ফেলিক্স বমগার্টনার: এক দুঃসাহসী স্কাইডাইভার

পাখির মতো আকাশে ওড়ার স্বপ্ন থেকেই মানুষ বিমান বানিয়েছিল। আবার পাখির মতো আকাশে ক্ষণিক ভেসে থাকার জন্য বানিয়েছিল প্যারাসুট, যা আজকের দিনে বিমান দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান সম্বল। সেনাবাহিনীর প্যারাট্রুপারদের দুঃসাহসী প্যারা জাম্প নিয়ে অনেকেই রোমাঞ্চিত হন। এই রোমাঞ্চের জন্যই সিভিলিয়ান স্পোর্টস হিসেবে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে স্কাইডাইভিং বা প্যারাসুটিং-এর মতো বিপদজনক ও রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার। কিন্তু একজন মানুষ সর্বোচ্চ কত উচ্চতা থেকে লাফ দিতে পারে?

সাধারণ স্কাইডাইভিংয়ের ক্ষেত্রে ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে লাফ দেয়া হয়।আর সেনাবাহিনীতে ১৫-৩৫ হাজার ফুট উপর থেকে লাফ দেয়া হয়। এত উপরে অক্সিজেনের চাপ কম থাকে বিধায় অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মাস্ক ব্যবহার করা হয়।

এধরনের প্যারাজাম্প দুই ধরনের। HALO জাম্প মানে High Altitude, Low Opening, অর্থাৎ এখানে মাত্র ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় এসে প্যারাসুট খোলা হয়। HAHO জাম্প মানে High Altitude, High Opening, অর্থাৎ এখানে প্রায় ২৭ হাজার ফুট উচ্চতায় প্যারাসুট খোলা হয়, এবং জিপিএস ও কম্পাসের সাহায্যে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার প্যারাসুটে ভেসে পাড়ি দিতে পারে প্যারাট্রুপাররা। আর সাধারণ মিলিটারি প্যারাসুট জাম্প ৮-১৩ হাজার ফুট থেকে হয়ে থাকে। মিশনের ভিন্নতা অনুযায়ী প্যারাজাম্পের উচ্চতা পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন: স্ট্যাটিক লাইন জাম্প (যেখানে একের পর এক ট্রুপাররা লাফ দেয় এবং লাফ দেয়ার সাথে সাথে প্যারাসুট খোলা হয়) এর সময় মাত্র ৪ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে দেয়া হয়।

Defence Research Forum- DefRes
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল মুস্তাফিজ-এর জাম্প স্যালুট ও পাঁচ শতাধিক জাম্প করা লে. কর্নেল তৌহিদ

এখন বলুন তো, একজন মানুষ সর্বোচ্চ কত উপর থেকে লাফ দিতে পারে? আজকের গল্পটি ফেলিক্স বমগার্টনার নামের ৪৩ বছর বয়সী এক দুঃসাহসী অস্ট্রিয়ান স্কাইডাইভারের যিনি এমন উচ্চতা থেকে জাম্প দিয়েছেন যা তার আগে দেয়ার সাহসও দেখায়নি! 

জোসেফ কিটিংগার নামে মার্কিন বিমানবাহিনীর এক কর্নেল ১৯৬০ সালে ৩১,৩০০ মিটার উচ্চতা থেকে লাফ দিয়েছিলেন। ফেলিক্স বমগার্টনার আগের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ফুট বা ৩৯ হাজার মিটার উপর থেকে তিনিই প্রথমবারের মতো লাফ দেন এবং নিরাপদে প্যারাসুট দিয়ে অবতরণ করেন।

কে এই ফেলিক্স বমগার্টনার?

ফেলিক্স বমগার্টনার ২০ এপ্রিল, ১৯৬৯ সালে অস্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন খুব ডানপিটে স্বভাবের। বড় হয়ে অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং প্যারাট্রুপার হিসেবে প্রশিক্ষণ লাভ করেন। সেনাবাহিনী ছাড়ার পরও তিনি স্কাইডাইভিংয়ের চর্চা চালিয়ে যান। ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বিখ্যাত পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের ওপর থেকে প্যারাসুট জাম্প করে প্রথমবারের মতো আলোচনায় আসেন। এটি ছিল তৎকালীন সবচেয়ে উঁচু ভবন থেকে লাফানোর বিশ্বরেকর্ড।

বিখ্যাত ইংলিশ চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দেয়ার অনেক রেকর্ডের কথা আপনারা হয়তো শুনেছেন। ফেলিক্স বমগার্টনারই প্রথম ব্যক্তি যিনি এটি পাড়ি দিয়েছেন স্কাইডাইভ দিয়ে! ২০০৩ সালে তিনি বিশেষভাবে নির্মিত কার্বন ফাইবারের ডানা বা উইংস্যুট ব্যবহার করে বাতাসে ভেসে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ করেই ফেলিক্স মনস্থির করেন যে, তিনি এমন উচ্চতা থেকে প্যারাসুট নিয়ে লাফ দেবেন যা এর আগে কেউ দেয়নি। তিনি জোসেফ কিটিংগারের ৩১.৩ কি.মি উপর থেকে লাফ দেয়ার কথা জানতেন। এজন্য রেকর্ড ভাঙতে তিনি পাঁচ বছর ধরে পরিকল্পনা করেন এবং প্রতিনিয়ত একটু একটু করে বেশি উচ্চতা থেকে লাফ দিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। তার স্বপ্ন পূরণে পৃষ্ঠপোষকতা করতে এগিয়ে আসে একটি খ্যাতনামা পানীয় তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান।

https://en.wikipedia.org/wiki/Felix_Baumgartner#/media/File:Felix_Baumgartner_2013.jpg
ফেলিক্স বমগার্টনার; Image Courtesy: Alchetron

মিশন প্রস্তুতি

ভূপৃষ্ঠের উপরের ১০-৬০ কি.মি. পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থান বায়ুমন্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চল। এজন্য এই মিশনের নামকরণ করা হয় ‘রেড বুল স্ট্র্যাটস’। কারণ তার এই মিশনের সব খরচ বহন করে অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ‘রেড বুল‘। আর এই দুঃসাহসী লাফ দেয়ার জন্য ফেলিক্সকে সার্বিক দিকনির্দেশনা দেন আগের রেকর্ডধারী ব্যক্তি জোসেফ কিটিংগার।

আকাশের এত উপরে বায়ুচাপ খুবই কম। সমুদ্র সমতলে বাতাসের যে স্বাভাবিক চাপ, সেখানে সেই চাপ ২ শতাংশেরও কম। ফলে অবধারিতভাবেই ফেলিক্সের বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহের প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া সেখানে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে প্রায় ৯০ ডিগ্রির কাছাকাছি। তাই তার জন্য বানানো হয় বিশেষ স্যুট, যা দেখতে কিছুটা মহাকাশচারীদের স্যুটের মতোই। আরও বানানো হয় বিশালাকৃতির হিলিয়াম বেলুন। হিলিয়াম গ্যাস বায়ুর চেয়ে হালকা বিধায় সহজেই উপরে উঠে যায়- এ ধর্মকে কাজে লাগিয়ে ব্যবহার করা হয় হিলিয়াম গ্যাস বেলুন। ফেলিক্সের বেলুনের নিচে বসার জায়গাসহ একটি কন্ট্রোল মডিউল ছিল, যা বেলুন কন্ট্রোল করা ছাড়াও অক্সিজেন সাপ্লাই, ভিডিও রেকর্ডিং ও লাইভ স্ট্রিমিং করতে ব্যবহৃত হয়েছে।

https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fwww.dailymail.co.uk%2Fsciencetech%2Farticle-5180099%2FScientists-solve-speed-surprise-stratospheric-stunt.html&psig=AOvVaw2ipx_HYb4EC206m3FnrC7y&ust=1586446447779000&source=images&cd=vfe&ved=0CAIQjRxqFwoTCMCn5YKT2egCFQAAAAAdAAAAABAg
মহাকাশচারীদের মতো বিশেষ স্যুট পরিহিত অবস্থায় ফেলিক্স; Image Courtesy: FORTE

চূড়ান্ত মিশন

সেই বছর মার্চ ও জুলাইয়ে দুটো প্রস্তুতিমূলক হাই অ্যালটিটিউড জাম্প দেন বমগার্টনার। প্রথমবার ২১,৮১৮ মিটার ও দ্বিতীয়বার ২৯,৪৬০ মিটার উপর থেকে লাফ দেন। প্যারাসুট জাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি যতক্ষণ প্যারাসুট না খুলে অভিকর্ষের কারণে নিচে পড়তে থাকবেন, ততক্ষণ সময়কে বলা হয় ফ্রি-ফল টাইম। এসময় পড়ন্ত বস্তুর ন্যায় স্কাইডাইভারের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯.৮ মিটার বা প্রায় ৩২ ফুট/সেকেন্ড করে বৃদ্ধি পাবে। যত উপরে উঠে লাফ দেয়া যাবে ততই গতি বাড়বে। এছাড়া উপরে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব কম বিধায় বাতাসের প্রতিরোধ বলের মানও কম। তাই ফ্রি-ফলের গতি খুবই দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায়। ফেলিক্সের দ্বিতীয় জাম্পের ফ্রি ফলের সময় সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৬৩ কিলোমিটার!

সাধারণত স্কাইডাইভারদের ফ্রি ফলের গতি ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটারের মতো হয়ে থাকে। সামরিক বাহিনীর প্যারাট্রুপারদের সাথে বাড়তি রসদ থাকায় তাদের গতি ঘণ্টায় ৩৮০-৪৩০ কি.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্যারাসুট খোলার পর গতি কমে যায় এবং এর সাহায্যে গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fwww.wallpaperflare.com%2Ffelix-baumgartner-before-jump-red-bull-stratos-space-speed-wallpaper-uvkop&psig=AOvVaw2ipx_HYb4EC206m3FnrC7y&ust=1586446447779000&source=images&cd=vfe&ved=0CAIQjRxqFwoTCMCn5YKT2egCFQAAAAAdAAAAABAm
জাম্প ক্যাপসুলের ভেতর ফেলিক্স; Image Courtesy: DVD Rock Depot

সেই বিখ্যাত স্যালুট 

অবশেষে এলো সেই দিন। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর বিশেষভাবে নির্মিত হিলিয়াম বেলুন ও ক্যাপসুলের সাহায্যে আকাশে উড়লেন। ১,২৮,০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে তার প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছিল।যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর রসওয়েল ইন্টারন্যাশনাল এয়ার সেন্টারের মিশন কন্ট্রোল রুমের সাথে শেষবারের মতো যোগাযোগ করলেন ফেলিক্স। নিজের হেলমেটের রেডিও কানেকশন, অক্সিজেন সাপ্লাই সিস্টেম পরীক্ষা করলেন। ভূমিতে থাকা ফেলিক্সের জাম্প সুপারভাইজার ও মেন্টর জোসেফ কিটিংগারের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো রেডিওতে, “ক্যামেরাগুলো চালু করো। আমাদের গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল তোমাকে রক্ষা করবেন।

https://www.redbull.com/int-en/projects/red-bull-stratos/the-mission
লাফ দেয়ার আগমুহূর্তে; Image Courtesy: Portal Satova

ধীরে ধীরে ক্যাপসুলের সিঁড়িতে এসে দাঁড়ালেন ফেলিক্স। মাইক্রোফোনে ভেসে এল তার কণ্ঠস্বর,

জানি পুরো বিশ্বই এখন আমাকে দেখছে। হায়! আমি যা দেখছি, সেটা যদি আপনারাও দেখতে পেতেন! আপনি যে কত ক্ষুদ্র, সেটা উপলব্ধি করার জন্য আপনাকে কখনো কখনো অনেক উঁচুতে উঠে আসা উচিত।

কথাটা বলেই ফেলিক্স বমগার্টনার সামরিক কায়দায় একটা স্যালুট ঠুকে দিলেন লাফ। যেন-তেন লাফ নয় এটি, ফেলিক্সের আগে এমন উচ্চতা থেকে কোনো মানব সন্তান লাফ দেয়নি। ভূপৃষ্ঠের ৩৯ কিলোমিটার উপর থেকে লাফ দিয়েছেন তিনি!

https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fspotlightenglish.com%2Flisten%2Ffelix-baumgartner-jumping-from-space&psig=AOvVaw2ipx_HYb4EC206m3FnrC7y&ust=1586446447779000&source=images&cd=vfe&ved=0CAIQjRxqFwoTCMCn5YKT2egCFQAAAAAdAAAAABAx
লাফ দেয়ার আগমুহূর্তে ফেলিক্স; Image Courtesy: Paul Dumbauld

অনন্য রেকর্ড 

ক্যাপসুল থেকে জাম্প দেয়ার ফেলিক্সের গতি বাড়তে বাড়তে ঘন্টায় ১,৩৫৭.৬৪ কি.মি বা ৮৪৩.৬ মাইল হয়ে যায়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি কোনোপ্রকার বাহন ছাড়াই শব্দের গতিকে অতিক্রম করেন। হাই স্পিড অবজেক্ট, যেমন: যুদ্ধবিমান, মিসাইলের গতিকে ম্যাক স্কেলে হিসাব করা হয়। কেননা কিলোমিটার/ঘণ্টা স্কেলে হিসাব করাটা কিছুটা অসুবিধাজনক। ম্যাক ১ বলতে শব্দের গতিকে অতিক্রম করাকে বোঝায়। একে সুপারসনিক গতিও বলা হয়। ফ্রি ফলের সময় ফেলিক্স বমগার্টনারের গতি ছিল ম্যাক ১.২৫, অর্থাৎ তিনি বাহন ছাড়াই যুদ্ধবিমানের মতো সুপারসনিক গতি অর্জন করেছিলেন।

https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fwww.extremetech.com%2Fextreme%2F137521-the-tech-behind-felix-baumgartners-stratospheric-skydive&psig=AOvVaw2ipx_HYb4EC206m3FnrC7y&ust=1586446447779000&source=images&cd=vfe&ved=0CAIQjRxqFwoTCMCn5YKT2egCFQAAAAAdAAAAABAa
জাম্প সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য; Image Courtesy: Wordless Tech

নিরাপদ ল্যান্ডিং 

৩৯ কি.মি উপরে উঠতে তার প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছিল। কিন্তু লাফ দেয়ার ১০ মিনিট পরে তিনি প্যারাসুটের মাধ্যমে নিরাপদে নিউ মেক্সিকোর মরূভূমির বালু স্পর্শ করেন।

https://www.google.com/url?sa=i&url=https%3A%2F%2Fwww.pri.org%2Fstories%2F2013-02-05%2Ffelix-baumgartner-reached-higher-speed-thought-during-skydive-edge-space&psig=AOvVaw2ipx_HYb4EC206m3FnrC7y&ust=1586446447779000&source=images&cd=vfe&ved=0CAIQjRxqFwoTCMCn5YKT2egCFQAAAAAdAAAAABA4
ল্যান্ড করার আগমুহূর্তে; Image Courtesy: Eurosport
https://www.redbull.com/int-en/projects/red-bull-stratos/the-mission
ল্যান্ড করার পর; Image Courtesy: National Air and Space Museum – Smithsonian Institution

আরেকটি রেকর্ডের কথা বলা হয়নি। ফেলিক্স বমগার্টনারের এই বিখ্যাত লাফ সরাসরি ইউটিউবে দেখেছে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। একইসঙ্গে সরাসরি (লাইভ স্ট্রিমিং) কোনো ঘটনা এত মানুষ এর আগে কখনোই ইউটিউবে দেখেনি। নেমে আসার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে ফেলিক্স জানান,

নিম্ন তাপমাত্রায় আমার হেলমেটের সামনের অংশে প্রায় বরফ জমে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল যে, আমি ডাইভ বাতিল করতে চেয়েছিলাম

ইতিহাস সাহসী মানুষদের দ্বারাই লেখা হয়ে থাকে। দুঃসাহসী স্কাইডাইভার ফেলিক্স বমগার্টনার ছিলেন তেমনই এক মানুষ।

Related Articles