Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আরব আমিরাত কি আঞ্চলিক সামরিক পরাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে?

আরব উপদ্বীপের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত সাতটি শেখ বা আমির শাসিত রাজ্য একত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাত নামে পরিচিত। প্রায় ৮৩,৬০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশটি প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেল মজুদের পরিমাণ বিবেচনায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দশটি দেশের মধ্যে একটি; যেটি স্থলভাগে ওমান এবং সৌদি আরবের সাথে সীমান্তবর্তী এবং দেশটির সমুদ্রসীমা পারস্য উপসাগরে কাতার এবং ইরানের সাথে সংলগ্ন। ১৯৬২ সালে তেল রপ্তানি শুরুর পূর্বে অঞ্চলটির অর্থনীতি মুক্তা আহরণ এবং মৎস্য শিকারের উপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত আঞ্চলিক বাণিজ্য ও পর্যটনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দেশটি বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।

১৮২০-৯২ সাল পর্যন্ত কয়েকটি স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে দীর্ঘ সময় ধরে বিট্রিশ সরকারের আশ্রিত রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকার পর শেখ বা আমির শাসিত রাজ্যগুলো ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভ করে। সেই সময় দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ, আজমান, উম আল কোয়াইন এবং ফুজাইরাহ- এই ছয়টি রাজ্য একত্রিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার অনুরূপভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত নামে একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাস আল খাইমাহ সপ্তম রাজ্য হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত এর অন্তর্ভুক্ত হয়।

স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে একটি উদীয়মান সামরিক পরাশক্তির মর্যদা অর্জনের লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করে। ১৯৮১ সালের ২৫ মে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী ছয়টি আরব রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৮১ সালের ২৫ মে আবুধাবিতে উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিগণ; image source : al-ain.com

১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া কসোভো যুদ্ধে উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা ন্যাটো ১৯৯৯ সালের ২৪ মার্চ থেকে সার্বিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে। সেই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত ফরাসি সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৪০০টি লেকলার্ক ট্যাংক ক্রয় করতে চুক্তিবদ্ধ হয়। এমনকি কসোভো যুদ্ধ চলাকালে ফরাসি সরকারের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ন্যাটোর সমর্থনে অঞ্চলটিতে সামরিক বাহিনী পাঠায়। ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র না হলেও সংযুক্ত আরব আমিরাত আরব বিশ্বের সর্বপ্রথম রাষ্ট্র যেটি ইউরোপের মাটিতে সামরিক বাহিনী প্রেরণ করে। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত আলবেনিয়া-কসোভো সীমান্তে বাস্তুচ্যুত কসোভোর আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য শরণার্থী শিবির পরিচালনা করে।

আফগানিস্তানে কর্মরত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষ সামরিক বাহিনীর সদস্য; image source : Frank Gardner/ BBC

তালিবান শাসনের পতনের পর আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশেষ সামরিক বাহিনীর অবস্থান ছিল। এমনকি আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে ব্রিটিশ সেনাদের সাথে অবস্থান করে আমিরাতি সামরিক বাহিনী কয়েকটি তীব্র লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মানবিক সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

তিউনিসিয়ার সিদি বাউজিদ শহরে মোহাম্মদ বুয়াজিজি নামে এক দরিদ্র ফল বিক্রেতাকে কর্তৃপক্ষ ফুটপাত থেকে উচ্ছেদ করলে তিনি এর প্রতিবাদে ২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। এই আত্মাহুতির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ২৩ বছরের দীর্ঘ একনায়কতান্ত্রিক শাসনের প্রতিবাদে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবিদিন বেন আলীর বিরুদ্ধে দেশটিতে তীব্র গণবিক্ষোভ শুরু হয়। এই আন্দোলনের ঢেউ বিভিন্ন আরব রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী শাসকদের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়ে, যার মাধ্যমে ‘আরব বসন্ত’-এর সূচনা হয়।

আরব বসন্ত শুরুর পর থেকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরবকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন আরব রাষ্ট্রের মিত্র শাসকদের ক্ষমতাচ্যুতি রুখে দিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত তৎপরতা শুরু করে। এসব তৎপরতার মাধ্যমে মিত্র শাসকদের ক্ষমতা রক্ষার পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত আঞ্চলিক উদীয়মান সামরিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রায় ৩৩ বছর ধরে এর ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করার পর তীব্র গণবিক্ষোভের মুখে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ইয়েমেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহ আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মানসুর হাদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। কিন্তু এরপরও দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি; ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ইরানের মদদপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা’আ দখল করে নিলে দেশটির সংকট চরমে পৌঁছায়। ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মানসুর হাদির সমর্থনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ জায়েদ আল নাহিয়ানের একটি ম্যুরালের পাশে একজন ইয়েমেনি যোদ্ধা; image source : AFP

মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্রতম এবং জনসংখ্যাবহুল রাষ্ট্র ইয়েমেন বর্তমানে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে; বিপুল সংখ্যক বেসামরিক লোকজন হতাহতের পাশাপাশি বর্তমানে দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী চরম খাদ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে। তবে ইয়েমেনে চলমান গৃহযুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। ১৯৯০ সালের ২২ মে উত্তর ইয়েমেন এবং দক্ষিণ ইয়েমেন একত্রিত হয়ে ইয়েমেন প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত আবারও ইয়েমেনকে দুটো অংশে বিভক্ত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন নিয়ে ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বন্দরনগরী এডেন শহরে আবারও শক্ত অবস্থান নিতে শুরু করেছে। এভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধকে প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।

তীব্র গণ-আন্দোলন এবং ন্যাটো বাহিনীর হামলার মুখে ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর লিবিয়ার সির্তে শহরে ৪২ বছরের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত হন। গাদ্দাফির পতনের পরও লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ বন্ধ হয়নি; দেশটির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া নিয়ে দুটো পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। বর্তমানে লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে রাজধানী ত্রিপোলি কেন্দ্রিক জাতিসংঘ-স্বীকৃত জাতীয় ঐকমত্যের সরকার এবং দেশটির পূর্বাঞ্চলে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি নিয়ন্ত্রিত তবরুক শহরের সরকার যেটির নেতৃত্বে রয়েছেন ফিল্ড মার্শাল খলিফা হাফতার। জাতীয় ঐকমত্যের সরকার রাজধানী ত্রিপোলি এবং আশপাশের এলাকাসহ লিবিয়ার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে এবং খলিফা হাফতারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বেনগাজি এবং কয়েকটি তেলসমৃদ্ধ এলাকাসহ দেশটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল। সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতিসংঘ-স্বীকৃত জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা খলিফা হাফতার বাহিনীকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রেখেছে এবং তাদেরকে বিভিন্ন সামরিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে।

২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদের সাথে বৈঠকে লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির নেতা ফিল্ড মার্শাল খলিফা হাফতার; image source : wam.ae

২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আরব বসন্তের সূতিকাগার তিউনিসিয়ার গণপরিষদ নির্বাচনে উদার ইসলামপন্থী দল আন-নাহাদা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। তবে নির্বাচনের এই ফলাফলকে সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশটিতে প্রভাব বিস্তারের অন্তরায় হিসেবে মনে করেছিল। ফলে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পৃষ্ঠপোষকতায় বেহি সিয়াদ এসবেসির নেতৃত্বে ২০১২ সালের ২০ এপ্রিল ধর্মনিরপেক্ষদের নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিদা তিউনেস প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বেহি সিয়াদ এসবেসি ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই পর্যন্ত তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেহি সিয়াদ এসবেসির সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম; image source : Tunisian presidency

২০১৩ সালের ৩ জুলাই সেনাবাহিনী কর্তৃক গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিশরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন ছিল। নিজেদের স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করলে ‘সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ’ তুলে ২০১৭ সালের ৫ জুন সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ প্রতিবেশী কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রায় ৩০ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের পর ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল একটি সামরিক অভ্যুত্থানে সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পতন ঘটে। গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ ব্যাহত করতে সুদানের নতুন সামরিক প্রশাসনের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থন জানিয়েছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ইরিত্রিয়ার বন্দরনগরী আসাব-এ প্রথম বৈদেশিক সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে; পরে অবশ্য সেখান থেকে দেশটি সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়েছে। তবে দেশটি ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারে বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ‘স্বাভাবিকীকরণ’-এর ঘোষণা দিয়েছে। গত ১১ মার্চ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে এক ফোনালাপে আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ ইসরায়েলের বিভিন্ন খাতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন।

সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার তুরস্ক এবং কাতারের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক জোরদার করায় সংযুক্ত আরব আমিরাত সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদ অধ্যুষিত অঞ্চল সোমালিল্যান্ড এবং প্যান্টল্যান্ডে তৎপরতা শুরু করেছে। গ্রিসের সাথে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রিসের ক্রেট দ্বীপে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ এবং যুদ্ধজাহাজ প্রেরণ করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে পূর্ব-ভূমধ্যসাগরে তুরস্ক-গ্রিসের সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিপুল পরিমাণ অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করছে এবং বিভিন্ন দেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরঞ্জাম ক্রয় করছে। সুইডেনের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Stockholm International Peace Research Institute (SIPRI), ২০২০ সালের মার্চ মাসে Trends in International Arms Transfer, 2019 শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫-১৯ সালের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তর সামরিক অস্ত্র আমদানিকারক রাষ্ট্র। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যুবকদের ১৮-৩০ বছর বয়সের মধ্যে অন্তত নয় মাসের সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে আঞ্চলিক রাজনীতিতে তুরস্কের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তার, ইরানের সামরিক শক্তি সঞ্চার এবং উপসাগরীয় অঞ্চলে কাতারের স্বতন্ত্র পররাষ্ট্র নীতি বাস্তবায়নের চেষ্টা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আঞ্চলিক সামরিক পরাশক্তি হওয়ার পথে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সংযুক্ত আরব আমিরাত আঞ্চলিক সামরিক পরাশক্তি হিসেবে নিজেকে কতটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে, সেটা সময়ই নির্ধারণ করবে।

Related Articles