Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মার্ক পোরাট: স্মার্ট ফোনের জুলভার্ন

সময়টা ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি। ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউর প্রায় দ্বাররুদ্ধ একটি অফিসে কয়েকজন তরুণ দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন কেউ কেউ। কারো কারো আহার-নিদ্রা সব ওখানেই। রাতদিন বন্ধ কপাটের ভেতর কাজ চলছে। কী কাজ, কেউ জানে না। দুনিয়ার কারো সাথে তাদের যোগাযোগ নেই। তারা একটি ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির স্বপ্ন নির্মাণের কাজ করছে। যে ভবিষ্যৎ তখনো মানুষের নাগালের অনেক বাইরে। সাধারণের কল্পনার অগোচরে। সেই স্বপ্নবাজ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন যে অগ্রগামী তরুণ, তার নাম মার্ক পোরাট।

স্টিভ জবসকে সারা দুনিয়া চিনলেও মার্ক পোরাটের নামও শোনেনি বেশিরভাগ ভাগ মানুষ। স্টিভ জবসকে যে কারণে সারা পৃথিবী চেনে, সেই যন্ত্রটির স্বপ্ন প্রথম দেখেছিলেন মার্ক পোরাট। আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে।

মোবাইল বা ইন্টারনেট যখন সাধারণের স্বপ্নেরও অগোচর ছিল, তখন তিনি এমন একটি যন্ত্রের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেটি হবে ‘একটি ফোন, তবে অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তা সহ’। তিনি এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে হাতের মুঠোয় থাকা একটি যন্ত্রের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীর সাথে যুক্ত থাকতে সক্ষম হবে মানুষ। শুধু স্বপ্ন দেখা নয়, তিনি সেই যন্ত্র বানাতেও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মার্কের স্বপ্নটা সময়ের চেয়ে অন্তত দুই দশক এগিয়ে ছিল। তার স্বপ্নকে ধারণ করার মতো প্রযুক্তি তখনো পৃথিবীতে আসেনি। অসময়ে স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা তখনকার মতো ব্যর্থ হয়েছিল। তার সেই ব্যর্থতা ছিল একটা সময়বিরতি মাত্র।

বলা হয়ে থাকে, মার্ক পোরাটের ব্যর্থতার ঘটনাটি ছিল নতুন এক প্রযুক্তির বিজয়ের সূচনা। ঠিক ১৭ বছর পর স্টিভ জবসের হাত ধরে তার স্বপ্নটি বাস্তবায়িত হয়েছিল আইফোন নামের চমকপ্রদ এক আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে। 

মার্ক পোরাট
মার্ক পোরাট; Image Source: peoplepill.com

আধুনিক স্মার্টফোনের জন্ম এবং মার্ক পোরাটের ব্যর্থতার ঘটনাটি লুকিয়ে আছে নব্বই দশকের শুরুতে জেনারেল ম্যাজিক নামের একটি কোম্পানির বিস্ময়কর জন্ম এবং অবসায়নের ইতিহাসে।

১৯৮৪ সালে যখন অ্যাপল তার নতুন প্রোডাক্ট ম্যাকিনটোশ বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিল, তার পরের বছরই স্টিভ জবস নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন শীর্ষ ব্যক্তিদের সাথে মতদ্বৈততার কারণে। জবস চলে যাবার পর সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল অ্যাপলের ভবিষ্যৎ নিয়ে। স্টিভ জবস ছাড়া অ্যাপলকে চিন্তা করা কষ্টকর ছিল।

তবু অ্যাপল টিকে গিয়েছিল। তখনো মোবাইল যুগ আসেনি। ইন্টারনেট কী, তা সাধারণের অজানা। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ। কম্পিউটার যন্ত্রটিও আদিম অবস্থায়- এখনকার বিচারে টাইপ মেশিনের উন্নত সংস্করণ মাত্র।

সে সময়ে অ্যাপলের এক স্বপ্নবাজ কর্মী মার্ক পোরাট নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের স্বপ্নে বিভোর থাকতেন প্রায়ই। সেসব স্বপ্নকথন লিপিবদ্ধ করতেন লাল মলাটের একটি ডায়েরিতে। যখনই মাথায় কোনো নতুন ধারণা আসে, ওখানে তা লিখে রাখেন। ডায়েরির নাম ‘ক্রিস্টাল পকেট’। ১৯৮৯ সালের কোনো একদিন আঁকিবুকি করতে করতে এক আজব যন্ত্রের অবয়ব গড়ে তোলেন তিনি। এমন এক যন্ত্র, যার অস্তিত্ব পৃথিবীর কোথাও নেই, থাকার মতো প্রযুক্তি নেই। তবু তিনি ভাবলেন, এমন একটি যন্ত্র মানুষের হাতে থাকলে গোটা পৃথিবীটাই বদলে যেত।

কিছুদিন পর মার্ক পোরাট তার এই ধারণা নিয়ে কথা বলেন অ্যাপলের সিইও জন স্কালির সাথে। সেই জন স্কালি, যার সাথে বিরোধের ফলে স্টিভ জবস অ্যাপল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।

জন স্কালির পর অন্য সহকর্মীদের সাথেও বিষয়টা নিয়ে আলাপ করেন মার্ক। সহকর্মীরা তাতে উৎসাহ যোগায়, সবার সম্মিলিত চেষ্টায় সেই যন্ত্রটি বাস্তবে কীভাবে বানানো যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। তার সাথে যুক্ত হন অ্যাপলকর্মী বিল অ্যাটকিনসন এবং অ্যান্ডি হার্জফেল্ড। জন স্কালির সম্মতিতে প্রাথমিকভাবে এই তিনজন মিলে অ্যাপলের একটি প্রজেক্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন।

স্মার্ট ফোনের প্রথম স্বপ্ন
ভবিষ্যতের নকশা; Image Source: The National

কিন্তু কিছুদিন যাবার পর দেখা গেল, তারা অ্যাপল থেকে যথেষ্ট সহায়তা পাচ্ছেন না। ১৯৯০ সালে তারা আলাদা একটা কোম্পানি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেন। জন স্কালি সেই স্বপ্নের বস্তুটি নিয়ে লিখেছিলেন,

“একটি ছোট কম্পিউটার, একটি ফোন, একটি খুবই ব্যক্তিগত জিনিস। এটি অবশ্যই সুন্দর হতে হবে। ভালো গয়না কেনার সময় যে সন্তুষ্টি মেলে, গ্রাহককে ঠিক তা-ই পেতে হবে। এটি যখন ব্যবহার করা হবে না, তখনও এর মূল্য থাকবে। যখন আপনি এটি ব্যবহার করবেন, তখন এটি ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবেন না।”

জন স্কালি সমর্থন দেওয়ায় নতুন এক কোম্পানি যাত্রা শুরু করে জেনারেল ম্যাজিক নামে। স্কালি অ্যাপলের সিইও পদে থেকেই জেনারেল ম্যাজিকের বোর্ডে যোগ দেন। কিছুদিন পর সেখানে যোগ দেন জোয়ানা হফম্যান এবং টনি ফাডেল সহ আরো অ্যাপলের বেশ কয়েকজন উৎসাহী কর্মী। কোম্পানী খুব নিভৃতে, লোকচক্ষুর অগোচরে নিরলস কাজ করতে থাকে।

১৯৯২ সালে আরেকটি আশ্চর্য ব্যাপার ঘটল। এই চমকপ্রদ প্রকল্পটির মধ্যে সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে জেনারেল ম্যাজিকের সাথে গোপনে যুক্ত হলো বিশ্বের তৎকালীন কয়েকটি শীর্ষ ইলেক্ট্রনিক প্রযুক্তির কোম্পানি সনি, মোটোরোলা, মাটসুশিতা, ফিলিপস এবং এটিঅ্যান্ডটি। এর মধ্যে মোটোরোলার সিইও জর্জ ফিশার, সনির প্রেসিডেন্ট নোরিও ওগা এবং এটিঅ্যান্ডটি চেয়ারম্যান ভিক্টর পেলসেন জেনারেল ম্যাজিকের বোর্ড সদস্য হলেন।

General Magic Still 1 - Publicity - H 2018
সিনেমার পর্দায়ও এসেছে জেনারেল ম্যাজিকের গল্প; Image Source: Hollywood Reporter
জেনারেল ম্যাজিক এর পোস্টার; Source: IMDB

অতঃপর পৃথিবী চমকে দেবার মতো নতুন একটা প্রযুক্তি আবিষ্কারের কাজ এগিয়ে চলল। ১৯৯৩ সালের মধ্যে জেনারেল ম্যাজিকের কর্মী সংখ্যা দাঁড়ালো ১০০ জনের মতো। এর মধ্যে তাদের সাথে যুক্ত হলো আরো নামিদামি কিছু কোম্পানি ক্যাবল অ্যান্ড ওয়ারলেস, ফ্রান্স টেলিকম, এনটিটি, নর্দার্ন টেলিকম, তোশিবা, ওকি, সানিয়ো, মিতসুবিশি এবং ফুজিৎসু। এরা প্রত্যেকে ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বিনিয়োগ করল জেনারেল ম্যাজিকের এ প্রকল্পে।

প্রস্তাবিত নতুন প্রযুক্তির যন্ত্রটি চালাবার জন্য তৈরি হলো টেলিস্ক্রিপ্ট নামের সফটওয়ার এবং  ম্যাজিক ক্যাপ নামের অপারেটিং সিস্টেম। এটি একটি সিন্ডিকেটেড প্রকল্পে দাঁড়িয়ে যায়, যাকে বলা হতো জেনারেল ম্যাজিক অ্যালায়েন্স।

কিন্তু ১৯৯৩ সালে হঠাৎ করে অ্যাপল থেকে ঘোষণা এলো, তারা নিউটন নামের একটি ছোট ডিভাইস বাজারে ছাড়তে যাচ্ছে, যা অনেকটা জেনারেল ম্যাজিকের সেই যন্ত্রের মতো কাজ করে। তাতে যদিও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছিল না, তবু সেটা বাজারে এসে জেনারেল ম্যাজিকের অনাগত যন্ত্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়ায়। দেখে বোঝা যায়, ওই যন্ত্রটিও মার্ক পোরাটের ধারণা থেকে ধার করা। যে আশঙ্কা থেকে জেনারেল ম্যাজিক গোপনীয়তা রক্ষা করছিল, তা খানিকটা ক্ষুণ্ণ হলো। জেনারেল ম্যাজিকের কর্মীরা হতাশ হলেন কিছুটা। যদিও তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল আইবিএম এবং মাইক্রোসফট ঘরানার কোম্পানিগুলো।

তবু দ্রুত কাজ এগিয়ে চলল। জেনারেল ম্যাজিক অ্যালায়েন্সের দুটো কোম্পানি থেকে ১৯৯৪ সালের মাঝামাঝিতে দুটো ভিন্ন নামে পণ্যটি বাজারে ছাড়া হলো। একটি হলো মোটোরোলার তৈরি মোটোরলা এনভি, অন্যটি সনির তৈরি ম্যাজিক লিংক। দুটো যন্ত্রই পিডিএ এবং পারসোনাল কমিউনিকেটর। এই যন্ত্রগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এটিঅ্যান্ডটি চালু করেছিল পার্সোনাল লিংক নামের একটি বিশেষ যোগাযোগ ব্যবস্থা।

১৯৯৫ সালে জেনারেল ম্যাজিক বাজারে পাবলিক শেয়ার ছাড়লে ৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের শেয়ার বিক্রি হয় এবং ১৬ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে পাওয়া যায় ২০০ মিলিয়ন ডলার। এক বছরের মধ্যে শেয়ারের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। ২০০০ সালের মধ্যে জেনারেল ম্যাজিকের ১ ডলারের শেয়ারের দাম ১৮ ডলারে উন্নীত হয়।

শেয়ার বাজারের সূচক উপরের দিকে উঠতে থাকলেও পণ্যটির বাজার নিয়ে এক কঠিন প্রতিকূল সময়ের মুখোমুখি পড়ে যায় জেনারেল ম্যাজিক। অতিরিক্ত দামের কারণে এই প্রবল পরিশ্রমসাধ্য প্রকল্পের অত্যাধুনিক যন্ত্র বাজার দখল করতে ব্যর্থ হয়। সনি ম্যাজিক লিংকের দাম ধরা হয়েছিল ৮০০ ডলার। এ দাম দিয়ে কেউ জিনিসটা কিনতে আগ্রহী ছিল না। ম্যাজিক লিংকের ৩,০০০টি পণ্যের মধ্যে অধিকাংশ বিক্রি হয়েছে আত্মীয়-পরিজনের কাছে। 

২০০০ সালের পর থেকে জেনারেল ম্যাজিকের ব্যবসা এবং শেয়ারের দামের পতন শুরু হয়। ২০০৪ সালে দেউলিয়া ঘোষিত হয় জেনারেল ম্যাজিক। ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে স্বপ্ন এবং ব্যবসা দুটো থেকে সরে দাঁড়ালেন মার্ক পোরাট। ব্যর্থ মানুষদের খুব সহজে ভুলে যায় ইতিহাস। মার্ক পোরাটকেও ভুলে গিয়েছিল।

জেনারেল ম্যাজিক যখন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, সে সময়ে অ্যাপলেরও দুর্দিন চলছিল। তাদের নতুন উদ্ভাবিত অনেক পণ্য বাজার দখল করতে ব্যর্থ হয়। নিউটনও একরকম ব্যর্থ হয়েছিল। বিল গেটসের মাইক্রোসফট বিশ্ববাজারের বড় একটা অংশ দখল করেছে উইন্ডোজ দিয়ে। আইবিএমের মতো আরো অনেক কোম্পানি মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ নিয়ে কম্পিউটার বাজারের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে।

অ্যাপলের সেই টলোমলো সময়ে ১৯৯৭ সালে স্টিভ জবসকে ফিরিয়ে আনা হয় তার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে। স্টিভস প্রযুক্তি এবং ব্যবসার সমন্বয় খুব ভালো বোঝেন। এক যুগ পর অ্যাপলে ফিরে এসে নতুন করে জাগিয়ে তোলার পরিকল্পনা করলেন। ততদিনে পৃথিবীতে দুটো নতুন যুগান্তকারী প্রযুক্তি মানুষের হাতে এসে গেছে। মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট। স্টিভ জবসের জন্য যা ছিল একটা অনুকূল পরিবেশ।

How Steve Jobs' spiritual partner designed a brand new Apple | Zee Business
আইপড ও স্টিভ জবস; Image Source: Mercury News

তবে সেই পরিবেশ অ্যাপল এবং স্টিভ জবসের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এল, যখন জেনারেল ম্যাজিকের প্রতিভাবান ইঞ্জিনিয়ার টনি ফাডেল অ্যাপলে যোগ দেন ২০০১ সালে। টনি ফাডেল ছিলেন মার্ক পোরাটের স্বপ্ন বাস্তবায়ন দলের প্রধান সেনাপতি। যে কাজগুলো তিনি জেনারেল ম্যাজিকে করতে পারেননি, নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সুযোগে সে কাজগুলো আবার শুরু করেন অ্যাপলে এসে। টনির আইডিয়া থেকেই অ্যাপলের নতুন উদ্ভাবন আইপড। আইপড সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়। তারপর আইম্যাক, ম্যাকবুক ইত্যাদি পণ্যও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। স্টিভ জবসের নেতৃত্বে অ্যাপল আবারো প্রযুক্তির জগতে সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে থাকে।

২০০৭ এর জানুয়ারিতে এসে পৃথিবীকে ‘আইফোন’ আরেকটি নতুন ধরনের মোবাইল প্রযুক্তির সাথে পরিচয় ঘটালেন স্টিভ জবস। সতেরো বছর আগে যে স্বপ্ন মার্ক পোরাট দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন আইফোন হিসেবে পৃথিবীর মানুষের হাতে পৌঁছাল স্টিভ জবসের হাত ধরে। আইফোনের প্রধান কারিগর ছিলেন জেনারেল ম্যাজিকের টনি ফাডেল, যিনি আদতে মার্ক পোরাটের কাজটাই অ্যাপলে এসে সফল সমাধান করেন।

আইফোন বাজারে আসার পর প্রযুক্তির পৃথিবী নতুন এক যুগে প্রবেশ করে। আইফোনের পরের বছরই বাজারে এসে যায় অ্যান্ড্রয়েড ফোন। এরপর খুব দ্রুত বিশ্ববাজার দখল করতে থাকে টাচস্ক্রিন স্মার্ট ফোন। দশ বছরের মধ্যে পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষের হাতে পৌঁছে গেল সেই যন্ত্রটি, যা মার্ক পোরাট চেয়েছিলেন ১৯৯০ সালে। স্মার্ট ফোন ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন জীবন অচলপ্রায়। মার্ক পোরাটের ব্যবসাভাগ্য খারাপ হলেও তার স্বপ্ন ব্যর্থ হয়নি। তিনি পৃথিবীর জন্য একটি নতুন স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন।

Marc Porat - Zimbio
গল্পটা স্বপ্ন দেখার; Image Source: Zimbio

৩০ বছর আগে মার্ক পোরাটের সেই অভিনব স্বপ্নের সূচনা এবং পরিণতির ঘটনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে অসাধারণ একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র জেনারেল ম্যাজিক, যে কয়েকজন মুষ্টিমেয় তরুণ জেনারেল ম্যাজিক গড়ে তুলেছিলেন তাদের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক দুর্লভ কিছু পুরনো ভিডিও চিত্রের সমন্বয়ে নির্মিত হয় চলচ্চিত্রটি। এ চলচ্চিত্র বিশ শতক পেরিয়ে একুশ শতকে প্রবেশের মুখে ডিজিটাল বিবর্তনের অসামান্য একটি দলিল। আজকের প্রযুক্তির পৃথিবীতে অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইন, ই-বে সহ দুনিয়ার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান যারা পরিচালনা করছেন, তাদের অনেকেই মার্ক পোরাটের গড়া জেনারেল ম্যাজিকের কর্মী ছিলেন।

জেনারেল ম্যাজিকের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলা যায়- ব্যর্থতাই শেষ কথা নয়, বরং ব্যর্থতা দিয়েই শুরু হয়। কারো কারো ব্যর্থতার মধ্যে লুকিয়ে থাকে প্রচ্ছন্ন সফলতা। মার্ক পোরাট তাদের একজন।

This article is in Bangla. It is about Marc Porat, General Magic, and his dreams about the future of smartphones. 

References:

1. General Magic: The Most Important Dead Company in Silicon Valley? - by Michael Kanellos

2. In 1993, This Company Almost Invented the iPhone — and It Wasn't Apple - by Sean Braswell

3. General Magic" captures the legendary Apple offshoot that foresaw the mobile revolution - by Mark Sullivan 4. Before Apple’s iPhone There Was General Magic - by Tiernan Ray

Featured Image: Zimbio

Related Articles