Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

এসি বনাম ডিসি দ্বন্দ্ব: এডিসনের প্রথম হার

প্রযুক্তিজগতে এটি মৌলিক নিয়ম যে, সময়ের সাথে সাথে উন্নততর প্রযুক্তি আসবে। নতুন প্রযুক্তিগুলো দূর করতে চেষ্টা করবে আগের প্রযুক্তির সমস্যাগুলো কিংবা নিয়ে আসবে নতুন কোনো সম্ভাবনা। যারা প্রযুক্তি ব্যবসার সাথে যুক্ত তাদের এজন্য সবসময় সজাগ থাকতে হয় অন্যদের কাজ সম্পর্কে, বাজারের চাহিদা সম্পর্কে। অন্য কোম্পানি উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হলে তারা কীভাবে সে বিষয়টিকে সামলান তার ওপর নির্ভর করে তাদের সফলতা ও ব্যর্থতার হিসাব। প্রযুক্তির ইতিহাসে এমন ঘটনার সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে এসি বনাম ডিসি কারেন্ট নিয়ে দ্বন্দ্ব। 

১৮৮৭ সালের কথা। টমাস আলভা এডিসন লক্ষ্য করলেন, তার বৈদ্যুতিক সাম্রাজ্যের জন্যে হুমকি হিসেবে এক নতুন শক্তির উথান ঘটতে যাচ্ছে। বিগত পাঁচ বছরের ব্যবধানে তার কোম্পানি ‘এডিসন জেনারেল ইলেকট্রিক’ (এডিসন জিই) একাই এ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। এডিসনের উদ্ভাবন করা বৈদ্যুতিক বাতি ও ডিসি পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের সূত্র ধরে কয়েক বছরের মাথায় শতাধিক পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপিত হয়েছিল আমেরিকায়। আমেরিকার ঘরে ঘরে পৌঁছাতে শুরু করেছিল বৈদ্যুতিক আলো। তার কোম্পানির পরিধিও হয়ে উঠেছিল বিশাল।

একটি বৈদ্যুতিক আলোক ব্যবস্থার সুইচ অন করছেন এডিসন; Image Source: americanhistory.si.edu

তবে একটি বড় দুর্বলতা ছিল তার সিস্টেমে। তিনি ডিরেক্ট কারেন্ট (ডিসি) ব্যবহার করতেন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যে। স্বল্প-দূরত্বে এ কারেন্ট খুব অসাধারণ কাজ করে। আমরা এখনো ঘরে ঘরে যেসব প্রযুক্তি ব্যবহার করি তার অধিকাংশই ডিসি কারেন্টের সাহায্যে চলে। কিন্তু বিদ্যুৎ যখন বেশি দূরত্বে পাঠানো হয়, তখন এতে অনেক পাওয়ার লস হয়। ফলে ডিসি কারেন্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য এডিসন তার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছাকাছি এলাকাতেই কেবল বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারতেন। সবাই এতেই খুশি ছিল, কারণ অন্য কোনো উপায় ছিল না কারো কাছে।

বিকল্প উপায় নিয়ে হাজির হয় ওয়েস্টিংহাউস ইলেকট্রিক কোম্পানি। এটি প্রতিষ্ঠা করেন জর্জ ওয়েস্টিংহাউস। ওয়েস্টিংহাউস ছিলেন একজন উদ্ভাবক ও শিল্পপতি। ১৮৮৫ সাল নাগাদ তিনি চারটি সফল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন, গড়ে তুলেছেন প্রচুর অর্থ-সম্পদও। তারপরেও সবসময় নতুন সুযোগের সন্ধানে থাকতেন তিনি। এ সময় তিনি ব্রিটেনে অল্টারনেটিং কারেন্ট ব্যবহারের বিষয়ে জানতে পারলেন। তারা পাওয়ার লস কমানোর জন্য উচ্চ ভোল্টের এসি কারেন্ট ব্যবহার করছিলেন। ওয়েস্টিংহাউস বুঝতে পারলেন আরেকটি বিশাল সুযোগ তার সামনে দাঁড়িয়ে।

এসি কারেন্টের একটি অনন্য সুবিধা ছিল যা ডিসি কারেন্টের ছিল না। ট্রান্সফরমারের সাহায্যে এর ভোল্টেজ খুব সহজেই বাড়িয়ে নেওয়া যেত। আবার চাহিদামতো কমানোও যেত। উচ্চ ভোল্টেজে এসি কারেন্ট পাঠালে নিম্ন ভোল্টেজের ডিসি কারেন্টের তুলনায় পাওয়ার লস অনেক কম হতো। তাই বহু দূর-দূরান্ত পর্যন্ত কার্যকরীভাবে পাঠানো সম্ভব হতো এসি কারেন্ট।

জর্জ ওয়েস্টিংহাউস; Image Source: interestingengineering.com

ওয়েস্টিংহাউস পরিকল্পনা করলেন, তিনি গ্রাহকদের থেকে অনেক দূরে যেখানে জমির দাম কম এমন জায়গায় একটি পাওয়ার স্টেশন করবেন। অনেক বিস্তৃত পরিধিতে গ্রাহক সেবা দেওয়ার জন্যে আকারেও এটি হবে বিশাল। এরপর সেখান থেকে উচ্চ ভোল্টে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ পাঠানো হবে। বিদ্যুৎ যখন গ্রাহকদের কাছাকাছি চলে আসবে, ট্রান্সফরমারের সাহায্যে তার ভোল্টকে কমিয়ে সরবরাহ করা হবে ঘরে ঘরে। বৈদ্যুতিক বাতি এসি, ডিসি দু’ধরনের কারেন্ট দিয়েই জ্বালানো যেত। তাই কোন ধরনের কারেন্ট তা নিয়ে গ্রাহকদের মাথা ব্যাথা থাকবে না। উপরন্তু এসি ব্যবহার করার ফলে তিনি অনেক কম খরচে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবেন।

এসি কারেন্টের প্রযুক্তিগত উপযোগিতা লক্ষ করে ওয়েস্টিংহাউস আর বসে থাকেননি। নীরবে তিনি তার এসি পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রোটোটাইপ তৈরি করার কাজে লেগে গেলেন। সিমেন্স কোম্পানি থেকে একটি অল্টারনেটর কিনে নিয়ে তার চাহিদা অনুযায়ী একে গড়ে নিলেন। এরপর অন্য একটি কোম্পানি থেকে ট্রান্সফরমার কিনে একে উচ্চ-ক্ষমতার লোড সামলানোর জন্য উপযোগী করে নিলেন। কয়েক মাসের ব্যবধানেই তিনি অল্টারনেটর ও ট্রান্সফরমারের মাঝে সমন্বয় করতে সক্ষম হন। সক্ষম হন কার্যকরভাবে ভোল্টেজ কমানো, বাড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে। আর খুব বেশি দেরি না করে তিনি এসি পণ্য তৈরি করতে শুরু করেন। প্রবেশ করেন বিদ্যুতের বাজারে।

অনেক প্রকল্পকেই ওয়েস্টিংহাউস এডিসনের তুলনায় কম দামে বাগিয়ে নিতে সক্ষম হন। এডিসন অবাক হয়েছিলেন, তার কোম্পানি তখন ভীষণ প্রভাবশালী, তিনি ডিসি কারেন্টের জন্যে আরো বেশি সমর্থন আশা করছিলেন। কিন্তু মানুষ কারেন্টের পার্থক্যকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। ওয়েস্টিংহাউস যেহেতু কম দামে একই মানের সেবা দিতে পারছেন, তাহলে তারা এডিসনের দ্বারস্থ হতে যাবেন কেন? এ কারণেই অল্প দিনের মধ্যে ওয়েস্টিংহাউস এডিসনের সামনে দিয়ে ২৭টি বড়সড় সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প বাগিয়ে নেন। এর মধ্যে ছিল বৈদ্যুতিক আলোক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পও।

এসি বনাম ডিসি যুদ্ধের দুই হোতা; Image Source: happyvideonetwork.com

এটি যে তার ব্যবসার জন্য বেশ বড় হুমকি হয়ে উঠছে সেটা টের পেয়েছিলেন এডিসন। কিন্তু এ বিষয়টিকে আদর্শ ব্যবসায়ীর মতো না সামলিয়ে তিনি এর বিরুদ্ধে লেগে গেলেন। খ্যাপাটে ব্যবসায়ীর মতো ওয়েস্টিংহাউসের বিরুদ্ধে ব্যাপক ‘পাবলিক প্রোপ্যাগান্ডা’ ছড়াতে লাগলেন। সূচনা করে দিলেন এসি বনাম ডিসি যুদ্ধের। আবাসিক এলাকার উপর দিয়ে এসির উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুতের লাইন যাওয়াটাকে তিনি বিপজ্জনক বলে মনে করতেন। এটি সবাইকে জানানোর জন্যে তিনি সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন। বিষয়টিকে নাটকীয় করে তুলতে একজনকে দিয়ে একটি নেড়ি কুকুর ধরে এনে সবার সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করলেন।

কিন্তু জনগণ প্রভাবিত হচ্ছিল না দেখে, তিনি আরো বড় পশুর দিকে হাত দিলেন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করলেন একটি ঘোঁড়াকেও। এতেও সন্তুষ্ট হলেন না তিনি। সবার উপদেশ উপেক্ষা করে, এসি কারেন্ট ব্যবহার করে কিলিং-মেশিন তৈরি করে বসলেন। এটি ব্যবহার করে মারাকে তিনি নাম দেন ‘ওয়েস্টিংহাউস স্টাইলে মারা’ বা ‘ওয়েস্টিংহাউসড’ করা। তার সেই প্রযুক্তিটিকে আমরা এখন বৈদ্যুতিক চেয়ার হিসেবে জানি। কিন্তু এত করেও মানুষকে প্রভাবিত করতে পারছিলেন না তিনি। কেবল দুর্নাম কুড়িয়েছেন নিজের জন্যেই।

এতে অবশ্য এসি কারেন্টের জন্য ক্ষতির চেয়ে বেশি লাভই হয়েছে। এডিসন তাদের যে দুর্বলতা নিয়ে প্রোপ্যাগান্ডা ছড়াচ্ছিলেন, সেটিকে দূর করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান ওয়েস্টিংহাউস। ফলস্বরূপ আরো বেশি নিরাপদ হয়ে উঠে এসি কারেন্ট ব্যবস্থা। এবং ‘এডিসন-জি.ই’র সাথে টক্কর দিয়ে বিস্তৃত হতে থাকে ওয়েস্টিংহাউসের পরিধি। ১৮৮৯ সালের দিকে আরো একটি চমক নিয়ে আসেন তিনি। ‘মাল্টি-ফেইজ এসি মোটর’ নামে অসাধারণ একটি মেশিনের পেটেন্ট নেয় তার কোম্পানি। এটি ছিল অধিক কার্যকর ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটর যেটি এসি কারেন্ট দিয়ে চলতো। এ মেশিনটি উদ্ভাবনে অবদান ছিল এডিসনের পুরানো প্রতিদ্বন্দ্বী নিকোলা টেসলার।

টেসলা ও ওয়েস্টিংহাউস; Image Source: homesecurity.press

এ মোটর যুক্ত হওয়ার ফলে ওয়েস্টিংহাউসের এসি ভিত্তিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সংগ্রহ সম্পূর্ণ হয়। তখন প্রায় সবাই এটি বুঝতে পারছিলেন যে, এসি প্রযুক্তিগত দিক থেকে ডিসির চেয়ে উন্নত। কিন্তু এক এডিসন ছিলেন নাছোড়বান্দা। তার কাছে মনে হচ্ছিল এটি তার খ্যাতির ওপর আঘাত। এসির উৎকর্ষতা স্বীকার করে নেওয়ার অর্থ আত্মসমর্পণ করা। তিনি এসির বিরুদ্ধে লেগেই রইলেন।

এডিসনকে সবাই ঝানু ব্যবসায়ী হিসেবে জানে। কেউ অবশ্য এর জন্যে তার নিন্দাও করে। কিন্তু এক্ষেত্রে এডিসন যা করছিলেন, তাকে কোনোভাবেই একজন আদর্শ ব্যবসায়ীর কাজ বলা যাবে না। তিনি হয়তো নিজের উদ্ভাবন নিয়ে অহংবোধে ভুগছিলেন। অন্য কারো উদ্ভাবন করা প্রযুক্তি তাকে হারিয়ে দেবে এটি মেনে নিতে পারছিলেন না। তার এসব কর্মকাণ্ডের প্রভাব পড়ছিল ‘এডিসন জিই’র ব্যবসাখাতেও। নিজ কোম্পানির দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময় কই তখন এডিসনের? তার মনোযোগ সম্পূর্ণ নিবদ্ধ এসি কারেন্টকে নিচে নামানোয়।

বিষয়টি ভালো ঠেকছিল না এডিসন জিই’র শেয়ারহোল্ডারদের কাছে। বিশেষ করে এ কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারীদের একজন জে.পি মরগান খুবই বিরক্ত হচ্ছিলেন এডিসনের কর্মকাণ্ডে। ১৮৯১ সালে তিনি ইউরোপ সফরে বের হন। সেখানে সিমেন্স কোম্পানির কর্মকর্তাদের সাথে বসে তিনি বুঝতে সক্ষম হন, বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ এসি কারেন্টই। কিন্তু তার কোম্পানি ও এডিসন আঁটকে আছে খুবই সংকীর্ণ গণ্ডিতে। এডিসন নিজের ইগোর জন্যে এসি কারেন্টের দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন না।

জে পি মরগান; Image Source: Eduard Steichen

আমেরিকায় ফিরে এসে মরগান এডিসন জিই কোম্পানির সাথে থম্পসন-হিউস্টন কোম্পানির সংযুক্তি করার পরিকল্পনা করেন। বেশ কিছু এসি সরঞ্জামের পেটেন্ট ছিল এ কোম্পানিটির কাছে। মরগান বুঝতে পারলেন তার বিনিয়োগকে নিরাপদ করার জন্যে এসি-ডিসি দু’ক্ষেত্রেই কাজ করা দরকার। ১৮৯২ সালে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তিনি। নতুন কোম্পানির নাম হয় ‘জেনারেল ইলেকট্রিক’। এডিসনের নাম মুছে দেওয়া হয় নাম থেকে। প্রেসিডেন্সি থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। নতুন প্রেসিডেন্ট হন থমসন-হিউস্টনের চার্লস কফিন।

গোটা কাজটি সম্পন্ন করা হয় এডিসনকে অন্ধকারে রেখে। এডিসন গুজব শুনেছিলেন কিছু। অবশেষে নিশ্চিত হলেন পত্রিকার মাধ্যমে। দেখলেন কোনো আড়ম্বর ছাড়াই, জোর করে তাকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে তারই গড়ে তোলা কোম্পানি থেকে। মরগান যদিও কোম্পানির স্বার্থেই এটি করেছিলেন, কিন্তু এতে করে এডিসনের মতো প্রতিভাবান একজন উদ্ভাবকের আত্মবিশ্বাস সম্পূর্ণ ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন।

দৃশ্যপট থেকে এডিসন সরে যাওয়ায় এসি কারেন্টের জয় ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। ১৮৯৩ সালে এ বিজয়ের সবচেয়ে বড় মাইলফলক অতিক্রম করে ওয়েস্টিংহাউস। জেনারেল ইলেকট্রিককে টপকিয়ে শিকাগো বিশ্বমেলায় আলোকায়নের বিশাল চুক্তি পায় তারা। এ মেলায় ৯২ হাজার বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহারের কথা ছিল। এ মেলার জন্যে ওয়েস্টিংহাউসের ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে বিশেষ পাওয়ার সিস্টেম ডিজাইন করেন টেসলা। তাদের ডিজাইন করা নেটওয়ার্ক সবদিক থেকে কার্যকর, নিরাপদ ও শক্তিশালী হিসেবে প্রমাণিত হয়। ১ লক্ষ ২০ হাজার বৈদ্যুতিক বাতি ও আর্ক বাতিকে যথেষ্ট বিদ্যুৎশক্তি প্রদান করতে সক্ষম হয় এ ব্যবস্থা। সঙ্গে ছিল কয়েকশত মোটরও। তাদের ডিজাইন এতোটাই নিখুঁত ছিল যে, এটি তখনকার যুক্তরাষ্ট্রে আদর্শ ডিজাইনের মানদণ্ড হয়ে ওঠে। এমনকি বর্তমান সময়েও তাদের এ ডিজাইন আদর্শ হয়ে আছে।

এসি কারেন্ট চূড়ান্ত বিজয় লাভ করে ১৮৯৫ সালে এসে। এ বছর নায়াগ্রা ফলসে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার দায়িত্ব পায় ওয়েস্টিংহাউসের কোম্পানি। দশটি টারবাইন-চালিত জেনারেটরের সাহায্যে ৫০ হাজার হর্সপাওয়ার বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয় এ প্রকল্পে। এরপর ট্রান্সফরমারের সাহায্যে ভোল্টেজকে ২২ হাজার ভোল্ট পর্যন্ত বাড়িয়ে পাঠানো হয় ২৭ মাইল দূরত্বে।

এ চুক্তির পর থেকে ডিসি কারেন্ট অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। এটি নিশ্চিত হয়ে যায় যে, টেসলা ও ওয়েস্টিংহাউসের এসি কারেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম জয় লাভ করেছে টমাস আলভা এডিসনের ডিসি কারেন্ট ব্যবস্থার ওপরে। এসির জয়ের মাধ্যমেই সমাপ্তি ঘটে ইতিহাসখ্যাত এ দ্বন্দ্বের।

এডিসন বনাম টেসলার দ্বন্দ্ব; Image Source: youtube/Matrix World Disclosure

এ দ্বন্দ্বের ঘটনাটিকে ইন্টারনেটে অনেককেই স্রেফ এডিসন বনাম টেসলার দ্বন্দ্ব হিসেবে চিত্রিত করতে দেখা যায়। কারণ এতে টেসলার নায়োকচিত ইমেজ অনেকটাই বেড়ে যায়। টেসলাকে মহানায়ক করে তোলার জন্যে সত্যের প্রচুর অতিরঞ্জন ও অনেক মিথও ছড়ানো হয়। সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে পরবর্তীতে। আপাতত এসি বনাম ডিসি দ্বন্দ্বের কাহিনীতেই সমাপ্ত হোক।

This article is in Bangla language. It's about the famous war of electricity.

References: Conquering the Electron by Derek Cheung, Eric Brach, page (90-94)

For more references check hyperlinks inside the article.

Featured Image: youtube/DjPaymanGermany

Related Articles