Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

স্টার ডাস্ট: অর্ধ শতাব্দী নিখোঁজ থাকা বিমানের কিছু অমীমাংসিত রহস্য

বিমান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল কিছু নয়। যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে ছিনতাই কিংবা বৈরি আবহাওয়া থেকে যুদ্ধের আঘাত- এমন অনেক কারণে বহু উড়োজাহাজ নিখোঁজ হয়েছে। প্রাণ গেছে কত মানুষের সে হিসেবও গুনে শেষ করা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু স্টার ডাস্টের ইতিহাসটা একটু অন্যরকম। পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ কোনো বিমানের সন্ধান পাওয়ার আশা কেউ কোনো দিন করে না। কিন্তু এত দীর্ঘ সময় পর বিমানের ধ্বংসাবশেষ হঠাৎ খুঁজে পাওয়া গেলে ব্যাপারটা কিছুটা ঘোলাটে হয়ে যায়। সেই ধ্বংসাবশেষ যদি পাওয়া যায় এমন কোথাও যেখানে নিয়মিত না হলেও মানুষের পদচারণ রয়েছে তাহলে? রহস্যের জাল আরো একটু ঘন হয়ে ওঠে। সেই বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার পরেও যদি ধ্বংস হবার কারণ অমীমাংসিতই থেকে যায় তখন?

স্টার ডাস্ট; Image source: Pathfinder Craig

১৯৪৭ সালের ২ অগাস্ট, বুয়েনস আইরেস থেকে চিলির সান্তিয়াগোতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় স্টার ডাস্ট। ব্রিটিশ সাউথ আমেরিকান এরায়লাইন্স (বি এস এ এ) এর সিএস–৫৯ বিমানটি ছিল মূলত ব্রিটিশ ল্যানচেস্টার যুদ্ধবিমানের যাত্রীবাহী সংস্করণ। পাঁচজন বিমান পরিচালনা কর্মী আর ছ’জন যাত্রী নিয়ে আকাশে ওড়া বিমানটির আকার খুব বড় না হলেও ছিল বেশ শক্তিশালী। ঘণ্টায় ৩১০ মাইল বেগে উড়তে পারার মতো শক্তিশালী ইঞ্জিনগুলো রোলস রয়েস কোম্পানির তৈরি করা।

গতির সাথে তাল মিলিয়ে উচ্চতায় ওঠার ক্ষেত্রেও এ বিমানের নৈপুণ্য ছিল অসাধারণ। ২০,০০০ ফুট উচ্চতায় অনায়াসে উড়ে যাবার মতো ক্ষমতা ছিল স্টার ডাস্টের। যাত্রাপথের কোনো রকমের বিপদ সংকেত না দিয়ে এমনকি অবতরণের অনুমতি নেয়ার সংকেত পাঠিয়েও শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যায় স্টার ডাস্ট। নিখোঁজ হবার খবর নিশ্চিত করার পরে সেই সময়ই উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল, তবুও কোনো খোঁজ মেলেনি এর।

পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকার পরে অবশেষে খোঁজ পাওয়া যায় স্টার ডাস্টের। আন্দিজ পর্বতমালার একটি দুর্গম অংশে দুই পর্বতারোহী অনেকটা দুর্ঘটনাবশতই আবিষ্কার করেন বিমানটির ধসে পড়া কিছু অংশ।

আন্দিজ পর্বতমালায় খোঁজ পাওয়া যায় স্টার ডাস্টের; Image source:  Mirror

তবে স্টার ডাস্টের সন্ধান পাওয়ার আগে এর দুর্ঘটনা নিয়ে কত রকম যে কল্পকাহিনী ছড়িয়েছিল সেগুলো হিসেব করে বের করা মূল রহস্যের সমাধান বের করা সহজ কিছু না। নাৎসি বাহিনীর পালানোর জন্য ব্যবহার হওয়া, স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকা, এমনকি ভিনগ্রহের বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ার গল্পও শোনা যেত স্টার ডাস্টের ব্যাপারে।

এখানেই রেহাই নেই। যাত্রীদের বিষয়েও নানা গল্প প্রচলিত ছিল, যাদের সংশ্লিষ্টতায় বিমান নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে বলে গুজব ছিল। বিমানের ছয় যাত্রীর মাঝে দুজন ছিলেন ব্যবসায়ী বন্ধু, যারা ভাগ্যের সন্ধানে দক্ষিণ আমেরিকা সফরে এসেছিলেন। এদের একজন সুইস নাগরিক, অপরজন ব্রিটিশ। পরবর্তী যাত্রী ছিলেন ফিলিস্তিনের নাগরিক। তার বিষয়ে গুজব ছিল যে, জ্যাকেটের সেলাইয়ের ভেতরে লুকনো হীরা নিয়ে তিনি বিমানে উঠেছিলেন। অপর যাত্রী ছিলেন ডানলপ টায়ার কোম্পানির দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিনিধি। পঞ্চম যাত্রী ছিলেন জার্মান এক ভদ্রমহিলা। সত্তরোর্ধ্ব এই যাত্রী যুদ্ধের রেশ কাটিয়ে চিলিতে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। তার বিষয়ে ছড়ানো একটি গুজব ছিল যে, তিনি প্রয়াত স্বামীর দেহভস্ম সাথে নিয়ে বিমানে চড়েছিলেন। বাকি থাকা সর্বশেষ যাত্রী ছিলেন ব্রিটিশ সিভিল সারভেন্টসের একজন বিশেষ সদস্য, যার পদবি ছিল ‘রাজার বার্তাবাহক’। তিনি কূটনৈতিক দলিল বোঝাই একটি বিশেষ ব্যাগ সাথে করে বিমানে উঠেছিলেন এবং স্বভাবতই এ বিষয়ে গুজব ছড়ায় যে, বিশেষ গোপন দলিল সাথে করে নিয়ে বিমানে ওঠায় নিখোঁজ হতে হয় স্টার ডাস্টকে।

স্টার ডাস্টের ধ্বংসাবশেষ; Image source: Pathfinder Craig

সব গুজবের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৮ সালে সন্ধান মেলে স্টার ডাস্টের। সর্বশেষ যেখান থেকে যোগাযোগ করেছিল বিমানটি সেখান থেকে প্রায় ৫০ মাইল দুরে আন্দিজের টুপুঙ্গাটো মাউন্টেনে খোঁজ মেলে সেই ধ্বংসাবশেষের। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫,০০০ ফুট উঁচুতে হিমবাহের পাদদেশে পর্বতারোহীরা দেখতে পায় এমন কিছু জিনিস যেগুলো সেখানে থাকার কারণ নেই। তারা সেখানে একটি ইঞ্জিনের অংশ পড়ে থাকতে দেখে, যার উপরে “OLLS-ROYCE” অংশটি খোদাই করা রয়েছে। আশেপাশে ছড়িয়ে  থাকা পিনস্ট্রাইপ কাপড়ের ছেড়া টুকরো দেখে তারা বুঝতে পারে নিশ্চয়ই এখানে এমন কিছু রয়েছে যে বিষয়ে সরকারকে জানানো উচিত।

স্টার ডাস্টের ধ্বংসাবশেষ; Image source: Pathfinder Cra

তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে আর্জেন্টাইন সামরিক বাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি দল যাত্রা করে দুর্গম সেই পাহাড়ি অঞ্চলে। চারদিনের প্রতিকূল যাত্রার শেষে অবশেষে উদ্ধারকারী দলটি হিমবাহের পাদদেশের নির্দিষ্ট অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছায়। সেই দলের উদ্দেশ্য ছিল দেড় দিন অর্থাৎ ৩৬ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে দুর্ঘটনার ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করা, দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করা এবং কোনো দেহাবশেষ উদ্ধার করা সম্ভব হলে সেগুলোকে ফিরিয়ে নেয়া।

উদ্ধারকারী দলটি ধ্বংস হওয়া বিমানের বেশ কিছু অংশ খুঁজে পায়। যেখান থেকে তারা নিশ্চিত হয় এটি সেই হারিয়ে যাওয়া স্টার ডাস্টেরই অংশ। অভিযানে তারা খুঁজে পায় বিমানটির বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া চাকাগুলো, যার একটি পুরোপুরি বিস্ফোরিত হয়ে গেছে। স্টার ডাস্টের রোলস রয়েস ইঞ্জিনগুলোর একটি খুঁজে বের করে উদ্ধারকারীরা, যার পাশেই ইঞ্জিনের সামনের পাখাও তারা দেখতে পায়। পাহাড়ে আছড়ে পড়ার সময়ও যে এর ইঞ্জিনে আগুন ধরেনি বা বন্ধ হয়ে যায়নি- এই ধারণা তারা পাখার অবস্থা থেকেই বুঝতে পারে। এর বাইরে স্টার ডাস্টের ধাতব শরীরের বেশ কিছু অংশ তারা উদ্ধার করেন। এগুলো থেকে দুর্ঘটনার ভয়াবহতার বিষয়টি নির্ণয় করা গেলেও ঠিক কিভাবে বা কী কারণে বিমানটি ধ্বংস হয়েছিল সেটা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

এই অভিযানের অপর উদ্দেশ্য দেহাবশেষ উদ্ধারেও কিছুটা সফল হয় উদ্ধারকারী দলটি। তারা তিনটি বিচ্ছিন্ন দেহাবশেষ উদ্ধার করে, সেই সাথে বুট পরিহিত একটি পায়ের নিম্নাংশ এবং একটি হাতের আঙুলসহ সামনের অংশ তারা খুঁজে পায়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে প্রাকৃতিক সেই হিমাগারে ঢেকে থাকা দেহগুলোতে কোনো ধরনের পচনের চিহ্ন ছিল না। পরবর্তী প্রায় দুই বছর ধরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে দেহাবশেষগুলো তাদের নিকট আত্মীয়দের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করে আর্জেন্টাইন সরকার।

স্টার ডাস্টের ধ্বংসাবশেষ; Image source: Pathfinder Cra

দীর্ঘ সেই অভিযান শেষে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বিশেষ দলটি ফিরে আসে শহরে। দুর্ঘটনার কারণ এবং অন্যান্য বিষয়ের ধোঁয়াশা কাটাতে তারা দ্বারস্থ হয় বিশেষজ্ঞদের। নমুনা গবেষণা এবং দুর্ঘটনার সময়কালের নানা বিষয়ে হিসেব করে বিশেষজ্ঞরা তাদের মতামত দেন। ধারণা করা হয়েছিল, আন্দিজের উপর দিয়ে উড়ে যাবার সময় বিমানের দিকনির্দেশনা যন্ত্রের অস্বাভাবিক আচরণ বিষয়ে এর আগেও শোনা গিয়েছে। স্টার ডাস্টের ক্ষেত্রেও সেই রকম কিছু হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে। দিক ভুল হবার কারণে নিজের যাত্রাপথ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে এসে আছড়ে পড়ার ব্যাখ্যা কিছুটা দেয়া সম্ভব হয়।

দিক পরিবর্তনের কারণ হিসেবে অপর একটি ব্যাখ্যায় বলা হয়, পাহাড়ের উঁচু চূড়া পার করার জন্যে স্টার ডাস্টের পরিচালক দলটি হয়তো এমন উচ্চতায় উঠেছিল যেখানে তারা বিশেষ বায়ু স্রোতে পড়ে যায়। সেখান থেকে বিমান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিল না। আর সেই কারণেই হিমবাহের চূড়ার কাছেই আছড়ে পড়ে বিমানটি।

ব্যাখ্যাগুলো যৌক্তিক হলেও কিছুটা খটকা থেকেই যায়। স্টার ডাস্টের কর্মীরা সবাই ছিলেন রয়্যাল এয়ার ফোর্সের অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। মূল পাইলট ছিলেন সদ্য শেষ হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমারু বিমানের চালক। দলের বাকিরাও ছিলেন যুদ্ধে অংশ নেয়া দক্ষ বৈমানিক। দুর্যোগের মুহূর্তে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করতে পারার মতো অভিজ্ঞতার কোনো কমতি ছিল না তাদের মধ্যে। স্টার ডাস্টের ধ্বংসাবশেষ থেকেও এর ধ্বংস হওয়ার কারণ শতভাগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। 

টুপুঙ্গাটো মাউন্টেনে খোঁজ মেলে ধ্বংসাবশেষের; Image source: Pathfinder Cra

পরবর্তী যে প্রশ্নটি উদ্ধারকারী দল থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় তা হলো, হিমবাহের যে অংশে স্টার ডাস্টের টুকরোগুলো পাওয়া গেছে সে পথে গত পঞ্চাশ বছরে অনেকেই পর্বতারোহণ করেছে। তাহলে তারা এত বছর কেন দেখতে পেল না বিমানের অংশগুলো? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত, বিমানটি আছড়ে পড়েছিল হিমবাহের উপরের অংশে। কিন্তু বছরের পর বছর তুষারপাতে এই ধ্বংসাবশেষগুলো বরফের নিচে চাপা পড়তে থাকে, আর একসময় হিমবাহের অংশে পরিণত হয়ে যায়। বরফের সেই আস্তরণের নিচে থাকার কারণেই এতদিন এগুলো কারো নজরে আসেনি। কিন্তু ধীরে ধীরে ধ্বংসাবশেষগুলো হিমবাহের নিচের দিকে নামতে থাকে আর একসময় এমন অবস্থানে এসে পৌঁছায় যেখানে বরফ গলে আবার সেগুলো উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু পঞ্চাশ বছরেও কারো নজরে না আসার বিষয়টি অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধই রয়েই গেছে।

এখানেই রহস্যের শেষ নয়। স্টার ডাস্ট নিখোঁজ হবার ঠিক আগে সান্তিয়াগোর বেস টাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করেন বিমানটির রেডিও অপারেটর। ঘড়িতে সময় তখন বিকাল ৫:৪১। মোর্সকোডে পাঠানো সেই বার্তায় বিকাল ৫:৪৫ এ (অর্থাৎ ৪ মিনিট পরেই) অবতরণের জন্যে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু বার্তার শেষে একটি শব্দ বা অক্ষরগুচ্ছ পাঠান স্টার ডাস্টের রেডিও অপারেটর, যার কোনো আক্ষরিক অর্থ নেই। ‘STENDEC’ শব্দটি চিলিয়ান বিমান ঘাটির গ্রাউন্ড কন্ট্রোলার বুঝতে না পারায় আবারো পাঠানোর অনুরোধ করেন। সেই সাথে অবতরণের জন্যে অনুমতি দিয়ে দেন।

সাথে সাথেই স্টার ডাস্ট থেকে পর পর দুবার একই শব্দ ‘STENDEC’ মোর্স কোডের মাধ্যমে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে চিলিয়ান সেই বেস স্টেশন অপারেটর পরবর্তীতে বলেছিলেন, স্টার ডাস্টের পাঠানো সংকেতগুলো ছিল পরিষ্কার এবং স্পষ্ট। কিন্তু সংকেতগুলো পাঠানো হচ্ছিল এমনভাবে যেন খুব তাড়াহুড়ো করা লাগছে। রহস্যময় এই শব্দটি তিনবার পাঠিয়ে নীরব হয়ে যায় স্টার ডাস্ট। অবতরণের সময় পার হবার পর আরও বহুবার চেষ্টা করেও স্টার ডাস্টের সাথে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।  

স্টার ডাস্টের ধ্বংসাবশেষ; Image source: Pathfinder Cra

বিগত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে এই শব্দ রহস্যের সমাধান খুঁজেছেন অনেকেই। কিন্তু কেউই কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অনেকে মনে করেন, এই শব্দের অক্ষরগুলোকে একটু গুছিয়ে সাজালে ‘DESCENT’ শব্দটি তৈরি করা যায়। কিন্তু সেভাবে শব্দ তৈরি করলেই তো আর সমাধান হয় না। বিবিসির টেলিভিশনের সিরিজ হরাইজনের একটি বিশেষ পর্ব সাজানো হয়েছিল স্টার ডাস্টের এই রহস্যময় অন্তর্ধান আর ‘STENDEC’ এর ধাঁধা নিয়ে। ২০০০ সালে প্রচারিত এই পর্ব আবারো মানুষের মাঝে অর্ধ শতাব্দী পুরোনো সেই রহস্যকে জাগিয়ে তোলে।

এই পর্বের নির্মাতারা জানান, অনেকেই তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই শব্দের নানা ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করে। কোনো ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘DESCENT’ শব্দটি পাঠাতে গিয়ে অপারেটর ‘STENDEC’ পাঠিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাহলে পরবর্তীতে আরো দুবার একই শব্দ পাঠানোর সময় অক্ষর একই থাকার কথা নয়। তাই এই ব্যাখ্যা মেনে নেয়া সম্ভব হয় না।

অপর ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিমানের কর্মীরা হয়তো অধিক উচ্চতায় উঠে যাবার কারণে হাইপোক্সিয়া (রক্ত এবং কোষে অক্সিজেনের অভাব) সমস্যায় ভুগছিলেন। যার ফলে অক্সিজেন রক্তকণিকায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়। হাইপোক্সিয়ার কারণে বিমান চালকের চিন্তাশক্তি ব্যাহত হয়ে বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলাও অসম্ভব কিছু নয়। এই ব্যাখ্যার হিসেবে স্টার ডাস্টের রেডিও অপারেটর হয়তো হাইপোক্সিয়ার শিকার হয়েছিলেন বলেই এ ধরনের মেসেজ পাঠাচ্ছিলেন।

অন্য একটি ব্যাখ্যায় বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিছু বৈমানিক ‘STENDEC’ শব্দটি  নিজের বিমান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অন্যদের জানানোর জন্যে ব্যবহার করতেন। ‘Severe Turbulence Encountered, Now Descending, Emergency Crash-landing,’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ‘STENDEC‘। কিন্তু এই ব্যাখ্যার কোনো শক্ত ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

স্টার ডাস্ট অর্ধ শতাব্দী পর উদ্ধার হলেও এর সাথে জড়িয়ে থাকা রহস্যগুলোর সঠিক সমাধান আজও পাওয়া সম্ভব হয়নি। অন্যতম বিমান রহস্য হিসেবে স্টার ডাস্ট উড়ে চলুক সবার কল্পনার আকাশে।

This Bengali article is about Star Dust aircraft. In 1947, it lost its control due to severe weather conditions. Necessary links are hyperlinked in the article. Necessary information has been hyperlinked in the article.

Feature Image: The Points Guy

Related Articles