Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মুক্তি পেয়েছেন সৌদি প্রিন্স ওয়ালিদ বিন তালাল

সৌদি ধনকুবের প্রিন্স আল ওয়ালিদ বিন তালাল মুক্তি পেয়েছেন। দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় বন্দী থাকার পর গতকাল শনিবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ওয়ালিদ বিন তালালের আত্মীয়দের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ সংবাদ জানিয়েছে।

গত নভেম্বরে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে দেশটির কয়েক ডজন শীর্ষ ব্যবসায়ী এবং সরকারি কর্মকর্তাকে বিশেষ দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের নামে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন দেশটির রাজপরিবারের সদস্য এবং শীর্ষ কোটিপতি। গ্রেপ্তার করার পর থেকে তাদেরকে রিয়াদের পাঁচ তারকা বিলাসবহুল হোটেল রিটজ কার্লটনে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই অভিযান আরো বিস্তৃতি লাভ করে এবং দেশব্যাপী কয়েকশ’ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মুক্তির মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই প্রিন্স ওয়ালিদ বিন তালাল রিটজ কার্লটন হোটেলের বন্দী অবস্থা থেকে রয়টার্সের সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি আশা করেন শীঘ্রই সরকারের সাথে তার সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে এবং তাকে সকল অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তি প্রদান করা হবে। এটি ছিল বন্দী হওয়ার পর থেকে কোনো সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া তার প্রথম সাক্ষাৎকার। এ সময় তার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে বলে দৃশ্যমান হয়।

সাক্ষাৎকারে ওয়ালিদ বিন তালাল বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। সরকারের সাথে আমার আলোচনা চলছে। আমি বিশ্বাস করি কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা সবকিছু সমাধান করে ফেলতে পারব।” তার বিরুদ্ধে অভিযোগকে তিনি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং জানান যে, হোটেলে তিনি নিজের বাড়ির মতোই আছেন। তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কর্মসূচীকে সমর্থন করেন বলেও সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন।

গ্রেপ্তারের পর সৌদি সরকারী কর্মকর্তারা বিন তালালের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, দুর্নীতি, উৎকোচ গ্রহণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করার মতো বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাক্ষাৎকারে বিন তালাল দাবি করেন, তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতির সাথে জড়িত না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার সম্পূর্ণ সম্পত্তির মালিকানা বজায় রেখেই তিনি মুক্তি পাবেন। উল্লেখ্য, ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, বিন তালালের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১,৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে তার বিনিয়োগ আছে টুইটার, সিটি ব্যাংক সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানেও।

ওয়ালিদ বিন তালালকে ঠিক কী শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে এর আগে সপ্তাহের শুরুতে সৌদি আরবের অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, অন্তত ৯০ জন বন্দীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর বাকিদের সাথে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ এবং সম্পত্তি জমা দেওয়ার বিনিময়ে সমঝোতা করা হয়েছে। তবে তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত ৯৫ জনকে তারা আটক রেখেছেন, যাদের মধ্যে অনেককে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।

সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ অভিযানকে দুর্নীতি বিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও অনেকেরই ধারণা ছিল, এটি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করার প্রচেষ্টা। তবে পরবর্তীতে প্রতীয়মান হয় যে, মোহাম্মদ বিন সালমানের বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচী এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভিশন ২০৩০-কে সফল করার জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, কোটিপতি বন্দীদের সম্পত্তি জব্দ করে সেখান থেকে সেই অর্থের যোগান দেওয়াও এর একটি বড় কারণ হতে পারে। সৌদি কর্তৃপক্ষও দাবি করেছিল, তারা দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত বন্দীদের কাছ থেকে তাদের মুক্তির বিনিময়ে ১০,০০০ কোটি মার্কিন ডলার আদায় করতে চান।

ফিচার ইমেজ- Reuters

Related Articles