অন সান সু চির মানবাধিকার বিষয়ক পুরস্কার বাতিল ঘোষণা

  • ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম  গত বুধবার অন সান সু চির এলি উইজেল মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড বাতিল করেছে।
  • ২০১২ সালে সু চি কে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
  • মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সঙ্কটের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার এ পুরস্কার বাতিল ঘোষণা করা হয়।

মিয়ানমার তাদের নেত্রীর এই সম্মানজনক মানবাধিকার সংক্রান্ত পুরস্কার বাতিলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিকে ভুল পথে পরিচালিত ও অন্যের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যবহৃত হওয়ার দাবি জানিয়েছে। ওয়াশিংটনে মিয়ানমারের দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা অত্যন্ত দুঃখিত যে যারা রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে ন্যায্য বিবেচনার ব্যাপারটি আসল পরিস্থিতির আলোকে বুঝতে পারেনি তারা হলোকাস্ট মিউজিয়ামকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে এবং স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যবহার করেছে।” 

শান্তিতে নোবেলজয়ী অন সান সু চি একসময় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্প্রদায়ের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগত নিধনের দায়ে তার কয়েকটি সম্মানজনক পুরস্কার বাতিল করা হয়।

গত আগস্ট মাস হতে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষেরও বেশি রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে যায়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর তাদের আক্রমণের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, তারা সেই রাজ্যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলো।

সু চির কাছে এক চিঠিতে মিউজিয়ামের পরিচালক সারা ব্লুমফিল্ড জানান, তারা এই সিদ্ধান্ত হালকাভাবে নেননি। তারা সে দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর উপর আরোপিত গণহারে মানুষ উৎখাত ও হত্যা করার অভিযোগের ভিত্তিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

Source: The Week UK

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিতে মিয়ানমারে সু চির রাজনৈতিক প্রভাব সীমিত হলেও তার বিশেষত তার বৈশ্বিক অবস্থান থেকে রোহিঙ্গা নিধনের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান গ্রহণ না করায় ব্যাপক সমালোচনার শিকার হন তিনি।

মিউজিয়ামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্লুমফিল্ডের চিঠিতে লিখা হয়েছে, “২০১৬ ও ২০১৭ সালে যেহেতু রোহিঙ্গাদের উপর আক্রমণের ব্যাপারটি প্রকাশ পেয়েছে, আমরা আশা করেছিলাম আপনি সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর প্রচারণার নিন্দা করার ও তা বন্ধ করার এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাথে সংহতি প্রকাশ করার লক্ষ্যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যেহেতু আমরা সহ সারা বিশ্বের অনেকেই মানুষের মর্যাদা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের জন্য আপনার প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন।”   

তিনি আরও লিখেছেন ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে সু চির রাজনৈতিক দল জাতিসংঘের অনুসন্ধানকারীদের সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং সত্য প্রকাশে সাংবাদিকদের বাধা প্রদান করেছে।

ফিচার ইমেজ: The Week UK

Related Articles