Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

নাইজার সঙ্কট: পশ্চিম আফ্রিকায় আঞ্চলিক যুদ্ধের সম্ভাবনা?

২০২৩ সালের মে মাসে পশ্চিম আফ্রিকান রাষ্ট্র নাইজারের রাষ্ট্রপতি মোহামেদ বাজুম ব্রিটিশ পত্রিকা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে প্রদত্ত একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছিলেন, নাইজারে সামরিক বাহিনী কর্তৃক ক্ষমতা দখলের কোনো সম্ভাবনা নেই। এর দুই মাসের মাথায় ২৬ জুলাই নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। নাইজেরিয়েন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড কর্তৃক পরিচালিত ও নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক সমর্থিত এই অভ্যুত্থানের ফলে রাষ্ট্রপতি বাজুম ক্ষমতাচ্যুত হন এবং প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের অধিনায়ক ব্রিগেড-জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানি নাইজারের রাষ্ট্রপ্রধান পদে অধিষ্ঠিত হন। এর ফলে নাইজার এবং পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে এক তীব্র রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়।

নাইজার: একটি সঙ্কটপ্রবণ রাষ্ট্র

পশ্চিম আফ্রিকান রাষ্ট্র নাইজারের আয়তন প্রায় ১২,৬৭,০০০ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৫৪ লক্ষ। রাষ্ট্রটির অধিবাসীদের ৫৩.১% জাতিগত হাউসা এবং বাকি ৪৬.৯% অন্যান্য জাতিভুক্ত। রাষ্ট্রটির ৯৯.৩% অধিবাসী মুসলিম এবং অবশিষ্ট ০.৭% অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্রটির সঙ্গে আলজেরিয়া, লিবিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, বেনিন, বুর্কিনা ফাসো ও মালির সীমান্ত রয়েছে। ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধ রাষ্ট্রটির রপ্তানি আয়ের এক-তৃতীয়াংশের বেশি খনিজ সম্পদ রপ্তানির মাধ্যমে আসে। বিগত দুই বছরে নাইজারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল আশাব্যঞ্জক, কিন্তু এখনো মোট দেশজ উৎপাদনের দিক থেকে রাষ্ট্রটির অবস্থান বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ১৪৫তম এবং বৈশ্বিক মানব উন্নয়ন সূচকে রাষ্ট্রটির অবস্থান ১৮৯তম। অর্থাৎ, প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রটির সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি খুবই নেতিবাচক।

পশ্চিম আফ্রিকার মানচিত্রে নাইজার; Image source: One World – Nations Online

১৮৯৯ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত নাইজার ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ২০২৩ সালের আগ পর্যন্ত নাইজারে চারটি সফল সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৭৪, ১৯৯৬, ১৯৯৯ এবং ২০১০) সংঘটিত হয়েছে, যার থেকে রাষ্ট্রটিতে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মাত্রা অনুমান করা যায়। ২০২০–২০২১ সালে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন Parti Nigerien pour la Democratie et le Socialisme – Tarayya (পিএনডিএস-টি) দলের তদানীন্তন সভাপতি বাজুম বিজয়ী হন এবং ২০২১ সালের এপ্রিলে নাইজারের শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। বাজুম তিন দশকের বেশি সময় ধরে নাইজেরিয়েন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং ইতিপূর্বে তিনি নাইজারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কিন্তু ২০২০–২০২১ সালের নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু ছিল, সেটি প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় দুইজন নাইজেরিয়েন নাগরিক নিহত হয় এবং চার শতাধিক নাইজেরিয়েন নাগরিক গ্রেপ্তার হয়।

সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের কারণ

নাইজারে সংঘটিত সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের পশ্চাতে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

প্রথমত, বাজুম এবং তাঁর পূর্বসূরী মাহামাদু ইসসুফু ছিলেন পশ্চিমা বিশ্বের, বিশেষত ফ্রান্স ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, ঘনিষ্ঠ সামরিক-রাজনৈতিক মিত্র। কার্যত নাইজার স্বাধীনতা লাভ করার ৬৩ বছর পরেও ফ্রান্স নাইজারের ওপর সুদৃঢ় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। বাজুম কেবল ফ্রান্সের ঘনিষ্ঠ মিত্রই ছিলেন না, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে জনসাধারণের মধ্যে যে তীব্র ফরাসিবিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে পড়েছে, তিনি সেটিরও কট্টর বিরোধী ছিলেন। ফ্রান্স নাইজারের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিগত ১০ বছরে ফ্রান্সের আমদানিকৃত মোট ইউরেনিয়ামের ২০% এসেছে নাইজার থেকে। দীর্ঘদিন যাবৎ নাইজেরিয়েন মুদ্রা ফরাসি মুদ্রার ওপর নির্ভরশীল ছিল।

ফরাসি রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত নাইজেরিয়েন রাষ্ট্রপতি মোহামেদ বাজুম; Image source: Ludovic Marin/AFP via France 24

তদুপরি, নাইজারে প্রায় ১,৫০০ ফরাসি সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। ২০২২ সালে সমাপ্ত হওয়া ফ্রান্স কর্তৃক পশ্চিম আফ্রিকায় পরিচালিত সামরিক অভিযান অপারেশন বারখানের অন্যতম প্রধান ঘাঁটি ছিল নাইজার, এবং মালি ও বুর্কিনা ফাসো থেকে ফরাসি সৈন্যদের বহিষ্কারের পর নাইজার পশ্চিম আফ্রিকায় ফ্রান্সের মূল সামরিক ভরকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তদুপরি, নাইজার পশ্চিম আফ্রিকার পাঁচটি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত ফরাসি-সমর্থিত নিরাপত্তা জোট জি৫ সাহেলের সদস্য। তাছাড়া, নাইজারের সরকারি ভাষা ফরাসি এবং নাইজার এখনো ফরাসি সাংস্কৃতিক বলয়ের অন্তর্ভুক্ত।

এর পাশাপাশি নাইজারে প্রায় ১,১০০ মার্কিন সৈন্য এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একটি গোপন ঘাঁটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১১ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করে নাইজারের আগাদাজ শহরের সন্নিকটে ‘নাইজার বিমানঘাঁটি ২০১’ নামক একটি সুবৃহৎ ড্রোন ঘাঁটি নির্মাণ করেছে এবং সেখান থেকে পশ্চিম আফ্রিকায় ইনসার্জেন্ট গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাইজার আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্রে পরিণত হয়েছে। তদুপরি, দেশটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সামরিক ও একটি বেসামরিক প্রশিক্ষণ মিশন রয়েছে।

নাইজারে বিদ্যমান বিস্তৃত পশ্চিমা, বিশেষত ফরাসি, প্রভাব নিয়ে নাইজেরিয়েন জনসাধারণের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। নাইজেরিয়েন জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ফরাসি নব্য-উপনিবেশবাদকে নাইজারে বিরাজমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক দুরবস্থার জন্য দায়ী বলে বিবেচনা করে। বাজুমের নেতৃত্বাধীন নাইজেরিয়েন সরকারের সঙ্গে ফ্রান্সের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বাজুম ও তার সরকারের প্রতিও জনসাধারণের মধ্যে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাইজারে ২০২২ সালে ‘এম৬২ মুভমেন্ট’ নামক একটি নাইজেরিয়েন জাতীয়তাবাদী, পশ্চিমাবিরোধী ও ফরাসিবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠনের উত্থান ঘটে। নাইজেরিয়েন সরকার কর্তৃক সংগঠনটির নেতা আব্দুলায়ে সেয়দুর গ্রেপ্তার সংগঠনটির সমর্থকদের আরো ক্ষিপ্ত করে তোলে। তদুপরি, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মালি ও বুর্কিনা ফাসোতে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রগুলোর ফরাসিপন্থী সরকারদ্বয়ের পতন ঘটেছে এবং এর ফলে রাষ্ট্রগুলোয় ফরাসি প্রভাব ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এমতাবস্থায় আঞ্চলিক পরিস্থিতি বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনীকে উৎসাহ যুগিয়েছে।

নাইজারের আগাদাজ শহরের কাছে অবস্থিত নাইজার বিমানঘাঁটি ২০১ আফ্রিকায় অবস্থিত বৃহত্তম মার্কিন ড্রোন ঘাঁটি; Image source: 403rd Wing

দ্বিতীয়ত, পার্শ্ববর্তী মালি, বুর্কিনা ফাসো ও নাইজেরিয়ায় চলমান যুদ্ধগুলো ২০১৫ সাল থেকে নাইজারে বিস্তৃত হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে নাইজার এখন বিভিন্ন ইনসার্জেন্ট গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত। নাইজারের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে বুর্কিনা ফাসো ও মালির সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জামায়াত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন (জেএনআইএম) এবং ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেটার সাহারা (আইএস-জিএস) সক্রিয়। অন্যদিকে, নাইজারের দক্ষিণ-পূর্বাংশে আল-কায়েদার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জামায়াত আহল আস-সুন্নাহ লিদ-দাওয়াহ ওয়াল-জিহাদ (বোকো হারাম) এবং ইসলামিক স্টেট – ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) সক্রিয়। মার্কিন ও ফরাসি সৈন্যদের সহযোগিতায় নাইজেরিয়েন সৈন্যরা উক্ত গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত সেগুলোকে দমন করতে পারেনি। এর ফলে নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনী ও জনসাধারণ নাইজেরিয়েন সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল।

তৃতীয়ত, নাইজেরিয়েন জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের দৃষ্টিতে, বাজুমের সরকার ছিল দুর্বল, অকর্মণ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত। তদুপরি, সম্প্রতি নাইজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এবং এর ফলে জনসাধারণের মধ্যে সরকারবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পায়।

নাইজেরিয়েন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের অধিনায়ক ব্রিগেড-জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানি ছিলেন নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের মূল নেতা; Image source: AFP via Al Jazeera

সর্বোপরি, নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বাজুমের ওপর অসন্তুষ্ট ছিলেন। ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ বাজুম নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ ডিভিশনাল জেনারেল সালিফু মোদিকে অপসারণ করেন, কারণ মোদি মালির ফরাসিবিরোধী সামরিক সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষপাতী ছিলেন। বিশ্লেষকদের ভাষ্যমতে, বাজুম প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের অধিনায়ক ব্রিগেড-জেনারেল চিয়ানিকেও অপসারণ করার পরিকল্পনা করছিলেন। এই পরিস্থিতি শীর্ষ নাইজেরিয়েন সামরিক কর্মকর্তারা বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেন এবং অভ্যুত্থান পরিচালনা করেন।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী ঘটনাবলি

বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনী ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর দ্য সেইফগার্ড অফ দ্য হোমল্যান্ড’ নামক একটি সামরিক সরকার গঠন করে এবং ব্রিগেড-জেনারেল চিয়ানি সেটির সভাপতি ও ডিভিশনাল জেনারেল মোদি উপ-সভাপতি নিযুক্ত হন। এম৬২ মুভমেন্ট নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে এবং তাদের সমর্থনে মিছিল বের করে। এই মিছিলগুলোয় তীব্র পশ্চিমাবিরোধী ও ফরাসিবিরোধী মনোভাব পরিলক্ষিত হয়। মিছিলগুলোয় নাইজেরিয়েন জনসাধারণ রাশিয়া ও রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে স্লোগান দেয় এবং নাইজারে রুশ মার্সেনারি সংগঠন ওয়াগনার গ্রুপের হস্তক্ষেপের দাবি জানায়। অন্যদিকে, বাজুমের সমর্থকরা নাইজারের ভিতরে ও বাইরে বাজুমের পক্ষে মিছিল করে।

নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের পর নাইজেরিয়েন জনসাধারণ নতুন সরকারের পক্ষে বিক্ষোভ করছে। প্ল্যাকার্ডটিতে ফরাসি ভাষায় লেখা: “ফ্রান্স নিপাত যাক, পুতিন জিন্দাবাদ!”; Image source: Voice of America

মালি, বুর্কিনা ফাসো, গিনি এবং রুশ মার্সেনারি সংগঠন ওয়াগনার গ্রুপ নাইজেরিয়েন সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ইকোনমিক কমিউনিটি অফ ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস (ইকোওয়াস) নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানায়। পরবর্তীতে নাইজেরিয়েন সরকার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। নাইজার ফ্রান্সে ইউরেনিয়াম ও স্বর্ণ রপ্তানি স্থগিত রাখে, নাইজারে ফরাসি প্রচারমাধ্যমের সম্প্রচারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে, ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পাদিত সমস্ত সামরিক চুক্তিকে বাতিল করে, নাইজার থেকে ফরাসি সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়ার নির্দেশ দেয়, নাইজার থেকে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয় এবং ফ্রান্স থেকে নাইজেরিয়েন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায়। ফ্রান্স নাইজারে অবস্থানরত ফরাসি নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করে, কিন্তু নাইজার থেকে রাষ্ট্রদূত ও সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ফ্রান্সে নিযুক্ত নাইজেরিয়েন রাষ্ট্রদূত নাইজেরিয়েন সরকারের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে বাজুমের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে নাইজেরিয়েন সরকার নাইজারে নিযুক্ত মার্কিন, নাইজেরীয় ও টোগোলিজ রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয়।

ইকোওয়াসের নাইজার আক্রমণের পরিকল্পনা

২৯ জুলাই নতুন নাইজেরিয়েন সরকার অভিযোগ করে যে, ইকোওয়াস পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সমর্থনে নাইজারের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা করছে। একই দিনে আফ্রিকান ইউনিয়ন শান্তি ও নিরাপত্তা পরিষদ নাইজেরিয়েন সরকারকে এই মর্মে একটি চরমপত্র প্রদান করে যে, ১৫ দিনের মধ্যে বাজুমকে ক্ষমতায় পুনঃস্থাপন না করা হলে নাইজেরিয়েন সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। ৩০ জুলাই নাইজেরিয়েন জনসাধারণ রাজধানী নিয়ামেতে অবস্থিত ফরাসি দূতাবাসের ওপর আক্রমণ চালায়। একই দিনে ইকোওয়াস নাইজারের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও নো-ফ্লাই জোন আরোপ করে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বাজুমকে ক্ষমতায় পুনঃস্থাপন না করা হলে নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ করার হুমকি দেয়।

উল্লেখ্য, ইকোওয়াস পশ্চিম আফ্রিকার ১৫টি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট। ১৯৭৫ সালে গঠিত জোটটি ইতিপূর্বে বেশ কয়েকটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে জোটটি গাম্বিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ২০১৬ সালের নির্বাচনে পরাজিত গাম্বিয়ান রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া জাম্মেহকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য করে। ইকোওয়াস সাধারণভাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোয় সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে এবং গিনি, মালি ও বুর্কিনা ফাসোয় সামরিক সরকার ক্ষমতায় থাকায় কারণে বর্তমানে ইকোওয়াসে উক্ত রাষ্ট্রগুলোর সদস্যপদ স্থগিত রয়েছে। নাইজারে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের পর অনুরূপভাবে সংগঠনটিতে নাইজারের সদস্যপদও স্থগিত রাখা হয়েছে।

ফরাসি রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে নাইজেরীয় রাষ্ট্রপতি বোলা তিনুবু; Image source: The Guardian

ইকোওয়াসের বর্তমান সভাপতি নাইজেরীয় রাষ্ট্রপতি বোলা তিনুবু একজন পশ্চিমাপন্থী রাজনীতিবিদ এবং এটি নাইজারের অভ্যুত্থানের প্রতি নাইজেরিয়া ও ইকোওয়াসের তীব্র নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার একটি অন্যতম কারণ। তদুপরি, নাইজেরিয়া নাইজারের মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত ট্রান্স-সাহারান গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। উক্ত পাইপলাইনটি নির্মিত হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর তাদের জ্বালানি নির্ভরশীলতা কমাতে পারবে। কিন্তু নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের ফলে উক্ত পাইপলাইন নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে এবং এটিও নাইজেরিয়াকে এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে উৎসাহিত করেছে।

অবশ্য নতুন নাইজেরিয়েন সরকার ইকোওয়াসের হুমকি উপেক্ষা করে এবং ৩১ জুলাই পূর্ববর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। একই দিনে চাদিয়ান রাষ্ট্রপতি জেনারেল মাহামাৎ দেবি নাইজার সফর করেন এবং বন্দি বাজুমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, কিন্তু নাইজেরিয়েন সরকারের সঙ্গে তার আলোচনা ব্যর্থ হয়। ২ আগস্ট নাইজেরিয়া নাইজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং এর ফলে নাইজার জুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়, কারণ নাইজারের বিদ্যুতের প্রায় ৯০% নাইজেরিয়া থেকে আমদানি করা হয়। একই দিনে বিশ্বব্যাংক নাইজারকে নতুন করে অর্থ সরবারহ স্থগিত রাখে। সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকির পাশাপাশি ইকোওয়াস নাইজেরিয়েন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা অব্যাহত রাখে, কিন্তু সেগুলোর কোনোটিই ফলপ্রসূ হয়নি।

ইকোওয়াসের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে নাইজেরিয়ার পাশাপাশি আইভরি কোস্ট, সেনেগাল ও বেনিন নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের পক্ষে। অন্যদিকে, মালি, বুর্কিনা ফাসো ও গিনি নাইজারে ইকোওয়াসের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে। মালি ও বুর্কিনা ফাসো ঘোষণা করে যে, নাইজারের ওপর যে কোনো আক্রমণকে তারা তাদের নিজেদের ওপর যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করবে। নাইজারের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র চাদ ফ্রান্সের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র, কিন্তু চাদও ঘোষণা করে যে, তারা নাইজারে ইকোওয়াসের সামরিক হস্তক্ষেপকে সমর্থন করবে না। যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স নাইজারে ইকোওয়াসের সামরিক হস্তক্ষেপের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে, কিন্তু রাশিয়া এর বিরোধিতা করে। ইতোমধ্যে আলজেরীয় সশস্ত্রবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইদ চেংরিহা রাশিয়া সফর করে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আর্মি-জেনারেল সের্গেই শোইগুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং এরপর আলজেরিয়াও নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে।

মানচিত্রে নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের প্রতি ইকোওয়াসভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর প্রতিক্রিয়া; Source: Jules Duhamel/Twitter

ইকোওয়াস নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে এবং নাইজেরীয় রাষ্ট্রপতি তিনুবু নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য নাইজেরীয় আইনসভার উচ্চকক্ষ সিনেটের অনুমতি প্রার্থনা করেন। নাইজেরীয় সংবিধান অনুযায়ী, নাইজেরিয়ার বাইরে সামরিক অভিযান পরিচালনার জন্য নাইজেরীয় সিনেটের অনুমতি নেয়া আবশ্যক। নাইজেরীয় সিনেটে ১০৯টি আসনের মধ্যে ৫৯টি তিনুবুর দল অল প্রোগ্রেসিভস কংগ্রেসের (এপিসি) নিয়ন্ত্রণে, এবং ধারণা করা হয়েছিল, সিনেট তিনুবুর আবেদন মঞ্জুর করবে। নাইজেরীয় সিনেটররা নাইজারে সংঘটিত অভ্যুত্থানের নিন্দা করেন, কিন্তু প্রায় ৯০% সিনেটর নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের আগে অন্য সবরকম উপায় অবলম্বনের জন্য নাইজেরীয় সরকারকে পরামর্শ দেন।

নাইজেরিয়ার ৩৬টি প্রদেশের মধ্যে ১৯টি রাষ্ট্রটির উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত এবং এর মধ্যে সাতটির সঙ্গে নাইজারের প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় সিনেটরদের সমন্বয়ে গঠিত নর্দার্ন সিনেটরস ফোরাম নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে। সিনেটররা তাদের অবস্থানের পক্ষে যেসব কারণ দেখিয়েছেন, সেগুলো হচ্ছে: নাইজেরীয় সশস্ত্রবাহিনীর পর্যাপ্ত সামরিক সরঞ্জাম নেই; নাইজেরীয় সশস্ত্রবাহিনী এখনো নাইজেরিয়ার অভ্যন্তরে সক্রিয় বোকো হারাম ও অন্যান্য ইনসার্জেন্ট গ্রুপকে দমন করতে সক্ষম হয়নি; নাইজার আক্রমণের ফলে নাইজারের সীমান্তবর্তী নাইজেরীয় প্রদেশগুলোয় নতুন করে নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি হবে; এবং যুদ্ধের ফলে নিরপরাধ জনসাধারণের প্রাণহানি ঘটবে।

ইকোওয়াসের যে সদস্য রাষ্ট্রগুলো নাইজারে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে সম্মত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে নাইজেরিয়ার সশস্ত্রবাহিনী সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী। সুতরাং নাইজারে ইকোওয়াসের আক্রমণে নাইজেরিয়ার অংশগ্রহণ অপরিহার্য। এর ফলে ইকোওয়াসের বেঁধে দেয়া সময় অতিক্রান্ত হলেও ইকোওয়াস এখন পর্যন্ত নাইজারের ওপর আক্রমণ চালাতে পারেনি। অবশ্য নাইজেরীয় সংবিধান অনুসারে, নাইজেরীয় রাষ্ট্রপতি যদি নাইজেরীয় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রতি তাৎক্ষণিক ও গুরুতর হুমকির আভাস পান, সেক্ষেত্রে তিনি সিনেটের অনুমোদন ছাড়াই নাইজেরিয়ার বাইরে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সৈন্য প্রেরণ করতে পারেন। সুতরাং তিনুবু চাইলে এই যুক্তি ব্যবহার করে সিনেটের অনুমতি ছাড়াই নাইজার আক্রমণে অংশ নিতে পারেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে নাইজেরিয়ার অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

মানচিত্রে নাইজেরিয়ার প্রদেশগুলো। নাইজেরিয়ার সাতটি প্রদেশের সঙ্গে নাইজারের সীমান্ত রয়েছে; Image source: Nations Online Project

তদুপরি, ইকোওয়াস নাইজারের ওপর আক্রমণ চালালে যদি মালি ও বুর্কিনা ফাসো সত্যি সত্যিই নাইজারের পক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়, সেক্ষেত্রে পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে একটি বড় মাপের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য, নাইজেরীয় সশস্ত্রবাহিনীর আকার নাইজেরিয়েন, মালিয়ান ও বুর্কিনাবে সশস্ত্রবাহিনীর সম্মিলিত আকারের চাইতেও বড়, কিন্তু এরকম কোনো যুদ্ধে নাইজেরীয়-নিয়ন্ত্রিত ইকোওয়াস যে বিজয়ী হবেই, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাছাড়া, এরকম কোনো যুদ্ধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তি (যেমন: আলজেরিয়া) হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং সেক্ষেত্রে যুদ্ধের প্রকৃতি আরো জটিল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোপরি, নাইজেরিয়েন উপ-রাষ্ট্রপতি ডিভিশনাল জেনারেল মোদি মালি সফর করে সেখানে ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং বিভিন্ন সূত্রের ভাষ্যমতে, ওয়াগনার গ্রুপ নিয়ামেতে একটি ক্ষুদ্র ইউনিট মোতায়েন করেছে। অবশ্য এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বর্তমান পরিস্থিতি: আঞ্চলিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পশ্চিম আফ্রিকা?

এখনো অবশ্য ইকোওয়াস কর্তৃক নাইজার আক্রমণের সম্ভাবনা তিরোহিত হয়নি। নাইজেরিয়েন সরকারের ভাষ্যমতে, ইকোওয়াস নাইজার আক্রমণের জন্য সৈন্য সমাবেশ ঘটাচ্ছে এবং এমতাবস্থায় নাইজেরিয়েন সশস্ত্রবাহিনীর ইউনিটগুলোকে রাজধানী নিয়ামের প্রতিরক্ষার জন্য ডেকে পাঠানো হচ্ছে। তদুপরি, নাইজেরিয়েন সরকার অভিযোগ করেছে যে, নাইজারে অবস্থানরত ফরাসি সৈন্যরা নাইজেরিয়েন ন্যাশনাল গার্ডের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে এবং বন্দি প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তাদের মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে। অবশ্য ফ্রান্স এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাছাড়া, প্রাক্তন নাইজেরিয়েন বিদ্রোহী নেতা ও রাজনীতিবিদ রিসসা আগ বুলা নাইজেরিয়েন সরকারের বিরুদ্ধে ‘কাউন্সিল অফ রেজিস্ট্যান্স ফর দ্য রিপাবলিক’ (সিআরআর) নামক একটি ইনসার্জেন্ট গ্রুপ সৃষ্টির ঘোষণা দিয়েছেন এবং নাইজেরিয়েন সরকারকে উৎখাত করার পশ্চিমা প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

নাইজেরিয়েন জনসাধারণ নাইজেরিয়েন ও রুশ পতাকা নিয়ে নাইজেরিয়ান সরকারের পক্ষে মিছিল করছে। অন্যদিকে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বাজুম তাকে পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন; Image source: War Monitor/Twitter

এর পাশাপাশি মালি ও বুর্কিনা ফাসো নাইজারের পক্ষ অবলম্বনের পর রাষ্ট্র দুইটির অভ্যন্তরে ইনসার্জেন্ট গ্রুপগুলোর আক্রমণের মাত্রা আকস্মিকভাবে তীব্র হয়েছে। সম্প্রতি আইএস-জিএস মালিয়ান–নাইজেরিয়েন সীমান্তের নিকট মালিয়ান সেনাবাহিনীর একটি কনভয়ের ওপর আক্রমণ চালায় এবং দাবি করে যে, উক্ত আক্রমণের ফলে ১৬ জন মালিয়ান সৈন্য নিহত হয়েছে। তদুপরি, জেএনআইএম মালিয়েন–নাইজেরিয়েন সীমান্তের নিকট ওয়াগনার গ্রুপ সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে এবং ওয়াগনার গ্রুপের নাইজারে প্রবেশে বাধা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, সম্প্রতি বুর্কিনা ফাসোয় ইনসার্জেন্টদের আক্রমণের ফলে ২০ থেকে ২৫ জন বেসামরিক বুর্কিনাবে নাগরিক নিহত হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, নাইজারে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে পশ্চিম আফ্রিকার ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত একটি বড় মাত্রার আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেয় কিনা, সেটিই দেখার বিষয়।

This is a Bengali article about the ongoing regional crisis in West Africa that originated from the coup d’état that took place in Niger on 26 July 2023.

References:
1. David Pilling and Aanu Adeoye. “Niger president defends French involvement in Sahel region.” Financial Times. 21 May 2023. https://www.ft.com/content/605566e8-4542-426a-af90-f5ceb8d6d7e7.
2. Garé Amadou. “Explainer: What’s behind the Niger coup?” The Guardian. 8 August 2023. https://www.google.com/amp/s/amp.theguardian.com/global-development/2023/aug/08/explainer-whats-behind-the-niger-coup.
3. Kersten Knipp. “Algeria faces political dilemma over Niger coup.” Deutsche Welle. 9 August 2023. https://www.google.com/amp/s/amp.dw.com/en/algeria-niger-coup/a-66477258.
4. “Niger coup: Burkina Faso, Mali warn against intervention.” Deutsche Welle. 1 August 2023. https://www.google.com/amp/s/amp.dw.com/en/burkina-faso-mali-warn-against-military-intervention-in-niger/a-66402134.
5. “Nigeria Senate cautions against Niger military intervention.” Deutsche Welle. 6 August 2023. https://www.google.com/amp/s/amp.dw.com/en/nigeria-senate-cautions-against-niger-military-intervention/a-66450388.

Related Articles