Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

ক্রোয়েশিয়ায় জাতিগত সংঘাত: নির্বাচনে পরিচয়ের রাজনীতি

পাঠকদের কাছে ক্রোয়েশিয়ার বড় পরিচয়ই হয়তো ফুটবলের সূত্রে, ২০১৮ সালে রাশিয়াতে আয়োজিত বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট হিসেবে। হালের ক্লাব ফুটবল ভক্তদের কাছে ক্রোয়েশিয়ার পরিচয় তৈরি হয়েছে তাদের অধিনায়ক লুকা মদরিচের সূত্রে, ফুটবলে গত কয়েক দশকে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে দেশটি। ৫৬ হাজার বর্গ কিলোমিটারের ক্রোয়েশিয়াতে ৩৮ লাখ মানুষের দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ অবশ্য ভিন্ন, রয়েছে সংঘাতময় রাজনৈতিক ইতিহাসও। ক্রোয়েট আর সার্বদের মধ্যে শতাব্দীব্যাপী রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের রেশ এখনও চলছে। ক্রোয়েশিয়ার নির্বাচনে এখনও তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার জাতিগত পরিচয়ই। পরিচয়ের রাজনীতিই ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতির জন্য মুখ্য উপাদান।

পরিচয়ের রাজনীতিই ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতির জন্য মুখ্য উপাদান; Image Source: Croatia.eu

ক্রোয়েশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাস

ক্রোয়েশিয়া ১৯১৮ সালে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটের মাধ্যমে যুক্ত হয় কিংডম অব সার্ব, ক্রোয়েটস আর স্লোভেনেসে। শুরুতে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন থাকলেও কর্তৃত্ববাদী রাজার অধীনে ক্রমশ কেন্দ্রীভূত শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, ১৯২১ সালেই বাতিল করা হয় স্বায়ত্তশাসন। পরবর্তীতে ক্রোয়েশিয়ান কৃষক দলের ক্রমাগত আন্দোলন আর দেনদরবারে আংশিক স্বায়ত্তশাসন ফিরে আসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানদের দ্বারা আক্রান্ত হয় এই সাম্রাজ্য, ক্রোয়েশিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাদের অনুগত সরকার। আনতে পাভেলিকের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই সরকার ব্যাপক দমন-পীড়ন চালায় সার্বদের উপর, দমন-পীড়ন চলে ইহুদিদের উপরেও।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ক্রোয়েশিয়া পরিণত হয় যুগোস্লাভ সোশালিস্ট ফেডারেশনের একটি রিপাবলিকে, ক্রোয়েশিয়ানদের চলতে থাকে স্বাধীনতা আর অধিকারের প্রশ্নে আন্দোলন। সত্তরের দশকে শুরু হয় ক্রোয়েশিয়ান স্প্রিং, চলে কমিউনিস্ট শাসক টিটোর অধীনে দমন-পীড়নও। ১৯৮০ সালে টিটোর মৃত্যুর পর দুর্বল হতে থাকে যুগোস্লাভিয়া, ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া ঘোষণা করে স্বাধীনতা।

১৯৮০ সালে টিটোর মৃত্যুর পর দুর্বল হতে থাকে যুগোস্লাভিয়া, ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া ঘোষণা করে স্বাধীনতা; Image Source: Meer.

ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ চলে পরবর্তী কয়েক বছর। যুদ্ধের একপক্ষে থাকে ক্রোয়েশিয়ান সরকারের প্রতি অনুগত ক্রোয়েট বাহিনী, অন্যপক্ষে থাকে সোশ্যালিস্ট ফেডারেল রিপাবলিক অব যুগোস্লাভিয়ার যুগোস্লাভ পিপলস আর্মি। যুগোস্লাভ পিপলস আর্মির সাথে যুক্ত হয় স্থানীয় সার্বরা, যারা তখনকার সময়ে ছিলেন জনসংখ্যার ১২ শতাংশের মতো। সার্বরা চাচ্ছিল ক্রোয়েশিয়াতে তাদের অঞ্চলগুলোকে সার্বিয়ার সাথে যুক্ত করতে, যে সার্বিয়া আত্মপ্রকাশ করবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে।

যুগোস্লাভিয়া প্রথমে পুরো ক্রোয়েশিয়াকেই নিজের অধীনে রাখতে চেয়েছিল, সামরিক বাহিনী ব্যবহার করে চেয়েছিল পুরো ক্রোয়েশিতেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু, ক্রোয়েট বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে সেটি সফল হয়নি, ১৯৯২ সালের শুরুতেই স্বাক্ষরিত হয় কেইস্ফায়ার, বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে আসতে থাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ক্রোয়েশিয়ার স্বীকৃতি। জাতিসংঘের অধীনে ক্রোয়েশিয়ার চারটি অঞ্চল ছিল, যেগুলো পরবর্তী ক্রোয়েশিয়ার সরকার অঙ্গীভূত করে নেয়।

ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতিতে সার্বরা

ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিলো ইউরোপের মাটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পরে প্রথম যুদ্ধ। ক্রোয়েট বাহিনী আর যুগোস্লাভিয়ার সামরিক বাহিনীর সাথে এই যুদ্ধে ক্রোয়েশিয়ান সার্বরা যুগ দেয় দ্বিতীয়পক্ষের সাথে। ক্রোয়েশিয়াতে সার্বরা সাধারণত সেসব জায়গাতেই অস্ত্র তুলে নিয়েছে, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জাতিগত সার্ব রয়েছে। এসব অঞ্চলে সামরিক সরঞ্জাম এসেছে সার্বিয়ার কাছ থেকেই, এদের নিয়ে গঠিত হয় রিপাবলিক অব সার্ব ক্রাজনিয়া। প্রয়োজনের তাগিদেই হোক আর শাস্তির ভয়েই হোক, ক্রোয়েশিয়াতে মোট সার্বের অর্ধেকই অনুগত ছিল ক্রোয়েশিয়া সরকারের প্রতি।

ক্রোয়েশিয়াতে থেকে যাওয়া সার্বদের অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, নিগ্রহের শিকার হয়েছেন স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র আর সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। যুদ্ধের বিভীষিকা দেশজুড়েই ছড়িয়ে যায়, সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে সার্বদের উপর। প্রায় ২০ হাজার ক্রোয়েশিয়ান সার্ব জীবন হারায়, যার মধ্যে ১৩ হাজারই ছিল ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে থাকা সার্ব। ক্রোয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশই যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়, অনেক ক্রোয়েশিয়ান সার্বই চলে যায় দেশ ছেড়ে।

ক্রোয়েশিয়াতে থেকে যাওয়া সার্বদের অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছেন; Image Source: BBC.

যুদ্ধের পরে অবশ্য সার্ব শরণার্থীদের একটা অংশ ক্রোয়েশিয়াতে ফিরে আসে, বর্তমানে তারা বৃহত্তম এথনিক মাইনোরিটি। তবে, যুদ্ধের কারণে সার্বদেরে সংখ্যা অর্ধেক কমলেও নব্বইয়ের দশকে যেখানে মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ ছিল সার্বরা, বর্তমানে তারা ৫ শতাংশের চেয়েও কম। আবার, ক্রোয়েশিয়াতে সার্বরা সাধারণত সেসব অঞ্চলেই বসবাস করে, যেসব অঞ্চলগুলোকে নিয়ে ক্রোয়েশিয়ান সার্বরা স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চেয়েছিল।  

ক্রোয়েশিয়ার নির্বাচনী ব্যবস্থা

বর্তমানে পৃথিবীতে দুটি প্রধান নির্বাচনী কাঠামো দেখা যায়। একটি মেজরিটারিয়ান সিস্টেম বা সিংগেল মেম্বার ডিস্ট্রিক্ট সিস্টেম, যেখানে সর্বাধিক ভোট পাওয়া প্রার্থী সরাসরি নির্বাচিত হয়ে যান। এই সিস্টেম ‘উইনার টেইকস অল’ সিস্টেম নামেও পরিচিত। দ্বিতীয় সিস্টেম পরিচিত প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন সিস্টেম নামে। এখানে, ভোটারদের ভোটের শতকরা হিসেবে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

ক্রোয়েশিয়াতে নির্বাচন; Image Source: Anadolu Agency

ক্রোয়েশিয়াতে স্বাধীনতা লাভের পর প্রথম তিনটি নির্বাচন করেছে মেজরিটারিয়ান সিস্টেমে, পরবর্তীতে সেখানে প্রচলন করা হয়েছে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন সিস্টেম। ক্রোয়েশিয়ার জাতীয় পার্লামেন্টে তিনটি আসন সংরক্ষিত আছে ক্রোয়েশিয়ার সার্বদের জন্য। ক্রোয়েশিয়ার যেসব অঞ্চলে সার্বদের উপস্থিতি রয়েছে, রয়েছে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ, সেসব অঞ্চলের নির্বাচনী তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন জোশিভ গ্লাউরডিক, মাইকেল মোটাক ও ক্রিস্টপি লেসেহাভে। তিনজনই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক।

জাতিগত বিভাজনের রাষ্ট্রে নির্বাচন

আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের যুগে জাতিগত সংঘাত খুবই সাধারণ ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই ঘরানার ঘটনা বেড়েছে অনেক বেশি। মিয়ানমারে সাত দশক ধরে চলছে জাতিগত সংঘাত আর গৃহযুদ্ধ, শ্রীলঙ্কাতে হয়েছে কয়েক দশকব্যাপী রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধ। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত আর পাকিস্তানের মিল আছে এই ক্ষেত্রে। দুই দেশেই স্বাধীনতার দাবিতে লড়ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিরা, দুই দেশেই রয়েছে জাতিগত বিভাজনের রাজনীতি। এশিয়া পেরিয়ে আফ্রিকাতেও রয়েছে একই ধরনের বিভাজন। জাতিগত বিভাজনের উপর ভিত্তি করে এখনও আফ্রিকাতে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন জাতিরাষ্ট্র।

তবে, শ্রীলঙ্কার মতো যেসব দেশে সংঘাতের শেষে বিরোধী দুটি পক্ষ একই রাজনৈতিক কাঠামোতে থাকে, তখন শান্তি আর স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে তাদের মধ্যে সংহতি তৈরি করতে হয়। শুরুতেই দুই পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক সহাবস্থানের পরিবেশ তৈরি হয়, দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি করতে হয়। পারস্পরিক বিশ্বাস তৈরি করতে হয়, অবসান ঘটাতে হয় রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের। সংঘাত-পরবর্তী সমাজে জাতিগত মেলবন্ধন তৈরির জন্য নির্বাচন একটি ভালো উপায়, নির্বাচনের মাধ্যমে বিভিন্ন এথনিক গোষ্ঠী নিজেদের পছন্দ জানাতে পারে। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি মুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়, তৈরি হয় জাতিগত সাম্যতার জন্য বিভিন্ন ধরনের নীতি।

Image Source: Mayor.EU

ক্রোয়েশিয়ার ক্ষেত্রে, স্বাধীনতাকামী সার্ব আর ক্রোয়েশিয়ার পক্ষে থাকা সার্ব, দুই পক্ষই বর্তমানে একই জাতিগোষ্ঠী ভুক্ত, একই ঘরানার রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে ক্রোয়েট আর সার্বদের মধ্যে জাতিগত সংঘাতের স্মৃতিকে ভুলে যেতে সহযোগিতা করছে পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়টি, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নির্বাচনের সংস্কৃতিও।

নির্বাচনে জাতিগত পরিচয়

সংঘাত-পরবর্তী একটি সমাজে বৈষম্যহীন রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরি করাই মূল চ্যালেঞ্জ, এর সাথে যুক্ত হয় একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করার বাধ্যবাধকতাও। নির্বাচন এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সংঘাত-পরবর্তী একটি সমাজের নির্বাচনে বিভিন্নভাবে পরিচয়ের রাজনীতি ভূমিকা রাখে।

প্রথমত, জাতিগত বিভাজন যেসব দেশে রয়েছে, সেসব দেশে বিভিন্ন ধরনের পরিচয় ভোটপ্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব অঞ্চলের ভোটাররা সাধারণত পরিচয়ের সামঞ্জস্য ও অসামঞ্জস্যের ব্যাপারগুলো নিয়ে অধিক সতর্ক থাকেন, ভোটের ক্ষেত্রে পরিচয়গুলো অনেক বেশি মুখ্য হয়ে ওঠে। মেজরিটারিয়ান সিস্টেমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী থেকে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, তিনি সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তি থেকে সমর্থন কম পান। সংঘাতের সমাপ্তি ঘটলেও, সাধারণত পরিচয়ের কারণে তারা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে ভোট কম পান।

দ্বিতীয়ত, জাতিগত সংঘাত হয়েছে এমন রাষ্ট্রে পরিচয়ের উপর নির্ভর করে ভোট দেওয়ার ঘটনা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। অর্থাৎ, যেসব ক্ষুদ্র গোষ্ঠী সংঘাতের সময় নির্যাতন আর নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছেন, তারা ভবিষ্যৎ সংঘাতের শঙ্কায় সংঘাতপন্থীদের ক্ষমতায় আনতে চান না। আবার, ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে নিজের গোষ্ঠী থেকে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলে, তাকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ, সংখ্যালঘু গ্রুপ থেকে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হলে, তিনি সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে ভোটের মাধ্যমে পুরস্কৃত হন।

তৃতীয়ত, যেসব দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা আছে, সেসব দেশে সাধারণত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে একাধিক রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠে। সংরক্ষিত আসনগুলো এক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, ভূমিকা রাখে রাজনীতিতে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দিতেও।

Image Source: The People of Asia.

চতুর্থত, জাতিগত সংঘাত-পরবর্তী সমাজে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠী হিসেবে আবির্ভূত হয়, তারা সাধারণত সংঘাতকালীন স্মৃতিগুলোকে দ্রুত মুছে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহজে মানিয়ে নিতে পারেন। পরবর্তীতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাদের জন্য পরিচয়ের চেয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা যায়।

পঞ্চমত, সংঘাত পরবর্তী রাজনৈতিক সমাজে সংখ্যাগরিষ্ঠ আর সংখ্যালঘুর পরিচয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হিসেবে আবির্ভূত হতে দেখা গেছে লিঙ্গীয় পরিচয়কে। সংঘাত-পরবর্তী সমাজে নারীরা নির্বাচনে প্রার্থী হলে, তুলনামূলকভাবে যোগ্য প্রার্থী হলেও তারা প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে সাধারণত কম ভোট পান।

নির্বাচনে প্রার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে পরিচয়ের ভূমিকা নতুন না। সাধারণত, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় সামঞ্জস্য আর অসামঞ্জস্য খোঁজা প্রত্যেক ভোটারেরই নিয়মিত বৈশিষ্ট্য। সংঘাত-পরবর্তী অনেক জাতিরাষ্ট্রেই সত্যিকারের জাতিগত মেলবন্ধন দেখা গেছে, অনেক রাষ্ট্রে আবার দেখা যাচ্ছে ‘টাইরানি অব মেজরিটি’। সম্প্রতি আবার উত্থান ঘটছে জনতুষ্টিবাদের, যাদের মধ্যে পুরনো সংঘাতের ইতিহাসকে নতুনভাবে প্রাসঙ্গিক করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। নির্বাচনে ভোটারদের পছন্দের উপর অনেক সময় নির্ভর করে জাতিগত সংঘাতের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি, অনেক সময়ই সেসব রাজনৈতিক শক্তি পথ তৈরি করে দেয় নতুন রাষ্ট্র তৈরির।

This article is written in Bangla about the ethnic conflict in Croatia. References have been hyperlinked inside.
Feature Image: Sky News

Related Articles