Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

আমেরিকার সিনেট নির্বাচন ২০১৮: ক্ষমতার হাতবদল হতে পারে যে ৮টি আসনে

আমেরিকার সিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি বছরের নভেম্বরের ৬ তারিখে, আর এই নির্বাচনটি হবে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং নাটকীয় ক্ষমতার পালাবদলের দুর্দান্ত মুহূর্ত। যদিও নির্বাচনের ফলাফল আমেরিকার পার্লামেন্টে তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না, তবুও ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টির জন্য নির্বাচনের ফলাফল কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বলা বাহুল্য। সিনেট নির্বাচনের জয়ী প্রার্থী জানুয়ারি ৩, ২০১৯ থেকে জানুয়ারি ৩, ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য উক্ত আসনের দায়িত্ব পালন করে থাকে। বর্তমান সিনেটে ১০০টির মধ্যে ৫১টি আসন নিয়ে এগিয়ে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি। ডেমোক্রেট পার্টির জন্য নির্বাচনটি খুবই শ্বাসরুদ্ধকর হতে যাচ্ছে, কেননা যে ৩৩টি সিনেট আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে তাদের অধীনে বর্তমানে রয়েছে ২৩টি আসন। বাকিগুলির মধ্যে মাত্র ৮টি রিপাবলিকানদের এবং ২টিতে রয়েছে স্বতন্ত্রদের অধীনে। স্বতন্ত্র আসনগুলো সহ মোট ২৫টি আসন প্রতিহত করে নিজেদের দখলে রাখা হবে ডেমোক্রেট পার্টির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক যে ৮টি সিনেট আসন ক্ষমতাসীন পার্টির হাত ছাড়া হওয়ার ও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

নির্বাচন অঞ্চলের ৩৩টি সিনেট আসন; Source: cnn.com

১) ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর জো ম্যানচিন

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে সিনেটর জো ম্যানচিনের সম্পর্ক তেমন একটা ভালো নয়, ম্যানচিনের দিকে অভিযোগ তুলে ট্রাম্প বলেন, “সে কথাই বলে। কিন্তু কিছু করে না। সে কাজ করে না।“ ট্রাম্প মনে করেন তার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নীতির প্রতি তেমন ইতিবাচক মনোভাব নেই ম্যানচিনের। ম্যানচিনের প্রতি ট্রাম্পের এই রুষ্ট মনোভাব তাকে বিপাকে ফেলতে পারে, কারণ যে অঞ্চল থেকে সিনেট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সেখানে ট্রাম্প প্রায় ৬৯% ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন ২০১৬ সালে।

ম্যানচিনের এই অবস্থার সুযোগ নিতে দ্বিতীয়বার ভাববেন না রিপাবলিকান অ্যালেক্স মুনি ও জন রিজ।

ট্রাম্প ও জো ম্যানচিন; Source: salon.com

২) নেভাডা

বর্তমান: রিপাবলিকান সিনেটর ডিন হেলার

নিজের আসন ধরে রাখা সহজ হবে না ডিন হেলারের জন্য, ২০১২ সালে জয়ী হলেও তিনি পেয়েছিলেন ৫০% এরও কম ভোট। ট্রাম্পকে পর্যাপ্ত সমর্থন যোগাতে ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি, এই প্রচারণা চালিয়ে তাকে বেশ চাপের মুখে রেখেছে আরেক রিপাবলিকান মনোনয়ন প্রার্থী ড্যানি টারকানিয়ান। যদিও ট্রাম্পের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিতে ইতিবাচক অবস্থান হেলারকে অবশ্য যথেষ্ট সুবিধাজনক অবস্থানে রেখেছে।

ড্যানি নেভাডায় পাঁচবার পরাজিত হলেও প্রাথমিক নির্বাচনে পাঁচবারের মধ্যে জিতেছে চারবারই। ডেমোক্রেট পার্টির হিলারি ক্লিনটন ২০১৬ সালে এই রাজ্য থেকে জয় লাভ করেন, ডেমোক্রেট পার্টির অনুকূলে থাকা আসনটিতে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত জ্যাকি রোসেনও। ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে এই ডেমোক্রেট প্রার্থীর কাছেই পরাজিত হন ড্যানি টারকানিয়ান।

ট্রাম্পের সঙ্গে হেলার; Source: businessinsider.com

৩) অ্যারিজোনা

ফাকা আসন: রিপাবলিকান সিনেটর জেফ ফ্লেক অবসর নিতে যাচ্ছে

ডেমোক্রেট প্রার্থীর বিপক্ষে লড়াই করার পূর্বে রিপাবলিকান পার্টির নেতা মিচ ম্যাককনেলকে নিজের ঘরে যুদ্ধে নামতে হবে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননের বিপক্ষে। অন্যদিকে সাবেক ফাইটার পাইলট রিপাবলিকান মার্থা ম্যাকসেলিও যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে যাচ্ছে, তা আর কোনো গোপন সংবাদ নয়। ওহাইও এবং আইওয়াতে যেমন রিপাবলিকানদের প্রতি সমর্থন ঝুঁকছে, তেমনি অ্যারিজোনা ও জর্জিয়াতে সমর্থন বাড়ছে ডেমোক্রেটদের প্রতি। ডেমোক্রেট প্রার্থীর বাজির ঘোড়া হতে যাচ্ছেন ক্রিস্টেন সিনেমা, যিনি শহরের সাদা ভোটারদের ট্রাম্প-বিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে নিজের সুযোগ কাজে লাগাতে চান।

২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির জন ম্যাককেইন পরাজিত হয়েছিল বারাক ওবামার বিপক্ষে, সব হিসাব নিকাশ বদলে যেতে পারে ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত ম্যাককেইনের শারীরিক অবস্থার ভবিষ্যতের সাথে।

রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল ; Source: cnbc.com

৪) মিসৌরি

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্লেয়ার ম্যাককাসকিল

কঠিন লড়াইয়ের পর ২০১৬ সালে যেখান থেকে ট্রাম্প জয়ী হয়েছে, সেই অঞ্চলের পাঁচজন সিনেটরের একজন ক্লেয়ার ম্যাককাসকিল। অ্যারিজোনাতে দুইজন মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এই আসনে রিপাবলিকান পার্টির ব্যানন ও ম্যাককনেল মিলিত হয়েছে এক বিন্দুতে। ব্যানন ও ম্যাককনেল, উভয়েই সমর্থন দিচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী অ্যাটর্নি জেনারেল জশ হওলিকে। একটি সংবাদ সম্মেলনে জশের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে ম্যাককনেল, তিনি মনে করেন জশ এমন একজন প্রার্থী যে কিনা এই নির্বাচন জিততে পারবে। এই আসনের নির্বাচনটি হবে ব্যয়বহুল ও শ্বাসরুদ্ধকর। ডেমোক্রেট পার্টিকে হারাতে হবে একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রার্থীকে, যার রয়েছে ব্যাপক সমর্থন।

রিপাবলিকান প্রার্থী জশ হওলি; Source: rollcall.com

৫) ইন্ডিয়ানা

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর জো ডোনেলি

রিপাবলিকান পার্টি এই সিনেট আসনে নিজেদের জয় দেখতে পারে দুইটি কারণে; এক. সিনেটর জো ডোনেলি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ডেমোক্রেটিক সিনেটরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি তার পারিবারিক ব্যবসা মেক্সিকোতে সরিয়ে নিয়ে আমেরিকানদের চাকরির সুযোগ নষ্ট করছে। দুই. প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইন্ডিয়ানাতে ট্রাম্প খুব সহজ জয় পেয়েছিল।

কিন্তু মনোনয়ন প্রার্থী লুক মেসের ও টড রকিটাকে নিয়েও তেমন একটা স্বস্তিতে নেই রিপাবলিকান পার্টি, তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট আবাসস্থল সংক্রান্ত জটিলতার সুতীক্ষ্ণ প্রশ্নবোধক তীর তাক করা রয়েছে মেসেরের দিকে এবং টড রকিটা বাজে কর্ম-পরিবেশ সৃষ্টিকারী, এমন অভিযোগ করেছেন তার হয়ে কাজ করা কর্মচারীরা।

সিনেটর জো ডোনেলি; Source: businessinsider.com

৬) নর্থ ডাকোটা

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর হেইডি হেইটক্যাম্প

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প নর্থ ডাকোটা থেকে অবাক করার মতো ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে জয়ী হওয়ায় এই আসনে বেশ স্বস্তিতে রয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। তাছাড়া রিপাবলিকান অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে প্রার্থী নির্বাচনে ট্রাম্পের দল হয়ত সহজেই মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে কেভিন ক্র্যামারকে, যার সাথে মঙ্গলবার ট্রাম্প সাক্ষাত করেছেন। তবে হেইটক্যাম্প একেবারে ছেড়ে কথা বলবেন না, বর্তমান সিনেট ও শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে তার বিপক্ষে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হবে রিপাবলিকানদের।

৭) ওহাইও

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর শেরড ব্রাউন

ব্রাউনের সাথে ট্রাম্পের রাজনৈতিক উত্থানের মিল রয়েছে একদিক থেকে, তা হলো দুইজনই ব্যবসা কেন্দ্রিক রাজনীতিবিদ। এই আসনে ব্রাউন সামগ্রিক বিবেচনায় এগিয়ে থাকবে, কারণ তার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান জশ ম্যান্ডেল। ২০১২ সালে ম্যান্ডেলকে হারিয়েই সিনেট আসনে বসেন ব্রাউন। পরাজিত পুরনো মুখ নির্বাচনের ফলাফলে কতটা ভূমিকা রাখবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়।

শেরড ব্রাউন; Source: wbur.org

৮) ফ্লোরিডা

বর্তমান: ডেমোক্রেটিক সিনেটর বিল নেলসন

টালাহাসির গভর্নর রিক স্কটকে মনে করা হচ্ছে ডেমোক্রেট নেলসনের বিপক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী, যদিও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে স্কট কতটা মনোযোগী তা প্রশ্ন-সাপেক্ষ। ব্যয়বহুল এই অঞ্চলে নির্বাচনের খরচ যোগানোর জন্য স্কটের মতো ধনী প্রার্থীকে রিপাবলিকান পার্টি মনোনয়নের দৌড়ে এগিয়ে রাখবে খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মঙ্গলবার, সিনেট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে সাংবাদিকরা স্কটকে প্রশ্ন করলে তিনি উল্লেখ করেন টালাহাসিতে তার আরো ৩৯০ দিন বাকি রয়েছে।

ফিচার ইমেজ- The Huffington Post

 

 

Related Articles