Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নোকিয়ার ‘বানানা ফোন’: কী এবং কেন?

নোকিয়ার নাম শুনলেই অধিকাংশ মানুষ নস্টালজিক হয়ে পড়েন। কারণ এক সময় তাদের নিত্যদিনের সাথী হিসেবে ছিল কোনো না কোনো নোকিয়া ফোন। উন্নত স্মার্টফোনের এই যুগে এসেও অনেকে আগেকার নোকিয়া ফোনগুলোকে স্মরণ করে থাকেন ফোনগুলোর শক্তিশালী নির্মাণ গঠন এবং বেশ কয়েকদিনেও চার্জ না ফুরানো ব্যাটারি ক্ষমতার জন্য। এমনকি এখনো অনেক মানুষকে পাওয়া যাবে, যাদের কাছে খুঁজলে এখনো সেই আগেকার দিনের নোকিয়ার কোনো হ্যান্ডসেট পাওয়া যাবে।

নোকিয়া ৮১১০ ফোরজি, দেখতে যেন কলার মতো; Source: pictame.com

একসময় মোবাইল ফোন যুগের নোকিয়াই ছিল একচ্ছত্র অধিপতি। নিত্যনতুন ডিজাইন এবং উদ্ভাবনী গুণ ও কৌশলের কারণে নোকিয়ার সমকক্ষ হিসেবে কেউ ছিল না। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে টাচস্ক্রিন ফোনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে। বাজারে আসে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ফোন। নোকিয়া টাচস্ক্রিন যুগের সাথে পাল্লা দিতে নিজেদের টাচস্ক্রিন ফোনও বের করে কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডের গতি, কাস্টোমাইজেশন এবং দুর্দান্ত সব অ্যাপ্লিকেশনের কাছে নোকিয়ার সিম্বিয়ান অপারেটিং সিস্টেম টিকতে পারেনি। অ্যান্ড্রয়েডকে আলিঙ্গন না করার ভুলটি বুঝে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করে নোকিয়া উল্টো মাইক্রোসফটের অধীনে চলে আসে। অসাধারণ বিল্ড কোয়ালিটি এবং ক্যামেরা সম্বলিত কিছু ফোন বের করলেও সেগুলো অ্যান্ড্রয়েডের সাথে টেক্কা দিয়ে পারেনি।

নোকিয়া ৩৩১০, নতুন vs পুরাতন মডেল; Source: youtube.com/everythingapplepro

এক বছর আগে মাইক্রোসফট থেকে বের হয়ে নোকিয়া চলে আসে এইচএমডি গ্লোবালের অধীনে। আর ঠিক এই অবস্থান থেকেই নোকিয়া পুরোদমে অ্যান্ড্রয়েডকে আলিঙ্গন করার সিদ্ধান্ত নেয়। বেশ কিছু আকর্ষণীয় অ্যান্ড্রয়েড ফোন তারা বের করে। যেমন- নোকিয়া ৩, নোকিয়া ৫, নোকিয়া ৬, নোকিয়া ৮; কিছুদিন আগে ঘোষণা দেওয়া নোকিয়া ৭ প্লাস, নোকিয়া ৮ সিরোক্কো ইত্যাদি। এসব এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের পাশাপাশি নোকিয়া তাদের পুরনো জনপ্রিয় ফোনগুলোও পুনরায় বের করছে! ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তারা পুনরায় তাদের জনপ্রিয় মডেল ৩৩১০ নতুন ডিজাইনে বাজারজাত করে। একসময়ের অবিনশ্বর ফোন হিসেবে সুপরিচিত এই ফোন মডেলটি পুনরায় ভক্তদের মন জয় করে ফেলে।

দ্য ম্যাট্রিক্স সিনেমায় নোকিয়া ৮১১০; Source: infobank.by

কিছুদিন আগেই বার্সেলোনায় হয়ে যাওয়া মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে এইচএমডি গ্লোবাল (HMD Global) পুনরায় নোকিয়ার একটি পুরনো মডেল নতুন আঙ্গিকে বের করার ঘোষণা দেয়। মডেলটি হলো নোকিয়া ৮১১০ ফোরজি। ১৯৯৬ সালে প্রথম বের করা জনপ্রিয় এই নোকিয়া ৮১১০ ফোন মডেলটি ১৯৯৯ সালের ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ সিনেমাতেও বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছিলো। যে কারণে এই ফোনটি ‘ম্যাট্রিক্স ফোন‘ নামে সুপরিচিত ছিল। ফোনটির আকার এবং গঠন অনেকখানি আমাদের সকলের পরিচিত ফল কলার সাথে সাদৃশ্য থাকায় এটি ‘বানানা ফোন’ নামেও বেশ পরিচিত ছিল।

নোকিয়ার বানানা ফোন- নোকিয়া ৮১১০ ফোরজি

নোকিয়া ৮১১০ ফোরজি; Source: thegadgetflow.com

নতুন আঙ্গিকে বের করার ঘোষণা দেওয়া এই ফোনটিতে রয়েছে ২.৪ ইঞ্চির ২৪০×৩২০ পিক্সেলের পর্দা এবং ফ্ল্যাশলাইট সহ ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ২০৫, রয়েছে ৫১২ মেগাবাইট র‍্যাম এবং ৪ জিবি ফোন মেমরি। এতে আলাদাভাবে সর্বোচ্চ ৬৪ জিবি পর্যন্ত মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধাও থাকবে।

ফোনটিতে KaiOS-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এতে আগে থেকেই গুগলের কিছু সার্ভিস দিয়ে দেওয়া থাকবে যেমন- গুগল ম্যাপ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট। সেই সাথে নোকিয়ার জনপ্রিয় ‘স্নেক’ গেম তো থাকছেই। আর নতুন এই মডেলটির নাম থেকে বোঝা যাচ্ছে ফোনটি ফোরজি নেটওয়ার্কের জন্য উপযুক্ত করেই বাজারে ছাড়া হবে। এছাড়াও ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ওয়াইফাই হটস্পট, এফএম রেডিও, KaiOS স্টোর, ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক এবং মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট তো রয়েছেই।

নোকিয়া ৮১১০ ফোরজির দুটি কালার; Source: 91mobiles.com

এখন আসা যাক নোকিয়া যে কারণে বিখ্যাত ছিল সেই বিষয় নিয়ে, ব্যাটারি। এই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫০০ এমএএইচ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। ফোনটিতে দইটি সিম ব্যবহার করা যাবে। নোকিয়া থেকে বলা হয়েছে ফোনটিতে একটি ফোরজি সিম ব্যবহার করলে তা একটানা ২৫ দিন এক চার্জে ব্যবহার করা যাবে। আর দুটি ফোরজি সিম ব্যবহার করলে তা ১৭ দিনেরও বেশি স্ট্যান্ডবাই সময় দিবে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, কেন এইচএমডি গ্লোবাল নোকিয়ার এই পুরনো ফোন মডেলগুলো বের করছে? বর্তমানের এই স্মার্টফোনের যুগে আসলেই কি এই বারফোনগুলো তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে? উপরন্তু এই ফোনের যে দাম নোকিয়া ধরতে যাচ্ছে (৭৯ ইউরো), প্রায় সে দামেই নোকিয়ারই একটি স্মার্টফোন-নোকিয়া ১ পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে নোকিয়ার এই পুরনো ফোনগুলো বের করার পেছনে কী উদ্দেশ্য কাজ করছে?

নোকিয়া ১; Source: cnet.com

নোকিয়ার পুরনো জনপ্রিয় এই ফোনগুলো আবার বাজারে আনার মাধ্যমে মানুষদের নোকিয়ার ফোনগুলো পুনরায় কিনতে আগ্রহী করার ক্ষেত্রে এইচএমডি গ্লোবালের তিনটি কৌশল বা ধাপের কথা বলা যেতে পারে। সেগুলো হলো,

  • মনোযোগ আকর্ষণ
  • অতীতের কালো অধ্যায় মুছে ফেলা
  • ভালো মানের ফোন প্রদান করা

মনোযোগ আকর্ষণ

যেকোনো নতুন প্রতিষ্ঠান বা পুরনো প্রতিষ্ঠানের পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথমেই যে বিষয়টি দরকার তা হলো মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসা। আপনারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন ওয়ানপ্লাস কোম্পানির ব্যাপারে। সম্পূর্ণ নতুন কোম্পানি হিসেবে এসে খুব দ্রুতই তারা মোবাইল বিশ্বে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠার পেছনে তাদেরই প্রথমদিকে নেয়া কিছু বিতর্কিত কৌশল, যেমন ইনভাইট সিস্টেম, লেডিস ফার্স্ট, স্ম্যাশ দ্য পাস্ট ইত্যাদি অদ্ভুত উপায়গুলো বেশ কাজে এসেছে। কারণ এগুলো মানুষের কৌতূহল জাগাতে বেশ সহায়ক হয়েছিলো।

এইচএমডি গ্লোবালের স্লোগান; Source: forbes.com

এখন এইচএমডি গ্লোবালও একটি নতুন কোম্পানি। তাদেরও বিশ্বের কাছে নিজেদের তুলে ধরার দরকার। মানুষের কাছে নিজেদের পরিচিত করে তোলাটাও জরুরি। সেক্ষেত্রে তারা যে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে, তা হলো নোকিয়ার এই পুরনো ফোনগুলো পুনরায় বাজারজাতকরণ। কারণ কালের আবর্তে নোকিয়ার নাম প্রায় মানুষ ভুলে যেতেই বসেছিলো। নোকিয়াকে নিজেদের অধীনে নেয়ার পর এইচএমডি গ্লোবাল যে কাজটি সর্বপ্রথমে করেছে তাহলো তারা পুরো বিশ্বকে জানিয়েছে “Nokia is back!”। এবং সেটা নোকিয়ারই জনপ্রিয় পুরনো ফোন মডেল ৩৩১০, স্নেক গেইম এবং বর্তমানে ঘোষণা দেয়া নোকিয়া ৮১১০ ফোরজি পুনরায় বের করার মাধ্যমে। এই ফোনগুলো এবং স্নেক গেম ছিল একসময় মানুষের বেশ আকাঙ্ক্ষিত প্রিয় বস্তু। আর এই ফোনগুলো আবার বের করার ঘোষণা দেয়াটা যে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি করবে মানুষের মধ্যে, তা বলাই বাহুল্য। আর এক্ষেত্রে এইচএমডি গ্লোবাল অনেকখানিই সফল। কারণ এখন খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে, যারা জানেন না নোকিয়ার এই নতুন ফোনগুলোর ব্যাপারে।

নোকিয়ার পুরনো ফোন মানেই সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচনা; Source: youtube.com

কারণ ফোনগুলোর ঘোষণা দেয়ার পর প্রায় সকল গণমাধ্যম যেমন পত্রিকা, ইউটিউব, ব্লগসাইট, ফেসবুক, টুইটার, রেড্ডিট ইত্যাদিতে বড় বড় হেডলাইনে নোকিয়ার এই আবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এইচএমডি গ্লোবালকে আলাদা করে তেমন কোনো প্রচারণা চালাতেই হয়নি। গণমাধ্যমগুলো নিজেরাই নোকিয়ার হয়ে প্রচারণা চালিয়েছে। আর তারা প্রচারণা করবেই না বা কেন! বিভিন্ন মিমের কারণে আগে থেকেই ইন্টারনেটে বেশ জনপ্রিয় নোকিয়ার এই ফোনগুলোর খবর মাত্রই ইউটিউবে নিশ্চিত ভিউ, ওয়েবসাইটে নিশ্চিত ক্লিক এবং অন্যান্য সকল জায়গায় নিশ্চিত মানুষের আগ্রহের বস্তু!

নোকিয়ার সেই বিখ্যাত লোগো; Source: alllogos7.blogspot.com

এইচএমডি গ্লোবাল বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম, যেমন টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, বিলবোর্ড বিজ্ঞাপন এবং বিভিন্ন প্রমোশনে খরচ করলেও মানুষের এতটা মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারতো না, যতটা না এই ফিচার ফোনগুলো আনতে সক্ষম হয়েছে। এই ফোনগুলো হয়তো খুব একটা বেশি বিক্রি হবে না। এইচএমডি গ্লোবাল এই ফোনগুলো থেকে তেমন লাভের আশাও করে না। এই ফোনগুলো হলো নোকিয়ার প্রচারণার হাতিয়ার বা জীবন্ত বিজ্ঞাপন। যেগুলো বিশ্বে তাদেরকে পরিচিত করে তুলতে সাহায্য করছে। এবং যার ফলে আজ সারাবিশ্ব নোকিয়ার সম্পর্কে জানে। এখন মানুষ খুব ভালোভাবেই জানে যে নোকিয়া আবার ফিরে এসেছে। তাই এই ধাপের ক্ষেত্রে বলা যায় তারা খুব ভালোভাবেই সফল হয়েছে।

অতীতের কালো অধ্যায় মুছে ফেলা

নোকিয়ার জন্য মানুষের মনে এখনো একটু হলেও জায়গা রয়েছে। নোকিয়ার কথা মনে পড়লে ব্যবহারকারীদের অতীতের কিছু স্মৃতি মনে পড়ে যাবেই। এটা ঠিক নোকিয়ার ব্যাপারে মানুষ যেমন নস্টালজিক হয়ে পড়ে, তেমনি মানুষ নোকিয়ার কালো অধ্যায় সম্পর্কেও জানে। অ্যান্ড্রয়েড জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও নোকিয়ার সিম্বিয়ানকে আঁকড়ে ধরে থাকা এবং সেখানে ব্যর্থ হয়ে মাইক্রোসফটের কাছে আশ্রয় গ্রহণ করা ভোক্তারা মোটেও ভালো চোখে দেখেনি। তারা আশা করেছে নোকিয়া অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে আসুক। কিন্তু নোকিয়া উইন্ডোজ ফোন তৈরি করা শুরু করে দেয় মাইক্রোসফটের অধীনে। নোকিয়া এবং মাইক্রোসফটের একত্রীকরণ ছিল পুরোটাই একটি ব্যর্থতা। তাই বর্তমানে এইচএমডি গ্লোবালের অধীনে নোকিয়া মানুষকে তার অতীত ভোলাতে সবধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে।

নোকিয়া + মাইক্রোসফট = ব্যর্থতা; Source: youtube.com

যেমন কয়েকদিন আগে হয়ে যাওয়া মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে নোকিয়ার ফোনবুথগুলো ঘুরে দেখা গিয়েছে নোকিয়ার নিজস্ব ব্র‍্যান্ডিংয়ের বদলে গুগল এবং অ্যান্ড্রয়েডের নামই সবখানে। এছাড়াও বলা যায়, নোকিয়া ধরা চলে পুরোপুরিভাবে অ্যান্ড্রয়েডকে আলিঙ্গন করে নিয়েছে, কারণ নোকিয়ার ঘোষণা দেওয়া নতুন সব ফোনগুলোতেই নিশ্চিতভাবে থাকবে অ্যান্ড্রয়েডের শুদ্ধতম ভার্সন, যা ‘অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান’ নামে পরিচিত। নোকিয়াই একমাত্র ব্র‍্যান্ড, যা তার পরবর্তী সব ফোনগুলোও অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান দিয়েই আনবে বলে ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ তাদের এই দ্বিতীয় ধাপের মধ্য দিয়ে নোকিয়া এটি সবাইকে জানাচ্ছে যে, তাদের মাইক্রোসফটের দিনগুলো শেষ, তারা সকলের জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মের মাধ্যমে পুরোপুরি গুগলে ফিরে এসেছে! তাই তাদের এই দ্বিতীয় ধাপটিও যে সফল হতে চলেছে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

ভালো মানের ফোন প্রদান করা

নোকিয়া প্রথমে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং নিজেদের ব্যর্থতার অতীত মুছে ফেলার পর তারপর তাদের যা করা দরকার ছিল তা হলো উন্নত মানের ফোন প্রদান করা যা মানুষ পুনরায় ভালবেসে গ্রহণ করে নিবে। এদিক দিয়ে তারা তাদের অতীতের ঐতিহ্য অনুযায়ী বেশ শক্তপোক্ত বিল্ড কোয়ালিটি সম্বলিত স্মার্টফোন বের করেছে। সফটওয়্যার আপডেটের দিক দিয়েও তারা বেশ এগিয়ে রয়েছে। অতীতের মত স্বনামধন্য Zeiss ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে তাদের বর্তমানের স্মার্টফোনগুলোতেও। তবুও আগের বছরের ফোনগুলোকে নোকিয়ার কাছ থেকে মানুষ যেমনটা আশা করে তেমনটা বলা যায় না। তবে নোকিয়া যে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে চলেছে এটা বলা যায়। যেমন এ বছরে নোকিয়ার ঘোষণা দেয়া নোকিয়া ৭ প্লাস ইতোমধ্যেই প্রচুর মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

নোকিয়া ৭ প্লাস; Source: pocket-lint.com

তাই এইচএমডি গ্লোবালের এই তিন ধাপের মাধ্যমে নোকিয়া পুনরায় মানুষের কাছে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে পুরনো জনপ্রিয় নোকিয়া ফোনগুলোর পুনরায় বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিশ্বে পরিচিতি লাভ এবং প্রচারণা চালানোর কৌশলটি বেশ প্রশংসনীয়। প্রথম বছরে বের করা নোকিয়ার ফোনগুলোকে খুব একটা যুগান্তকারী বলা না গেলেও নোকিয়া যে ঠিকই মানুষের মনে আবার জায়গা দখল করে নিতে পারছে এবং সঠিক পথেই এগোচ্ছে, তা বলা যায়। কারণ নোকিয়া ২০১৭ সালেই ১০.৫ মিলিয়নের বেশি ফোন বিক্রি করেছে যা গুগলের ৩.৯ মিলিয়নের থেকে অনেক বেশি। তাই মানুষের আশানুরূপ স্মার্টফোন বের করতে পারলে নোকিয়া যে পুনরায় একটি জনপ্রিয় মোবাইল ব্র‍্যান্ডে পরিণত হতে পারবে, তা বলা যায়।

ফিচার ইমেজ: techradar.com

Related Articles