- যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা মাটিতে নতুন একধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন।
- যেসব সংক্রামক রোগের চিকিৎসা করা দুরূহ এটি সেসকল রোগের ক্ষেত্রে কার্যকরী প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞানীদের দল।
বিশ্বব্যাপী সংক্রামক রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এগুলোর চিকিৎসায় যে সকল ঔষধ ব্যবহৃত হতো সেগুলো আর এসব ক্ষেত্রে ঠিকমতো কাজ করছে না। এই ঔষধ প্রতিরোধী রোগগুলো বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বিশাল হুমকীস্বরূপ। এগুলোকে বলা হয় ‘সুপার বাগস’। এগুলো প্রতি বছর প্রায় ৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ।
নিউ ইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ন্যাচার মাইক্রোবায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় দাবি করেন, তারা মাটিতে প্রাপ্ত একধরনের অজ্ঞাত জীবাণু থেকে অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পেয়েছেন। ম্যালাসিডিনস নামের এ অ্যান্টিবায়োটিক মেথিসিলিন রেজিস্ট্যান্ট স্টেফাইলোকক্কাস অরেয়াসসহ (এমআরএসএ) আরও কিছু সুপারবাগ ধ্বংস করতে সক্ষম। এমআরএসএ আক্রান্ত ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, এটি সংক্রমণের স্থানটি জীবাণুমুক্ত সক্ষম হয়েছে।
পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানীরা মাটি থেকে নমুনা নিয়ে ডিএনএ আলাদা করেন এবং কোনো অ্যান্টিবায়োটিক ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণুর জিন আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য সেগুলোর ক্লোন করে করে রাখেন। এভাবেই শত শত নমুনা থেকে তারা ম্যালাসিডিনস আবিষ্কার করেছেন।
বিজ্ঞানীরা এর আগেও মাটি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছে। কিন্তু এবারের মতো কোনো ব্যাকটেরিয়ার প্রজাতিকে ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা তাদের জন্য সম্ভব হয়নি। তবে ম্যালাসিডিনস নিয়ে আরও এখনও পরীক্ষা করা বাকি আছে। ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করার আগে এটি নিয়ে ভালোভাবে গবেষণা করে একে পুরোপুরিভাবে বুঝতে হবে।
রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শন ব্র্যাডি বলেন, এটি এত তাড়াতাড়ি বাজারে আসবে না। কোনো নতুন ঔষধ বাজারে ছাড়ার আগে বছরের পর বছর পরীক্ষা চালিয়ে অনুমোদন করতে হয়। তবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। তার মতে, সম্ভবনাময় জীব বৈচিত্র্যের একটি দুনিয়া এখনও আবিষ্কার করা বাকি আছে।
উল্লেখ্য, আলেক্সান্ডার ফ্লেমিং এর পেনিসিলিন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সূচনা হয়েছিল। এর ৯০ বছর পরে অ্যান্টিবায়োটিক সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক ঔষধের প্রতিরোধক সুপার বাগ আবির্ভূত হয়েছে, যার ফলে সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ঠিকমতো কাজ করছে না। ২০৫০ সালে এ ধরনের সুপারবাগের সংক্রমণে প্রায় ১ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়। তাই দুনিয়া জুড়ে বিজ্ঞানীরা নতুন অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফিচার ইমেজ: YouTube