Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ফ্লোরেন্স: ইতিহাসের স্মৃতি বিজড়িত এক অনন্য শহর

ইতালির এক নান্দনিক শহরের নাম ফ্লোরেন্স। শিল্প, স্থাপত্য ও ইতিহাসের শহর হিসেবে পরিচিত ফ্লোরেন্স ছবির মতো সুন্দর। শহরটি বেশ পরিপাটি এবং সাজানো গোছানো। বহু শতাব্দীর পথ পরিক্রমায় আজকের এই ফ্লো.রেন্স শহরটি গড়ে উঠেছে। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৫৯ সালে জুলিয়াস সিজারের রাজত্বকালে শহরটির গোড়াপত্তন হয়। শহর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বড় বড় প্রাসাদ, শতাব্দী প্রাচীন ক্যাথেড্রাল ও মিউজিয়ামের সাথে জড়িয়ে আছে নগর সভ্যতার হাজারো গল্প, কাহিনী।

শিল্পের শহর, স্থাপত্যের শহর ও ইতিহাসের শহর হিসেবে পরিচিত ফ্লোরেন্স নগরী; Image Sorce: tripsavvy.com

ইউরোপীয় রেনেসাঁর আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত ফ্লোরেন্সের রমরমা শুরু হয় পঞ্চদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। এই সময়ে বস্ত্রশিল্প, ব্যাঙ্কিং ইত্যাদিতে ফ্লোরেন্স, ইতালি তথা ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং অন্যতম সমৃদ্ধশালী এক নগরীতে পরিণত হয়। মেডিসিদের মতো শহরের ধনী ব্যবসায়ীদের উদার পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্লোরেন্স হয়ে ওঠে শিল্প ও সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান। ইতিহাস আর ঐতিহ্যপূর্ণ ফ্লোরেন্সের দর্শনীয় কিছু স্থান থেকে চলুন ঘুরে আসি।

বিখ্যাত ফ্লোরেন্স ক্যাথেড্রাল

ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত ক্যাথেড্রাল সান্তা মারিয়া দেল ফিয়োরে। ফ্লোরেন্সের আইকনিক ল্যান্ডমার্ক। এটি নির্মাণ করতে প্রায় দেড়শো বছর সময় লেগেছিল। ক্যাথেড্রালটি বিশাল ও ‍বিস্তৃত। চারপাশে বিশালাকৃতির তোরণ, সুউচ্চ খিলান আর দানবাকৃতির গম্বুজের জন্য এটি বিশ্বের অন্য ক্যাথেড্রালগুলোর চেয়ে বেশ অনন্য। কোনও আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া রেনেসাঁর মহান প্রকৌশলী আর কারিগরেরা যেভাবে এ অসাধ্য সাধন করেছেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর।

ক্যাথেড্রালের ভেতরটি অবশ্য তুলনামূলকভাবে সাদামাটা। সুবিশাল লাল গম্বুজটি এক সময় ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম। এত বড় গম্বুজ তৈরির কোনো পদ্ধতি তখন কারো জানা ছিল না। এর জন্য বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নকশা আহ্বান করা হয়। ফিলিপ্পো ব্রুনেলেস্কি নামের একজন স্বর্ণকারের নকশা শেষপর্যন্ত গৃহীত হয়। ষোল বছরের চেষ্টায় তিনি এই গম্বুজটি নির্মাণ করতে সক্ষম হন। ব্রুনেলেস্কি তার কাজের কোনো স্কেচ বা ব্লুপ্রিন্ট রেখে যাননি।

আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া এই বিশাল গম্বুজ সে সময় কী করে নির্মিত হয়েছিল, তা বিজ্ঞানীদের কাছে আজও এক রহস্য। শত শত বছর ধরে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করেও এখনও ফ্লোরেন্সের রাজকীয় প্রতীক হিসেবে এই স্থাপত্যকর্ম নিজের অস্তিত্বকে প্রতিনিয়ত জানান দিচ্ছে। ১৪৩৬ সালে তৎকালীন পোপ ক্যাথেড্রালটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। 

ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত ক্যাথেড্রাল সান্তা মারিয়া দেল ফিয়োরে; Image Sorce: destinationflorence.com

এখানে দশটি ব্রোঞ্জের প্যানেলে ওল্ড টেস্টামেন্টের কাহিনী খোদাই করা আছে। এর অনবদ্য শিল্পভাবনায় মুগ্ধ হয়ে স্বয়ং মিকেলেঞ্জেলো একে স্বর্গের দ্বার বলে অভিহিত করেছিলেন। ক্যাথেড্রালে প্রবেশ অবাধ, কিন্তু ব্যাপ্টিস্ট্রিতে টিকিট কেটে ঢুকতে হয়। ঢুকেই চোখ টেনে নেয় সিলিংজোড়া বিশাল মোজাইকের কাজ। দ্য লাস্ট জাজমেন্ট, মেরি অ্যান্ড ক্রাইস্ট, সেন্ট জন দ্য ব্যাপটিস্ট- এদের কাহিনী বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা আছে।

ফিলিপ্পো ব্রুনেলেস্কি নামের এক অখ্যাত স্বর্ণকারের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় সুবিশাল লাল গম্বুজটি; Image Sorce: pinterest.com

ক্যাথেড্রাল চত্বরেই রয়েছে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য, বেল টাওয়ার এবং ব্যাপ্টিস্ট্রি। বেল টাওয়ার মূল ক্যাথেড্রালের মতোই লাল, সাদা ও সবুজ মার্বেলে মোড়া এক অপরূপ স্থাপত্য। প্রায় ৮৫ মিটার উঁচু। চারশো’র মতো সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে হয়। আর ক্যাথেড্রালের ঠিক বিপরীতে রয়েছে ব্যাপ্টিস্ট্রি অফ সান জিওভানি।

গ্যালারিয়া ডেল অ্যাকাদেমিয়া

অ্যাকাদেমিয়া গ্যালারি ফ্লোরেন্স শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য এক স্থান। এই জাদুঘরেই মিকেলেঞ্জেলোর অসাধারণ সৃষ্টি ‘ডেভিড’ এর মর্মর মূর্তিটি দেখতে পাওয়া যায়। এটিকে পৃথিবীর সর্বকালীন একটি শ্রেষ্ঠ শিল্পকীর্তি বলে ধরা হয়। ভাস্কর্যটি যৌবনের শক্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক। দর্শনার্থীরা মিকেলেঞ্জেলোর এই অন্যবদ্য শিল্পকর্মটি মুগ্ধতা ও বিস্ময়মাখা চোখে দেখতে থাকেন।

ফ্লোরেন্সের এক অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান অ্যাকাদেমিয়া গ্যালারি; Image Sorce: touropia.com

ষোড়শ শতাব্দীতে, মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে মিকেলেঞ্জেলো তার এই অপূর্ব ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। এর শিল্পসুষমায় মুগ্ধ হয়ে ফ্লোরেন্সের তৎকালীন শাসকেরা ভাস্কর্যটিকে ক্যাথেড্রালের বদলে ফ্লোরেন্সের প্রাণকেন্দ্র পিয়াৎজা দেলা সিনোরিয়ায় রাখার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীকালে তা আকাদেমিয়া গ্যালারিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

মিকেলেঞ্জেলোসহ অসাধারণ সব শিল্পীর সৃষ্টিকর্ম স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে; Image Sorce: veditalia.com

ডেভিড ছাড়া অ্যাকাদেমিয়া গ্যালারিতে রয়েছে মিকেলেঞ্জেলোরই অসমাপ্ত কাজ, ‘প্রিজনার্স’ বা ‘স্লেভস’। এই সিরিজের চারটি অসমাপ্ত ভাস্কর্য রয়েছে। অসমাপ্ত হলেও ‘দ্য অ্যাওকেনিং স্লেভ’- এর অপূর্ব ভাস্কর্যটি থেকে চোখ ফেরানো বেশ মুশকিল। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত রেনেসাঁ শিল্পী জ্যোত্তোর শিল্পকর্মের এক বিশাল সংগ্রহ।

আর্নো নদী

আর্নো ফ্লোরেন্সের প্রাণ। সারা শহর জুড়ে এই নদী নিরবচ্ছিন্নভাবে বয়ে চলেছে। টাইবারের পর মধ্য ইতালির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পরিচিত এই নদী। আর্নো নদীর সৌন্দর্য দেখার জন্য পর্যটকেরা নদীতে নৌবিহার করে থাকেন। এভাবে ফ্লোরেন্স নগরীটি সব ভ্রমণার্থীদের মাঝে এক নতুন রূপে ধরা দেয়।

ফ্লোরেন্স শহরের চারপাশে বয়ে চলা আর্নো নদী; Image Sorce: britannica.com

অ্যাপেনাইন্সের কেসেন্টিনো অঞ্চলে ফল্টেরোনা পর্বত থেকে এ নদীর উৎপত্তি। ইতালির পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে এ নদী লোরেন্স, অ্যামপোলি এবং পিসার অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে মেরিনা দি পিসায় টাইরহেনীয় সাগরে এসে মিলিত হয়েছে। ২৪১ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) দীর্ঘ এই নদী এই অঞ্চলের বৃহত্তম নদী। এ নদীর দুপাশে ফ্লোরেন্সের দর্শনীয় কয়েকটি ব্রিজ পন্টে ভেক্কিও এবং সান্তা ত্রিনিটা ব্রিজ নির্মিত হয়েছে।

পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া 

পিয়াজ্জা শব্দের অর্থ স্কোয়ার বা চত্বর। গত কয়েক শতাব্দী ধরে এ স্থানটি এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া ইতালির একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক। এল আকৃতির এই স্থানটির চারপাশে দর্শনীয় সব স্থাপনা বিরাজমান।

পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া ইতালির একটি বিখ্যাত ল্যান্ডমার্ক; Image Sorce: artandluxuryapartments.com

পাশেই অবস্থিত মেডিসিদের বিখ্যাত প্রাসাদ পালাৎজো ভেক্কিও। এর পাশেই রয়েছে ওপেন এয়ার মিউজিয়াম। স্কোয়ারকে ঘিরে রয়েছে কিছু বিখ্যাত ভাস্কর্য, যেমন, মিকেলেঞ্জেলোর স্ট্যাচু অফ ডেভিড, হারকিউলিস, নেপচুনের ঝর্ণা এবং আরও অনেক কিছু। ফ্লোরেন্স দেখতে আসা পর্যটকেরা নিরিবিলি কিছুটা সময় কাটানোর জন্য এখানে একবার হলেও ঢুঁ মেরে যান। স্কোয়ারের খোলা প্রান্তরে ছোট-বড় অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে। রেস্তোরাঁগুলো ভেতরে ছোট, কিন্তু বাইরে অনেকটা জায়গা জুড়ে চেয়ার-টেবিল পাতা।

পালাৎজো ভেক্কিও

প্রাসাদটি চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত। এই প্রাসাদটি বহু বছর ধরে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। মেডিসি পরিবারের বাসস্থান ছিল এটি। একসময় তারাই মূলত এ শহরের সবকিছুর নিয়ন্তা ছিলেন। মূলত মেডিসিদের উদার পৃষ্ঠপোষকতায় ফ্লোরেন্সে রেনেসাঁর যুগ শুরু হয়েছিল বলা যায়। বর্তমানে প্রাসাদটি একইসাথে মিউজিয়াম ও টাউন হল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। প্রাসাদটি সাজাতে সে সময়ে শীর্ষস্থানীয় সব ডিজাইনার ও স্থপতিদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। প্রাসাদটির জাঁকজমক দেখে যেকোনো পর্যটকেরই মাথা ঘুরে যাওয়ার যোগাড় হয়।

চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাসাদ পালাৎজো ভেক্কিও; Image Sorce: touropia.com

সুপরিকল্পিত ও সুসজ্জিত কক্ষগুলোতে ভাসারি ও মিকেলেঞ্জেলোসহ রেনেসাঁ যুগের অসামান্য সব শিল্পীর চিত্রকলা ও ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে। কক্ষগুলোতে অসাধারণ ফ্রেসকোর কাজ দেখার মতো। বর্তমানে এখানে প্রায় সময় নানা ধরনের প্রদর্শনীও হয়ে থাকে। ভাসারি ও মিকেলেঞ্জেলোর বেশ কিছু কাজ রয়েছে। এই প্রাসাদের কয়েকটি স্থানে গোপন সুড়ঙ্গ রয়েছে। সেগুলো দেখার জন্য আলাদা ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে।

পন্টে ভেক্কিও

আর্নো নদীর ওপর অবস্থিত ইতালির সবচেয়ে পুরনো সেতু। ডুওমোর মতো এটিও ফ্লোরেন্সের একটি ল্যান্ডমার্ক। অনেক বছর আগে সেতুটির ওপর কসাইদের দোকান ছিল। পরে সেগুলো বন্ধ করে স্বর্ণাকারদের দোকান গড়ে ওঠে। সাতশো বছরের পুরনো সেতুটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এর ওপর অনেক দোকানপাট ও বাড়িঘর আছে। এ ব্রিজ নিয়ে প্রচুর গল্পগাথা প্রচলিত আছে।

আর্নো নদীর উপর অবস্থিত ইতালির সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহাসিক সেতু পন্টে ভেক্কিও; Image Sorce: planetware.com

সেতুর ওপর আগে প্রচুর বন্ধ তালা দেখতে পাওয়া যেতো। প্রেমিক-প্রেমিকেরা তাদের প্রেমকে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দেয়ার জন্য এই সেতুটিতে চাবি দিয়ে তালা বন্ধ করে চাবিটি আর্নো নদীতে ফেলে দিত। তাদের বিশ্বাস ছিল, এভাবে তাদের প্রেম চিরকালের জন্য বাঁধা পড়বে। বর্তমানে সেতুটিতে কিছু সুভেনিওর ও স্বর্ণের দোকান রয়েছে। প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য অনেকেই এখানে কিছু সময় কাটান।

পিটি প্যালেস

পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাসাদ পিটি প্যালেস; Image Sorce: planetware.com

পন্টে ভেক্কিও থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথ। পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই প্রাসাদটি ১৫৪৯ সালে মেডিসিরা ব্যাঙ্কার পিটিদের কাছ থেকে কিনে নেন। মেডিসিরা তাদের পুরনো প্রাসাদ পালাৎজো ভেক্কিও থেকে পিটি প্যালেসে যাতায়াতের জন্য পন্টে ভেক্কিওর উপর দিয়ে প্রখ্যাত স্থপতি ভাসারিকে দিয়ে তৈরি করান ‘ভাসারি করিডোর’। পিটি প্যালেসে থাকার সময়েই মেডিসিরা এখানে গড়ে তোলেন সমসাময়িক চিত্রকলা ও ভাস্কর্যের এক বিপুল সংগ্রহ। ঘরগুলোর কারুকার্যময় নির্মাণশৈলীও দেখার মতো।

বোবোলি গার্ডেন

ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত ইতালির বিখ্যাত বোবোলি গার্ডেন; Image Sorce: planetware.com

এটি ইতালির এক বিখ্যাত গার্ডেন। পিটি প্যালেসের খুব কাছেই ষোড়শ শতাব্দীতে মেডিসিদের উদ্যোগে এই বাগানটি নির্মিত হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে বাগানটি সম্প্রসারিত হয়। বাগানটির পরিসর যেমন বিস্তৃত, তেমনি এর নান্দনিক সৃজনশীলতা মুগ্ধ করে আগত দর্শনার্থীদের। সারা বাগান জুড়ে শোভা পায় নানা স্থাপত্য ও ভাস্কর্য। এখানে প্রচুর দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির উদ্ভিদেরও দেখা মেলে। উদ্যানের খুব কাছেই রয়েছে পোর্সেলিন মিউজিয়াম। সব ঘুরে দেখতে সারাদিন লেগে যায়।

উফিজি গ্যালারি

এটি ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত আর্ট গ্যালারি এবং পৃথিবীর বিখ্যাত মিউজিয়ামগুলোর অন্যতম। উফিজি মানে অফিস। ষোড়শ শতাব্দীতে মেডিসিদের উদ্যোগে সরকারি অফিস হিসেবে এই প্রাসাদটি নির্মিত হয়েছিল। বিখ্যাত মেডিসি পরিবারের সংগ্রহে থাকা বিপুল শিল্পসম্ভার সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য এটিকে পরবর্তীকালে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়।

উফিজি ফ্লোরেন্সের বিখ্যাত এক আর্ট গ্যালারি; Image Sorce: touropia.com

১৭৬৫ সালে সর্বসাধারণের জন্য জাদুঘরটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। জাদুঘরের ৫০টিরও বেশি ঘরে প্রায় দেড় হাজারের মতো শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে রেনেসাঁ আমলের অমূল্য সব শিল্পকলা। মিকেলেঞ্জেলো, বাতিচেল্লি, লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মতো বিখ্যাত শিল্পীদের হাজারো চিত্রকর্ম এই জাদুঘরে ঠাঁই পেয়েছে।

পিয়াৎজালে মিকেলেঞ্জেলো

শহরের সাইটভিউ দেখার জন্য পিয়াৎজালে মিকেলেঞ্জেলো নামক স্থানে অনেক পর্যটকেই ভিড় করেন; Image Sorce: flickr.com

পুরো ফ্লোরেন্স শহরের সাইটভিউ দেখার জন্য পিয়াৎজালে মিকেলেঞ্জেলো নামক একটি স্থান রয়েছে। এ কারণে অনেক পর্যটকেই স্থানটিতে আসেন। এ স্থান থেকে পুরো ফ্লোরেন্স শহরটি দেখা যায়। এখানে ডেভিডের একটি প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। রয়েছে বেশ কিছু দোকানপাটও। এখান গোটা ফ্লোরেন্স শহরকে ছবির মতো দেখায়। পড়ন্ত বিকেলের আলোতেও ক্যাথিড্রালের লাল গম্বুজের উজ্জ্বলতা দিনের আলোর মতোই উজ্জ্বল।

পাশে বেল টাওয়ার। একটু দূরেই দান্তের বাড়ি। তার পাশেই পালাৎজো ভেক্কিও। সব কিছু মিলে শহরটি যেন তার শত বছরের ঐতিহ্যকে ভালোবাসার গ্রন্থিতে আঁকড়ে ধরে আছে। আর তা দেখতে দেখতে পর্যটকরাও কখন যেন অনেক শতাব্দী পিছিয়ে যেতে থাকেন।

বিশ্বের চমৎকার, জানা-অজানা সব বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: https://roar.media/contribute/

This article is a Bengali article. This story is about florence, a unique city and wonderful tourist Attractions in Italy. This article memorize the world art and architectural history with scenic beauty of Florence city. All the sources are hyperlinked inside the article.

Featured Image: yogawinetravel.com

Related Articles