Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

রাশিয়া কেন মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে?

সম্প্রতি মিয়ানমারের ‘রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিষদে’র সভাপতি এবং মিয়ানমার সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার মস্কোয় অনুষ্ঠিত ‘মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে’ অংশগ্রহণ করেছেন এবং উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সংঘটিত সামরিক অভ্যুত্থানের পর এটি হ্লাইংয়ের দ্বিতীয় বিদেশ সফর। ২০২১ সালের এপ্রিলে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ–ইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্স’ (আসিয়ান) সামিটে যোগদান ছিল অভ্যুত্থানের পর হ্লাইংয়ের প্রথম বিদেশ সফর। এরপর দ্বিতীয় বিদেশ সফরে তিনি রাশিয়ায় গিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে রুশ–মিয়ানমার সম্পর্কের মাত্রা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অস্থিতিশীল এই রাষ্ট্রটির সঙ্গে মস্কোর সম্পর্ক বেশ পুরনো। ১৯৪৮ সালে তদানীন্তন বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে এবং তখন থেকেই জাতিগত দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত রাষ্ট্রটির ক্ষমতার মূল ধারক দেশটির সশস্ত্রবাহিনী ‘তাতমাদো’ (Tatmadaw)। অল্প কয়েক বছরের বেসামরিক শাসন ব্যতীত স্বাধীনতা–পরবর্তী মিয়ানমারের একচ্ছত্র শাসক ছিল এই তাতমাদো। ১৯৫০–এর দশক থেকে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বার্মার সুসম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরেও এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অবশ্য উল্লেখ্য, সোভিয়েত আমলে রাষ্ট্র দুটির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকলেও বার্মা/মিয়ানমার কখনোই মস্কোর জন্য ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’ ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়াও কখনো মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বিশেষ কোনো হস্তক্ষেপ করেনি।

কিন্তু ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানে তাতমাদো কর্তৃক মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির শাসনক্ষমতা দখলের পর রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া একটি ভিন্ন ধরনের বার্তা প্রদান করে। পশ্চিমা বিশ্ব এই অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা জানায়, কিন্তু রাশিয়া এই অভ্যুত্থানের নিন্দা জানানো থেকে বিরত থাকে এবং রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে মিয়ানমারের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ হিসেবে চিহ্নিত করে। অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের নতুন সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয় এবং তাতমাদো এই বিক্ষোভ দমনের জন্য ব্যাপক বলপ্রয়োগ করে। অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে তাতমাদোর হাতে অন্তত ৮৭০ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। রাশিয়া মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কিন্তু একইসঙ্গে মিয়ানমারের ওপর জোরালো নিষেধাজ্ঞা আরোপের পশ্চিমা প্রস্তাবেরও বিরোধিতা করেছে।

অভ্যুত্থানের কিছুদিনের মধ্যেই মিয়ানমারের প্রতি রাশিয়ার নীতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মিয়ানমারে অবস্থানরত অধিকাংশ বিদেশি কূটনীতিবিদ মিয়ানমার সামরিক সরকারের প্রতি তাদের বিরোধিতার ইঙ্গিত দিয়ে ২৭ মার্চ মিয়ানমারে ‘সশস্ত্রবাহিনী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে অংশগ্রহণ থেকে বিরত ছিলেন। মাত্র ৮টি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা এই প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন, এবং এদের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি প্রেরণ করে রাশিয়া। রুশ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্দর ফোমিন এই প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি প্যারেডের পর হ্লাইংসহ তাতমাদোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি মিয়ানমারকে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় রাশিয়ার ‘নির্ভরযোগ্য মিত্র ও কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে বর্ণনা করেন। হ্লাইং এসময় ফোমিনকে মিয়ানমারের একটি পদকে ভূষিত করেন ও একটি আলঙ্কারিক তরবারি প্রদান করেন।

মিয়ানমারের ‘রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিষদে’র সভাপতি ও তাতমাদোর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং; Source: Reuters/Stringer/File Photo

অভ্যুত্থানের পর রুশ প্রচারমাধ্যমে (বিশেষ করে রুশ সরকারি বার্তা সংস্থা ‘আরআইএ নভোস্তি’তে) তাতমাদোকে বহুজাতিক মিয়ানমারের ঐক্য ও শান্তি রক্ষার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, এবং এর মধ্য দিয়ে তাতমাদোর ক্ষমতা দখলকে ন্যায়সঙ্গত হিসেবে প্রমাণ করার পরোক্ষ প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। মে মাসে মিয়ানমার বিমানবাহিনীর প্রধান জেনারেল মং মং কিয়াও রাশিয়া সফর করেন। সেখানে তিনি রাশিয়ার শীর্ষ হেলিকপ্টার প্রদর্শনী ‘হেলিরাশা’ পরিদর্শন করেন এবং উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামরিক–প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয়ে আলোচনা করেন।

জুনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারে বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, কিন্তু ৩৬টি রাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভোট প্রদান থেকে বিরত থেকেছে। এই রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ছিল রাশিয়া ও চীন। এই প্রস্তাব গ্রহণের কয়েক দিনের মধ্যেই হ্লাইং রাশিয়া সফরে গিয়েছেন। হ্লাইং মস্কোয় রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু, ‘রুশ নিরাপত্তা পরিষদে’র সভাপতি নিকোলাই পাত্রুশেভ এবং রুশ রাষ্ট্রীয় অস্ত্র রপ্তানিকারক সংস্থা ‘রোসোবোরোনেক্সপোর্তে’র প্রধান আলেক্সান্দর মিখেয়েভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রুশ সরকারি বার্তা সংস্থা ‘তাস’কে প্রদত্ত একটি সাক্ষাৎকারে হ্লাইং তাতমাদোকে শক্তিশালী করে তোলার জন্য রাশিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে, ‘রুশ–মিয়ানমার বন্ধুত্ব’ দিন দিন আরো শক্তিশালী হচ্ছে।

উল্লেখ্য, হ্লাইং মিয়ানমারের সামরিক সরকার কর্তৃক স্থাপিত ‘রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পরিষদে’র সভাপতি এবং সেই সূত্রে মিয়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধান। সেই অনুযায়ী রাশিয়া সফরকালে রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হওয়াই ছিল স্বাভাবিক রীতি। কিন্তু হ্লাইং ও পুতিনের মধ্যে কোনো বৈঠক হয় নি। এর কারণ হচ্ছে, মিয়ানমারে চলমান তীব্র সরকারবিরোধী বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রটির সামরিক সরকারের মর্যাদা যে প্রশ্নবিদ্ধ, সেই সম্পর্কে মস্কো সচেতন এবং এজন্য পুতিন হ্লাইংয়ের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করা থেকে বিরত থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে রাশিয়ার মর্যাদা বজায় রাখতে চাইছেন। তদুপরি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক স্যামুয়েল রামানির মতে, রুশরা হ্লাইংয়ের রাশিয়া সফর যাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে খুব বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ না করে, সেটি নিশ্চিত করতে চাইছে এবং এজন্য পুতিন হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি।

কিন্তু পুতিনের সঙ্গে হ্লাইংয়ের সাক্ষাৎ না হলেও হ্লাইংয়ের এই সফরকালে রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে নতুন অস্ত্র চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মন্তব্য করেছেন, মিয়ানমার রাশিয়ার ‘পরীক্ষিত’ অংশীদার এবং উভয় পক্ষের মধ্যবর্তী ‘সামরিক–প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’ সামনে আরো বৃদ্ধি পাবে।

২০২১ সালের ২৭ মার্চ মিয়ানমারের সশস্ত্রবাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে রুশ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্দর ফোমিন; Source: Ministry of Defence of the Russian Federation

কৌতূহলের বিষয় হচ্ছে, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনকে তাতমাদোর প্রধান রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক মিত্ররাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মিয়ানমার যে তিনটি রাষ্ট্র/সংগঠনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে, সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে চীন, আসিয়ান ও রাশিয়া। গত ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর হ্লাইং আসিয়ানের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন এবং রাশিয়া সফর করেছেন, কিন্তু চীন সফর করেননি। মিয়ানমারের সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা চীনকে এই অভ্যুত্থানের নেপথ্যে থাকা প্রধান শক্তি হিসেবে বিবেচনা করে এবং এজন্য বিক্ষোভ চলাকালে তারা মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে চীনা স্থাপনাগুলোর ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। মিয়ানমারে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে চীন তাতমাদোর ওপর সন্তুষ্ট নয় এবং একজন চীনা কূটনৈতিক কর্মকর্তা এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন যে, মিয়ানমার বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, সেই পরিস্থিতি চীন মোটেই দেখতে চায় না।

কিন্তু অভ্যুত্থানের পর চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। উল্লেখ্য, অভ্যুত্থানের মাত্র দুই সপ্তাহ আগেই রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগু মিয়ানমার সফর করেছিলেন। পশ্চিমা কূটনীতিবিদদের ধারণা, তাতমাদো এসময়ই মস্কোকে আসন্ন অভ্যুত্থান সম্পর্কে জানিয়ে রেখেছিল এবং মস্কো এই অভ্যুত্থানের প্রতি তাদের মৌন সমর্থন ব্যক্ত করেছিল। বাস্তব ঘটনা যাই হয়ে থাকুক না কেন, অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি যে রাষ্ট্রটি সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছে, সেটি হচ্ছে রাশিয়া। প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়ার এরকম ভূমিকার কারণ কী?

প্রথমত, ১৯৫০–এর দশক থেকেই তাতমাদো মিয়ানমারের মূল ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে, তাই মস্কো মূলত তাতমাদোর সঙ্গেই তাদের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। বর্তমানেও মিয়ানমারে মস্কোর প্রভাব বিস্তারের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে তাতমাদো। মিয়ানমারের রাজনৈতিক দলসমূহ, নাগরিক সমাজ কিংবা জাতিগত বিদ্রোহী দলগুলোর সঙ্গে মস্কোর বিশেষ কোনো যোগসূত্র নেই বললেই চলে, এবং দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার সামাজিক–অর্থনৈতিক সংযোগ নিতান্তই সীমিত। এমতাবস্থায় রাশিয়া যদি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই রাষ্ট্রটিতে তাদের বর্তমান প্রভাব ধরে রাখতে চায়, সেক্ষেত্রে তাতমাদোর সঙ্গে সহযোগিতা করা ছাড়া তাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই।

তাতমাদোর বর্তমান সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল হ্লাইং রুশ–মিয়ানমার সম্পর্কের জোরালো সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তিনি এ পর্যন্ত ৬ বার রাশিয়া সফর করেছেন, এবং ধারণা করা হয়, রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুর সঙ্গে তার উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০২০ সালে তিনি মস্কোয় অনুষ্ঠিত রুশ বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেডে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিজয় দিবসের প্যারেড রাশিয়ার একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠান এবং রুশ জনসাধারণের মধ্যে দেশাত্মবোধ সৃষ্টির জন্য এটি রুশ সরকারের একটি অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির অংশ হিসেবে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন বিপুল ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে জার্মানির বিরুদ্ধে এই বিজয় অর্জন করেছিল, কিন্তু বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বে এই বিজয়ে রুশদের অবদানকে প্রায় স্বীকার করা হয় না বললেই চলে। এজন্য এই প্যারেডে উপস্থিত থেকে হ্লাইং মস্কোর আস্থা অর্জন করেছেন।

বিশ্ব মানচিত্রে রাশিয়া (কমলা রঙে চিহ্নিত) এবং মিয়ানমার (সবুজ রঙে চিহ্নিত); Source: Wikimedia Commons

হ্লাইংয়ের সঙ্গে মস্কোর বিশেষ সম্পর্কের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, পশ্চিমা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুক’ ও ‘টুইটার’ হ্লাইংকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, কিন্তু হ্লাইং এখনো অনায়াসে রুশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ভিকে’ ব্যবহার করছেন। শুধু তা-ই নয়, ২০২০ সালে প্রচারমাধ্যমকে প্রদত্ত যে সাক্ষাৎকারে হ্লাইং মিয়ানমারের রাজনীতিতে প্রবেশের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন, সেই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিল রুশ প্রচারমাধ্যম ‘আর্গুমেন্তি ই ফাক্তি’। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্লাইংয়ের উদ্যোগেই মিয়ানমারে কোভিড–১৯ বিরোধী রুশ টিকা ‘স্পুৎনিক–ভি’ ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, হ্লাইং হচ্ছেন মিয়ানমারে রুশ প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে মস্কোর সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার। এজন্য স্বভাবতই হ্লাইংয়ের রাজনৈতিক উত্থানকে মস্কো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করেছে।

দ্বিতীয়ত, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি মস্কোর সমর্থনের সঙ্গে বর্তমানে চলমান রুশ–পশ্চিমা ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সরাসরি সম্পৃক্ত। পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারে পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী এবং এই উদ্দেশ্যে তারা ‘ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র‍্যাসি’র নেত্রী অং সান সু কিকে সমর্থন করে। রাজনৈতিকভাবে রাশিয়া নিজেও একটি বহুদলীয় নির্বাচনভিত্তিক গণতন্ত্র, কিন্তু পশ্চিমাদের সমর্থিত ‘উদার গণতন্ত্রে’র (liberal democracy) সঙ্গে রুশ গণতন্ত্রের বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। পশ্চিমা উদার গণতন্ত্রের বিস্তারকে মস্কো ইতিবাচকভাবে দেখে না এবং বিশ্বব্যাপী পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রচেষ্টাকেও তারা সমর্থন করে না। বরং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে তীব্র ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে মস্কো এই ধরনের প্রচেষ্টাকে নিজস্ব স্বার্থের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।

অং সান সু কি ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী পশ্চিমাপন্থী একজন রাজনীতিবিদ এবং তার দুই সন্তান ব্রিটিশ নাগরিক। স্বভাবতই মস্কো তাকে মিয়ানমারে নিজস্ব প্রভাব বিস্তারের জন্য আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করে না। এজন্য মিয়ানমারের শাসনক্ষমতায় সু কির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সামরিক সরকারের অধিষ্ঠিত থাকা মস্কোর কাছে বেশি পছন্দনীয়। তদুপরি, পশ্চিমা বিশ্ব কর্তৃক মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে মস্কো ‘দ্বিচারিতা’ হিসেবে বিবেচনা করে। কারণ, মিয়ানমারের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র থাইল্যান্ড একটি রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং সেখানকার শাসনক্ষমতা কার্যত সেখানকার সশস্ত্রবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু থাইল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মিত্র এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র থাইল্যান্ডে বিদ্যমান সামরিক শাসনের বিরোধিতা করে না।

রুশ উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্দর ফোমিন এবং মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বৈঠকের চিত্র; Source: Global New Light of Myanmar via The Irrawaddy

অর্থাৎ, পশ্চিমা বিশ্বের মূল উদ্দেশ্য পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা নয়। তাদের মূল উদ্দেশ্য দেশে দেশে পশ্চিমাপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠা করা। থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সরকার পশ্চিমাপন্থী, তাই পশ্চিমা বিশ্ব সেখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী নয়। কিন্তু তাতমাদোর সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে রয়েছে, এজন্য পশ্চিমা বিশ্ব মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী। পশ্চিমা বিশ্বের মূল লক্ষ্য মিয়ানমারে রুশ (ও চীনা) প্রভাবের বিলুপ্তি ঘটানো, এবং এজন্য মস্কো মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে বিস্তৃত সমর্থন দিয়ে আসছে।

তৃতীয়ত, মিয়ানমার রাশিয়ার জন্য একটি বৃহৎ অস্ত্রের বাজার এবং রাশিয়া মিয়ানমারের দ্বিতীয় প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী রাষ্ট্র। ‘স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটে’র প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে রাশিয়া মিয়ানমারের কাছে প্রায় ১৫০ কোটি (বা ১.৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করেছে। এই সময়ে মিয়ানমার মোট যে পরিমাণ অস্ত্র আমদানি করেছে, তার মধ্যে ৩৯% এসেছে রাশিয়া থেকে। এসময় রাশিয়া মিয়ানমারের কাছে যেসব অস্ত্র রপ্তানি করেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩০টি ‘মিগ–২৯’ যুদ্ধবিমান, ১২টি ‘ইয়াক–১৩০’ প্রশিক্ষণ বিমান, ১০টি ‘মি–২৪’ ও ‘মি–৩৫পি’ হেলিকপ্টার এবং ৮টি ‘পেচোরা–২এম’ বিমান–বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র।

২০১৯ সালে রাশিয়া মিয়ানমারকে ৬টি ‘সুখোই সু–৩০’ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মিয়ানমারকে ‘পান্তসির এস–১’ বিমান–বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ‘ওরলান–১০ই’ গোয়েন্দা ড্রোন ও আধুনিক রাডার বিক্রি করার জন্য চুক্তি করেছে। মিয়ানমার রাশিয়ার তৈরি এই ড্রোনগুলোর প্রথম ক্রেতা। তাছাড়া, মিয়ানমারের নিকট রপ্তানিকৃত রুশ সামরিক সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাশিয়া ও মিয়ানমার মিয়ানমারের ভূখণ্ডে একটি যৌথ রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। তদুপরি, তাতমাদোর হাজার হাজার সদস্য রাশিয়ায় সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে এবং রুশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তিতে রাশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়ন করছে।

অর্থাৎ, রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সুবিস্তৃত সামরিক সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক থেকে রুশরা ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছে। তাই মিয়ানমারে রুশ অস্ত্রের বাজার ধরে রাখার জন্য মস্কো মিয়ানমারের শাসনক্ষমতায় তাতমাদোকে দেখতে ইচ্ছুক।

মিয়ানমার বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে রুশ–নির্মিত ‘ওরলান–১০ই’ গোয়েন্দা ড্রোন ক্রয় করেছে; Source: The Defense Post

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর কাছে অস্ত্র রপ্তানিতে শীর্ষ রাষ্ট্র হচ্ছে রাশিয়া। অন্যান্য অস্ত্র উৎপাদনকারী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে মস্কো এই অবস্থান ধরে রাখতে এবং এতদঞ্চলে তাদের অস্ত্রের বাজার আরো বিস্তৃত করতে আগ্রহী। রুশ সশস্ত্রবাহিনী বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ভিয়াচেস্লাভ ৎসেলিউকোর ভাষ্যমতে, রাশিয়া মিয়ানমারকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অস্ত্রের বাজারে প্রবেশের একটি ‘স্প্রিংবোর্ড’ হিসেবে বিবেচনা করে এবং মিয়ানমার এক্ষেত্রে মস্কোর জন্য একটি ‘কৌশলগত বাজারের প্রবেশপথ’। সুতরাং মিয়ানমার ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রুশ অস্ত্রের বাজার ধরে রাখার ক্ষেত্রে মস্কো মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে একটি ‘সহায়ক উপাদান’ হিসেবে বিবেচনা করে।

চতুর্থত, কৌশলগত দিক থেকে মিয়ানমার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত এই রাষ্ট্রে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে পারলে এতদঞ্চলে রুশ প্রভাব উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। এখন পর্যন্ত মস্কো এই বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ প্রদর্শন করেনি। কিন্তু সিঙ্গাপুরভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘আইএসইএএস–ইউসুফ ইসহাক সেন্টারে’র সদস্য ইয়ান স্টোরির মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলো রুশ–মিয়ানমার যৌথ মহড়া এবং মিয়ানমারের বন্দরগুলোতে রুশ নৌবাহিনীর জাহাজের উপস্থিতি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে উঠেছে, এবং এই প্রক্রিয়ার যৌক্তিক পরিণাম হিসেবে মিয়ানমারে রুশ নৌঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, রুশ পররাষ্ট্রনীতির একটি অন্যতম মূলমন্ত্র হচ্ছে পূর্বমুখিতা এবং চীন রাশিয়ার পূর্বমুখী নীতির একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও এটি রুশ প্রাচ্য নীতির একমাত্র উপাদান নয়। রাশিয়া নিজেকে এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক এবং এই উদ্দেশ্যে মস্কো আসিয়ানের সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব স্থাপন করেছে। মস্কো মিয়ানমারকে ‘আসিয়ানের প্রবেশপথ’ হিসেবে বিবেচনা করে এবং আসিয়ানের অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্র যেহেতু অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সমর্থন করেছে, তাতমাদোকে সমর্থনের মধ্য দিয়ে মস্কো আসিয়ানের নীতির সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। মস্কো রুশ–নেতৃত্বাধীন ‘ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন’ (ইএইইউ) ও আসিয়ানের মধ্যে জোটভিত্তিক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী এবং মিয়ানমারসহ আসিয়ানের কতিপয় সদস্য ইতোমধ্যে ইএইইউ–এর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

অর্থাৎ, এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রুশ প্রভাব বিস্তারের জন্য আসিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা মস্কোর জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং এক্ষেত্রে তাতমাদো–নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমার রুশ কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কার্যত মিয়ানমার আসিয়ানে রাশিয়ার ‘প্রক্সি’ হিসেবে কাজ করতে পারে। এজন্য মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখা মস্কোর জন্য জরুরি।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংকে রুশ সৈন্যরা ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করছে; Source: Vadim Savitsky/Ministry of Defence of the Russian Federation/Handout via Reuters

সর্বোপরি, মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সমর্থন করা মস্কোর জন্য একটি ঝুঁকিহীন কৌশল। রাশিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত নেই এবং রাষ্ট্র দুইটি ভৌগোলিকভাবে একে অপরের থেকে বহু দূরে অবস্থিত। এজন্য মিয়ানমারের সামরিক সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে যদি রাষ্ট্রটিতে কোনো বড় ধরনের সংঘাত দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর এর কোনো প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে না। এই কারণে মিয়ানমারের প্রতিবেশী চীন তাতমাদোকে পূর্ণ সমর্থন প্রদান করতে দ্বিধা বোধ করছে, কিন্তু মস্কো প্রায় নির্দ্বিধায় তাতমাদোকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।

মিয়ানমারের দৃষ্টিকোণ থেকে, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক–কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন মিয়ানমারের পররাষ্ট্রনীতিকে পুরোপুরি চীনমুখী হওয়া থেকে বিরত রাখবে। তাতমাদোর সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বরাবরই জটিল ছিল এবং এজন্য তাতমাদোর অধিকর্তারা চীনের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল থাকতে ইচ্ছুক নন। রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের ফলে একদিকে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি তাদের হস্তগত হবে, অন্যদিকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত স্বাধীনতা (foreign policy autonomy) বৃদ্ধি পাবে।

সামগ্রিকভাবে, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখা রাশিয়ার অর্থনৈতিক, কৌশলগত ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অনুরূপভাবে, তাতমাদোর জন্য মস্কো একটি পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত বিকল্প। এজন্য ধারণা করা যায়, নিকট ভবিষ্যতে রাশিয়া মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখবে।

Related Articles