Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

মাদেইরা থেকে বিশ্বমঞ্চ: ক্রিস্টিয়ানোর ৫ ব্যালন ডি অরের আদ্যোপান্ত

পর্তুগালের একটি ছোট্ট দ্বীপ মাদেইরা থেকে উঠে আসা এক গতিময় ফুটবলার এই মুহূর্তে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ব্যালন ডি অর পুরস্কারের মালিক। ৩৮ বছর বয়সেও তার মাঝে থেমে যাওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। প্যারিসে নিজের পঞ্চম ব্যালন ডি অর হাতে নিতে এসে জানিয়েছিলেন নিজের ইচ্ছের কথা, নিজের জার্সি নাম্বারের সাথে মিল রেখে জিততে চান ৭টি ব্যালন ডি অর। সেই ইচ্ছে পূরণ হবে কিনা, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে মানুষটি যখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, তখন এটি একেবারেই অবিশ্বাস্য নয়।

রোনালদোর এই অর্জন তার কঠিন পরিশ্রম আর হার না মানা মানসিকতার ফসল। তিনি কখনোই বিশ্রাম নিতে চান না, লক্ষ্য তার বরাবরই উন্নতির দিকে। অসাধারণ মানসিক শক্তি এবং সাফল্য ক্ষুধা বছরের পর বছর তাকে বিশ্ব ফুটবলে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করার শক্তি জুগিয়েছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ এবং পর্তুগাল জাতীয় দল- সব জায়গাতেই নিজের সাফল্য বজায় রেখেছেন রোনালদো। প্রথমবার ব্যালন ডি অর জেতার পর টানা চারবার প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির কাছে ব্যালন ডি অরে পিছিয়ে যাবার পরেও যিনি সমানতালে ফিরে এসেছেন দুর্দান্ত পারফর্মেন্স দিয়ে, চলুন একটু পিছনে ফিরে জানা যাক তার ক্যারিয়ারের গল্পগুলো।

শুরুর কথা: স্পোর্টিং লিসবন

স্পোর্টিং লিসবনের জার্সিতে রোনালদো; Source: as.com

অনেকেই হয়তো জানেন না, রোনালদোর মা তাকে জন্ম দিতে চাননি অভাবের তাড়নায়। গর্ভাবস্থায় তিনি গর্ভপাত করতে চেয়েও পরে কী ভেবে আর তা করেননি। সেটি হলে ফুটবলপ্রেমীরা দেখতে পেতো না এক অসাধারণ প্রতিভা। রোনালদো খুব দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং পরিবারকে সাহায্য করার জন্য খুব কম বয়সেই কাজ শুরু করেন।

কিন্তু তার মা তাকে সেটিই করতে বলতেন, যেটি সে সবচেয়ে ভালো পারে। আর সেটি হচ্ছে ফুটবল খেলা। ছোটবেলা থেকেই রোনালদো খুবই প্রতিভাবান ছিলেন। অল্প বয়সেই পর্তুগালের বড় ক্লাবগুলোর নজরে পড়েন তিনি। ১৯৯৭ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে পর্তুগালের নামকরা ক্লাব স্পোর্টিং লিসবন তাকে দলে ভেড়ায়। কিন্তু ১৪ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের সমস্যা ধরা পরায় রোনালদোর ক্যারিয়ার প্রায় শেষ হয়ে যেতে বসেছিল। যা-ই হোক, সফলভাবে সার্জারি করার পর রোনালদো ফুটবল খেলা আবারো পুরোদমে চালিয়ে যেতে থাকেন এবং ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর নজর পড়তে বেশি দেরি হয়নি তার।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ২০০৮ সালে প্রথম ব্যালন ডি অর

রোনালদোর ইউনাইটেড যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সালের গ্রীষ্মে। সে বছর স্পোর্টিং লিসবনের সাথে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পুরো ম্যাচেই ইউনাইটেড ডিফেন্ডারদের নাকানিচুবানি খাওয়াতে থাকেন রোনালদো। এটি দৃষ্টি এড়ায়নি ইউনাইটেডের কোচ স্যার এলেক্স ফার্গুসনেরও। এই ম্যাচ শেষেই রোনালদোকে ১২.২ মিলিয়ন পাউন্ডে সাইন করান ফার্গুসন। তার ছায়াতলেই ইউনাইটেডে রোনালদো পরিণত হন বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম ব্যালন ডি অর জেতেন রোনালদো; Source: thefalse9.com

প্রতিভা থাকলেও প্রথমদিকে রোনালদো ছিলেন অপরিশোধিত হীরার মতো। সেই হীরাকে ঘষামাজা করে চকচকে করে তোলেন স্যার ফার্গুসন। খুব তাড়াতাড়ি রোনালদো হয়ে উঠেন ইউনাইটেডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। সেজন্য অবশ্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়ামাগারে এবং মাঠে কাটিয়েছেন তিনি। হ্যাংলা পাতলা একটি বালক থেকে হয়ে উঠেছেন সুগঠিত দেহের অধিকারী। প্রচণ্ড পরিশ্রম করে মাঠে নিজের গতি বাড়ান এবং শুটিংয়েও নিয়ে আসেন উন্নতি। ইউনাইটেডের কোচিং দলের এক সদস্য ক্লেগ বিবিসিকে জানান, “রোনালদো মাঠে একটি ভুল করলেই সেটি পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করতো, যাতে সেই ভুল দ্বিতীয়বার আর না হয়। সাধারণত অন্য খেলোয়াড়রা কোনোকিছু একবার চেষ্টা করে না পারলে হাল ছেড়ে দেয়, কিন্তু রোনালদো ছিল তার উল্টো।

প্রথমদিকে একটু সময় লাগলেও পরবর্তীতে খুব দ্রুতই সাফল্য আসতে শুরু করে রোনালদোর ঝুলিতে। ২০০৭-০৮ মৌসুম ছিল রোনালদোর ব্রেক-থ্রু সিজন। এই মৌসুমেই রোনালদো বিশ্ব দরবারে সুপারস্টার হিসেবে নিজেকে দাঁড় করান এবং ফুটবল বিশ্ব তার প্রশংসায় মুখরিত হয়। এই মৌসুমে রোনালদো মোট ৪২ গোল করেন এবং ইউনাইটেডকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও প্রিমিয়ার লিগ জিততে সাহায্য করেন। সেবারে রোনালদোকে থামানো অসম্ভব ছিল। রোনালদোর এই নজরকাড়া পারফর্মেন্স চোখ এড়ায়নি ব্যালন ডি অর কমিটিরও। জর্জ বেস্টের জেতার প্রায় ৪০ বছর পর প্রথম ইউনাইটেড খেলোয়াড় হিসেবে রোনালদো সেবার জিতে নেন ব্যালন ডি অর।

রিয়াল মাদ্রিদ: একজন গোল মেশিনের জন্ম

ক্যারিয়ারে সর্বমোট চারবার ইউরোপের সেরা গোলস্কোরারের খেতাব পেয়েছেন রোনালদো; Source: AVIER SORIANO/Getty Images

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়াল মাদ্রিদের মাঝে ব্যাপক দর কষাকষির পর ২০০৯ সালে অবশেষে ৮০ মিলিয়ন পাউন্ডে রেকর্ড ট্রান্সফার ফির মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমান রোনালদো। সেখানে শুরুটা বেশ কঠিন ছিল তার জন্য। কারণ, তখন বিশ্ব ফুটবল এবং স্পেনে বেশ আধিপত্য বিরাজ করছিলো বার্সেলোনা। শুরুতে নতুন পরিবেশ, নতুন ক্লাব এবং নতুন লিগে মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হলেও খুব তাড়াতাড়িই ফর্মে ফেরেন রোনালদো। কিন্তু ইনজুরিতে পড়লে আবারো বাধাগ্রস্ত হয় তার রিয়াল মাদ্রিদ ক্যারিয়ার। প্রথম মৌসুমে ৩৫ ম্যাচে ৩৩ গোল আর ৭টি অ্যাসিস্ট করেন তিনি। পরের মৌসুমে খুব ভালোভাবেই ফিরে আসেন।

লা লিগার ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৪০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। সেই মৌসুমে মোট ৫৪ ম্যাচে ৫৩ গোল আর ১৫টি অ্যাসিস্ট করেন। জিতে নেন ইউরোপের সেরা গোলদাতার পুরস্কার ‘গোল্ডেন বুট’ এবং লা লিগার সেরা গোলদাতার পুরস্কার ‘পিচিচি’। কোপা দেল রে ফাইনালে গোল করে দীর্ঘদিন পরে রিয়াল মাদ্রিদকে আবার ট্রফি জেতান। তার গোল স্কোরিং ফর্ম বজায় থাকে পরের বছরেও, ২০১১-১২ মৌসুমে লিগে ৪৬ গোল সহ মোট ৫৫ ম্যাচে ৬০ গোল এবং ১৫ অ্যাসিস্ট করেন। বার্সেলোনার আধিপত্য ভেঙে লিগ জেতান রিয়াল মাদ্রিদকে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সেই গতিময় উইংগার থেকে জন্ম হয় নতুন এক গোল মেশিনের।

দ্বিতীয় ব্যালন ডি অর, ২০১৩

২০০৯-১২ এই চার বছরই টানা ব্যালন ডি অর জেতেন লিওনেল মেসি। মাদ্রিদের হয়ে রোনালদো বরাবর ভালো খেললেও ট্রফির দেখা পাচ্ছিলো না ক্লাব। ফলে প্রথম ব্যালন ডি অর জেতার ৪ বছর পার হয়ে গেলেও দ্বিতীয় ব্যালন ডি অরের দেখা পাচ্ছিলেন না এই পর্তুগীজ। অনেকে ভাবছিল, রোনালদো হয়তো মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন, ভাবারই কথা। ভালো পারফর্ম করেও জিততে না পারা অনেক হতাশার ব্যাপার। কিন্তু রোনালদো ভেঙে পড়েননি। চালিয়ে গেছেন তার কঠোর পরিশ্রম আর লক্ষ্যে ছিলেন স্থির।

দ্বিতীয়বারের মত ব্যালন ডি অর জেতার পর অশ্রুসিক্ত রোনালদো; Source: Kicktv.com

তৎকালীন ফিফা প্রেসিডেন্ট স্লেপ ব্ল্যাটার ব্যালন ডি অর ভোটাভুটির সময় বাড়ালে পর্তুগাল আর সুইডেন মুখোমুখি হয় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্লে অফ ম্যাচে। এই ম্যাচই ঠিক করে দেবে কে যাবে বিশ্বকাপের মঞ্চে। বলা বাহুল্য, সুইডেনের সাথে দুই ম্যাচেই পর্তুগালের হয়ে সবগুলো গোল করে প্লে অফ পুরোটাই নিজের করে নেন রোনালদো। দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁচামরার লড়াইয়ে ২ গোল পিছিয়ে থেকেও দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক করে পর্তুগালকে ফুটবলের সেরা মঞ্চে নিয়ে যান দলের কাণ্ডারি রোনালদো। পর্তুগালের হয়ে ভালো পারফর্মেন্স তো ছিলই, সাথে রিয়াল মাদ্রিদের হয়েও আলো ছড়ান সেবার। ২০১২-১৩ মৌসুমে দেশ এবং ক্লাবের হয়ে মোট ৬৯ গোল করেন রোনালদো। ফলে ৪ বছর পর মেসির একক আধিপত্য ভেঙে নিজের দ্বিতীয় ব্যালন ডি অর জিতে নেন রোনালদো।

তৃতীয় ব্যালন ডি অর, ২০১৪

আরও একটি নতুন মৌসুম, আবারো চিরাচরিত পরিস্থিতি। এই মৌসুমে রোনালদো নিজের ধারাবাহিক পারফর্মেন্স বজায় রাখেন এবং অনেকগুলো রেকর্ড নিজের করে নেন। ফুটবল ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৭ গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করেন রোনালদো। আর রিয়াল মাদ্রিদকে জেতান আরাধ্য লা ডেসিমা। বলা হয়ে থাকে, রোনালদোকে আনাই হয়েছিলো যাতে তিনি রিয়াল মাদ্রিদকে দশম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে পারেন। বারবার সেমি ফাইনালে আটকে গেলেও এবার আর আটকাতে পারেনি কেউ। নিজের দেশের শহর লিসবনেই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দ্বিতীয়বারের মতো জেতেন রোনালদো।

তৃতীয় ব্যালন ডি অর হাতে হাস্যজ্বোল রোনালদো; Source: Goal.com

২০১৩-১৪ মৌসুমে মোট ৬১ গোল করেন রোনালদো। ব্যক্তিগত পুরস্কারের খাতায় একে একে তুলে নেন ‘ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু’ এবং ‘ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়’ এর পদক। ফিফা ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপেও ভাল পারফর্ম করেন তিনি। খুব ভালো মৌসুম কাটালেও সেবার বিশ্বকাপের মঞ্চে খুব একটা জ্বলে উঠতে পারেননি। কিন্তু রোনালদো পুরোপুরি ফিটও ছিলেন না বটে।

এরকম একটি মৌসুম কাটানোর পর ফিফা এবং ব্যালন ডি অর কমিটির সাধ্য ছিলো না অন্য কাউকে সেরা ঘোষণা করার। ২০১৪ সালে টানা দ্বিতীয়বার এবং নিজের তৃতীয় ব্যালন ডি অর জেতেন এই পর্তুগীজ যুবরাজ। লিওনেল মেসির সাথে নিজের ব্যবধানও কমিয়ে নিয়ে আসেন একটিতে।

ইউরো জয় এবং চতুর্থ ব্যালন ডি অর, ২০১৬

বয়স ৩০ পার হলেও নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন রোনালদো। মৌসুমের শুরুটা মোটেও ভালো ছিলো না মাদ্রিদের হয়ে। লিগে যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। রাফা বেনিতেজ বরখাস্ত হওয়ার পর মাদ্রিদের দায়িত্ব জিনেদিন জিদান নিলে দলের সবার মতো জ্বলে ওঠেন রোনালদোও। এক পয়েন্টের ব্যবধানে লিগ হারালেও আবারো অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে রিয়াল।

ইউরোপিয়ান কাপ হাতে রোনালদো; Source: Goal.com

দুই মাস পরে ফ্রান্সে আরও বড় অর্জন নিজের করে নেন রোনালদো। ইনজুরির কারণে ফাইনালে না খেলতে পারলেও পর্তুগালকে জেতান তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ট্রফি। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ট্রফির স্বাদ পান রোনালদো। সে বছর দেশ এবং ক্লাবের হয়ে ৫২ ম্যাচে মোট ৪৮ গোল করেন। আগের বছর লিওনেল মেসির কাছে ব্যালন ডি অর হারাতে হলেও এবার আর সেই সুযোগ দেননি। ৩১ বছর বয়সে চতুর্থবারের মতো ব্যালন ডি অর নিজের করে নেন রোনালদো।

পঞ্চম ব্যালন ডি অর, ২০১৭

আগের বছরের মতোই এ বছরেও সাফল্যের ধারা বজায় রাখে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। আগের বছর লিগ জিততে না পারলেও এবার রিয়াল মাদ্রিদকে লিগ জেতান অসাধারণ নৈপুণ্যে। আর ইতিহাসের প্রথম ক্লাব হিসেবে পরপর দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জুভেন্টাসের বিপক্ষে দুই গোল সহ সেমিফাইনালে অ্যাথলেটিকোর সাথে হ্যাটট্রিক এবং কোয়ার্টার ফাইনালেও বায়ার্নকে দুমড়ে মুচড়ে মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর কাণ্ডারি ছিলেন এই রোনালদোই। দেশ এবং ক্লাবের হয়ে মোট ৪৯ গোল করে সে বছর রিয়াল মাদ্রিদকে জেতান লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ এবং ক্লাব বিশ্বকাপ। একমাত্র কোপা দেল রে-টাই জেতা হলো না এই জাদুকরী বছরে।

ব্যক্তিগত সাফল্যও আসে রোনালদোর দু’হাত ভরে; ফিফা বেস্ট , ইউরোপিয়ান সেরা খেলোয়াডের মর্যাদাও পান এই বছরে। তাই রোনালদো ব্যালন ডি অর জিততে যাচ্ছেন, এটি অনেকটাই অনুমেয় ছিল। হতাশও হতে হয়নি রোনালদো ভক্তদের। সাংবাদিকদের ভোটে রেকর্ড পরিমাণ ৯৪৬ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি অর জেতেন রোনালদো।

রোনালদো পঞ্চম ব্যালন ডি অর হাতে; Source: AFP

ইতিহাসে খুব কম খেলোয়াড়ই আছেন, যারা ৩৮ বছর বয়স পার হয়ে নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছেন। কিন্তু রোনালদোর ফিটনেস এবং ক্রমাগত ভালো করার প্রচেষ্টা তাকে আরও কয়েক বছর বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ স্থানে রাখবে বলেই ধারণা করা যায়। আর নিজের জার্সি নম্বরের সাথে মিলিয়ে রোনালদোর সাতবার ব্যালন ডি অর জেতার ইচ্ছা পূরণ হবে কি হবে না সেটির জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে তিনি অবসরে যাওয়ার আগপর্যন্ত। কিন্তু তার আগে? NEVER WRITE HIM OFF !

ফিচার ইমেজ: Real Madrid FC

Related Articles