Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

অটোমার হিজফেল্ড: রুপকথার মতোই বর্ণময় ছিলো যার জীবন

আজকের কাহিনী এক আঁতেলের। এই আঁতেল সুইজারল্যান্ডের এক ভার্সিটির ম্যাথ  গ্রাজুয়েট। থিসিস টপিক ফার্স্ট ফ্যুরিয়ার ট্রান্সফর্মেশন। ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এহেন ছাত্র বা গ্রাজুয়েট নেই যে ডিজিটাল সিগনাল প্রসেসিং-এর যন্ত্রণা সয়নি। ফুটবলও খেলতেন তিনি, ক্লাসে সামলাতেন টিচার আর মাঠে ডিফেন্ডার, জন্ম পশ্চিম জার্মানিতে। তাদের অবস্থা তখন অতটা ভালো না, এত খেলোয়াড় নেই। কলেজ পড়ুয়া এই ছেলে গিয়ে অলিম্পিক খেলে ফেলল। সেমিতে পূর্ব জার্মানির সাথে দেখা। বাচ্চা বয়সী এই আঁতেল টুর্নামেন্টে এর আগে চারটা গোল করে ফেলেছে। ঐ দুই জার্মান সংঘাতেও প্রথম গোলটা তারই। কিন্তু হেরেই গেল তার দল।

এরপর কিছুদিন আর পেশাদার ফুটবল খেলেননি, হলেন ম্যাথ গ্রাজুয়েট। এরপর ছাব্বিশ বছর বয়সে জার্মান দ্বিতীয় বিভাগে স্টুটগার্টে যোগ দিলেন, তিনি অটমার হিজফেল্ড। ৩৩ গোল করে সেইবার তাঁর টিমকে বুন্দেসলীগায় তুললেন আর সেবারই টিমকে লীগে চতুর্থ স্থানে নিয়ে যান। এরপর চলে যান এফসি বাসেল-এ। পাঁচ বছরে তিনটি লীগ আর দুটো কাপ জেতান বাসেলকে মূল স্ট্রাইকার হিসেবে।  ফুরিয়ার ট্রান্সফরমেশনের ছাত্রটি ‘ফাস্ট’ ফরোয়ার্ডে পরিণত হলেন, সুইজারল্যান্ডেই অবসর নিলেন খেলোয়াড় হিসেবে।

একই ফ্রেমে খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে হিজফেল্ড; Source: 4231.VN

সুইজারল্যান্ডে শুরু তাঁর কোচিং জীবনের

সুইস দ্বিতীয় বিভাগের লীগের জুগ নামের একটা ক্লাবকে একবার এক হালি গোল দিয়েছিলেন তিনি। তারাই তাকে প্রথম চাকরি দেয় কোচ হিসেবে। কিন্তু ব্যর্থ হন, জুগ ক্লাব হুজুগে মেতে বরখাস্ত করে দেয় হিজফেল্ডকে। এরপর আরাও নামে আরেক ক্লাব তাকে নিয়োগ দেয় নেহায়েত দয়া পরবশ হয়ে, হয়তো সুইস লীগ মাতানো সাবেক এই খেলোয়াড়কে মর্যাদা দিয়ে!

তারা যা ভাবেনি তা-ই হলো। তাদের ইতিহাসের সেই অবধি একমাত্র কাপটি জিতিয়ে দিলেন, সুইস কাপ, বাসেল, গ্রাসহুপার এমন বড় বড় ক্লাবদের ঠেকিয়ে। বাসেল তাকে চায়নি, ধারণা করা হয় ততকালীন বোর্ড ভাবতো স্ট্রাইকাররা ভালো কোচ হয় না! ঠেঙানো খাওয়া গ্রাসহুপার দ্রুত পরের মৌসুমেই তাকে নিয়োগ দেয় কোচ হিসেবে। বলে রাখা ভালো, গ্রাসহুপার সুইস একটি ক্লাব, পোকা না! সুইজারল্যান্ড একটি সুন্দর দেশ, তাই ক্লাবের কিউট কিউট নাম রাখে! যা-ই হোক, কপাল ততক্ষণে খুলে গেছে। চিরপ্রতিদ্বন্দী বাসেলকে হারিয়ে টানা দুটো লীগ বগলদাবা করে নিল তার দল, সাথে তিনটই কাপ। তিন বছরে ছয়টি ট্রফি, এবার বড় জায়গা থেকে ছোট দলের জন্য ডাক আসলো, সদ্য দেয়াল অপসারণের পর জার্মানি থেকে।

বরুশিয়া ডর্টমুন্ড পর্ব

নিজের সেকেন্ড হোম সুইজারল্যান্ড থেকে জার্মানিতে এলেন হিজফেল্ড, ঠিকানা বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। যাদের থলিতে ছাব্বিশ বছর কোনো লীগ নেই, চার-পাঁচ বছর পরপর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে উঠতো, তাও গ্রূপ পর্বেই যবনিকা ঘটত। টানা সুইস চ্যাম্পিয়ন কোচ গেলেন জার্মান লীগের দশ নম্বর ডর্টমুন্ডে। সদ্য স্নায়ুযুদ্ধ পরবর্তী জার্মানি, ডর্টমুন্ডের অর্থনৈতিক অবস্থাও ততটা ভালো ছিলো না তখন। একজন স্টার কিনবে সেই অবস্থাও নেই। একাডেমি থেকে কিছু প্লেয়ার আনা হলো। এতটা স্কিল, ফ্লেয়ার ছিলো না তাদের মধ্যে, এভারেজ প্লেয়ার। তাই কোচ ডিফেন্সিভ এপ্রোচই গ্রহণ করলেন, করতেই হতো। অসাধারণ প্লেয়ার থাকলে সুন্দর ফুটবল, বিশ্বসুন্দর ফুটবল- সবই খেলানো যায়। কিন্তু কম সামর্থ্য নিয়ে কতজন সাফল্য পায়? সদ্য দশম টিমকে নিয়ে সেইবার টাইটেল এর জন্য লড়াই করলেন হিজফেল্ড। খুব প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ব লড়াই, তারই প্রথম ক্লাব স্টুটগার্টের সাথে।

বরুশিয়ার কোচ হিসেবে হিজফেল্ড; Source: bvb.de

হিজফেল্ডের মতো ‘লাস্ট ডে ট্রাজেডি’ কেউ পায় নি। পুরো আর্টিকেলে এমন আরো কাহিনী আছে। ২৬ বছর শিরোপাহীন ডর্টমুন্ড শেষ ম্যাচে এমন অবস্থায় ছিল যে স্টুটগার্ট ড্র করলেই লীগ জিতবে তারা। ডর্টমুন্ড ঠিকই জিতে যায়, কিন্তু ঠিক শেষ মুহুর্তের গোলে ওদিকে জিতে যায় স্টুটগার্ট। So near, yet so far! তারপরের বার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বরুশিয়া। গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে তখন দল উয়েফা কাপে (গ্রুপ পর্বে ৩য় হলে উয়েফা কাঁপে খেলতে হত)। একদিক থেকে ভালোই ছিল, তখনো টাইটানদের সাথে লড়ার শক্তি ছিল না দলের। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলো ডর্টমুন্ড। কিন্তু সেখানে পেলো জুভেন্তাসকে। বরুশিয়া খুব বাজেভাবে হারলো ফাইনালে। আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ সিজনটাই ছিল পরের সাফল্যের ভিত্তি।

সেবার উয়েফা কাপে মনোযোগ বেশী দেয়ার জন্য লীগ আগেই ফসকে যায়, যে কারণে স্থানীয় রিকেন, এলেক্সের মতো কিছু ইয়াংস্টারদের তুলে আনা হয় নিয়মিত খেলিয়ে। তখনই বোঝা যায় ডর্টমুন্ডের মাঠের আসল চরিত্র, যেন একটা দুর্গ হয়ে ওঠে। শক্তিশালী সেল্টিককে হোম-অ্যাওয়েতে হারিয়ে যাত্রা শুরু। মাঝে জারাগোজা আর কোয়ার্টারে রোমা। এ কয় ম্যাচে হোমে একটিও গোল খায়নি হিজফেল্ডের দল। রোমাকে হোম-অ্যাওয়ে দু’জায়গায়ই পরাস্ত করে সেমিতে উঠলো ডর্টমুন্ড। সেখানেও জয়যাত্রা চললো।

হোমে আবারো ক্লিন শিট (মানে কোনো গোল খায়নি)। ফাইনালে ওয়েস্টফেলাডেনে ডর্টমুন্ডের হয়ে রুমেনিগে দুই মিনিটের মাথায় গোল দিয়ে দেন, কিন্তু জুভেন্টাস তখনো অনেক ভালো দল। এক ব্যাজিও দুই লেগে চারটি গোল করে হারিয়ে দেন ডর্টমুন্ডকে। প্রাইজমানি মিলিয়ে পায় পঁচিশ মিলিয়ন ইউরো। তখন ফুটবলে শের শাহ্‌র আমল চলে। পাঁচ মিলিয়নে একজন বিশ্বমানের স্ট্রাইকার পাওয়া যেত! ধার দেনা চুকিয়ে ঐ জুভেন্তাস থেকেই তিনজনকে নিয়ে আসেন হিজফেল্ড; সোসা, রিইডল আর ইংল্যান্ড থেকে ল্যাম্বার্টকে। ততক্ষণে একটি ভালো স্কোয়াড দাঁড়িয়ে গেছে। পরের সিজনে কাইজার বেকেনবাওয়ারের বায়ার্নের সাথে লড়াই হলো লীগে।  লাভ হয়নি,  চার পয়েন্টে ব্যবধানে লীগ হারে ডর্টমুন্ড। কিন্তু দলের উন্নতি ছিল দেখার মতো। চ্যাপুইসাট নামে এক অখ্যাত সুইসকে CAM থেকে স্ট্রাইকার বানিয়ে দেন, আর লীগ সেরা স্কোরারও হন তিনি। তিনজন সেন্টার ব্যাক, তিনজন সিডিএম নিয়ে হিজফেল্ড একটি ডিফেন্সিভ জায়ান্ট টিম বানান বরুশিয়াকে। সব টিম তো আর রিয়াল-বার্সা না যে তাৎক্ষণিক সাফল্য চায়। বারবার সাফল্যের কাছে এসেও ধরতে না পারার পরেও ডর্টমুন্ড বিশ্বাস রেখেছিলো হিজফেল্ডের উপর। এর পরের তিন বছর কেবল প্রাপ্তির ।

সেবার সিজনের শুরুতেই ঘোষণা দিলেন হিজফেল্ড, লীগ খরা কাটাবেনই। কিন্তু এতটা সহজ ছিলনা। লীগে প্রথম দিকে গোল আসছিলো না, ড্র হচ্ছিল প্রচুর। কিন্তু ডিফেন্সটা ঠিকই কম্প্যাক্ট ছিল। টাফ অ্যাওয়েতে পাঁচ ডিফেন্ডার খেলাতেন! লীগে প্রথম চার গোলের জয় পায় এগার রাউন্ডে! এরপর হোমে এক ম্যাচে চারটা গোলও খেল, এরপর আবার তিনটা ড্র। সব কিছু কেটে গেল লীগে বায়ার্নকে হারানোর পর। এরপর স্টুটগার্টকে ছয়টা গোল দিয়ে পথে ফিরলো। লীগের শেষ রাউন্ডের আগের রাউন্ডে এক পয়েন্ট ফারাক, ঐ ম্যাচে স্টুটগার্টের স্বপ্ন ভেঙ্গে পাঁচটা গোল দিয়ে এলো তাদের মাটিতে। হোমে যে শেষ ম্যাচে জিততেই হতো লীগ জিততে, সেই ম্যাচে চল্লিশ মিনিটে পাঁচটা দিয়ে বাকি পঞ্চাশ মিনিট ফ্যানদের চুড়ান্ত উৎসবের আনন্দটা দেন জয়ের। দুই যুগ পরে ডর্টমুন্ডকে এনে দেন লীগ। ডাগআউট বা প্রেসে তার দৃঢ় চেহারা বা টিমে তার একাধিপত্যের জন্য নাম জুটে যায় ‘Der General’ বা ‘দ্যা জেনারেল’।

প্রেসে দ্য জেনারেল; Source: Schwatzgelb

টিমে তখন ক্যাপ্টেন এখনকার স্পোর্টিং ডিরেক্টর ম্যাথিয়াস সামার, আরেক পিউর জার্মান মেন্টালিটির লিডার। বায়ার্নের আধিপত্য কমানোর নেশায় তখন সবাই বুঁদ। আবারো স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন পরেরবারও লীগই চাই। টিম তখন ব্যালেন্স পেয়ে গেছে। পুরো সিজন নিজ হোমে অপরাজিত, হার মাত্র দুটো। হোমে 4-4-2, আর এওয়েতে 5-3-2, হারার কোনো সুযোগই রাখতো না। অবলীলায় লীগ ট্রফি জিতে নিলো হিজফেল্ডের টিম সেবারও। হিজফেল্ডের সম্পর্কে বলা হতো, “All u can have if GOD willing, is one point from him at home!”, মানে খুব বেশী হলে একটা ড্র করতে পারবেন! তো লীগে তখন ডর্টমুন্ডের পরিষ্কার আধিপত্য। এরই মধ্যে হিজফেল্ড পরের লক্ষ্য স্থির করলেন, অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। তাকে জেনারেল বলার একটা কারণ ছিল। যা ভাবতেন, প্রেসে বলতেন, চাপ নিজের উপর আনতেন।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে পুরো অন্য কাহিনী। গ্রুপ পর্বে এটলেটিকোর কাছে হারলো বরুশিয়া, পরের ম্যাচেই আবার এটলেটিকোকে হারিয়ে আসলো সেই তারাই! বাকি ক্যাম্পেইনে হোমটা ঠিকই দুর্গ ছিল। কোয়ার্টারে অজেরির সাথে দেখা। অজেরি তখন ফ্রান্সে খুব ভাল অবস্থায় আছে। অজেরির দুই ডিফেন্ডারের উচ্চতা ছিল পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চি করে। তাদেরই টার্গেট করা হলো। চারটা গোল হলো দুই লেগে, তার তিনটারই বিল্ড-আপ বাতাসে! এরপর ফার্গির ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাথে সেমিফাইনাল। নিউক্যাসেলের সাথে সেই ঐতিহাসিক টাইটেল ফাইটে ক্লান্ত ম্যানইউ। তা আর যা-ই হোক, ওদের এয়ারে কিছু করা যাবে না। এবার টার্গেট ক্লান্তিকে। বারবার উইং টু উইং বল পাঠাচ্ছিল বরুশিয়া, ফার্গির সৈন্যরা ট্যাকটিকালি কুলিয়ে উঠতে পারেনি। ফার্গি একটা কথাই বলেছিলেন, এক হাফে এত ট্যাকটিকাল চেঞ্জ আগে দেখেনি তার দল। ক্লান্তি আর ট্যাকটিকসের কাছে হারে ম্যানইউ। দুই লেগেই এক শূন্যতে জয়, দল ফাইনালে।

‘৯৭ এর ফাইনালটা ছিল কিংবদন্তী কোচ লিপ্পির ধরাশায়ী হবার গল্প। আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ী জুভেন্তাস এলো লীগ জয়ী হিসেবে। ঐদিকে ডর্টমুন্ড ক্ষুধার্ত। জুভেন্তাসে তখন সবাই যার যার পজিশনে বিশ্বসেরা। দেশম, পিয়েরো, জিদান, ইনজাঘি- কে নেই! কিন্তু একটাই দুর্বলতা, গোলকিপার পেরুজ্জি। ইনসুইংগিং বলে পেরুজ্জির দুর্বলতাটা ধরলেন হিজফেল্ড। ঐদিকে লিপ্পি তার প্রিয় ৪-৩-৩ কে ভেঙ্গে ফেলেন জিদানকে স্লট করতে, ৪-৩-১-২ তে শিফট হয় টিম, ট্রেকোয়ারটিস্তা জিদান। লিপ্পি বড় ম্যাচে একজনকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতেন, যেকোনো নির্দিষ্ট পজিশনে খেলতেন না। জিদানকে দেয়া হয় সেই ভূমিকা।

হিজফেল্ড জানতেন জিদানকে ম্যানমার্ক করা অসম্ভব। তিন সেন্টার ব্যাক আর তিন সিডিএম নিয়ে ৩-৪-১-২ তে খেলান তিনি। পুরো মিডফিল্ড ক্রাউডেড, জিদান কোনো জায়গা পেলেন না। প্রথম দশটা মিনিট ছিল জুভেন্তাস ঝড়। জার্মানরা কোনোমতে ঐ ধাক্কাটা সামাল দিলো। এরপরের সাতটা মিনিটে লিপ্পিকে হিজফেল্ড পুরো ধরে দিলেন, ইনসুইং ক্রসে জুভের দুর্বলতাকে টার্গেট করে হেডেই দুটি গোল পেয়ে যায় বরুশিয়া। রিকেনকে হিজফেল্ড বলেন খালি লং বল দিতে, জুভেন্তাস স্ট্রাইকার ইনজাঘির মতো ট্যালেন্টেড ছিলেন না তিনি, কিন্তু ইফেক্টিভ ছিলেন। পারফেক্টলি তার কাজটা করলেন রিকেন। দু’গোল খেয়ে লিপ্পি রাইট ব্যাককে তুলে ডেল পিয়েরোকে নামান। ডেল পিয়েরো গোল করেন সাথে সাথেই। লিপ্পি যখন ৪-২-২-২ তে শিফট করেন, হিজফেল্ড ঐদিকে উইং প্লে বাড়িয়ে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই গোল পেয়ে যায় ডর্টমুন্ড, হেরে বসে দুর্দান্ত দল জুভেন্তাস। ডর্টমুন্ড পেয়ে যায় তার চিন্তাতীত সাফল্য।

কিন্তু এরপরই চিন্তাতীত বিষয় ঘটে যায়। সর্বময় ক্ষমতা দিয়ে বরুশিয়া স্পোর্টিং ডিরেক্টর পদ তৈরি করে আর হিজফেল্ডকে এ পদে পদাসীন করে। হিজফেল্ড প্রথমে রাজি হয়ে বসেও যান। কিন্তু দিনশেষে এটা কোচের খেলা। ডাগআউটের লোক কাঁচের বক্সে বসে কী করবেন? ক্লাবই ছেড়ে দিলেন হিজফেল্ড! অনেকে মনে করেন এটা ছিল বরুশিয়া বোর্ডের কিছু স্বার্থান্বেষীর দূরদর্শী প্ল্যান হিজফেল্ডকে সরাতে। কারণ ইয়ুথ লেভেল থেকে ট্রান্সফার সর্বত্র তারই আধিপত্য ছিল। ছয় বছরে দশ নম্বরের একটি দল বায়ার্ন আর ব্রেমেনের মনোপলি ভেঙে জার্মানি প্লাস ইউরোপ রাজত্ব করেছিলো। বলা চলে একীভূত জার্মানির প্রথম আধিপত্যকারী টিম বরুশিয়া। আজ যে ইয়ুথ একাডেমি নিয়ে ওরা গর্ব করে এর আসল প্ল্যান বা টাকা মঞ্জুর করে দিয়েছেন তিনিই। স্টার ভিয়েরিকে না কিনে একাডেমির রিকেনকে দিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন যে সবসময় বড় ম্যাচে গোল করত। আর বেঁচে যাওয়া টাকা একাডেমিতে দিয়েছেন। ক্লাবের সর্বকালের সেরা কোচ বিদায় নিলেন।

বরুশিয়াকে নিয়ে চ্যম্পিয়ন্স লীগ জয়ের পর; Source: Bundesliga.de

বায়ার্ন পর্ব – ১

স্টুটগার্টে তার এক সতীর্থ ছিলেন, উলি হোয়েনেস। ঐ ব্যক্তি তখন বায়ার্ন বোর্ডে বেশ শক্তিশালী। তার ওপর ভার পড়লো হিজফেল্ডকে রাজি করতে। কিন্তু হিজফেল্ড ঠিকই যোগ দিলেন এমন এক ক্লাবে যে ক্লাবের আধিপত্য ভেঙ্গেছেন সদ্যই! তার পূর্বসূরি কিংবদন্তীতুল্য ত্রাপাত্তোনি টিকতে পারেননি জার্মান কাপ জিতেও। দলে ২৫ জন প্লেয়ার, এর মাঝে ২১ জনই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দলের তারকা। বোঝাই যায় কী পরিমাণ ইগো থাকতে পারে। ড্রেসিংরূম একদম বিশৃঙ্খল, ঐক্য ভেঙে গেছে। ‘৭৬ এর সেই লিজেন্ডারি সাইডের পর আর জেতা হয়নি ইউরোপিয়ান ট্রফি। ডর্টমুন্ডে যখন যান, তখন কোনো চাহিদার চাপ ছিল না। কিন্তু এখানে একটাই আবদার- সোনালি দিন ফিরাও। অনেক বড় চ্যালেঞ্জ । দ্য জেনারেল স্ব-মহিমা দেখালেন।

প্র্যাকটিসে দেরি করায় মূল ডিফেন্ডারকে ব্রেমেন ম্যাচের আগে বসিয়ে দিলেন, কেন খেলতে পারেন নি অমন কৈফিয়ত চাওয়ায় নিয়মিত স্ট্রাইকারকেও বসিয়ে দিলেন। শৃংখলা ফিরে এলো। কোয়ালিটি তো ছিলই, প্রথমবারই লীগ জিতলো জেনারেলের বায়ার্ন। বলে রাখা ভাল, তখন জার্মান ফুটবল ব্যালেন্স ছিল। কাইজারস্লটার্ন এর মতো ক্লাবও লীগ জিতত, এখনকার মতো একপেশে না।

একটি অগোছালো টিমকে প্রথম গোছাতে হয় ডিফেন্স থেকে। সেটাই করলেন হিজফেল্ড। লীগে প্রথম আঠারো ম্যাচে মাত্র ছয় গোল হজম করে বায়ার্ন! এটাকেই বলে তাৎক্ষণিক সাফল্য। বায়ার্ন তখন জার্মানির রেপ্লিকা, পিউর পাওয়ার ফুটবল। ঐদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কঠিন গ্রুপে বায়ার্ন, বার্সা-ম্যানইউ এর সাথে। বার্সাকে হোম এন্ড আওয়ে হারিয়ে আর ম্যানইউর সাথে দুটো ড্র করে বায়ার্ন উঠে যায় কোয়ার্টারে। ওখানে গতবারের জার্মান লীগ জয়ী কাইজারস্লটার্নকে ছয় গোলে হারিয়ে সেমিতে। এ অবধি বায়ার্ন হজম করে মাত্র চার গোল। সেমিতে কিয়েভকে হারিয়ে ফাইনালে তারা পায় ম্যানইউকে। নব্বই মিনিটের অনেক ভালো মানের দল বায়ার্ন হেরে যায় ম্যানইউর কাছে ৩ মিনিটে ২ গোল খেয়ে। আবারো নব্বই মিনিট ক্লাসিক। ঐদিকে ব্রেমেন জার্মান কাপের ফাইনালে টাইব্রেকে হারিয়ে দেয় বায়ার্নকে।

২৪ বছর পর ফাইনাল আর সেখানে অমন হার! এর সাথে ঘরোয়া কাপ ফাইনালেও হার। রেকর্ড পয়েন্ট ব্যবধানে জেতা লিগ আনন্দও ম্লান হয়ে যায়। যখন দায়িত্ব নেন, তখন ছিল অগোছালোতার বোঝা। আর সিজন শেষে পেলেন ভারাক্রান্ত একটা টিম যারা মিনিট সাতেক দূরত্বে ট্রেবল হারিয়ে এসেছে। পরের সিজনের শুরুটাও ছিল জঘন্য। হারে শোকাচ্ছন্ন মিউনিখ স্ট্রাগল করছিল। ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এভাবেই চলে। লেভারকুসেন তখন লিডার। ম্যাথাউস আর হিজফেল্ড প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যেকোনোভাবে অবস্থা পাল্টাতেই হবে। সেই বছর ফেব্রুয়ারীতে দ্বিতীয় রাউন্ডে রিয়ালকে দুই লেগেই হারায় বায়ার্ন। এই দুই ম্যাচের ফাঁকে লেভারকুসেনের সাথে খেলা, ৪-১ এ জিতে গেল বায়ার্ন। ব্যস অবস্থা ঘুরে গেল। এরপর লীগে শেষ আঠার ম্যাচে মাত্র দুটো হারে বিশাল ব্যাবধান ঘুচিয়ে সমান পয়েন্টে জিতে যায় লীগ। এরপরে ঘরোয়া কাপ ফাইনালেও দেখা সেই ব্রেমেনের সাথে। এবার বায়ার্ন এক হালি গোল দিল ব্রেমেনকে। তখন চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দ্বিতীয় রাউন্ডেও গ্রুপ হতো। রিয়াল দুটোতে হারলেও অন্যগুলো জিতে সেমিতে উঠে আসে। আবারও বায়ার্ন। অসাধারণ এক রাউল-রেদোনদো-হিয়েরো শো’র কাছে হেরে বায়ার্ন বাদ পড়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে। ততদিনে বায়ার্ন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ত্রাস, আর ঘরে একচেটিয়া আধিপত্য।

এরপরের সিজনে সবকিছু একবারে উশুল করে দেয় বায়ার্ন। শুরুটা হয় বাজে। এক তৃতীয় সারির দলের কাছে হেরে বাদ পড়ে কাপ থেকে। লীগে কয়েকটা হার আসে। ঐদিকে শালকে তখন অসাধারণ খেলছে, ঠিক লিস্টারের মতো বলা হচ্ছিল পাবলিক চ্যাম্পিয়ন। শেষ দিনে গড়ালো লীগ। শেষ ম্যাচে বায়ার্ন আর শালকের ব্যাবধান এক পয়েন্ট, বায়ার্ন এগিয়ে। শালকের হোম, আর বায়ার্নের অ্যাওয়ে। স্টুটগার্টের সাথে ড্র করে শালকে। শালকে ম্যাচ দশ মিনিট আগেই শেষ হয়। বায়ার্ন ম্যাচ তখনো গোলশূন্য। এভাবে থাকলেও বায়ার্ন জিতে যায়। ঠিক নব্বই মিনিটে বায়ার্ন একটি গোল খেয়ে যায়, হারের পথে বায়ার্ন। শালকে স্টেডিয়াম তখন ফেটে পড়েছে উৎসবে, সেই সাথে পুরো জার্মানি। বায়ার্নের কয়েকজন প্লেয়ার কেঁদেই দেয় মাঠে। আবারো নব্বই মিনিট ট্র্যাজেডি! জেনারেল হাসছিলেন। এবার ইতিহাস অন্যরকম। শেষ মিনিটে পেনাল্টি বক্সে ফ্রি-কিক পায় বায়ার্ন, ৯৪ মিনিট, শেষ শট। এবার বল জালে! জার্মান ইতিহাসের সেরা লীগ লড়াই দেখলো বিশ্ব।

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কোয়ার্টার ফাইনালে দেখা ম্যানইউর সাথে। এবার দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ এ ম্যানইউকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে হিজফেল্ডের দল। সেখানে প্রতিশোধ নেন রিয়ালকে হারিয়ে। ফাইনালে হেক্টর কুপারের ভ্যালেন্সিয়া। পিউর ট্যাকটিকাল ফাইনাল। এ ফাইনালকে কুপার বলেছিলেন “মোর দ্যান আ চেস” হিসেবে। কেউ কাউকে ছাড় দেয় না। কেউ স্পেস দেয় না, ফলে খেলা টাইব্রেকে গড়ায়। যতই দাবা খেলুক অলিভার কান, কোনো হিসেবে নাই, ফ্লাইং তিনটা বল সেভ করে জেতালেন ২৬ বছর পর সেই আরাধ্য ট্রফি। দুটো ক্লাবকেই ২৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন হিজফেল্ড।

বায়ার্নকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতানোর পর; Source: gettyimages

এরই মধ্যে বায়ার্নের তেঁতে থাকা ভাবটা চলে গেছে। জেনারেলের কমান্ডে হয়ত বিশৃঙ্খলতা শৃঙ্খলিত হয়, কিন্তু তৃপ্তির সন্তুষ্টিকে কিভাবে দূর করবে? এরপরের সিজন ট্রফিহীন, বাজে ফর্ম, তবে ক্লাব বিশ্বকাপটা ঠিকই জিতে নিলেন। সতীর্থ উলি হোয়েনেস তখন সভাপতি। তার নিজের ভাষ্যমতেই দুটো ভুল সিদ্ধান্ত তার গোটা জীবনে। এক, ট্যাক্স ইভাশন, যে কারণে তিনি জেলে ছিলেন আর দুই, হিজফেল্ডকে বরখাস্ত করা! হ্যাঁ, তিন বছরে দুটো চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনাল, একটি জয়, টানা তিনটি লীগ আর ঘরোয়া মোট পাঁচটি কাপ জয়ী কোচকে এক বছর ট্রফিহীন থাকায় বরখাস্ত করে বায়ার্ন। এটা হিজফেল্ড মানতে পারেননি। ফুটবল তখন অসহ্য লাগছিল। ডাক আসে জাতীয় দল থেকে, কিন্তু শরীর-মন সবই অবসন্ন, দেশের মাটিতে বিশ্বকাপে জার্মানির কোচ হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

বায়ার্ন পর্ব – ২

অফার অনেক আসছিল, কিন্তু জার্মান ভাষা ব্যতীত অঞ্চলে যাবেন না বলে গোঁ ধরে ছিলেন হিজফেল্ড। ঐদিকে বায়ার্ন আবার বিপদে, লীগে দশম। উলি হোয়েনেস প্রায়শ্চিত্ত করতে এগিয়ে আসেন। সিজনের শেষ দিকেই হিজফেল্ডকে ফিরিয়ে আনা হয়। আট ম্যাচে ছয়টিতে জিতলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ কোয়ালিফাই হবে- এমন পরিস্থিতিতে তিনি আসেন ক্লাবে। ফুটবল তো আর ফাটাকেস্টর হিসাব না! পারলেন না। ক্লাব তখন বড়সড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে। ক্লাব দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেলো। তাকে রাখা হবে, কি হবে না! হিজফেল্ডের ভাষায় তার জীবনের সবচেয়ে টাফ মিটিং। জার্মানদের রাজি করা এমনিই কঠিন, সফল হলেন, তাদের সফলতম ক্লাব কোচকে মাত্র এক বছর সময় দেয়া হলো। লুকা টনি, রিবেরিদের এনে, সেই সাথে কিছু ক্লিয়ার আউট করে ভালো মানের একটি টিম বানান হিজফেল্ড, যেটি বেশ বড় ব্যবধানেই লীগ বাগিয়ে নেয়। পরেরবার ক্লাব আশা করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের। লীগে আধিপত্য বজিয়ে থাকে। লীগ জিতে নেন বেশ আগেই, সেই সাথে জেতেন জার্মান কাপ, কিন্তু ইউসিএল সেমিতে বাদ পড়ে যান। বেশ দারুণ একটি সিজন। আগের মতো খালি হাতে যেতে চান নি। এবার সাফল্যের সাথেই ক্লাব ছাড়লেন তিনি।

কান তাকে বলেছেন, “The ultimate Bayern coach”। একবার বরুশিয়া কোচ তার সাবেক শিষ্য সামার আর বায়ার্নের কানের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টা ছিল, “আসলে হিজফেল্ড কোন ক্লাবের বড় লিজেন্ড?” সামার বলেন,”ও বায়ার্নে ডেমিগড হলে, আমাদের এখানে গড।” বায়ার্নে একটি জরিপ হয় কে তাদের সর্বকালের সেরা কোচ? বেকেনবাওয়ারকে হারিয়ে তা হন হিজফেল্ড। বায়ার্ন বরুশিয়ার এক সময় একটি কমন বিতর্ক ছিল আসলে হিজফেল্ড কার কাছে বেশি প্রিয়! ভাবা যায় ?

সাতটি লীগ, দুটো UCL সহ পনের কাপ নিয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে ইস্তফা দিলেন এই লিজেন্ডারি কোচ কাম ম্যাথম্যাটিশিয়ান ।

সুইজারল্যান্ড এ শুরু, সুইজারল্যান্ডেই শেষ 

এরপর যোগ দিলেন তার সেকেন্ড হোম সুইজারল্যান্ড ন্যাশনাল টিমে। সুইস ন্যাশনাল টিমকে নিয়ে প্রচুর জোকিং করা হতো। এমন একটি লীগ থাকতেও প্রায় আনপ্রফেশনাল খেলা। প্রায় অর্ধশতাব্দী কোনো কোয়ালিফায়ার উতরায় না। ১০ বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে প্রথম দু’ম্যাচ ড্র আর সান মারিনোর কাছে হারার পর গেল গেল রব শুরু হয়ে যায়। কিন্তু হিজফেল্ড ফাইভ ম্যান ডিফেন্সে শিফট করে দলকে স্থিতিশীল করেন।

সেবার কোয়ালিফায়ারে শীর্ষে থেকে বিশ্বকাপে আসে সুইসরা। প্রথম ম্যাচে অঘটন ঘটিয়ে বসে তার, স্পেনকে হারিয়ে দেয়। কিন্তু এর বেশি আর যাওয়া হয়নি সুইসদের। বয়স ততদিনে পেয়ে বসে হিজফেল্ডকে। কম চাপে জাতীয় দলেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সুইস ফুটবলের সবচেয়ে বড় সমন্বয়ক ছিলেন তিনি, মূল দল ছাড়াও ইয়ুথ সেটআপ, বয়সভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতেন। সে যা-ই হোক, ২০১৪ বিশ্বকাপে আশাতীত সাফল্য পায় তারা। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে সুইসরা। খেলা আর্জেন্টিনার সাথে। বরাবরের মতো জেনারেলের দলগুলোর মতোই শক্ত ডিফেন্স। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ায়, সুইস গোলকিপারকে দেখে মনে হচ্ছিল খেলা পেনাল্টি শ্যুটআউটে গেলে আর্জেন্টিনাকে আটকে দেবেন। কিন্তু আবারো শেষাংশের নাটক, ডি মারিয়া গোল দিয়ে বাদ করে দিলেন সুইসদের। সাবেয়ার সাথে সেই হ্যান্ডশেইকটাই ছিল কোচ হিসেবে হিজফেল্ডের শেষ বারের মতো ডাগআউটে থাকা।

সুইসদের কোচ হিসেবে হিজফেল্ড Source: bbc.co.uk

হিজফেল্ড এখন আছেন অবসরে। জার্মান ইতিহাসের সেরা কোচ, একই সাথে সুইজারল্যান্ডেও কিংবদন্তী! যখন যেথায় গেছেন, সেখানেই কিংবদন্তী হয়ে বেরিয়েছেন দ্য জেনারেল। আজীবন ৪-৪-২ কে পছন্দ করা হিজফেল্ডের সবচেয়ে বড় ট্যাকটিকাল পাওয়ার ছিল ডিফেন্স অর্গানাইজেশন। সামারের মতে, “প্রত্যেকটি প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের খুঁত এনে দিতেন আমাদের সামনে। নিখুঁত জুভেন্তাসেরও চুলচেরা খুঁতকে টার্গেট করে জিতিয়ে দিতে যে পারে, তার কথা আর কি বলার আছে!” চিরপ্রতিদ্বন্দীর বৈরিতার একটি কারণ যখন হয় উনি আসলে কার লিজেন্ড, তখন আর কিছু বলা লাগে না তার ক্যারিশমা বা প্রভাব সম্পর্কে।

Related Articles