Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

সিরিয়ার পূর্ব ঘুতায় সরকারী বাহিনীর হামলায় নিহত শতাধিক

  • সিরিয়ার অবরুদ্ধ পূর্ব ঘুতায় গত দুই দিনে সরকারী বাহিনীর হামলায় অন্তত শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
  • নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে দাবি করেছে অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
  • সিরিয়ার সেনাবাহিনী বড় ধরনের স্থল অভিযান চালানোর পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এ হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিরিয়াতে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত অবরুদ্ধ পূর্ব ঘুতায় সরকারী বাহিনী ও তার মিত্রদের বিমান হামলায় গত দুই দিনে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR)। নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক এবং অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। এছাড়াও আহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৩২৫ জন বলেও সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী পূর্ব ঘুতা এলাকাটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ ঘাঁটিগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রায় চার লক্ষ মানুষের আবাসস্থল এই এলাকাটি ২০১৩ সাল থেকেই প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। ইরান, রাশিয়া এবং তুরস্কের মধ্যকার সমঝোতা অনুযায়ী পূর্ব ঘুতা এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণাধীন আরেকটি উল্লেখযোগ্য এলাকা ইদলিবকে সংঘর্ষমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে দুটি এলাকাতেই সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং রাশিয়ার বিমান হামলা অব্যাহত আছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ আগ্রাসন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত চারদিনেই পূর্ব ঘুতায় অন্তত ২০০ জন নিহত হয়েছেন।

গত রবিবার থেকে পূর্ব ঘুতায় নতুন করে বিমান হামলা এবং মিসাইল ও মর্টার শেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। প্রথম দিনেই এতে ২০ শিশু সহ অন্তত ৭৭ জন নিহত হয় বলে জানায় পর্যবেক্ষক সংস্থা। সংস্থাটির বক্তব্য অনুযায়ী, সিরিয়ার সেনাবাহিনী পূর্ব ঘুতায় বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবেই নতুন করে ভারী বোমা বর্ষণ শুরু হয়েছে।

বিমান হামলায় শুধু মানুষের মৃত্যুই ঘটছে না, এতে মানুষের জীবন ধারনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় স্থাপনা যেমন, বেকারি, খাদ্যের গুদাম, হাসপাতালও ধ্বংস হচ্ছে। ত্রাণসংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, সোমবারের বিমান হামলাও চারটি হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে একটি মাতৃসদনও রয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাটগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যার ফলে অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল ব্যহত হচ্ছে এবং নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় এক ডাক্তার জার্মান ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডিপিএকে বলেন, আবাসিক এলাকার ভেতরে নড়াচড়া করছে এরকম সবকিছু লক্ষ্য করেই সরকারী যুদ্ধ বিমানগুলো আক্রমণ করছে। তিনি আরো জানান, হাসপাতালগুলো আহতদের ভীড়ে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। তাদের চেতনানাশক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধের সংগ্রহ ফুরিয়ে আসছে।

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ আক্রমণের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সিরিয়ার সরকার দাবি করে থাকে, তারা শুধুমাত্র সন্ত্রাসীদেরকে লক্ষ্য করেই বিমান হামলা পরিচালনা করে। তবে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল সানা জানিয়েছে, পূর্ব ঘুতা থেকে সম্প্রতি দামেস্ক লক্ষ্য করে মর্টার হামলা চালানো হয়েছিল, যাতে এক শিশু নিহত হয়েছিল এবং আরো আটজন আহত হয়েছিল। সানা দাবি করে, ঐ হামলার জবাবেই দেশের সেনাবাহিনী এবং তাদের মিত্ররা পূর্ব ঘুতার সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়।

জাতিসংঘ নতুন করে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এলাকাটির পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করছে। রাশিয়ার গণমাধ্যম তাকে উদ্ধৃত করে জানায়, জাতিসংঘে পূর্ব ঘুতা এবং ইদলিবের মানবিক সমস্যাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ফিচার ইমেজ-  The Guardian

Related Articles