বপ্ন ছিল। ততটা সম্পদশালী না হতে পারলেও, বেশ স্বচ্ছল হয়ে উঠছিলেন। তবে কাজের খাতিরে তাকে প্রায়ই লম্বা সময় ধরে ঘরের বাইরে কাটাতে হতো আর এ কারণেই তার জীবনের সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাগুলোর একটি ঘটে যায়। মোর্সের একটি ব্যবসায়িক সফরের সময় তার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনকার মতো উন্নত ছিল না, তাই তার স্ত্রীর মৃত্যু-সংবাদ পৌঁছায়নি তার কাছে। কাজ শেষে তিনি যখন হাসিমুখে বাড়িতে ফিরলেন, ততক্ষণে তার স্ত্রীকে সমাধিস্থ করা হয়ে গেছে। প্রিয়তমা স্ত্রীকে শেষ দেখা দেখারও সুযোগ পাননি তিনি।

এ মর্মান্তিক  ঘটনাটি তাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে। দ্রুত সময়ে দূরদূরান্তে যোগাযোগের জন্য একটি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেন তিনি। কিন্তু তিনি একজন চিত্রশিল্পী। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কী-ইবা করতে পারেন? সুযোগ আসলো। বলা হয়ে থাকে, কেউ যখন সর্বান্তকরণে কিছু চায়, তখন পৃথিবীই তাকে সেদিকে নিয়ে যায়।

স্যামুয়েল মোর্সের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। ১৯৩২ সালে প্যারিসের ল্যুভর মিউজিয়ামে গিয়েছিলেন তিনি। পরিকল্পনা ছিল অনেকগুলো ক্লাসিক চিত্রকর্মকে একসাথে তিনি বড় একটি চিত্রকর্মে তুলে ধরবেন। তিনি তা করেছিলেনও। আর্থিকভাবে তেমন একটা সফল না হলেও তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘পেইন্টিং এন্ড স্কাল্পচার’ বিভাগে একটি চাকরি পেয়ে যান। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনাটি ঘটে ইউরোপ থেকে ফেরার পথে।

মোর্সের আঁকা তার স্ত্রী ও সন্তানের চিত্র; Source: wikioo.com

সমুদ্রে জাহাজে করে যখন ফিরছিলেন, তিনি দুজন যাত্রীর কথোপকথন শোনেন।  একজন আরেকজনের কাছে, পৃথিবী জুড়ে বিদ্যুৎ নিয়ে শুরু হওয়া নানারকম উদ্যোগের বর্ণনা দিচ্ছিল। এর মধ্যে দূরবর্তী যোগাযোগের জন্য বিদ্যুতের ব্যবহারের নিয়েও আলোচনা চলছিল তাদের মাঝে। মোর্সের মনে তার অতীত কাহিনী এসে ধাক্কা দিল। দ্রুত যোগাযোগের গুরুত্ব তার চেয়ে ভালো আর কে বোঝে! তাছাড়া নতুন শুরু হওয়া এ ক্ষেত্রে তিনি বেশ অর্থ-কড়ির সম্ভাবনাও দেখতে পেলেন। ৪১ বছর বয়সী মোর্স তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, টেলিযোগাযোগ ও বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করবেন তিনি।

যদিও পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়নে মোর্সের প্রথাগত কোনো শিক্ষা ছিলো না। তবে ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি মেরামত করার নেশা ছিল তার। সে জ্ঞানকেই তিনি কাজে লাগান এ ক্ষেত্রে। টানা দুই বছর পরিশ্রম করে তিনি প্রথম টেলিগ্রাফের ডিজাইন করলেন। তবে এটি তেমন একটা উন্নত ডিজাইন ছিল না আর সর্বোচ্চ একশ’ ফুট পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সিগন্যাল পাঠানো যেত এর মাধ্যমে। এটি উন্নত করার জন্য তিনি আরো দুজন ব্যক্তির সাহায্য নেন। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক লিনার্ড গেইল ও ছাত্র আলফ্রেড ভেইলকে সাথে নিয়ে তিনি টেলিগ্রাফের একটি উন্নত ডিজাইন তৈরি করেন।

টেলিগ্রাফের এ ডিজাইনটি ছিল একদমই সরল কিন্তু বেশ কার্যকরী। ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, সুইচ ও তড়িৎচুম্বকের সমন্বয়েই এটি তৈরি করা সম্ভব। ব্যাটারি বিদ্যুৎ প্রদান করতো আর সুইচের মাধ্যমে ক্রমাগত অন অফ করে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালে পাঠানো হত। এ সিগন্যালের প্যাটার্নের মধ্যেই বার্তা লুকানো থাকতো । আর তারের মাধ্যমে এ সিগন্যাল পৌঁছে যেত অপর প্রান্তে। সেখানে তড়িৎচুম্বকটি এ সিগন্যাল অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হতো। তা থেকে প্রাপক বুঝতো তার জন্য কী বার্তা এসেছে। এ মেসেজ পাঠানোর জন্য যে কোডিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল তাকেই আমরা মোর্স কোড হিসেবে জানি।

টেলিগ্রাফ নিয়ে কাজ করছেন মোর্স; Source: sciencesource.com

টেলিগ্রাফের মূল কাঠামো ডিজাইন করেছিলেন মোর্স। গেইল নিয়েছিলেন ব্যাটারির দায়িত্ব। তবে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বোধহয় তরুণ ছাত্র আলফ্রেড ভেইলের। ভেইলদের পারিবারিক মেশিন তৈরির কারখানা ছিল, সেখানে বাষ্প ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ তৈরি হতো। সে সূত্রে ভেইলের মেকানিক্যাল ডিজাইনের দক্ষতা ছিল অসাধারণ যা টেলিগ্রাফকে উন্নত করতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া মোর্সের এ প্রজেক্টে ভেইল তার পরিবার থেকে বিনিয়োগ আনেন। এর ফলে তারা টেলিগ্রাফের প্রথম প্রোটোটাইপ তৈরি করতে সক্ষম হন। এটি ১,০০০ ফুটেরও বেশি দূর পর্যন্ত সিগন্যাল আদান প্রদান করতে সক্ষম ছিল।

টেলিগ্রাফের নতুন ডিজাইন অনেকটা উন্নত হওয়া সত্ত্বেও এটি বাজারে তেমন একটা সাড়া ফেলতে পারেনি। মানুষের কাছে বিদ্যুৎ তখনো বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিনের সে বজ্রপাতে ঘুড়ি ওড়ানোর মতো অলৌকিক বা মজার কোনো ঘটনা। এর বাস্তবিক প্রয়োগে তেমন একটা উৎসাহ দেখায়নি তারা। ১৮৩৭ সালের দিকে মোর্স তার টেলিগ্রাফের পেটেন্টের আবেদন করেন। এর ঠিক পরপরই তিনি কিছুটা আশার আলো দেখতে পান যখন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট একটি টেলিযোগাযোগ-ব্যবস্থা স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করে। ফ্রান্সের সেফামোর সিস্টেমের কার্যকরিতা দেখে তারা এর প্রতি উৎসাহী হয়েছিল।

মোর্স তার টেলিগ্রাফ স্থাপনের জন্য একটি অফিশিয়াল প্রস্তাব পাঠান। তিনি চল্লিশ মাইলের টেলিগ্রাফ লাইনের স্থাপনের জন্য তিরিশ হাজার ডলারের তহবিল চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে লবিং করার জন্য মোর্স গেইল ও ভেইলকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াশিংটন ছুটে যান। কংগ্রেসম্যানদের টেলিগ্রাফের মাহাত্ম্য বোঝানোর জন্য প্রদর্শনী দেখান তারা। সবাই তাদের কাজ দেখে মুগ্ধ হলেও শেষপর্যন্ত তার প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়নি। ট্রেজারি মূলত এ বিষয়ে উৎসাহ দেখালেও এটিকে অতটা জরুরি বা প্রয়োজনীয় কিছু মনে করেনি। এ ব্যর্থতায় তিনজনই আশাহত হয়ে পড়েন।

আলফ্রেড ভেইল; Source: thinglink.com

তবে মোর্স ক্ষান্ত হননি। আমেরিকা থেকে নিরাশ হয়ে তিনি এবার ইউরোপে ভাগ্য পরীক্ষার জন্য ছুটলেন। ইংল্যান্ডে তিনি এ নিয়ে ঢুকতে পারেননি, কারণ সেখানে ইংল্যান্ডের উদ্ভাবক উইলিয়াম কুক ততদিনে আরো চমৎকার একটি টেলিগ্রাফ সিস্টেম উদ্ভাবন করে বসে আছেন। অবশ্য কুকের টেলিগ্রাফটি ছিল অনেক জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ। ফ্রান্স ও জার্মানিতে মোর্সের টেলিগ্রাফ কিছুটা সাড়া ফেললেও বিনিয়োগকারীদের টানতে পারেনি। আশার আলো দেখালো রাশিয়া, তাদের বিস্তীর্ণ ভূমির জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা তাদেরই বেশি জরুরি ছিল। মোর্স আমেরিকায় ফিরে এসে অপেক্ষায় রইলেন রাশিয়ার সিদ্ধান্তের জন্য।

এসময় তার টেলিগ্রাফে বেশ চমৎকার একটি উন্নতি আসে। মোর্স জোসেফ হেনরির সাথে দেখা করেছিলেন যিনি সেসময় তড়িৎচুম্বক বিষয়ের বেশ নামজাদা গবেষক। তিনি মোর্সকে তার নিজের গবেষণালব্ধ বিভিন্ন বিষয় জানান যা টেলিগ্রাফের উন্নয়নে কাজে লাগে। এর মধ্যে সবচেয়ে অসাধারণ ছিল, টেলিগ্রাফে ‘রিলে ট্রান্সমিটার’ ব্যবহারের ধারণাটি। রিলে সিগন্যালের শক্তি বাড়ায়, ফলে অনেক দূর পর্যন্ত সঠিকভাবে সিগন্যাল পাঠানো সম্ভব হয়। কিন্তু টেলিগ্রাফে এ উন্নয়নের ফলেও শেষপর্যন্ত রাশিয়া তাদের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।

এ পর্যায়ে এসে তাদের তিনজনের ছোট্ট দলটি ভেঙ্গে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তারা সবদিক থেকে নিরাশ হয়ে ফিরেছেন, অর্থ-কড়ি যা ছিল এ উপলক্ষে সেসবও শেষ হয়ে গেছে। টেলিগ্রাফ ছেড়েছুড়ে মোর্স পোর্ট্রেট তৈরি করার নতুন ফটোগ্রাফিক প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে পড়েন। টেলিগ্রাফ আবার তার মনোযোগ কাড়ে ১৮৪১ সালের দিকে। চার বছর আগে তিনি টেলিগ্রাফের পেটেন্টের জন্য যে আবেদন করেছিলেন তা গৃহীত হয়। এটি মোর্সকে নতুন করে আরো একবার চেষ্টা করার জন্য উৎসাহ দেয়। ১৮৪২ সালের দিকে এবার মোর্স একাই ওয়াশিংটনের পথ ধরেন তহবিলের জন্য নতুন কিছু কংগ্রেসম্যানকে রাজি করাতে।

মোর্সের আঁকা নিজের পোর্ট্রে‌ট; Source: royal-painting.com

এ যাত্রায় মোর্স সফল হলেন। অবশ্য এর পেছনে দুটি উল্লেখযোগ্য কারণ আছে। তিনি এবার টেলিগ্রাফের টেকনিক্যাল বিষয়ে কথা না বলে এর অর্থনৈতিক গুরুত্বের কথা বলেছিলেন। টেলিগ্রাফ স্থাপন করলে অর্থনৈতিকভাবে সরকারের কী কী লাভ হতে পারে সেসব দিক তুলে ধরেছিলেন কংগ্রেসম্যানদের সামনে। আরেকটি কারণ হলো এবারে টেলিগ্রাফ আগেকার মতো ততটা অপরিচিত কিছু ছিল না। ইংল্যান্ডের একটি রেল কোম্পানি ততদিনে কুকের টেলিগ্রাফ স্থাপন করেছে এবং বেশ সফলভাবেই তা করেছে তারা। এটি মোর্সের জন্য সুফল নিয়ে আসলো। ১৮৪৩ সালে কংগ্রেসের ভোটাভুটিতে তার টেলিগ্রাফের জন্য ত্রিশ হাজার ডলার তহবিল পাশ হয়ে গেল।

মোর্সের দায়িত্ব ছিল, ওয়াশিংটন ডিসি ও বাল্টিমোর এর মধ্যকার ৪৪ মাইল রাস্তাজুড়ে পরীক্ষামূলক টেলিগ্রাফ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা। তহবিল পেয়ে তিনি কাজে নেমে পড়লেন, দলে ফিরিয়ে আনলেন ভেইল ও গেইলকে। নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিলেন ইজরা কর্নেল। তবে তাদের জন্য কাজটা সহজ ছিল না। তাদের অনভিজ্ঞতার কারণে বাস্তবে এসে অনেক নিত্য নতুন সমস্যার উদ্ভব হতে শুরু করেছিল। যেমন একটি সমস্যা হয়েছিলো তার টানার ক্ষেত্রে। তারা মাটি খুঁড়ে এর মধ্য দিয়ে তার টেনেছিলেন। তারগুলো ছিল টানা লোহার তৈরি, এগুলোর ওপরের আস্তরণটিও তেমন একটা নির্ভরযোগ্য ছিল না। তাই কিছুদিন পরই মাটির সাথে লোহার বৈরিতার দরুন এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছিল।

এ সমস্যার ফলে দেখা গেল চুয়াল্লিশ মাইলের ভেতর দশ মাইল তার টানতে গিয়েই তহবিলে টানাটানি পড়ে যাচ্ছে। মোর্স এ সমস্যার সাময়িক সমাধানের জন্য ঠিক করলেন, মাটির ভেতর দিয়ে না নিয়ে তারা ওপর দিয়ে তার টানবেন। মাটি খোঁড়া বাদ দিয়ে রাস্তাজুড়ে কাঠের পিলার স্থাপন করা শুরু হলো। সেখানে টানানো হলো তার। মোর্স একে সাময়িক সমাধান হিসেবেই দেখছিলেন। তখন তিনি জানতেন না তার সাময়িক সমাধানটিই গোটা পৃথিবী স্থায়ী সমাধান হিসেবে মেনে নেবে।

টেলিগ্রাফ লাইন; Source: dtimm11111.wordpress.com

যা-ই হোক, অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তারা এ টেলিগ্রাফ লাইন সফলভাবে স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ২৪ মে, ১৮৪৪ সালে সম্পন্ন হলো আমেরিকার প্রথম টেলিগ্রাফ লাইন। ওয়াশিংটনের সুপ্রিম কোর্টে একটি ট্রান্সমিটার-রিসভার স্টেশন স্থাপন করা হলো, অন্য একটি করা হলো বাল্টিমোর ট্রেন স্টেশনে। মোর্স আমেরিকার পেটেন্ট অফিসের ডিরেক্টরের কন্যাকে আমন্ত্রণ জানালেন, প্রথম টেলিগ্রাফ বার্তা পাঠানোর জন্য। টেলিগ্রাফের কল্যাণে বাইবেলের একটি উক্তি বৈদ্যুতিক সিগন্যাল আকারে ওয়াশিংটন থেকে পাড়ি জমালো বাল্টিমোর- ‘What hath God wrought’।

এ বার্তার মধ্য দিয়ে এক নতুন যাত্রার সূচনা আরম্ভ হলো। এটি ছিলো তড়িৎচুম্বক ও টেলিযোগাযোগ খাতের প্রথম সম্মিলন। আজ আমরা যে যোগাযোগব্যবস্থা উপভোগ করছি, এই যে মোবাইল ফোন, মুহূর্তের মধ্যে দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মেসেজিং, ভিডিও কলিং এসবই এসেছে টেলিগ্রাফের পথ অনুসরণ করে।

তথ্যসূত্র:  Conquering the Electron by Derek Cheung , Eric Brach , page (36-41)

ফিচার ইমেজ: youtube.com

Related Articles