Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন: প্রকৃতির সাজানো এক অপূর্ব রহস্য

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন প্রকৃতির এক অনন্য বিস্ময়, অনিন্দ্যসুন্দর রুক্ষ পাথরে গড়া এক অতুলনীয় পাথুরে স্থাপত্য। চারিদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড়, তারই মাঝে প্রকৃতি তার সকল ভালো লাগা আর অপরূপ সৌন্দর্যের পসরা দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই গিরিখাতকে।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে অ্যারিজোনা রাজ্য, নেভাদা, ইউতাহ, নিউ মেক্সিকো, কলোরাডো- এসব অঞ্চল যেন পাহাড়ের সাম্রাজ্য। এখানে প্রকৃতি যেন উজাড় করে দিয়েছে তার সব ঐশ্বর্য। অ্যারিজোনার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত ২৭০ মাইল দীর্ঘ, ১৮ মাইল চওড়া, এবং ১ মাইলের মতো গভীর গিরিখাত সমৃদ্ধ গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর ২০০ কোটি বছরের ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অধিকাংশ এলাকা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে অবস্থিত ।

মানচিত্রে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন; Source: My Grand Canyon Park

এই গিরিখাতের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে ঐতিহ্যবাহী কলোরাডো নদী। প্রাকৃতিক যেসব বিস্ময় মানুষকে যুগে যুগে মুগ্ধ করেছে, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন তার মাঝেই একটি। আর সে কারণে প্রতি বছর পাঁচ মিলিয়নেরও অধিক পর্যটকের উপস্থিতিতে সরগরম থাকে পুরো গিরিখাত।

গিরিখাতের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা ঐতিহ্যবাহী কলোরাডো নদী; Source: knau.org

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সীমান্ত

পুরো গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সীমান্ত দুটি অংশে বিভক্ত। একটি অংশে রয়েছে নর্থ রিম ও অন্যটিতে আছে সাউথ রিম। সাউথ রিম সারা বছরই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্কের ৯০ শতাংশই সাউথ রিমের অংশ। সাউথ রিম থেকে বিমান এবং রেল পরিষেবা ছাড়াও অন্যান্য পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক; Source: minkhantblog.blogspot.com

অন্যদিকে, নর্থ রিম গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকা হিসেবে বিবেচিত। প্রায়ই এই এলাকার আবহাওয়া খুব খারাপ থাকে, ফলে রাস্তাগুলো বেশ বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। তাই এই এলাকা সব সময় দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে না।

নামকরণের ইতিহাস

এই গিরিখাতটির নামকরণের পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস। এখানে হাজার বছর ধরে বাস করছে আমেরিকার আদিবাসীরা। আদিবাসীদের যে বিশেষ গোষ্ঠীটি এই গিরিখাত অঞ্চলে বাস করতো, তাদের বলা হতো পুয়েব্লো। তাদের কাছে বড়ই পবিত্র এই গিরিখাত। তারা এই গিরিখাতকে ডাকে ‘Ongtupqa’ নামে, যার অর্থ হলো ‘বৃহৎ গিরিখাত’। মূলত তাদের দেওয়া এই নাম থেকেই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন নামটির উৎপত্তি। প্রকৃতিকে সযতনে লালন করার ক্ষেত্রে এসব অঞ্চলের আদিবাসীদের ভূমিকা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। বিজ্ঞানীদের অভিমত, পুয়েব্লো জাতিই এই গিরিখাতে বসবাস করা প্রথম মানব সম্প্রদায়।

গিরিখাতের আবিস্কারক

১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে স্পেনের নাগরিক ফ্রান্সিসকো করোনাডো প্রথম ইউরোপীয় অভিযাত্রী হিসেবে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে আসেন। তাকেই এই গিরিখাতের প্রথম আবিস্কারক হিসেবে অনেক ঐতিহাসিক মনে করে থাকেন। পরবর্তীতে ১৭৭৬ সালে দুজন স্প্যানিশ পুরোহিত ফ্রান্সিসকো ডোমিংয়েজ এবং সিলভেস্তে ভেলেজ ডি এস্কালান্ট এই গিরিখাত আবিস্কার করেন। ১৮০০ সালের শুরুর দিকে মার্ন সরকারের একটি প্রতিনিধিদল এই এলাকা পরিদর্শনে আসেন। তারা ওয়েস্ট ক্যানিয়ন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং এর ম্যাপ তৈরি করার কাজ শুরু করেন। ১৮৬২ সালে জলবায়ু ও নৃতত্ত্ববিদ জন ওয়েসলি পাওয়েলের নেতৃত্বে একটি অভিযাত্রীদল গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর উৎপত্তিস্থল আবিস্কার করে। এই দলটি নৌকায় করে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের বিশাল এলাকা পর্যবেক্ষণ করে। ১৮৭০ সালের দিকে পাওয়েল এবং বিভিন্ন অঞ্চলের অভিযাত্রীরা এই এলাকা পরিদর্শনে এসে এলাকাটির ভূতত্ত্ব, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ব সম্পর্কে বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এভাবে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অস্তিত্বের কথা।

ভূতাত্ত্বিক গঠন

পাথুরে পাহাড় ও গিরিখাতের এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্যঘেরা ‘দ্য গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন’ তৈরি হয়েছিল প্রকৃতির এক আশ্চর্য খেয়ালে। চারিদিকের রুক্ষ পাথরে ঘেরা বৈচিত্রময় রঙের পাহাড়, আর সেই রং-বেরঙের পাহাড়ের মাঝে তৈরি হয়েছে বিশালাকারের ফাটল। সেই ফাটলের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছে এই গিরিখাত।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ভূতাত্ত্বিক গঠন বিন্যাস; Source: Answers in Genesis

এই গিরিখাতের ভূতাত্ত্বিক গঠন বেশ রহস্যময়। এর গঠন প্রক্রিয়া নিয়েও ভূতাত্ত্বিকরা ভিন্ন ভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন। তবে এই বিশাল আকারের গিরিখাতের সৃষ্টিতে কলোরাডো নদীর রয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায়, কলোরাডো নদী এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আজ থেকে কমপক্ষে ১৭ মিলিয়ন বছর আগে থেকে! তখন থেকেই খরস্রোতা কলোরাডো নদী আর তার শাখা নদীদের প্রবাহ এবং ক্রমাগত ভূমিক্ষয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তৈরি হয় বিশাল বিশাল সব ফাটল। আর তার ফলেই সৃষ্টি হয় এই গিরিখাত।

গিরিখাত সৃষ্টির মূল কারণ

অনেক গবেষক এমনই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, নদীর ক্রমাগত দিক পরিবর্তনই এই বিশাল গিরিখাত সৃষ্টির মূল কারণ। ক্রমাগত ভূমিক্ষয়ের কারণে কলোরাডো নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে বহুবার। পুরোনো কলোরাডো নদী হতে বর্তমান কলোরাডো নদীর ব্যবধান প্রায় ৬ কিলোমিটার।

কলোরাডো নদী; Source: OARS

বর্তমান কলোরাডো নদী অনেক খাড়াভাবে নিচে নেমে এসেছে। গবেষকদের একটি দল পুরনো কলোরাডো নদীর পাথরের নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, পুরনো কলোরাডো নদী উত্তর-পশ্চিম দিকে গ্রেট সল্ট লেক দিয়ে প্রবাহিত হতো। কিন্তু বর্তমান কলোরাডো নদী সম্পূর্ণ গতিপথ পরিবর্তন করে রিও গ্রান্ডের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।

রিও গ্রান্ডের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বর্তমান কলোরাডো নদী; Source: Answers in Genesis

বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রতিনিয়তই এই নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে। আগামী প্রায় দুই মিলিয়ন বছর পর এই গিরিখাত আরও কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে তাদের ধারণা। এই গিরিখাতের চারিদিকে ছড়ানো আটটি স্তর একেকটি সময়ের ইতিহাসকে সকলের সামনে মেলে ধরছে। ছোট বড় বিভিন্ন নদীর অনবরত এই ক্ষয়ের ক্ষমতা বিভিন্ন হওয়ায়, পুরো গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জুড়ে বিভিন্ন আকৃতির শিলাস্তর দেখা যায়।

উত্তর-পশ্চিম দিকে গ্রেট সল্ট লেক দিকে প্রবাহিত পুরাতন কলোরাডো নদী; Source: Answers in Genesis

গিরিখাতে সাজানো পাথরের স্তর

গিরিখাতের পাথরগুলো মূলত বিভিন্ন স্তরে সাজানো রয়েছে। স্তরগুলোকে বলা হয় ‘প্লেট’। গবেষণায় প্রাপ্ত এক তথ্য হতে ভূতত্ত্ববিদরা জানান, এই স্তরগুলো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের চেয়েও পুরনো। ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেটের নানান ক্রিয়াকলাপের সাক্ষী হয়ে রয়েছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের এই প্লেটগুলো। প্লেটগুলোর গড় দূরত্ব প্রায় ৫০ মাইল।

জলবায়ু পরিবর্তন

পৃথিবীর বড় বড় ভূতত্ত্ববিদদের কাছে এক চিরন্তন রহস্যের নাম এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। এর নদী এবং বায়ুর ক্ষয়কার্যের যত রকম নমুনা দৃশ্যমান হয়, তা পৃথিবীর অন্য কোথাও চোখে পড়ে না। সমগ্র গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন জুড়েই আবহাওয়া প্রতিনিয়ত নানারকম খেলা করে যায়। এই যেমন, উঁচু গিরিখাতগুলো যখন শীতকালে বরফে ঢাকা থাকে, ঠিক সেসময় নিচু জায়গাগুলোতে হতে থাকে বৃষ্টি। গরমকালে প্রচণ্ড গরম, আর শীতকালে থাকে ভয়ানক ঠাণ্ডা। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে তা নেমে যায় মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ গিরিখাতে শীতকালে সর্বনিম্ন ৬০ সেন্টিমিটার থেকে সর্বোচ্চ ৩৭০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত তুষারপাত হয়।

শীতকালের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন; Source: hfboards.hockeysfuture.com

বৃষ্টিপাত, তুষারপাত আর সর্বোপরি নদীর উপস্থিতির কারণে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের জীববৈচিত্র্যও বেশ সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলে প্রায় ১,৭৩৭ প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রায় ৩৪ প্রজাতির প্রাণীর বসবাস রয়েছে। এর মধ্যে ৮ প্রজাতির বাদুড় এবং ১৮ প্রজাতির ইঁদুর জাতীয় প্রাণী রয়েছে।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলোর একটি। নর্থ রিম ও সাউথ রিম ক্যানিয়নের দু’পাশে অবস্থিত হওয়ায় পর্যটকেরা দুই অংশ দিয়েই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে প্রবেশ করতে পারেন। তবে দুই অংশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের ভিন্নতা রয়েছে। অধিকাংশ ভ্রমণ পিপাসু গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্কের দক্ষিণ রিম পরিদর্শন করেন।

মানচিত্রে সাউথ রিম ক্যানিয়নের পর্যটন স্থানসমূহ; Source: GrandCanyonCVB.org

অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই গ্র্যান্ড ক্যানিয়নকে এই খ্যাতি এনে দিয়েছে। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রে আগত পর্যটকদের এক প্রধান আকর্ষণের নাম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ছুটে আসেন এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা সহজেই প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যান। এখানে যাওয়ার পথে প্রথমেই পড়ে লেক পাওয়েল। ইউতাহ আর অ্যারিজোনার সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলেছে এই জলাশয়। প্রায় ২,০০০ মাইল লম্বা এ জলাশয় আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম মনুষ্য সৃষ্ট লেক।

ইউতাহ আর অ্যারিজোনার সীমান্ত দিয়ে বয়ে চলা পাওয়েল লেক; Source: Tracks & Trails

গাছপালা আর নানা রঙের ফুলের সমাবেশে জায়গাটি অসম্ভব সুন্দর রূপে গড়ে উঠেছে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি মরুপথে নাভাহো আদিবাসী, যারা নিজেদেরকে রেড ইন্ডিয়ান হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে; তাদের অভ্যর্থনা ও পথ নির্দেশনায় পর্যটকরা ঘুরে বেড়ান প্রকৃতির শোভা বিরাজিত গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের মরুভূমির ওয়াচ টাওয়ার; Source: planetware.com

রিম ট্রেইল, জিওলজিক্যাল মিউজিয়াম, মরুভূমির ওয়াচ টাওয়ার, হোপি পয়েন্ট, হারমিটস রোড এবং হারমিটস রেস্টের মতো নানা দর্শনীয় স্থানে ভরপুর এই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

জিওলজিক্যাল মিউজিয়াম; Source: planetware.com

প্রধান আকর্ষণ

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হলো সূর্যোদয় দেখা। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, এন্টিলপ ক্যানিয়ন, জিওন ন্যাশনাল পার্ক, ডেড ভ্যালি বেড ওয়াটার- এসব কালের সাক্ষী স্থানগুলো প্রাকৃতিক নিদর্শন হিসেবে ভ্রমণপিপাসুদের স্বাগত জানায়। এছাড়া কলোরাডো নদীতে নৌকাভ্রমণের মধ্য দিয়ে চারপাশের প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের।

কলোরাডো নদীতে রিভার রাফটিং; Source: OARS

অনেকে আবার কলোরাডো নদীতে রিভার রাফটিংয়ের অভিজ্ঞতাও নিয়ে থাকেন। যারা পাহাড়ে উঠতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য রয়েছে ব্রাইট এঞ্জেল হাইকিং ট্রেইল। পার্কের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়ায় নানা বন্য জন্তু, যা দেখে নিঃসন্দেহে ভ্রমণার্থীদের মন জুড়িয়ে যায়।

ব্রাইট এঞ্জেল হাইকিং ট্রেইল; Source: planetware.com

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের বিশালত্বের মাঝেই হারিয়ে যান দর্শনার্থীরা। প্রাকৃতিক দুর্গমতাকে উপেক্ষা করে তারা ঘুরে বেড়ান পার্কের ভেতরে। সন্ধ্যা হলে এখানকার রাস্তাঘাট বেশ নির্জন হয়ে ওঠে। বিকেল বেলায় এর সৌন্দর্য বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আর রাতে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এলাকাটি এক অপরূপ মায়াময় আবেশ ছড়িয়ে দেয় তার চারপাশে।

গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের জীববৈচিত্র্য; Source: planetware.com

তাই অনেকে রাতের নৈসর্গিক শোভা উপভোগ করতে গিরিখাতের নিচে ফ্যান্টম র‍্যাঞ্চে রাত কাটান। অনেক পর্যটক আবার হেলিকপ্টারে চড়ে পুরো গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পর্যবেক্ষণ করে আসেন। এভাবেই পর্যটকগণ সারা বছরের জীবনের রসদ হিসেবে উপভোগ করে আসেন প্রকৃতির ক্যানভাসে সাজানো গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের অপরূপ সৌন্দর্য। তারা তাদের ভ্রমণের স্মৃতি এবং প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে ক্যামেরাবন্দী করে নিয়ে যেতে মোটেও ভুল করেন না।

পর্যটকদের থাকার জন্য নির্মিত গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন  লজ; Source: planetware.com

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সত্যিই যেন প্রকৃতির এক অনিন্দ্যসুন্দর রহস্য। প্রকৃতি যেন নিজের পরিকল্পনাতেই গড়ে তুলেছে এক অনন্য সাম্রাজ্য- পাথরের পাহাড়, নদী আর রঙের খেলায় মাতোয়ারা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

ফিচার ইমেজ- utah.com

Related Articles