Welcome to Roar Media's archive of content published from 2014 to 2023. As of 2024, Roar Media has ceased editorial operations and will no longer publish new content on this website.
The company has transitioned to a content production studio, offering creative solutions for brands and agencies.
To learn more about this transition, read our latest announcement here. To visit the new Roar Media website, click here.

‘সন্ত্রাসী’ দাবি করে ১০ রোহিঙ্গা হত্যার স্বীকার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই প্রথম কোনো রোহিঙ্গা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর চারজন সদস্য মংডুর নিকটস্থ ইন ডিন গ্রামের দশজন রোহিঙ্গা হত্যার সাথে জড়িত রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেনাবাহিনীর এক প্রতিবেদনে। তবে নিহত ১০ রোহিঙ্গাকে সেনা সদস্যরা ‘সন্ত্রাসী’ বলে দাবি করেছে।

সামরিক বাহিনী বিগত ১৮ ডিসেম্বর জানায়, ইন ডিন গ্রামে ১০ জনের একটি গণকবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য সেনাবাহিনী একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়।

বুধবার এই তদন্তের ফলাফল মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং লাইং এর ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়। রোহিঙ্গাদেরকে প্রতিবেদনে ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানানো হয়। নিহত রোহিঙ্গা সম্পর্কে এখানে বলা হয়, “এটি সত্য যে, গ্রামবাসী ও নিরাপত্তাবাহিনী স্বীকার করেছে, তারা দশজন ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’কে হত্যা করেছে।” বৌদ্ধ গ্রামবাসীদের হুমকি প্রদান ও প্ররোচিত করার কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি করা হয় তাতে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।

অং সান সুচি ও মিন অং লাইং; Source: South China Morning Post

প্রতিবেদনে বলা হয়, লাঠি ও তলোয়ার নিয়ে ২০০ ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’ আক্রমণ চালালে নিরাপত্তাবাহিনী ১ সেপ্টেম্বর সেখানে অপারেশন পরিচালনা করে। এতে ফাঁকা গুলি করে বাকিদেরকে বিতাড়িত করলেও দশজন ধরা পড়ে। ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া ও বিস্ফোরকের মাধ্যমে দুটি সামরিক যানের ক্ষতিসাধনের কারণে বন্দীদের পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সহিংসতায় স্বজন হারানো রাখাইন বৌদ্ধরা বন্দীদেরকে হত্যা করতে চায়। তাদেরকে জোরপূর্বক গ্রামের একটি কবরে নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে। এরপর নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা আবার তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে।

নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে রোহিঙ্গারা; Source: Kevin Frayer/Getty Images

উল্লেখ্য, বর্তমান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সাবেক নাম আরাকান। আরাকানের মুসলিমদের বলা হয় রোহিঙ্গা। বৃটিশ আমলে ভারতবর্ষ হতে বার্মায় যাওয়া হিন্দু ও মুসলমানদের সাথে বার্মা সরকার আদিবাসী রোহিঙ্গা মুসলিমদের গুলিয়ে ফেলেছে। তাই সরকার এদের সবাইকে বহিরাগত মনে করে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে খড়গহস্ত হয়েছে। মায়ানমারের অতি-সাম্প্রদায়িক বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সামরিক বাহিনীর গণহারে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের শিকার হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে নিরীহ রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘের মতে, আগস্ট-সেপ্টেম্বরের সহিংসতার কারণে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

ফিচার ইমেজ: AFP

Related Articles