Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website. The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মরিও প্রসপেরি: মরুভূমিকে জয় করা এক যোদ্ধার গল্প

ম্যারাথন দেস সেবলস মরুভূমির সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পৃথিবীর কঠিনতম এক দৌড় প্রতিযোগিতা। কারণ এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের মরুভূমির তপ্ত বালির উপর দৌড়াতে হয়। প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণের শর্তটিও বেশ কঠিন। মরুভূমির বালির উপর দিয়ে অংশগ্রহণকারীদের ছয় দিনে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার (প্রায় ১৫৫ মাইল) পথ পাড়ি দিতে হয়। এ সময় প্রতিযোগীদের প্রতিনিয়ত নানা বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিতে হয়। কখনও পানির অভাব দেখা দিতে পারে, কখনওবা মরু ঝড়ের কবলে পড়ে হারিয়ে যেতে পারেন যেকোনো প্রতিযোগী, আর পথ হারানোর ঝুঁকি তো রয়েছেই। তাই এই প্রতিযোগিতাটি বেশ কষ্টসাধ্য এবং বিপদজনকও বটে।

সাহারা মরুভূমির ম্যারাথন দেস সেবলস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের যাত্রাপথের এই মানচিত্রটি দেয়া হয়; Courtesy of Mauro Prosperi

এ কারণে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ব্যাপারে নামকরা অনেক দৌড়বিদও খুব একটা উৎসাহ দেখান না। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা অসাধ্য সাধন করতে, ভয়কে জয় করে ভয়ঙ্কর সব জায়গা পাড়ি দিতে সদা প্রস্তুত। নিজেদের জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে তারা এগিয়ে যেতে চান। তারাই মূলত ভালবাসেন এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে। অনেকে সফল হন, আবার অনেকে ব্যর্থ হন। অংশগ্রহণ করতে গিয়ে অনেকে আবার নিজেদের জীবনকেও বিপন্ন করে ফেলেন। তেমনই একজন প্রতিযোগী মরিও প্রসপেরি।

মরিও প্রসপেরি একজন ইতালীয়। সরকারী পুলিশ বাহিনীতে চাকরিরত ছিলেন। প্রাক্তন অলিম্পিকস পেন্টাথলনের পেশাদার দৌড়বিদ হিসেবে বেশ সুনামও ছিল তার। চাকরিতে যোগ দেয়ার পর তিনি দৌড় পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছেন। চাকরি, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই দিন পার করছিলেন। ১৯৯৪ সালের দিকে এক বন্ধুর মুখ থেকে শুনতে পান মরুভূমির এই ভয়ানক প্রতিযোগিতার কথা। খবর শুনেই তার অভিযাত্রী মন হঠাৎই চঞ্চল হয়ে ওঠে। সিদ্ধান্ত নেন, যেভাবেই হোক এই প্রতিযোগিতায় তাকে অংশগ্রহণ করতেই হবে। কিন্তু বয়স তো আর থেমে নেই। প্রসপেরির বয়স তখন ৩৯। ঘরে তিন ছেলেমেয়ে। 

ইতালীয় দৌড়বিদ মরিও প্রসপেরি; Image Source: learning-history.com

প্রসপেরি যখন বিষয়টি তার স্ত্রীকে জানান, তখন তার স্ত্রী সিনজিয়া বেশ অবাক হন। এ নিয়ে সংসারে রীতিমতো অশান্তি শুরু হলো। স্বামীর সাথে ঝগড়াঝাঁটি, রাগ করলেন সিনজিয়া। স্ত্রীকে প্রসপেরি এই বলে আশ্বস্ত করলেন যে, চিন্তার কিছু নেই। খারাপ বলতে বড়জোড় একটু রোদে পুড়তে হবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য মনের মধ্যে জেদ চেপে গিয়েছিল প্রসপেরির। জেতার বাসনায় পুরনো দিনের মতো আবার শুরু করে দিলেন অনুশীলন। যেন আবার নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পেলেন। প্রতিদিন ঘড়ি ধরে ৪০ কিলোমিটার দৌড়ানো, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা এবং সাথে দৈনন্দিন পানি পানের পরিমাণও কমাতে থাকেন। মরুভূমির রুক্ষ পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রসপেরি মরক্কো পৌঁছালেন। মুগ্ধ হলেন মরুভূমির বিশালতা দেখে। প্রায় ৮০ জন প্রতিযোগী সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সাহারা মরুভূমির একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে দৌড় শুরু হলো। প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে প্রসপেরি বেশ ভালোমতোই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু প্রতিযোগিতার চতুর্থ দিনে এসে বিপত্তি দেখা দিল।

মরুভূমির সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কঠিনতম এক দৌড় প্রতিযোগিতা ম্যারাথন দেস সেবলস; Image Source: mandegar.info

চতুর্থ দিন খুব সকালেই প্রসপেরি দৌড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু সকাল থেকেই মরুর আবহাওয়া ছিল বৈরী। মরুভূমি জুড়ে খুব জোরে বাতাস বইছিল। প্রসপেরি তখন চতুর্থ চেকপয়েন্ট অতিক্রম করেছেন। কিন্তু এসময় আশেপাশে তিনি কোনো প্রতিযোগীকে দেখতে পেলেন না। ভাবলেন, তারা হয়তো এগিয়ে গেছেন। এ সময় শুরু হলো প্রচন্ড মরু ঝড়। আত্মরক্ষার জন্য তিনি একটি বালিয়াড়ির মধ্যে ঢুকে পড়লেন। এই মরুঝড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে পড়লেই বিপদ। কারণ বালি দিয়ে যেকোনোভাবে কোথাও ঢিবি তৈরি হয়ে যেতে পারে। আর সেই ঢিবির নিচে চাপা পড়ে জীবন্ত সমাধি হয়ে যেতে পারে যে কারো।  

প্রসপেরি বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। তাই সেই প্রচন্ড বালি ঝড়ের মধ্যেই না থেমে কোনো রকমে এগিয়ে যেতে লাগলেন। সঙ্গে থাকা স্কার্ফ দিয়ে পুরো মুখ ঢেকে রাখলেন। তারপরও নাকে-মুখে বালি ঢুকে যেতে লাগলো। সামনে কিছু দেখা যাচ্ছে না। হাতড়ে-হাতড়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাইছেন। কোনোক্রমে একটি মাথা গোঁজার জায়গা খুঁজে পেলেন।

প্রসপেরি যে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন তার যাত্রাপথের মানচিত্র; Image Source: learning-history.com

ঝড় কমলো ৮ ঘন্টা পর। প্রসপেরি তখনও বুঝতে পারেননি যে, তিনি পথ হারিয়েছেন। সেদিন পর্যন্ত তিনি চতুর্থ স্থানে ছিলেন। ঝড় থামার পর অন্ধকার নেমে আসায় তিনি সেদিনের জন্য দৌড় স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। ঝড়ো বাতাসের কারণে মরুভূমির বালিয়াড়ির রূপ প্রতিনিয়ত পাল্টে যেতে থাকে। আজ যেমন, কাল অন্যরকম। এই বিষয়ে ভালোই অবগত ছিলেন প্রসপেরি। সাথে একটি কম্পাস আর ম্যাপ থাকায় ভরসার একটি জায়গা ছিল। এই ভেবে নিজেকে সবসময় আশ্বস্ত রাখতেন।

পরের দিন ঘুম ভাঙার পর পরিবেশটা তার কাছে অচেনা মনে হতে লাগলো। দেখলেন, চারদিক একদম পাল্টে গেছে। আগের দিনের সাথে তার কোনো মিলই নেই। তখনও তিনি ভয় পাননি। ভাবছিলেন, শীঘ্রই কারো সাথে দেখা হয়ে যাবে। তবুও মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিল, এর মধ্যে আর সবাই যদি তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায়! তাই তিনি এগিয়ে যেতে থাকলেন। কিন্তু চার ঘন্টা দৌড়ানোর পর আবিষ্কার করলেন, এক বিশাল প্রান্তরের মধ্যে তিনি একা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। চারদিকে কেউ নেই। শুধু বালি আর বালি।

ধীরে ধীরে ভয় গ্রাস করলো প্রসপেরিকে। ভয় তাড়ানোর জন্য তিনি নিজেকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন, কিছুতেই হাল ছেড়ে দেয়া চলবে না। এবার দৌড় ছেড়ে হাঁটতে শুরু করলেন। কিন্তু কোন দিকে হাঁটবেন? সাথে থাকা ব্যাগে ছিল ছুরি, কম্পাস, স্লিপিং ব্যাগ আর কিছু শুকনো খাবার। সঙ্গে একটি পানির বোতল। সেই বোতলের পানিও প্রায় শেষ।

ম্যারাথন দেস সেবলস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের নানা বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিতে হয়; Courtesy of Mauro Prosperi

প্রচন্ড তেষ্টায় বুক ফেটে যাচ্ছে। চারদিকে খুঁজছেন কোথাও যদি একটু পানি পাওয়া যায়। কিন্তু কোথাও পানির দেখা মিললো না। শরীর আর চলছে না। মনে পড়লো তার দাদুর কথা। প্রসপেরির দাদু এক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে খুব জলকষ্টে পড়েন। তখন নিজের প্রস্রাব পান করেই তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। দাদুর সেই বুদ্ধিটা প্রসপেরি কাজে লাগালেন। বাঁচার জন্য এছাড়া আর তো কোনো পথ খোলা নেই। 

তাপ থেকে বাঁচতে খুব ভোরে আর সন্ধ্যার দিকে হাঁটতে লাগলেন। আর বাকি সময় বিশ্রাম। দ্বিতীয় দিন আকাশে হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পেয়ে সেই দিকে ছুটে গিয়ে তাদের নজরে আসার চেষ্টা করলেন। লাভ হলো না। হেলিকপ্টার উড়ে গেল দৃষ্টির বাইরে। তিন দিন ধরে শুধু বোতল থেকে নিজের প্রস্রাব পান করে রইলেন প্রাক্তন এই অলিম্পিয়ান।

প্রথম চারদিন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে এগিয়ে যেতে থাকেন প্রসপেরি; Courtesy of Mauro Prosperi

পরদিন মরুভূমির মধ্যে প্রসপেরি দেখতে পেলেন এক পুরনো দরগা। সেখানে পৌঁছে আশেপাশে কোনো জনমানুষ দেখতে পেলেন না। শুধুই বাদুড়ের আস্তানা। দরগার ছাদটি বেশ নিচু হওয়ায় তিনি ছাদে উঠে ইতালীয় পতাকাটি পুঁততে চেষ্টা করলেন, যদি কারো নজরে আনা যায়। ক্ষুধা-তেষ্টায় তখন তিনি অর্ধোন্মাদ। দরগার মধ্যে ঝুলে থাকা বাদুড় ধরে  ‍ছুরি দিয়ে সেই বাদুড় কেটে তার রক্ত পান করতে লাগলেন। এভাবে ২০টি বাদুড়ের রক্ত পান করেন প্রসপেরি। আর তাতে তিনি সম্ভবত আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।

শরীরে পানির পরিমাণ ক্রমশ কমে আসছে। মাথা ভারী হয়ে আসছে। হেঁটে চলার মতো শরীরে এতটুকু শক্তিও আর অবশিষ্ট নেই। এরই মধ্যে বিমানের শব্দ শুনতে পেলেন। আগুন জ্বালিয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করতে লাগলেন প্রসপেরি। কিন্তু এমনই কপাল, তখনই হঠাৎ আবার উত্তাল বালিঝড় শুরু হলো। চললো টানা ১২ ঘন্টা ধরে। থামলো যখন, বিমান ততক্ষণে চলে গেছে! উত্তাল বালিঝড়ে সেই আগুন নিভে গেল। মাঝে মাঝে প্রসপেরির মনে হচ্ছিলো, এই ঝড় বুঝি আর থামবেই না। দরগার ভেতর বালি জমে পুরু হয়ে আছে। জানালা-দরজা কবেই ভেঙে গেছে। 

পুরাতন এই দরগায় প্রসপেরি আশ্রয় নিয়েছিলেন; Courtesy of Mauro Prosperi

দরগায় বসে বসে ভাবছিলেন, হয়তো তারই মতো কোনো দুর্ভাগা একদিন এখানে খুঁজে পাবে তার কঙ্কাল। তারপরও মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন এই বলে, মাথার ওপর ছাদ থাকায় এ যাত্রায় তো বেঁচে গেলেন। না হলে তো তার দেহ চিরকালের মতো বালির ভিতরেই ডুবে যেতো। 

আর শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলেন না প্রসপেরি। এক টুকরো কয়লা দিয়ে স্ত্রীকে একটি চিঠি লিখলেন। তারপর মৃত্যুর জন্য নিজের হাতের কব্জিতে ছুরি বসিয়ে দিলেন। কিন্তু শরীরের রক্ত খুব ঘন হয়ে যাওয়ায় রক্ত বেরোলো না। মৃত্যুর জন্য মন স্থির করেও যখন মৃত্যুর দেখা পেলেন না, ভাবলেন, তার মৃত্যুর সময় এখনো আসেনি। চোখের সামনে তার ছেলেমেয়ের হাসিমাখা মুখ ভেসে আসতে লাগলো। তাদের জন্যও নিজের মধ্যে আবার বেঁচে থাকার তাগিদ অনুভব করলেন। দরগা থেকে বের হয়ে কখনো হেঁচড়ে-হেঁচড়ে, কখনও হামাগুড়ি দিয়ে বালির উপর দিয়ে চলতে লাগলেন।

প্রতিযোগিতায় প্রসপেরির সাথে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন প্রতিযোগী; Courtesy of Mauro Prosperi

এখানে আসার পর একজন তাকে বলেছিলেন, যদি মরুতে পথ হারাও, তাহলে সকালের দিগন্তের কাছে যে মেঘ দেখা যাবে তা লক্ষ্য করেই এগিয়ে যাবে। সেই কথা মনে করেই প্রসপেরি এগিয়ে যেতে লাগলেন। আস্তে আস্তে চোখের জোর কমে আসতে থাকে। চারদিকে কেমন বিভ্রম লাগে। তবুও দিগন্তের সেই স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলেন। এগিয়ে যাওয়ার পথে ক্ষুধা মেটানোর জন্য সাপ, সরীসৃপ মেরে তাদের কাঁচা খেতেন। এ সময় সাথে থাকা কয়েকটি ওষুধ তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আট দিন চলার পর তিনি একটি মরুদ্যানের সন্ধান পেলেন। ততদিনে অবশ্য তাকে খুঁজতে মরক্কো থেকে এক উদ্ধারকারী দল বেরিয়ে পড়েছে। ইতালি থেকে ছুটে এসেছে তার আত্মীয়রা। সকলেই ধরে নিয়েছে যে, তিনি মারা গেছেন।

এদিকে পরের দিন ঘোর লাগা চোখে দূরে এক পাল ছাগলকে চড়ে বেড়াতে দেখতে পেলেন প্রসপেরি। আর দেখলেন এক ছোট্ট মেয়েকে। এ কি তার চোখের ভুল? না, সত্যিই ভাগ্য এতদিন পর তার প্রতি সদয় হলো। সেসময় এক যাযাবর গোষ্ঠী ঐ জায়গায় অবস্থান করছিলেন। তারাই মৃতপ্রায় প্রসপেরিকে উদ্ধার করে একটি আলজেরীয় মিলিটারি ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়ে আসে। হাঁটতে-হাঁটতে মরক্কোর সীমানা পেরিয়ে প্রসপেরি চলে গিয়েছিলেন আলজেরিয়ার সীমান্তে। পরে তিনি হিসেব করে দেখেছিলেন, শেষদিন তিনি ঠিক জাগোরার ফিনিশিং লাইনের ৩০০ কিলোমিটার কাছে এসে পড়েছিলেন।

প্রসপেরিকে যে স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়; Image Source: bbc.com

এই ক’দিনে তার ওজন ১৬ কেজি কমে গিয়েছিল। চোখ আর লিভার মারাত্মকভাবে জখম হয়। সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে প্রসপেরির দুই বছর লেগেছিল। কিন্তু এই কষ্টের পরিণতি তাকে খুব একটা ভয় দেখাতে পারেনি। এর ঠিক চার বছর পর তিনি আবার ঐ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু সেবারও জয়ের দেখা মেলেনি। এরপর আরও অনেক ডেজার্ট ম্যারাথনে নাম দেন এই ইতালীয় দৌড়বিদ। সেখানেও যে খুব একটা সফল হয়েছিলেন তা নয়। বারবার মরুর সাথে লড়াইয়ে প্রসপেরির এই হেরে যাওয়ায় তেমন লজ্জা নেই। বরং অনেক গৌরব লুকিয়ে আছে। 

মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও মরুকে জয় করার অদম্য আকাঙ্ক্ষায় প্রসপেরি বারবার অংশ নিয়েছেন এই দৌড় প্রতিযোগিতায়; Image Source: learning-history.com

মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখার পরও মরুকে জয় করার অদম্য আকাঙ্ক্ষার জন্যই তিনি জয়ী। মরুভূমির সম্মোহন যে কত ভয়ানক তা-ই যেন তার এই বারবার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জানান দিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,

প্রতিবছরই মরুভূমিতে যাই একবার তাকে অভিনন্দন জানাতে। এই মরুভূমির জন্যই তো জীবনকে নতুনভাবে চিনতে পারলাম।

Mauro Prosperi was 39 years old when he took part in the 1994 Marathon des Sables - a six-day, 250km (155-mile) race through the Sahara described as the toughest race of its kind. Following a sandstorm, the former Olympic pentathlete was lost in the desert for 10 days. Here he tells his story.

Feature Image: bbc.com

Related Articles