২০২০ সালের ৯ নভেম্বর আর্মেনীয়–আজারবাইজানি সীমান্তে আজারবাইজানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা ম্যান–পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের সাহায্যে রুশ বিমানবাহিনীর একটি 'মিল মি–২৪' অ্যাটাক হেলিকপ্টারকে ভূপাতিত করে। এর ফলে হেলিকপ্টারটির তিনজন ক্রুর মধ্যে দুইজন (মেজর ইউরি ইশ্চুক এবং সিনিয়র লেফটেন্যান্ট রোমান ফেদিনা) নিহত হন। হেলিকপ্টারটির নেভিগেটর সিনিয়র লেফটেন্যান্ট ভ্লাদিস্লাভ গ্রিয়াজিন এই আক্রমণে আহত হন, কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান। আজারবাইজানিদের রুশ হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার ঘটনাটি রুশ–আজারবাইজানি সম্পর্কে একটি নতুন মাত্রা সংযোজিত করে, কারণ ১৯৮৮–১৯৯৪ সালের আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের পর প্রায় ২৫ বছর এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তদুপরি, আজারবাইজানিদের রুশ হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার সময় নাগর্নো–কারাবাখকে কেন্দ্র করে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া/আর্তসাখের মধ্যে নতুন একটি যুদ্ধ চলছিল, সুতরাং আজারবাইজানিদের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক/গুজবের সৃষ্টি করে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে 'ইয়েনি আজারবাইজান পার্তিসি' আজারবাইজানের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে রাষ্ট্র দুটির মধ্যে সাধারণভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং বর্তমান রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ও আজারবাইজানি রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক বিদ্যমান। তাছাড়া, রাশিয়া ও আজারবাইজান পরস্পরের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হলেও তাদের মধ্যে ভূখণ্ডগত বা অন্য কোনো ধরনের বিরোধ নেই, এবং আজারবাইজান রুশবিরোধী কোনো সামরিক জোটের সদস্য নয়। তদুপরি, ২০২০ সালে সংঘটিত আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধ চলাকালে রাশিয়া 'কঠোর নিরপেক্ষতা' (strict neutrality) বজায় রাখে এবং যুধ্যমান উভয় পক্ষ থেকে নিজেকে সমদূরবর্তী হিসেবে প্রদর্শন করে। সুতরাং এসময় রুশ হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার মতো কোনো কারণ আজারবাইজানিদের কাছে ছিল না। এই পরিস্থিতিতে আজারবাইজানিরা কেন রুশ হেলিকপ্টারটি ভূপাতিত করেছিল? এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য প্রথমে আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে রুশ ভূমিকা এবং ২০২০ সালে সংঘটিত আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্ব এবং উক্ত দ্বন্দ্বে রুশ ভূমিকা
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে তদানীন্তন রুশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ট্রান্সককেশিয়ান প্রদেশগুলোতে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী আর্মেনীয় এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী ককেশিয়ান তাতারদের (পরবর্তীতে যারা 'আজারবাইজানি' হিসেবে পরিচিতি অর্জন করে) মধ্যে বিভিন্ন কারণে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এসময় উভয় জাতির মধ্যে তীব্র জাতীয়তাবাদী চেতনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে প্রতিবেশী দুই জাতির মধ্যে বিরোধ ক্রমশ তীব্র রূপ ধারণ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪–১৯১৮) চলাকালে রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং ১৯১৮ সালে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এসময় নবগঠিত রাষ্ট্র দুইটির মধ্যে বিভিন্ন ভূখণ্ডের (যেমন: নাগর্নো–কারাবাখ, নাখচিভান ও জাঙ্গেজুর/সিউনিক) অধিকার নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় এবং এই বিরোধ পূর্ণাঙ্গ আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধে রূপ নেয়।
এমতাবস্থায় ১৯২০ সালে আজারবাইজানি ও আর্মেনীয় কমিউনিস্টরা নিজ নিজ রাষ্ট্রে বিপ্লব/অভ্যুত্থান ঘটিয়ে শাসনক্ষমতা দখল করে এবং একই সময়ে তাদের আমন্ত্রণে সোভিয়েত রুশ লাল ফৌজ রাষ্ট্র দুটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের অবসান ঘটে এবং রাষ্ট্র দুইটির মধ্যে ভূখণ্ড সংক্রান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটে। এই সমঝোতা অনুযায়ী জাঙ্গেজুর (বর্তমান সিউনিক) আর্মেনিয়ার হস্তগত হয়, আর নাগর্নো–কারাবাখ ও নাখচিভান আজারবাইজানের হস্তগত হয়। ১৯২২ সালে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়েই সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগদান করে। সোভিয়েত শাসনাধীনে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান ছিল দুটি ইউনিয়ন প্রজাতন্ত্র, এবং আজারবাইজানের অধীনে নাগর্নো–কারাবাখ 'স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ' হিসেবে ও নাখচিভান 'স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্র' হিসেবে ছিল।
১৯৮০–এর দশকের মাঝামাঝিতে 'সোভিয়েত ইউনিয়ন কমিউনিস্ট দলে'র মহাসচিব মিখাইল গর্বাচেভ কর্তৃক প্রবর্তিত রাজনৈতিক উদারীকরণের (liberalization) সুযোগে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানে (ও নাগর্নো–কারাবাখে) উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনা বিস্তার লাভ করে। নাগর্নো–কারাবাখ প্রশাসনিকভাবে আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত ও ভৌগোলিকভাবে আজারবাইজানি ভূখণ্ড দ্বারা আর্মেনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, কিন্তু সেখানকার সিংহভাগ অধিবাসী জাতিগত আর্মেনীয়। এই পরিস্থিতিতে আর্মেনিয়া ও নাগর্নো–কারাবাখের আর্মেনীয় জাতীয়তাবাদীরা নাগর্নো–কারাবাখকে আর্মেনিয়ার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানায়। আজারবাইজানি জাতীয়তাবাদীরা এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং নাগর্নো–কারাবাখকে 'ঐতিহাসিক আজারবাইজানি ভূখণ্ড' হিসেবে দাবি করে। এর ফলে ট্রান্সককেশিয়া জুড়ে আর্মেনীয় ও আজারবাইজানিদের মধ্যে জাতিগত দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় এবং ১৯৮৮ সাল নাগাদ এই দ্বন্দ্ব কার্যত যুদ্ধের রূপ নেয়।
সোভিয়েত কেন্দ্রীয় সরকার এই দ্বন্দ্ব বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালায়, কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটে এবং আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। রাষ্ট্র দুইটির মধ্যে যুদ্ধ অব্যাহত থাকে। নবগঠিত রুশ ফেডারেশন এই যুদ্ধে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়কেই সামরিক সহায়তা প্রদান করে, কিন্তু আজারবাইজানকে প্রদত্ত রুশ সহায়তার তুলনায় আর্মেনিয়াকে প্রদত্ত রুশ সহায়তার পরিমাণ ও মাত্রা ছিল বহুলাংশে বেশি। যুদ্ধে আজারবাইজান পরাজিত হয় এবং আর্মেনীয়রা নাগর্নো–কারাবাখের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ ও এর আশেপাশের ৭টি আজারবাইজানি–অধ্যুষিত জেলার সম্পূর্ণ অংশ/অংশবিশেষ দখল করে নেয়। যুদ্ধের শুরু থেকেই রুশরা উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল এবং অবশেষে ১৯৯৪ সালের মে মাসে রুশ মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে 'বিশকেক প্রোটোকল' স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্য দিয়ে আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের (১৯৮৮–১৯৯৪) অবসান ঘটে।
নাগর্নো–কারাবাখ ও পার্শ্ববর্তী আর্মেনীয়–অধিকৃত অঞ্চলগুলোর সমন্বয়ে আর্মেনীয়রা 'আর্তসাখ প্রজাতন্ত্র' নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে এবং কার্যত স্বাধীনভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে শুরু করে। কিন্তু বিশ্বের কোনো রাষ্ট্রই আর্তসাখকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। আর্মেনিয়া আর্তসাখকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু তারা কার্যত আর্তসাখের 'নিরাপত্তা প্রদানকারী' হিসেবে কাজ করছে। আজারবাইজান এই পরিস্থিতিকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ফলশ্রুতিতে পরবর্তী প্রায় ২৬ বছর ধরে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে।
আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে রাশিয়ার ভূমিকা বরাবরই জটিল ছিল। আর্মেনিয়া রাশিয়ার সামরিক মিত্র, আর্মেনীয় ভূখণ্ডে রুশ সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, রুশ সীমান্তরক্ষীরা তুর্কি–আর্মেনীয় ও ইরানি–আর্মেনীয় সীমান্ত পাহারা দেয় এবং আর্মেনিয়া রুশ–নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট 'সিএসটিও' ও রুশ–নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক জোট 'ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়নে'র সদস্য। অন্যদিকে, আজারবাইজান রাশিয়ার সামরিক মিত্র নয় এবং রুশ–নেতৃত্বাধীন সিএসটিও বা ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়নের সদস্য নয়। কিন্তু আজারবাইজান কোনো রুশবিরোধী সামরিক বা অর্থনৈতিক জোটেরও সদস্য নয় এবং ২০১২ সাল পর্যন্ত আজারবাইজানে একটি রুশ সামরিক ঘাঁটি ছিল। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়েই রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক বজায় রাখে, উভয়েই রাশিয়ার কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অস্ত্র ক্রয় করে এবং রাশিয়ায় প্রায় ৩০ লক্ষ আর্মেনীয় ও প্রায় সমান সংখ্যক আজারবাইজানি বসবাস করে।
এই পরিস্থিতিতে আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে যে কোনো এক পক্ষকে পূর্ণ সমর্থন প্রদান করা মস্কোর পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য ১৯৯৪ সালের যুদ্ধবিরতির পর থেকে তারা আলোচনার মাধ্যমে আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রচেষ্টা চালায়। রুশদের প্রস্তাব ছিল, নাগর্নো–কারাবাখের আশেপাশের যে ৭টি জেলা আর্মেনীয়রা দখল করে রেখেছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেয়া হোক এবং বিনিময়ে আজারবাইজান নাগর্নো–কারাবাখকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করুক অথবা বর্তমান অবস্থা বজায় রাখুক। কিন্তু যুদ্ধের পর আর্মেনীয়রা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল এবং আজারবাইজানকে কোনো ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত ছিল না। এর ফলে আলোচনার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং আজারবাইজানি সরকার ক্রমশ সামরিক শক্তিবলে পূর্ববর্তী যুদ্ধে হারানো অঞ্চল পুনর্দখলের পরিকল্পনা করতে থাকে। কিন্তু রাশিয়া ও আর্মেনিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার কারণে তাদের পক্ষে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করা সম্ভব হচ্ছিল না।
কিন্তু ২০১৮ সালে আর্মেনিয়ায় সংঘটিত একটি বিপ্লব/অভ্যুত্থানের ফলে রাষ্ট্রটির রুশপন্থী প্রধানমন্ত্রী সের্ঝিক সার্গসিয়ান ক্ষমতাচ্যুত হন এবং পশ্চিমাপন্থী নিকোল পাশিনিয়ান তার স্থলাভিষিক্ত হন। আর্মেনিয়ার নতুন সরকার রুশ সামরিক জোটে তাদের অংশগ্রহণ ও আর্মেনীয় ভূখণ্ডে রুশ সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখে, কিন্তু বিভিন্ন রুশবিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করে এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের ওপর জোর প্রদান করে। তদুপরি, পাশিনিয়ান আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য প্রস্তাবিত রুশ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এই পরিস্থিতিতে আজারবাইজানি সরকার রাশিয়া ও আর্মেনিয়ার মধ্যবর্তী বিরোধকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোয় সুযোগ পায় এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
২০২০ সালের আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধ এবং রুশ ভূমিকা
২০২০ সালের জুলাইয়ে আর্মেনীয়–আজারবাইজানি সীমান্তে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং এই সংঘর্ষ ৪ দিন স্থায়ী হয়। আর্মেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে ৫ জন আর্মেনীয় সৈন্য নিহত এবং ৩৭ জন আর্মেনীয় সৈন্য আহত হয়। অন্যদিকে, আজারবাইজানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে ১২ জন আজারবাইজানি সৈন্য নিহত এবং ৪ জন আজারবাইজানি সৈন্য আহত হয়। এই সংঘর্ষে আজারবাইজানি সেনাবাহিনীর ৩য় কোরের চিফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল পোলাদ হাশিমভ নিহত হন এবং এই ঘটনা আজারবাইজানি জনসাধারণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। হাজার হাজার আজারবাইজানি নাগরিক আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে। এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্ক, জার্মানি ও বেলজিয়ামসহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রে বসবাসকারী জাতিগত আর্মেনীয় ও আজারবাইজানিদের মধ্যে দাঙ্গা দেখা দেয়।
২০২০ সালের ২৯ আগস্ট থেকে ১০ জুলাই তুর্কি ও আজারবাইজানি সশস্ত্রবাহিনী আজারবাইজানি ভূখণ্ডে একটি বড় মাত্রার সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করে এবং সেপ্টেম্বরে উভয় পক্ষ অনুরূপ আরেকটি মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। তুরস্ক আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে আজারবাইজানের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে এবং বিশ্লেষকদের মতে, তুর্কি সরকার আজারবাইজানকে যুদ্ধের মাধ্যমে হারানো ভূখণ্ড পুনর্দখল করতে উৎসাহিত করে। উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে স্বাধীন আজারবাইজানি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তুরস্ক ও আজারবাইজানের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান, কারণ আনাতোলীয় তুর্কি ও আজারবাইজানিরা উভয়েই 'বৃহত্তর তুর্কি' (Turkic) মহাজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং উভয় জাতির সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে আর্মেনীয়দের শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক বিদ্যমান। ১৯৮৮–১৯৯৪ সালের আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের সময় তুরস্ক সক্রিয়ভাবে আজারবাইজানকে সমর্থন করে, এবং তুর্কি ও আজারবাইজানি রাষ্ট্রনায়করা তুরস্ক ও আজারবাইজানকে 'এক জাতি, দুই রাষ্ট্র' হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।
আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বের প্রতি রাশিয়া ও তুরস্কের দৃষ্টিভঙ্গিতে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। রাশিয়ার সঙ্গে আর্মেনীয় ও আজারবাইজানি উভয় জাতিরই ঐতিহাসিক সংযোগ রয়েছে এবং রুশরা আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়কেই নিজস্ব প্রভাব বলয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহী। এজন্য সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে আজারবাইজানের তুলনায় আর্মেনিয়া মস্কোর সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠ হলেও মস্কো আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে আগ্রহী এবং এই দ্বন্দ্বে একচ্ছত্রভাবে আর্মেনিয়াকে সমর্থন করতে ইচ্ছুক নয়। অন্যদিকে, তুরস্ক জাতিগত সাদৃশ্যের ভিত্তিতে আজারবাইজানিদেরকে নিজেদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করে, কিন্তু ঐতিহাসিকভাবে আর্মেনীয়দের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শত্রুভাবাপন্ন। এজন্য আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে তুরস্কের নিরপেক্ষতা অবলম্বনের কোনো প্রয়োজন নেই এবং তারা স্পষ্টভাবে আজারবাইজানকে সমর্থন করে।
বস্তুত বিশ্লেষকদের ধারণা, রাশিয়া সিরীয় যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে তুর্কি–সমর্থিত মিলিট্যান্টদের হাত থেকে সিরীয় সরকারকে রক্ষা করেছে ও এর মধ্য দিয়ে তুর্কিদের ভূরাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বাধা দিয়েছে, এজন্য এর প্রতিশোধ নিতেই তুরস্ক আর্মেনিয়া ও আর্তসাখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আজারবাইজানকে উৎসাহ দিচ্ছিল। এমনিতেই যুদ্ধ শুরুর জন্য আজারবাইজানের নিজস্ব কারণ ছিল। তুর্কি ও আজারবাইজানি কৌশলবিদরা সঠিকভাবে আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে, রাশিয়া আর্মেনীয়–আজারবাইজানি দ্বন্দ্বে সরাসরি কোনো এক পক্ষে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নয় এবং বিশেষত আজারবাইজান আর্মেনিয়ার নিজস্ব ভূখণ্ডের ওপর আক্রমণ না চালালে পাশিনিয়ানের পশ্চিমাপন্থী সরকারের পক্ষে রুশদের যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
অবশ্য আজারবাইজানের তুর্কিপন্থী ও পশ্চিমাপন্থী বিরোধী দল 'আজারবাইজান খালক সাবহাসি পার্তিয়াসি'র নেতা আলী কারিমলির মতে, তুরস্ক নয়, বরং রাশিয়া আজারবাইজানি সরকারকে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করেছিল। এক্ষেত্রে রুশদের হিসেব ছিল এরকম: যুদ্ধের ফলে আর্মেনিয়ার পশ্চিমাপন্থী সরকারের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তারা রাশিয়ার ওপর আরো নির্ভরশীল হয়ে পড়তে বাধ্য হবে। এজন্য কারিমলির মতে, আর্মেনিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও আজারবাইজানের ওপর প্রভাব বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাশিয়া আজারবাইজানকে যুদ্ধ শুরুর জন্য উৎসাহ দিচ্ছিল।
আজারবাইজানের যুদ্ধ আরম্ভ করার প্রকৃত কারণ যাই হোক না কেন, ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আর্মেনিয়া ও আর্তসাখের সঙ্গে আজারবাইজানের যুদ্ধ শুরু হয় এবং তুর্কি সৈন্য ও তুর্কি–নিয়ন্ত্রিত সিরীয় মার্সেনারিরা এই যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে আজারবাইজানের পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। রাশিয়া এই যুদ্ধে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করে এবং রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন কার্যত একটি সাক্ষাৎকারে আজারবাইজানের প্রতি তুর্কি সমর্থনকে 'আইনসঙ্গত' হিসেবে অভিহিত করেন। অক্টোবরে রুশ মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে দুবার যুদ্ধবিরতি স্থাপিত হয়, কিন্তু এই দুই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হয়নি। অবশেষে ১০ নভেম্বর রুশ মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষের মধ্যে চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি স্থাপিত হয়।
৪৪ দিনব্যাপী এই যুদ্ধে তুর্কি–সমর্থিত আজারবাইজানের নিকট আর্মেনিয়া ও আর্তসাখ পরাজিত হয় এবং আজারবাইজানি সৈন্যরা আর্তসাখের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ও শুশা শহর দখল করে নেয়। আজারবাইজানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ২.৯০৭ জন আজারবাইজানি সৈন্য নিহত ও ৭ জন আজারবাইজানি সৈন্য নিখোঁজ হয়, এবং ১৪ জন আজারবাইজানি সৈন্য আর্মেনীয়দের হাতে বন্দি হয়। ব্রিটেনভিত্তিক সিরীয় যুদ্ধ বিষয়ক তথ্য সংস্থা 'সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসে'র প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ৫৪১ জন তুর্কি–নিয়ন্ত্রিত সিরীয় মার্সেনারি নিহত হয় এবং ৩ জনের বেশি সংখ্যক সিরীয় মার্সেনারি আর্মেনীয়দের হাতে বন্দি হয়। অন্যদিকে, আর্মেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ৪,০২৫ জন আর্মেনীয় ও আর্তসাখ সৈন্য নিহত, ২৩১ জন আর্মেনীয় ও আর্তসাখ সৈন্য নিখোঁজ এবং প্রায় ১১,০০০ আর্মেনীয় ও আর্তসাখ সৈন্য আহত হয়। তদুপরি, ৬০ জনের বেশি সংখ্যক আর্মেনীয় ও আর্তসাখ সৈন্য আজারবাইজানিদের হাতে বন্দি হয়।
রুশ 'মি–২৪' হেলিকপ্টার শুটডাউন
আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর আজারবাইজানি সৈন্যরা আর্মেনীয়–আজারবাইজানি সীমান্তে একটি রুশ 'মি–২৪' হেলিকপ্টার ভূপাতিত করে। ঘটনাটি সংঘটিত হয় মূল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বেশ দূরে আর্মেনিয়া ও নাখচিভানের সীমান্ত বরাবর। উল্লেখ্য, 'নাখচিভান স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্র' আজারবাইজানের অন্তর্গত একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্র। কিন্তু এটি আজারবাইজানের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন, কারণ নাখচিভান ও আজারবাইজানি মূল ভূখণ্ডের মধ্যবর্তী স্থানে আর্মেনীয় ভূখণ্ড অবস্থিত। আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধ শুরুর পর আর্মেনীয়–নাখচিভান সীমান্ত তুলনামূলকভাবে শান্তই ছিল। এজন্য এই অঞ্চলে রুশ হেলিকপ্টার ভূপাতিত হওয়ার ঘটনাটি বিতর্কের সৃষ্টি করে।
৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় আর্মেনীয়–নাখচিভান সীমান্তবর্তী আর্মেনিয়ার অন্তর্গত আরারাত প্রদেশের ইয়েরাসখ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, ইয়েরাসখ আর্মেনীয়–আজারবাইজানি সীমান্তের সবচেয়ে নিকটবর্তী আর্মেনীয় গ্রাম। অবশ্য নাগর্নো–কারাবাখ/আর্তসাখ থেকে এটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ কি.মি.। ইতিপূর্বে গ্রামটিতে রুশ সামরিক উপস্থিতি ছিল না, কিন্তু আর্মেনীয়–আজারবাইজানি যুদ্ধ শুরুর পর রুশরা গ্রামটিতে একটি ঘাঁটি স্থাপন করে। ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় রুশ 'মি–২৪' হেলিকপ্টারটি উক্ত ঘাঁটির একটি কনভয়কে 'এসকর্ট' করছিল। এসময় সেটি সীমান্তের অপর পাশে অবস্থানরত আজারবাইজানি সৈন্যদের নজরে আসে।
আজারবাইজানি সৈন্যরা হেলিকপ্টারটিকে লক্ষ্য করে একটি হাতে বহনযোগ্য সারফেস–টু–এয়ার মিসাইল নিক্ষেপ করে এবং মিসাইলটি হেলিকপ্টারে আঘাত হানে। এর ফলে হেলিকপ্টারটি আর্মেনীয় ভূখণ্ডে ভূপাতিত হয় এবং হেলিকপ্টারটির দুইজন ক্রু নেজর ইউরি ইশ্চুক ও সিনিয়র লেফটেন্যান্ট রোমান ফেদিনা তৎক্ষণাৎ নিহত হন। হেলিকপ্টারের নেভিগেটর সিনিয়র লেফটেন্যান্ট ভ্লাদিস্লাভ গ্রিয়াজিন আহত হন, কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান। আর্মেনীয় জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে এবং চিকিৎসা লাভের পর তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
শীঘ্রই প্রচারমাধ্যমে এই ঘটনাটির কথা ছড়িয়ে পড়ে এবং আজারবাইজানি সরকার স্বীকার করে যে, তাদের সৈন্যরা রুশ হেলিকপ্টারটিকে ভূপাতিত করেছে। আজারবাইজানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানায় যে, আজারবাইজানি সৈন্যরা দুর্ঘটনাবশত রুশ হেলিকপ্টারটিকে ভূপাতিত করেছে এবং তারা সেটিকে আর্মেনীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার মনে করেছিল। তাদের প্রদত্ত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আর্মেনিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে আজারবাইজানি সেনাবাহিনী সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছিল। রুশ হেলিকপ্টারটি অন্ধকারে কম উচ্চতায় উড়ছিল এবং আজারবাইজানি এয়ার ডিফেন্স রাডারের 'ডিটেকশন জোনে'র বাইরে ছিল, এজন্য আজারবাইজানি সৈন্যরা হেলিকপ্টারটি কাদের সেটি বুঝে উঠতে পারেনি। তদুপরি, ঐ অঞ্চলে আগে কখনো রুশ হেলিকপ্টার দেখা যায়নি।
আজারবাইজানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হেলিকপ্টারটি ভূপাতিত করার জন্য রাশিয়ার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিহত ক্রুদের স্বজনদের উদ্দেশ্যে শোক প্রকাশ করে এবং এই 'দুর্ঘটনা'র জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রস্তাব করে। পরবর্তীতে আজারবাইজানি রাষ্ট্রপতি আলিয়েভ রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিনকে ফোন করেন এবং এই ঘটনার জন্য ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি আরো জানান যে, আজারবাইজানি সরকার ঘটনাটির তদন্ত করে দেখবে এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদান করবে। অনুরূপভাবে, আজারবাইজানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্নেল জেনারেল জাকির হাসানভ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রেরিত একটি বার্তায় রুশ সৈন্যদের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর তুর্কি–সিরীয় সীমান্তে তুর্কি বিমানবাহিনী একটি রুশ বোমারু বিমান ভূপাতিত করেছিল। কিন্তু তারা এজন্য রাশিয়ার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এর ফলে রাশিয়া তুরস্কের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। প্রায় সাত মাসব্যাপী রুশ–তুর্কি সম্পর্কে এই সঙ্কট স্থায়ী হয়। অবশেষে রুশ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে তুর্কি অর্থনীতিতে অন্তত ৯০০ কোটি (বা ৯ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর এবং রুশরা পিকেকে মিলিট্যান্টদের মাধ্যমে একটি তুর্কি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করানোর পর তুর্কি সরকার রাশিয়ার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে তুর্কি সরকার রুশ বিমান ভূপাতিত করার সঙ্গে জড়িত দুই তুর্কি বৈমানিককে গ্রেপ্তার করে।
সেই তুলনায় তুরস্কের ঘনিষ্ঠ মিত্র আজারবাইজান রুশ হেলিকপ্টার ভূপাতিত করার ঘটনাটি সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে মোকাবিলা করে। তারা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের 'ভুল' স্বীকার করে নেয়, রুশ সরকারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, ঘটনাটির জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রস্তাব দেয় এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, আজারবাইজানি সরকারের এত নমনীয় প্রতিক্রিয়ার পরেও 'মি–২৪' হেলিকপ্টারটির ভূপাতিত হওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল, সেটির অবসান ঘটেনি।
This is the first part of a Bengali article about the shootdown of a Russian Mi-24 attack helicopter in Armenia by Azerbaijan in 2020.
Sources:
- Elizaveta Bulkina. "МИД предостерег Азербайджан от двусмысленных заявлений в связи со сбитым Ми-24." Vzglyad. November 12, 2020.
- Irina Yarovaya. "В Азербайджане объяснили противоречивость заявлений по сбитому Ми-24." Vzglyad. November 13, 2020.
- Joshua Kucera. "Russia raises stakes in Azerbaijani helicopter shoot-down case." Eurasianet. January 5, 2021.
- "Azerbaijan admits shooting down Russian helicopter in Armenia." BBC News. November 9, 2020.
- "Executive Order on awarding Russian Federation state decorations." President of Russia. November 14, 2020.
- "No:405/20, Statement of the Ministry of Foreign Affairs of the Republic of Azerbaijan (En/Ru)." Ministry of Foreign Affairs of the Republic of Azerbaijan.
- "Russia now probing case of helicopter downed by Azerbaijan as murder -Interfax." Reuters. January 4, 2021.
- "Prezidentin Mətbuat Xidmətinin məlumatı." Azertag. November 10, 2020.
- "Азербайджанские военные сбили российский вертолет над Арменией." BBC News Russian Service. November 9, 2020.
- "Алиев заверил Путина, что сбившие вертолет военные будут наказаны." RIA Novosti. November 10, 2020.
- "Баку еще не сделал окончательных выводов о ЧП с российским вертолетом." RIA Novosti. November 12, 2020.
- "На месте гибели сбитых Азербайджаном российских летчиков в Армении открыли временную мемориальную доску." Armenia Report. December 12, 2020.
- "Помощник президента Азербайджана: Комментарий посла Азербайджана в России был неуместен." Haqqin.az. November 13, 2020.
Source of the featured image: Igor Dvurekov/Wikimedia Commons