Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মধ্য ইউরোপের এক অনন্য সুন্দর দেশ স্লভেনিয়া

মধ্য ইউরোপের দক্ষিণভাগে অবস্থিত ছোট্ট এক দেশ স্লভেনিয়া। দেশটির পশ্চিমে ইতালি, উত্তরে অষ্ট্রিয়া, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ক্রোয়েশিয়া এবং উত্তর-পূর্বে হাঙ্গেরি। ২০,২৭৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের স্লভেনিয়ার মোট জনসংখ্যা মাত্র ২০ লক্ষ। দেশটি পূর্বে যুগোস্লাভিয়ার অংশ ছিল। ১০ দিনের গৃহযুদ্ধের পর ২৫ জুন ১৯৯১ এ স্লভেনিয়া প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটিতে ২১২টি মিউনিসিপালটি রয়েছে, যা জেলা ও স্থানীয় সম্প্রদায় দ্বারা বিভক্ত। এ দেশের প্রধান ভাষা স্লভেন ।

মধ্য ইউরোপের এই দেশটির বৈশিষ্ট্য মানুষের সরল আতিথেয়তা, যা যেকোনো পর্যটককে মুগ্ধ না করে পারে না। আল্পস পর্বতমালার কোল ঘেঁষে অবস্থিত স্লভেনিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এককথায় অনবদ্য। সবুজ পাহাড়, মালভূমি, পাহাড়ের পাদদেশে সাজানো ঘরবাড়ি, কোথাও বা নিবিড় জঙ্গল-চারদিকের ঘন সবুজ আর নীল আকাশ, প্রকৃতি যেন অকৃপণ হাতে ঢেলে দিয়েছে এই ছোট্ট দেশটিকে।

ল্যুবলিয়ানা

স্লভেনিয়ার রাজধানী ল্যুবলিয়ানা। এক ছোট্ট সুন্দর সাজানো শহর। কার্স্ট এবং আল্পাইন অঞ্চলের মধ্যে থাকা শহরটি সমুদ্রতল থেকে ২৯৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। বারোক স্থাপত্যের ছাপ এখনো স্পষ্ট শহরের কিছু কিছু অংশে। সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান ‘ওল্ড টাউন’ শহরটির কেন্দ্রস্থল তথা সবচেয়ে জমজমাট ও পর্যটকবহুল এলাকা।

ছবির মতো সাজানো স্লভেনিয়ার রাজধানী ল্যুবলিয়ানা; Source: popsugar.com

ল্যুবলিয়ানার প্রাণকেন্দ্র প্রেসরনভ স্কোয়ারে গেলে শহরের নাড়ির স্পন্দন অনুভব করা যায়। স্লভেনিয়ার বিখ্যাত কবি প্রেসেরেনভের নামে এই স্কোয়ারটি তৈরি হয়েছে। এখানে তার ও তার প্রেমিকার ভাস্কর্য রয়েছে। এখানে দেখা মেলে বহুদেশের বহু ভাষাভাষী মানুষের। তাদের কথোপকথনের মধ্যে ভেসে আসে স্লভেনিয়ার ঐতিহ্যবাহী সুরমূর্চ্ছনা। সব কিছুতেই যেন শোনা যায় এক ঐকতানের সুর।

ল্যুবলিয়ানা শহরের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত প্রেসরনভ স্কোয়ার; Source: The Crazy Tourist

এই সুরঝংকারের তালে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়বে অসংখ্য সুসজ্জিত পাথরখচিত রাস্তা ‘কবল্ড স্ট্রিট’। এখানে রয়েছে অসংখ্য ক্যাফে। সন্ধ্যের দিকে ক্যাফেগুলো উজ্জ্বল আলোকে আলোকিত হয়ে ওঠে। গান-গল্পে আর আলোচনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাফে হাউসগুলো, যা ভ্যান গগের সেই বিখ্যাত পেইন্টিং ‘ক্যাফে টেরাস অ্যাট নাইট’-এর সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ল্যুবলিয়ানা ক্যাসেল

ল্যুবলিয়ানার ওল্ড টাউনের কাছেই  ছোট টিলার ওপরে রয়েছে ল্যুবলিয়ানা ক্যাসল। শহর থেকে কার বা টয় ট্রেনের সাহায্যে সহজেই সেখানে পৌঁছানো যায়। হাতে বেশ কিছুটা সময় থাকলে হেঁটেও যাওয়া যায়। ক্যাসেল থেকে চারপাশের দৃশ্যাবলী বড়ই মনোরম। ক্যাসল থেকেই প্রায় পুরো ল্যুবলিয়ানা শহরটাই দেখতে পাওয়া যায়।

মধ্যযুগের এক অনন্য স্থাপনা ল্যুবলিয়ানা ক্যাসেল; Source: theculturetrip.com

পঞ্চদশ শতাব্দীতে তৈরি এই দুর্গটি মূলত তুর্কি আক্রমণকারীদের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি জেলখানা হিসাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে দুর্গটি পর্যটকদের কাছে এক দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

ল্যুবলিয়ানা নদী

শহরের মাধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে ল্যুবলিয়ানা নদী। কিছু দূর পর পরেই নদীর উপর রয়েছে একাধিক ব্রিজ। ট্রিপল ব্রিজ, ড্রাগন ব্রিজ ও বুচার্স ব্রিজ। ড্রাগন ব্রিজে ল্যুবলিয়ানার প্রতীক ড্রাগনের চারটি মূর্তি ব্রিজটিকে দু’দিক থেকে রক্ষা করছে। আর বুচার্স ব্রিজের রেলিংয়ে ঝুলে রয়েছে অসংখ্য তালা। বুচার্স ব্রিজে আসা বিভিন্ন দেশের প্রেমিক-প্রেমিকারা তাদের ভালবাসার প্রতীকী চিহ্ন হিসাবে তাদের নাম খোদাইকৃত তালায় ঝুলিয়ে রেখেছে!

ড্রাগন ব্রিজে শোভা পাচ্ছে ল্যুবলিয়ানার প্রতীক ড্রাগন; Source: Pinterest

পিরান

পিরান স্লভেনিয়ার এক প্রাচীন শহর। শহরটি আয়তনে ছোট হলেও শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এজন্য শহরটিকে সংরক্ষণের জন্য শহরের ভেতরে ব্যক্তিগত গাড়ি প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ। দক্ষিণ-পশ্চিম স্লভেনিয়ার অ্যাডরিয়াইট সাগরের উপকূলে অবস্থিত পিরান শহরটি পাঁচ শতাব্দী ধরে ভেনেটিয়ান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। সেসময়ের ভেনেটিয়ান স্থাপত্যের ঐতিহাসিক নানা স্মৃতিচিহ্ন ছড়িয়ে রয়েছে পুরো পিরান শহর জুড়ে। প্রাচীন স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন সেইন্ট জর্জ চার্চ।

ভেনেটিয়ান স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন শহর পিরান; Source: touropia.com

পরতরয

পরতরয পিরান মিউনিসিপালটির অন্তর্ভুক্ত এক রূপময় শহর হিসেবে বিবেচিত। সমুদ্র আর পাহাড় পরতরযকে রূপে-ঐশ্বর্যে অপরূপ করে তুলেছে। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে পরতরযের সৌন্দর্য প্রতিনিয়ত আকর্ষণ করে। সম্মোহিতের মতো পর্যটকেরা পরতরযের সমুদ্র সৈকতে নিজেদের হারিয়ে ফেলেন। আর যারা পাহাড় ভালোবাসেন, তারা পাহাড়ের রূপ অবলোকন করতে চলে যান পাহাড়ে। পর্যটকদের রসনা তৃপ্তির জন্য অ্যাড্রিয়াটিক সমুদ্র পাড়ের রেস্তোরাঁয় লোভনীয় সব সামুদ্রিক মাছের তৈরি নানা পদের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।

পরতরযে সাগর আর পাহাড়ের এক অনবদ্য সম্মিলন ঘটেছে ; Source: levnezajezdy.cz

লেক ব্লেড

বিশ্বের কয়েকটি অনন্যসাধারণ লেকগুলোর মধ্যে লেক ব্লেড অন্যতম। য়ুলিয়ান আল্পসের কোলে হিরের আংটির মতো ঝলমল করছে লেক ব্লেড। এই লেকটির সাথে জড়িয়ে রয়েছে এক টুকরো দ্বীপ আর তার সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা একটি চার্চ। লেকেরে একপাশে খাড়া টিলা। টিলার মাথায় রয়েছে প্রাচীর বেষ্টিত এক কেল্লা। পায়ে হেঁটে পুরো লেকটি প্রদক্ষিণের জন্য তিন ঘন্টারও বেশি সময় লাগে। এই পথচলায় লেকের চারপাশের অনন্যসুন্দর সব মুহূর্ত চলার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিতে যথেষ্ট।

লেকের পান্না সবুজ পানিতে ঘন নীল আকাশের প্রতিচ্ছবি, বরফে ঢাকা য়ুলিয়ান আল্পসের প্রেক্ষাপট, লেকের পাশের ছোট দ্বীপে উঁকি দেয়া গির্জার চূড়া ও লেকের অন্যদিকে প্রহরীরর মতো মাথা উঁচু করে থাকা কেল্লা- সবমিলিয়ে এক মনজুড়ানো দৃশ্য।

য়ুলিয়ান আল্পসের কোলে হিরের আংটির মতো ঝলমল করা লেক ব্লেড; Source: touropia.com

কেল্লাটি লেকেরে পারের যেকোনো জায়গা থেকে দৃশ্যমান। লেকের বুকে দাঁড় বেয়ে চলে নৌকা প্লেটনা। লেকের স্বচ্ছ জলে ভেসে চলা নৌকা থেকে কাছের পাহাড়ের ঘন সবুজ জঙ্গল আর দূরে বরফে ঢাকা পাহাড়ের চূড়ো দর্শন করা এক অনন্য আন্দময় মুহূর্ত। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সারা বছরই জুড়ে এখানে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকের উপস্থিতি দেখা যায়।

লেকের পাশে জেগে থাকা ছোট দ্বীপটিতে দাড়িয়ে রয়েছে গোথিক চার্চ। চার্চের পাশ দিয়ে সরু পাথর বিছানো পথ চলে গিয়েছে লেকের গা ঘেঁষে জঙ্গলের দিকে। সুদূর য়ুলিয়ান আল্পসের পাহাড়ি জঙ্গলে ট্রেকিং করার লোভ অনেকেই সামলাতে পারেন না।পাহাড়ের প্রতিটি ধাপে উঠতেই সবুজ লেক ব্লেড ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে।

দ্বীপ থেকে কেল্লায় আসার একমাত্র পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে ঘোড়া। কেল্লার সিংহদরজা পেরিয়ে কয়েক ধাপ এগুনোর পর  চোখে পড়বে বড় দালান। দালানটির চারদিকে দোতলা ছোট ছোট প্রাসাদ রয়েছে, যেখানে সাজানো রয়েছে রাজার ব্যবহৃত দ্রব্য, অস্ত্র, পাথর সংরক্ষণ কেন্দ্র। স্থানীয় জঙ্গলে বিচরণকারী পশুদের ছাল, ‍শিংও রয়েছে এখানে।

এই দালানে রোমান ভাস্কর্যের একটি চূড়া বা টাওয়ার রয়েছে। নিচের দালান থেকে প্রাচীরের উপরে যাওয়ার সিঁড়ি রয়েছে প্রাসাদের একপাশে। আর রয়েছে একটি ছোট বাড়ি ও আস্তাবল। পুরো বাড়িটাই কাঠ-পাথর দিয়ে বানানো। মধ্যযুগে বাড়িটি নির্মিত হয়েছে ধারণা করা হয়।

ত্রিস্লাভ ন্যাশনাল পার্ক

স্লভেনিয়ার আরেকটি দর্শনীয় স্থান ত্রিস্লাভ ন্যাশনাল পার্ক। দেশটির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ত্রিস্লাভের নামে পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি দেশটির একমাত্র জাতীয় উদ্যান। য়ুলিয়ান আল্পসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি অবস্থিত। ন্যাশনাল পার্কটিকে ঘিরে থাকা পাহাড়, হ্রদ, নদী এবং চারণভূমির সুন্দর দৃশ্যে প্রকৃতিপ্রেমিকদের জন্য এক দর্শনীয় স্থান। ন্যাশনাল পার্কের অভ্যন্তরের প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্যকে সংরক্ষণের সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।

য়ুলিয়ান আল্পসের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ত্রিস্লাভ ন্যাশনাল পার্ক প্রকৃতির রূপের ছটায় উদ্ভাসিত; Source: touropia.com

লেক ত্রিস্লাভ

ত্রিস্লাভ ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে গ্লেসিয়ার সৃষ্ট লেক। এর পাশে দাঁড়ালে মনে হয় যেন শুধু জল, আকাশ আর বন- সব যেন এক জায়গায় মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। প্রকৃতি তার অপার মহিমায় সৃষ্টি করেছে এই অসাধারণ রূপ বৈচিত্র্য। মানববসতি সেরকম গড়ে উঠেনি আশেপাশে। লেক ত্রিস্লাভের পশুপাখিদের সাথে আগত ভ্রমণার্থীরাও পরম নিশ্চিন্তে নৈঃশব্দকে উপভোগ করতে থাকেন।

ভিন্টগার গর্জ

লেক ব্লেডের কাছেই এই অনন্য সুন্দর গিরিখাতটি অবস্থিত। ভিন্টগার গর্জে যাওয়ার পথে চোখে পড়বে পথের দুধারে ফুটে থাকা অজানা নানা বাহারি পাহাড়ি ফুল, পাহাড়ের গাঁ ঘেঁষে গড়ে ওঠা বসতি, পাহাড়িপথ দিয়ে ছুটে বেড়ানো ছোট ছোট শিশুদের হাস্যোজ্জ্বল মুখচ্ছবি। গর্জের পথের ভয়ঙ্কর অবর্ণনীয় সুন্দর রূপ দেখে পর্যটকেরা বিমোহিত না হয়ে পারেন না।

লেক ব্লেড-এর কাছেই অবস্থিত এই অনন্য সুন্দর গিরিখাত ভিন্টগার গর্জ; Source: www.bled.si

প্রায় দু কিলোমিটার লম্বা, দুপাশে রেলিং দেয়া কাঠের সরু সাঁকো বা ‘বোর্ড ওয়াক’, নীচে খরস্রোতা পানির তোড়ে সাঁকোর সাথে ভ্রমণার্থীদের শরীর মন ভিজিয়ে দিতে থাকে। চারদিকে যেন এক জাগতিক নিসর্গ ভর করে আছে। সূর্যের আলো-আঁধারি খেলা চলে সমস্ত পথ ধরে। অবিরাম জলের কলস্রোতের উদ্দাম শব্দ, কোথাও জল পাথরে আছড়ে পড়ে আবার কোথাও জলের সাদা ফেনায় ভিজিয়ে দিচ্ছে সবুজ গাছপালা।

গর্জে ধূমপান করা, সাইকেল, প্যারাম্বুলেটর ইত্যাদি আনা নিষিদ্ধ। গর্জের অপর পাড়ে পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে বেড়ানো যেন এক ভয়ঙ্কর সু্ন্দরের সাক্ষী হওয়া।

মারিবর

মারিবর স্লভেনিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। শহরটি অস্ট্রিয়া সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত। ড্রাভা নদীর তীরে গড়ে ওঠা শহরটি ওয়াইন প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য পরিচিত। এখানেই রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো আঙুরের বাগান। সবচেয়ে বেশি আঙুর উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত মারিবর। প্রতি বছর এখানে বেশ জাঁকজমকভাবে ‘Old vine festival’ পালিত হয়। শহরের স্লোমস্কোভ স্কয়ার, মেইন স্কয়ার ও ক্যাসেল স্কয়ারের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে ঐতিহাসিক সব স্থাপনা।

ড্রাভা নদীর তীরে গড়ে ওঠা ওয়াইন প্রক্রিয়াকরণ শহর মারিবর; Source: touropia.com

ভেলেনি

ভেলেনির কয়লা খনি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৯৫৭ সালে। ১৯৬৬ সালে তা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। কয়লা শ্রমিকদের বেশে টুপি, অ্যাপ্রন পড়ে মাটি থেকে ১৬০ মিটার নিচে খটখটে লিফট দিয়ে নেমে যাওয়া যায় খনির ভেতরে। অন্ধকাররাচ্ছন্ন পরিবেশে টর্চ নিয়ে গাইড পর্যটকদের কয়লা খনির অতীত ইতিহাস থেকে শুরু করে বর্তমান অবস্থা শোনাতে থাকেন ।

১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ভেলেনির কয়লা খনিতে পাওয়া যাবে অতীত ও বর্তমানে গড়ে ওঠা শিল্পের উৎকর্ষের পেছনে শ্রমিকদের ত্যাগ-তিতিক্ষার গল্প; Source: divento.com

প্রথম দিকে শ্রমিকদের অবস্থা মোটেই ভাল ছিল না। ১৮৯৩ সালে খনির মিথেন গ্যাসের কারণে দম বন্ধ হয়ে মারা যায় ২৮ জন শ্রমিক। ধীরে ধীরে খনি ও শ্রমিকদের সার্বিক ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে। ভেলেনি কয়লা খনি নিরাপত্তা ও আধুনিক সুযোগ সুবিধার দিক দিয়ে বিবেচনা করে ইউরোপের প্রথম সারির কয়লা খনির মর্যাদা লাভ করেছে।

এসব স্থান ছাড়াও স্লভেনিয়ার আরো যেসব দর্শনীয় স্থান রয়েছে, তার মধ্যে সকা ভ্যালি, স্কোজেন গুহা, ভোগেল, লস্কো, র্যাগেটেক ওপেন এয়ার মিউজিয়াম, লোগার ভ্যালি, প্রেজমা কাসল অন্যতম।

গ্রীষ্মকালে স্লভেনিয়া বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। মে থেকে সেপ্টেম্বরের আবহাওয়া স্লভেনিয়া ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক। তাই যদি সুযোগ পান, একবার ঘুরেই আসতে পারেন মধ্য ইউরোপে এক অপূর্ব দেশ স্লভেনিয়া।

ফিচার ইমেজ- youtube.com

Related Articles