Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে হোয়াইট সুপ্রিমেসিস্টদের সন্ত্রাসবাদ

১৫ মার্চ, শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে পবিত্র জুম্মার নামাজের সময়ে সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে নতুন করে পাদপ্রদীপের আলোয় এসেছে হোয়াইট সুপ্রিমেসিজম বা শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদ। এই হামলার অন্যতম মূল সন্ত্রাসী ব্রেন্টন ট্যারেন্ট একজন স্বঘোষিত শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী, এবং ৭৪ পৃষ্ঠার ম্যানিফেস্টোতে বারবার সে নিজেকে ‘কেবলই একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তি হিসেবে দাবি করে এসেছে। কিন্তু তার কথাবার্তার ধরন, আদর্শ, সর্বোপরি যে ভয়াবহ কাজ সে করেছে, তাতে আর বুঝতে বাকি থাকে না যে সে মূলত একজন শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসী।

যারা এখনো শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন, তাদের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে, এটি হলো একটি কট্টর ডানপন্থী ও বর্ণবাদী আদর্শ, যেখানে মনে করা হয়, শ্বেতাঙ্গরা অন্য সকল শ্রেণী ও বর্ণের মানুষের চেয়ে শ্রেয়, আর তাই বিশ্বজুড়ে তারাই আধিপত্য বিস্তার করবে।

ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদ; Image Source: The Fiji Times

অনেকেরই মনে হতে পারে, শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদ আদর্শটি হয়তো নতুন কিছু, কিংবা একেবারেই অপ্রচলিত। কিন্তু না, খুব বেশি পেছনে যাওয়ার দরকার নেই। কেবল যদি আমরা বিগত আট বছরের কথাও চিন্তা করি, বিশ্বব্যাপী শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। মসজিদ, মন্দির, সিনাগগ কিংবা কৃষ্ণাঙ্গদের চার্চ, সর্বত্রই হামলা চালাচ্ছে শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসীরা। মুসলিম, শিখ, ইহুদি কিংবা শরণার্থী, অভিবাসী, নারীবাদী বা বামপন্থী রাজনীতিবিদ, কেউই ছাড় পাচ্ছে না তাদের হাত থেকে।

গোটা বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করেছে এই শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসীরা, এবং ১৫ মার্চের ঘটনা সেটিরই নব্যতম দৃষ্টান্ত মাত্র। চলুন পাঠক, শুধু গত আট বছরেই শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসীরা বিশ্বে কেমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

জুলাই, ২০১১: নরওয়ের ইউটোয়া দ্বীপ ও অসলোতে ৭৭ জন নিহত

প্রথমে অসলোতে বোমা হামলা, এবং তারপর গুলিবর্ষণ হয় ইউটোয়া দ্বীপে অবস্থানরত নরওয়ে লেবার পার্টির একটি গ্রীষ্মকালীন ইয়ুথ ক্যাম্পে। হামলাকারী আন্দ্রেস ব্রেইভিকের উদ্দেশ্য ছিল দেশে মুসলিমদের ‘দখলদারিত্ব’ রোধ করা, আর তাই সে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় তরুণ সমাজকে বেছে নেয়, কেননা তার কাছে মনে হয়েছিল, এই তরুণ-তরুণীরা ‘কালচারাল মার্ক্সিস্ট’ এবং সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। এই হামলায় মারা যাওয়া অর্ধেকেরও বেশি ছিল টিনেজার।

আগস্ট, ২০১২: যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের ওক ক্রিকের একটি শিখ মন্দিরে বন্দুক হামলায় ছ’জন উপাসনাকারী নিহত

মৃতদের মধ্যে ছিলেন মন্দিরের সভাপতি সাতওয়ান্ত সিং কালেকাও। বন্দুকধারী ছিল এক ‘হতাশ নিও-নাৎজি’, যে একসময় একটি হোয়াইট পাওয়ার ব্যান্ডে গানবাজনা করতো, এবং বিভিন্ন বর্ণবাদী ওয়েবসাইটেও নিয়মিত ছিল। হামলার কিছুদিন আগে সে ইউএস মিলিটারিতে কাজ করা তার এক সহকর্মীকে বলেছিল, “খুব শীঘ্রই একটা বর্ণবাদী পবিত্র যুদ্ধ আসছে!” এক লাতিন মহিলার সাথে প্রেম করায় সে ওই সহকর্মীকে একজন ‘বর্ণ বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছিল।

নিহত ছয় শিখের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিচিহ্ন; Image Source: Reuters

সেপ্টেম্বর, ২০১৩: গ্রিসের পিরেউসে র‍্যাপার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী কর্মী পাভলোস ফাইসাসকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

এ ঘটনার পর গ্রিসের নিও-নাজি গোল্ডেন ডন পার্টির একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য দায় স্বীকার করে নেয়, এবং তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এপ্রিল, ২০১৪: যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসের ওভারল্যান্ড পার্কের জিউয়িশ সেন্টার ও রিটায়ারমেন্ট হোমে তিনজনকে হত্যা

একজন সাবেক কু ক্লাক্স ক্ল্যান নেতা তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে। মৃতদের মধ্যে একজন ছিল মাত্র ১৪ বছর বয়সী। হামলাকারী পরে দাবি করে যে, তার বিশ্বাস ইহুদিরা শ্বেতাঙ্গদেরকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য গণহত্যারই সামিল। মৃত তিন ব্যক্তির মধ্যে কেউই ইহুদি ছিল না, কিন্তু তার মতে দুজন ছিল ইহুদিদের সহচর, তাই মৃত্যু তাদের পাওনা ছিল।

জুন, ২০১৫: যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটনের এক ঐতিহাসিক ব্ল্যাক চার্চে বাইবেল পাঠরত অবস্থায় নয়জনকে হত্যা

মৃত নয়জনের মধ্যে ছিলেন মাদার ইমানুয়েল এএমই চার্চের বেশ কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য এবং স্টেট সিনেটর ক্লেমেন্টা পিঙ্কনিও। হামলাকারী ছিল একজন আত্মস্বীকৃত শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী, এবং সে চেয়েছিল একটি বর্ণযুদ্ধ শুরু করতে। পাশাপাশি শ্বেতাঙ্গদের উপর কৃষ্ণাঙ্গদের ‘ক্রমবর্ধমান অপরাধপ্রবণতা’ নিয়েও সে চিন্তিত ছিল।

অক্টোবর, ২০১৫: সুইডেনের ট্রলহাটানের এক স্কুলে হামলায় তিনজন নিহত

হামলাকারী এমন একটি স্থানীয় হাই স্কুল বেছে নিয়েছিল, যেখানে অনেক অভিবাসী শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের লক্ষ্য করে ছুরিকাঘাত করতে থাকে সে, ফলে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন ১৫ বছর বয়সী আহমেদ হাসান, যিনি মাত্র কিছুদিন আগেই জন্মভূমি সোমালিয়া ছেড়ে সুইডেনে এসেছিলেন।

জুন, ২০১৬: যুক্তরাষ্ট্রে লেবার পার্টির সংসদ সদস্য জো কক্স গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত

কক্স ব্রিটেনের ইইউ-তে থাকার পক্ষে ছিলেন। গণভোটের এক সপ্তাহ আগে তার উপর আক্রমণ চালানো হয়। অভিযুক্ত থমাস মায়ার ছিল একজন শেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী। পাশাপাশি নাৎসি ও বর্ণবিদ্বেষী যুগের দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাপারে তার চরম আগ্রহ ছিল। আক্রমণের সময় সে “এটা ব্রিটেনের জন্য” এবং “ব্রিটেনই প্রথম” বলে চিৎকার করছিল।

জো কক্স; Image Source: BBC/Amos Pictures

জানুয়ারি, ২০১৭: কানাডার কুইবেক সিটির এক মসজিদে মাগরিবের নামাজের সময় ছ’জন নিহত

মৃতদের মধ্যে একজন, আজ্জেদিন সুফিয়ান, চেষ্টা করেছিলেন বন্দুকধারীকে সামলানোর। কিন্তু তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া ১৯ জন আহতও হয়েছিল। কেন এ কাজ করেছে, সে প্রশ্নের জবাবে বন্দুকধারী বলেছিল, প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইট করেছিলেন যে কানাডায় শরণার্থীদেরকে জায়গা দেয়া হবে, যার প্রতিবাদস্বরূপ সে এ কাজ করেছে। পাশাপাশি সে এ-ও বলে, তার নাকি ভয় ছিল শরণার্থীরা তার পরিবারকে মেরে ফেলবে। ইতোপূর্বে সে পরিচিত ছিল অনলাইনে তার মুসলিম, শরণার্থী ও নারীবাদবিরোধী আগ্রাসী ট্রলের কারণে।

কুইবেকের মসজিদ হামলায় নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন; Image Source: The Mercury News

মার্চ, ২০১৭: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এক বৃদ্ধকে তরবারি দিয়ে খুন

৬৬ বছর বয়সী টিমোথি কফম্যান ছিলেন একজন ‘টিন ও বোতল রিসাইক্লার’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তার অ্যাকাউন্ট ভর্তি ছিল বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের সাথে ছবিতে। এমনকি অপরাহ উইনফ্রের সাথেও ছবি ছিল তার। আর তাকে যে ব্যক্তি হত্যা করেছে, সে ছিল আমেরিকান মিলিটারির একজন প্রাক্তন সদস্য। টিমোথি তার মূল লক্ষ্য ছিল না। তার পরিকল্পনা ছিল আরো বড় কোনো আক্রমণের, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ নারীদেরকে বোঝানো যায় যে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের বিয়ে করা উচিত নয়। সেই পরিকল্পনার ‘প্রাক-প্রস্তুতি’ হিসেবে সে নিউ ইয়র্ক সিটির রাস্তায় কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ টিমোথিকে বেছে নেয়। পরবর্তীতে তার সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় একজন নারী সাংবাদিককে সে বলে, “ভালো শ্বেতাঙ্গ নারীদের উচিত যত বেশি সম্ভব বাচ্চা নেয়া।”

মে, ২০১৭: যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড, ওরেগনে মুসলিমবিদ্বেষী কথাবার্তায় বাধা দেয়ায় দুই ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা

একটি পাবলিক ট্রেনে একজন ব্যক্তি কমবয়সী মুসলিম নারীদের লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে মুসলিমবিদ্বেষী কথাবার্তা বলছিল। কয়েকজন ব্যক্তি তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে, তাদের গায়ে ছুরি চালায় ওই ব্যক্তি। আদালতে বিচারের সময়ও সে চিৎকার করছিল, “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দাও, নয়তো মরে যাও!” পাশাপাশি সে আরও বলে, “তোমাদের কাছে এটা সন্ত্রাসবাদ হতে পারে, কিন্তু আমার জন্য এটা দেশপ্রেম।”

জুন, ২০১৭: যুক্তরাজ্যের ফিন্সবারি পার্কে একটি মসজিদের সামনে নামাজ আদায়কারীদের উপর ভ্যান তুলে দিয়ে একজনকে হত্যা, আরো ১২ জন আহত

খুনির নাম ছিল ড্যারেন অসবর্ন। ভয়ংকর কাজটি করার পর সে চিৎকার করে বলছিল, “আমি চাই সব মুসলিমকে হত্যা করতে। আমার কাজ আমি করেছি।” শুনানির পর এক বিচারক এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, অনলাইন ও টুইটারের মাধ্যমে তাকে ‘র‍্যাডিকালাইজড’ করা হয়েছিল, পাশাপাশি বিভিন্ন ডানপন্থী রাজনীতিবিদের মুসলিমবিরোধী প্রোপাগান্ডায়ও সে প্রভাবিত হয়েছিল।

হেথার হেয়ারের স্মরণে রচিত বিভিন্ন বার্তা; Image Source: The Guardian

আগস্ট, ২০১৭: যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে নাৎসিবিরোধী আন্দোলনরতদের উপর গাড়ি তুলে দিয়ে একজনকে হত্যা

ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলে প্রশাসন সহিংস শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী ও নিও-নাৎজিদের একটি মিছিল বন্ধ করে দেয়। তাদের বিরুদ্ধে তখন আরেকটি আন্দোলন শুরু করে নাৎসিবিরোধীরা। তখন একজন শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী প্রতিশোধ নিতে তাদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। এতে ৩২ বছর বয়সী হেথার হেয়ার মারা যান। পাশাপাশি আরো ডজনখানেক মানুষ গুরুতর আহত হন। জেলে বসে হেথারের মাকে খুনি ব্যক্তিটি ফোন করে বলে, হেথার নাকি একজন ‘কম্যুনিস্ট’, এবং ‘শ্বেত সর্বোত্তমবাদ বিরোধীদের একজন’।

অক্টোবর, ২০১৮: যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে এক সুপারমার্কেটে দুই কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা

দুই কৃষ্ণাঙ্গকে খুন করার পর খুনি চেষ্টা করেছিল একটি ব্ল্যাক চার্চে প্রবেশের। দুই কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করার সময় সে বলছিল, “সাদাদের সাদারা কখনো মারে না।” এর খানিকক্ষণ বাদে সম্ভবত আরো কৃষ্ণাঙ্গ নিধনের আশায় সে নিকটবর্তী একটি ব্ল্যাক চার্চে প্রবেশের চেষ্টা চালায়, কিন্তু ভাগ্যক্রমে চার্চটি তালাবদ্ধ ছিল।

স্টার অফ ডেভিড মেমোরিয়ালে পুষ্পস্তবক অর্পণের পূর্বে আলিঙ্গনরত দুই নারী; Image Source: EPA

নভেম্বর, ২০১৮: যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গে ট্রি অফ লাইফ নামক সিনাগগে হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা

অভিযুক্ত হামলাকারীর একটি চরমপন্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় প্রোফাইল ছিল, যেখানে সে দাবি করেছিল ইহুদিরাই নাকি যুক্তরাষ্ট্রে ‘শয়তান’ মুসলিমদেরকে ঢোকাচ্ছে। সে আরো লিখেছিল, শরণার্থীদের সাহায্যকারী সংগঠনগুলো নাকি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে দেশে এমন মানুষদের প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে, যারা যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে। এর আগে সে শার্লটসভিলের ফ্যাসিজমবিরোধী কর্মীদের লক্ষ্য করে ডিমও ছুঁড়েছিল। কিন্তু আদালতে সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে।

শেষ কথা

গোটা বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ বেড়েই চলেছে। সন্ত্রাসবাদের পেছনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ এই চারটি বিষয় সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে। আর এ জাতীয় সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদীরাই সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে। Anti-Defamation League’s Center on Extremism এর প্রকাশিত এক তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে চরমপন্থী সংশ্লিষ্ট প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে মোট ৩৮৭টি, যার মধ্যে ৭১ শতাংশের পেছনেই দায়ী শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী ও কট্টর ডানপন্থী সন্ত্রাসীরা। মুসলিম চরমপন্থীরা দায়ী ২৬ শতাংশ মৃত্যুর ক্ষেত্রে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই তথ্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কেননা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সবচেয়ে বেশি। অথচ সেখানেই শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদীদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না অন্যান্য বর্ণের মানুষেরা। তাহলে বোঝাই যায়, বাকি বিশ্বের অবস্থাও একদমই সুবিধাজনক নয়। যে নিউজিল্যান্ডকে এতদিন বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ ও শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হতো, সেখানেও এখন শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদীরা দিনে-দুপুরে মসজিদে ঢুকে এতগুলো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। তাই এখনই সময় শ্বেতাঙ্গ সর্বোত্তমবাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার। 

চমৎকার সব বিষয়ে রোর বাংলায় লিখতে আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন এই লিঙ্কে: roar.media/contribute/

This article is in Bengali language. It is about the recent history of attacks linked to white supremacy. Necessary references have been hyperlinked inside.

Featured Image © Wikimedia Commons

Related Articles