Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

হার্ডডিস্কের ঘূর্ণিপাকে: কীভাবে তথ্য জমা থাকে হার্ডডিস্কে

আপনাকে যদি বলা হয় একটি বৃত্তাকার পথে চক্কর দিতে, প্রতি মিনিটে কতবার চক্কর দিতে পারবেন আপনি? বিশ্বের দ্রুততম মানুষটি যদি আপনি হন তবে যতবারই সেই বৃত্তাকার পথে ঘুরে আসুন না কেন, যন্ত্রের কাছে আপনি হার মানতে বাধ্য।

না, আপনি ঘুরে ঘুরে কোনো তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন না, কিন্তু একটি হার্ডডিস্ক মিনিটে প্রায় চার হাজারেরও বেশিবার ঘুরতে ঘুরতে আপনাকে তথ্য সরবরাহ আর সংরক্ষণে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছে। আপনার প্রিয় কম্পিউটারটিতে স্থায়ী মেমোরি হিসেবে যে হার্ডডিস্ক ড্রাইভ ব্যবহার করেন তার মধ্যে কি এমন ঘটে যেটা আপনার এলাকার একটি লাইব্রেরির চেয়েও কয়েকগুণ বেশি তথ্য ধারণ করতে পারে অনায়াসেই? আর ঘোরার সাথেই বা তথ্য জমা হবার কী সম্পর্ক? দেখে নেয়া যাক এবারে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কিভাবে তথ্যকে চৌম্বকত্বের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়!

Source: Amazon

শুরুর আগে

কম্পিউটার মেমোরি দুই প্রকার সেটা আমাদের অনেকেরই জানা। অস্থায়ী বা ভোলাটাইল আর স্থায়ী বা নন ভোলাটাইল। আর হার্ডডিস্ক হলো স্থায়ী মেমোরির অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার যেসব তথ্য দরকার সেসব সংরক্ষণ করে হার্ডডিস্ক। কিন্তু হাতের তালুতে খুব ভালভাবেই এঁটে যায় এমন এক ডিভাইসে কিভাবে এত এত তথ্য জমা থাকে?

কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণের ইতিহাস অনেক পুরানো। তবে হার্ডডিস্কের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা শুরু হয় সর্বপ্রথম বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে। হার্ডডিস্ক আসার আগে একেবারে শুরুর দিকে তথ্য সংরক্ষণের এই ভারী দায়িত্বটা পালন করত পাঞ্চ কার্ড। এরপরে একে একে ম্যাগনেটিক কোর মেমোরি, ম্যাগনেটিক টেপ, ম্যাগনেটিক ড্রাম মেমোরি আসে। এরপর শুরু হয় হার্ডডিস্কের যুগ।

হার্ডডিস্ক আসার আগে বিশালাকার সেসব ডিভাইসগুলোতে সংরক্ষণ করা যেত কয়েক কিলোবাইট ডেটা। আর সেসব ডেটা নিয়ে কাজ করাও ছিল বেশ কষ্টকর আর সময়সাপেক্ষ। বিশালাকার ডিভাইস কিন্তু ডেটা ধারণ ক্ষমতা বর্তমানের তুলনায় খুব সামান্য। হ্যাঁ, অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার বটে!

কিন্তু আরো বিস্ময়কর ব্যাপার হলো প্রথম আবিষ্কৃত হার্ডডিস্কটিতে সংরক্ষণ করা যেত মাত্র ৫ মেগাবাইট ডেটা। মানে এখনকার সময়ে সেটা আপনার স্মার্টফোনে তোলা একটি সেলফি বা কোনো ইমেজ ফাইলের সমান। হার্ডডিস্কের যুগের এই শুভ সূচনাটি হয় আইবিএম-এর হাতে ১৯৫৬ সালে। RAMAC 305 নামের কম্পিউটারটিতে সর্বপ্রথম এই স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছিল। তাহলে চলুন এবারে হার্ডডিস্কের কার্যপ্রণালীর রহস্য উদঘাটনে ঘুরতে ঘুরতে আরো গভীরে ডুব দেয়া যাক।

RAMAC 305 এর হার্ডডিস্ক; Source: California Digital Library

হার্ডডিস্কের গভীরে

Source: Wikimedia Commons

কী কী থাকে একটি হার্ডডিস্কে? হার্ডডিস্ক কথাটি থেকেই বোঝা যায় এর সাথে ‘ডিস্ক’ বা চাকতি জাতীয় কিছুর সম্পর্ক আছে। আধুনিক একটা হার্ডডিস্কের অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি কভারটি খুললেই দেখা যাবে পরপর কয়েক স্তরে সাজানো আছে কয়েকটি ডিস্ক (ডিস্কের সংখ্যা ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করে), যাদের ‘প্লেটার‘ও বলা হয়। প্রত্যেকটি ডিস্ক খুব পাতলা হয়ে থাকে। আর নামের সাথে বৈশিষ্ট্যের আছ মিল, কারণ ডিস্কগুলো বেশ শক্ত। আর প্রত্যেকটি ডিস্ক একটি শক্তিশালী মোটরের সাথে যুক্ত থাকায় একইসাথে অনেক উচ্চ গতিতে ঘুরতে পারে। এই ঘূর্ণনের ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হলো ডেটা ট্রান্সফার রেট, অর্থাৎ ঘূর্ণন যত বেশি হবে ডেটা ট্রান্সফার হবে তত দ্রুত। এই ঘূর্ণন মাপার একক হলো rpm (revolutions per minute) বা প্রতি মিনিটে ঘূর্ণন। সাধারণত এখনকার হার্ডডিস্কগুলোতে এই ঘূর্ণন হার্ডডিস্ক ভেদে ৪,২০০-১৫,০০০ আরপিএম এর মধ্যে হয়ে থাকে।

প্লেটার; Source: DreamsTime;

প্রত্যেকটি ডিস্কের উপরে থাকে একটি করে রেকর্ডিং হেড, যা ম্যাগনেটাইজড ডিস্ক থেকে ডেটা রাইট করে অর্থাৎ নতুন ডেটা যোগ করে বা রিড করে অর্থাৎ ডিস্কে থাকা ডেটা নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেয়। আরেকটি বিষয় হলো ডিস্কের উভয় প্রান্তেই কিন্তু ডেটা সংরক্ষণ করা যায়। সেক্ষেত্রে ডিস্কের উভয় পাশেই থাকে রেকর্ডিং হেডটি। ডিস্কগুলো থেকে মাত্র কয়েক ন্যানোমিটার উপরে থাকে প্রত্যেকটি হেড। আর সেগুলো সংযুক্ত থাকে ‘মুভিং অ্যাকচুয়েটর আর্ম’-এর সাথে, যার ফলে সেগুলো ডিস্কের উপর স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে পারে প্রয়োজন অনুসারে। এই হেডের কাজ হলো তড়িৎ প্রবাহকে চৌম্বকক্ষেত্রে রূপান্তর করা অথবা তার বিপরীতটা করা অর্থাৎ চৌম্বকক্ষেত্রকে তড়িৎ প্রবাহে রূপান্তর করা।

রেকর্ডিং হেড; Source: sospc.name

আর এর ভেতরে আরো একটি গুরত্বপূর্ণ অংশ হলো প্রোগ্রাম করা চিপযুক্ত সার্কিটবোর্ড, যাতে বলে দেয়া থাকে কীভাবে কী করতে হবে, কোন নির্দেশ অনুযায়ী কখন কী করতে হবে এরকম মেশিনের ভাষায় নানা নির্দেশনা।

কিন্তু এতসব যন্ত্রপাতি দিয়ে ডেটা নিয়ে কাজ করা হয় কিভাবে? এবারে জানা যাক এই প্রযুক্তিগুলো কিভাবে বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আপনার প্রতিদিনের ডেটা বা তথ্যগুলো সংরক্ষণ করে।

হার্ডডিস্কের ঘূর্ণিপাকে

ডিস্কগুলো সাধারণত গ্লাস বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। আর তাতে প্রলেপ দেয়া এমন পদার্থের যেগুলো চৌম্বকত্ব ধর্ম আছে। এগুলোকে বলা হয় ‘মাইক্রোস্কোপিক ম্যাগনেটাইজড মেটাল গ্রেইনস’। এখন ডেটা স্টোর করার প্রক্রিয়াটা ব্যাখ্যা করা যাক। কিন্তু তার আগে বলে রাখা ভালো, ব্যাপারটি এখানে আপনার বোঝার সুবিধার্থে সহজভাবে উপস্থাপন করা হলো, কিন্তু আদতে এর সাথে জড়িয়ে আছে অনেক জটিল গাণিতিক আর বিজ্ঞান-প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া।

আপনার ডেটাগুলো চিরপরিচিত রূপে সংরক্ষিত থাকে না। ডেটাগুলো হার্ডডিস্কে থাকে ম্যাগনেটিক প্যাটার্নে। আরেকটু পরিষ্কার করা যাক। ডিস্কের পৃষ্ঠগুলোকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে কল্পনা করুন। কত ক্ষুদ্র? দৈর্ঘ প্রস্থে তা কয়েক ন্যানোমিটার। এদের প্রতিটি ভাগকে বলা হয় একেকটি গ্রেইন, যেগুলো চৌম্বকত্ব ধারণ করে। অনেকগুলো গ্রেইন মিলে একটি গ্রুপ বিবেচনা করা যাক, যেখানে প্রতিটি গ্রেইন একটি চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি করে, যাদের আছে নিজস্ব দিক। এই দিক থাকতে পারে দুটির মধ্যে প্রত্যেকের যেকোনো একটি করে। অর্থাৎ তীর চিহ্ন দিয়ে তা প্রকাশ করা হলে একটা ডান দিক বোঝালে আরেকটা হবে এর বিপরীত মানে বাম দিক। প্রতিটি গ্রুপের সবগুলো গ্রেইনের দিক হবে একই। কিন্তু এই গ্রেইনের গ্রুপের দিক দিয়ে কি হবে?

সবই ০ আর ১ এর খেলা; Source: Ted Ed

কম্পিউটারে ডেটা বা তথ্য নিয়ে কাজ করা মানেই ০ আর ১ এর খেলা, যাকে আমরা বাইনারি বা দ্বিমিক সংখ্যা পদ্ধতি নামে চিনি। এদের প্রত্যেকটি একেকটি বিট (bit)। হার্ডডিস্কে  যদি একটি ফাইলকে বিবেচনায় নেয়া হয় তবে সেগুলো কম্পিউটারের কাছে কেবল ০ আর ১ এর মাধ্যমে সাজানো কিছু কোড, যা আবার কেবল ট্রানজিস্টরের বিদ্যুৎ প্রবাহ অন আর অফ বোঝায়। তো এই ০ আর ১ কে কিভাবে সংরক্ষণ করা যায় আপনার কম্পিউটারে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও? এখানেই কাজে আসে চৌম্বকক্ষেত্রের মাহাত্ম্য। বিদ্যুৎ না থাকলেও ক্ষেত্রগুলো এর দিক ধরে রাখে। ধারণাটাও খুব সহজ, যদি চৌম্বক ক্ষেত্রের নির্দেশিত বাম দিকটিকে ০ ধরা হয় তাহলে ডান দিকটি হবে ১।

ম্যাগনেটিক গ্রেইনের চৌম্বকক্ষেত্রের দিক; Source: Ted ed

বাইনারি কোডগুলোকে এবার সংরক্ষণ করা যাক। প্রথমেই সেই ০ আর ১-গুলোকে বিদ্যুৎ প্রবাহে পরিণত করা হয় ডিস্কের চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তনের জন্য। একটি ইলোকট্রোম্যাগনেটের মধ্য দিয়ে সেগুলোকে ডিস্কে পাঠানো হয় আর প্রবাহগুলো গ্রেইনের চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। আরেকটু পরিষ্কার করা যাক। একটি গ্রেইনের গ্রুপ (২০-৩০টি গ্রেইন) কেবলমাত্র একটি বিট সংরক্ষণ করতে পারে। ধরা যাক, বিটটি যদি হয় ০ আর গ্রেইনের গ্রুপের ক্ষেত্রের দিক যদি হয় ডান দিকে তবে সেটি পরিবর্তন হয়ে যাবে বামে। আর যদি আগে থেকেই বাম দিক হয়ে থাকে তবে পরিবর্তন হবে না। এভাবে সবগুলো বিটকে ডিস্কে বসানোর পর একটি ফাইলকে সংরক্ষণ করা যায়। আর এই প্রক্রিয়াটি ঘটে কয়েক মিলিসেকেন্ডের মধ্যে। এই কাজগুলোই করে রেকর্ডিং হেডগুলো।

ইলেকট্রোম্যাগনেট এর মাধ্যমে তড়িৎ প্রবাহ দ্বারা চৌম্বকক্ষেত্রের দিক পরিবর্তন; Source: Ted ed

ডেটা পুনরায় ফিরে পেতে ব্যবহার করা হয় ম্যাগনেটিক রিডার যা চৌম্বকক্ষেত্রের দিক দেখে সেগুলোকে বাইনারি আকারে নিয়ে আসে।

ম্যাগনেটিক রিডার করছে তার কাজ; Source: Ted ed

ধারণক্ষমতা আর সীমাবদ্ধতা

যেহেতু এখানে ব্যাপারটা গ্রেইন নিয়ে আর সেগুলো কিছুটা জায়গা নেয়, তাই উদ্দেশ্য সবসময়ই কিভাবে এই জায়গার সঠিক ব্যবহার করে ধারণক্ষমতা বাড়ানো যায়। সোজাভাবে বলতে গেলে, প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ঠিক কত বেশি পরিমাণ তথ্যকে ঠেসে রাখা যায়। তথ্য রাখার ঘনত্ব যত বাড়বে ঠিক তত বেশি পরিমাণে তথ্য আমরা জমা করতে পারব।

শুধু ঘনত্ব বৃদ্ধিই নয়, সাথে সাথে এতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির উন্নতিও করা হয়েছে সময়ের সাথে সাথে। বর্তমানের হার্ডডিস্কগুলোতে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে প্রায় ৬০০ গিগাবিট (বাইট নয়, বিট) করে তথ্য রাখা যায়, যা একদম শুরু দিকের হার্ডডিস্কের তুলনায় ৩০০ মিলিয়ন গুণ বেশি। এছাড়াও রিডার/রাইটার হেডগুলোর আকার হ্রাস করেও এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে। আর হেডগুলোকে ডিস্কের আরো কাছে আনা হয়েছে আগে তুলনায়। হেড আর ডিস্কের পৃষ্ঠের মধ্যবর্তী দূরত্ব বর্তমানে পাঁচ ন্যানোমিটার, যা আপনার ডিএনএ’র প্রস্থের প্রায় দ্বিগুণ।

কিন্তু এই ম্যাগনেটাইজেশনের খেলায় একটা সীমাবদ্ধতা আছে। গত কয়েক দশক ধরে কম্পিউটার স্টোরেজ ক্যাপাসিটি আর এর প্রসেসিং ক্ষমতা সূচকীয় হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্যাটার্ন মেনে চলেছে একটি বিশেষ ভবিষ্যদ্বাণী যা ‘মুর’স ল’ (Moore’s Law) নামে পরিচিত। ইন্টেলের সহ প্রতিষ্ঠাতা গর্ডন মুর ১৯৬৫ একটি ভবিষ্যৎবাণী দেন, তা অনেকটা এরকম, প্রতি দুই বছরে কম্পিউটারের ডেটা প্রোসেসিং ক্ষমতা আর স্টোরেজ ঘনত্ব পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ হতে থাকবে এবং আকারে ছোটো আর দাম কমতে থাকবে। অবশ্যই এটি কোনো পদার্থবিজ্ঞান বা প্রযুক্তিগত সূত্র নয়।

মুর’স ল; Source: Ted Ed

কিন্তু মুরের তত্ত্বে সমস্যা বাঁধে যখন হার্ডডিস্কে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ১০০ গিগাবিটের বেশি তথ্য রাখতে চেষ্টা করা হয়। গ্রেইনগুলোর আকার ছোট করতে করতে এত বেশি ছোট করে ফেলা হয় যে সেটি সীমা অতিক্রম করে। আর ফলাফলস্বরূপ খুব সহজেই তাপ শক্তি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দিক পরিবর্তন করে বসে অযাচিতভাবে আর তথ্য হারিয়ে যায় বা বিকৃত হয়ে যায়। একে বলা হয় ‘সুপার-প্যারাম্যাগনেটিক ইফেক্ট’। তাহলে কিভাবে এর সমাধান করলেন বিজ্ঞানীরা?

বিজ্ঞানীরা এখানে একটু চালাকি করে চৌম্বকক্ষেত্রগুলোর সজ্জায় পরিবর্তন আনলেন। ডিস্কে আগে যেগুলোকে অনুদৈর্ঘ্য বরাবর সাজানো হতো এখন সেগুলোকে লম্বভাবে সাজালেন। আর ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়ে হলো ১ টেরাবিট (বাইট নয়, বিট) প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে।

এখন পর্যন্ত হার্ডডিস্কের কার্যক্ষমতা, ধারণক্ষমতা, ডেটা বেশিদিন পর্যন্ত টিকিয়ে রাখার জন্য বেশ কিছু প্রযুক্তি নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেসব প্রযুক্তি কম খরচে উৎপাদন বা সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি। এমনই একটি প্রযুক্তি হলো হিট অ্যাসিস্টেড ম্যাগনেটিক রেকর্ডিং (এইচএএমআর), যেখানে লেজার প্রযুক্তির সাহায্যে ডিস্কের একটি নির্দিষ্ট স্থানে তাপ দিয়ে অতি ক্ষুদ্র বিটগুলোকে আরো স্থায়িত্ব দেয়া হয়। এখনো এই প্রযুক্তি আছে প্রোটোটাইপ পর্যায়ে এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রযুক্তির হার্ডডিস্কে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ১০০ টেরাবিট ডেটার জায়গা হবে। আরো আছে বিট-প্যাটার্নড মিডিয়া। বর্তমানের হার্ডডিস্কে যেখানে ২০-৩০টি গ্রেইন মিলে ১টি বিট ধারণ করে, সেখানে এই প্রযুক্তিতে একটি গ্রেইন একটি বিট ধারণ করবে।

তবুও এখন পর্যন্ত মানুষের মতো ডেটাও অমর হতে পারেনি। কোনো না কোনো ত্রুটি থেকেই যায় সব প্রযুক্তিতে। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ডেটা। যে যত বেশি ডেটা নিয়ে কাজ করবে সে তত বেশি উন্নত। আর তাই এই ডেটা সংরক্ষণের ডিভাইসের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে উন্নত হচ্ছে এতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি। হার্ডডিস্ক ছাড়াও এমন অনেক ডিভাইসেই আজকাল তথ্য ধারণ করা যাচ্ছে আরো সহজে, যেমন সলিড স্টেট ড্রাইভ, ইউএসবি ড্রাইভ প্রভৃতি। আর সেই তালিকায় যোগ হয়েছে দেহের ডিএনএ-ও। পরের কোনো এক পর্বে আলোচনা করা যাবে প্রাকৃতিক এই স্টোরেজ সিস্টেম নিয়ে।

This article is in Bangla Language. It's about how hard disk works
References used in this article are hyperlinked inside this article. 
Featured Image: Desktopwallpaper4.me

Related Articles